অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৬.৬২ বিলিয়ন ডলার

দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন জোয়ার বইছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও দেখা দিয়েছে আশাব্যঞ্জক উত্থান। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।
রবিবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ হিসাবে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যা শুধু আইএমএফকে জানানো হয়, প্রকাশ করা হয় না।
বিশ্বমানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয় সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। সে তুলনায় বাংলাদেশ এখন সীমার শেষ প্রান্তে অবস্থান করছে।
প্রবাসী আয়, রপ্তানি, বিদেশি বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঋণ—এসব উৎস থেকেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে ওঠে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয়, ঋণের কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের পারিশ্রমিক বা শিক্ষার্থীদের খরচের মতো বহির্মুখী লেনদেনের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বের হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধির কারণে ডলারবাজারে স্বস্তি ফিরেছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হয়নি, বরং উল্টো ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সর্বশেষ ৪ সেপ্টেম্বর পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং তার আগে ২ সেপ্টেম্বর আটটি ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কেনা হয়।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, আগস্টে আসে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার এবং সদ্যবিদায়ী অক্টোবরে রেমিট্যান্স বেড়ে দাঁড়ায় ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে দেশে আসে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, যা ছিল বছরের সর্বোচ্চ প্রবাহ। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্সপ্রবাহ ছিল যথাক্রমে- জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি ডলার; আগস্টে ২২২.১৩ কোটি ডলার; সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি ডলার; অক্টোবরে ২৩৯.৫০ কোটি ডলার; নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার; ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার; জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার; ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার; মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার; এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার; মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঐতিহাসিক তথ্য বলছে, ২০১৩ সালের জুন শেষে দেশের রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৯ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে এবং একই বছরের ৮ অক্টোবর পৌঁছে ৪০ বিলিয়ন ডলারে।
এরপর কোভিডকালেও রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট, যখন রিজার্ভ দাঁড়ায় ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার—দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
তবে গত দুই বছর ধরে আমদানি ব্যয় ও ডলার সংকটের কারণে রিজার্ভে ধীরে ধীরে পতন দেখা দেয়।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২১.৫০ বিলিয়ন ডলার, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৫.০২ বিলিয়ন, ২০১৫-১৬ এ ৩০.৩৫ বিলিয়ন, ২০১৬-১৭ এ ৩৩.৬৭ বিলিয়ন, ২০১৭-১৮ এ ৩২.৯৪ বিলিয়ন, ২০১৮-১৯ এ ৩২.৭১ বিলিয়ন, ২০১৯-২০ এ ৩৬.৩ বিলিয়ন, ২০২০-২১ এ ৪৬.৩৯ বিলিয়ন, ২০২১-২২ এ ৪১.৮২ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ৩১ বিলিয়ন, আর ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্সের ধারাবাহিক প্রবাহে নতুন করে আশার আলো দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধারা বজায় থাকলে চলতি অর্থবছরে আবারও রিজার্ভে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

অর্থনীতি
সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি কমেছে ৪.৭৩ শতাংশ

সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে। গত মাসে বিদেশের বাজারে ৩৬২ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন দেশের উদ্যোক্তারা। এ আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ কম।
২০২৪ সালে সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৮০ কোটি ডলার। রোববার (৫ অক্টোবর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত রপ্তানির হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ২৩১ কোটি ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ১৬৫ কোটি ডলার।
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এছাড়া কৃষি পণ্যে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং প্লাস্টিক পণ্যে ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির দেখা পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে কার্পেট রপ্তানি ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং হিমায়িত মাছ রপ্তানি ১২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অর্থনীতি
সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা

প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক আয় বা রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ দেখা গেছে সদ্যবিদায়ী সেপ্টেম্বরেও। এই মাসে ২.৬৮ বিলিয়ন (২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার) মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) প্রায় ৩২ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৬৮ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে ২৫ কোটি ৮২ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৫ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে আসে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আগস্টে প্রবাসীরা পাঠান ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে, যা ছিল বছরের রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্সপ্রবাহ ছিল যথাক্রমে- জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি ডলার; আগস্টে ২২২.১৩ কোটি ডলার; সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি ডলার; অক্টোবরে ২৩৯.৫০ কোটি ডলার; নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার; ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার; জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার; ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার; মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার; এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার; মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
অর্থনীতি
ফের বেড়েছে সোনার দাম, আজ থেকে কার্যকর

স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে আবার স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ১৯২ টাকা। এতে এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। দেশের বাজারে এতো দাম আগে কখনো হয়নি।
রোববার (০৫ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয় ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৪ টাকা। এতোদিন এটাই ছিল দেশের বাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড হলো।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের ১ হাজার ৭৯৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের ১ হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৩ টাকা।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪১৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৪ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৭১ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৬৮০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ৭২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ শনিবার পর্যন্ত এই দামে স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে।
তবে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও রূপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৩ হাজার ৬২৮ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ৯৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ২২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
ব্যাংকিং খাতে দক্ষ এমডির চরম সংকট: গভর্নর

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজে পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের বলরুমে ফিন্যানশিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেডের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘ভালো মানের এমডি পাওয়া এখন বড় সমস্যা। এমনকি ভালো হেড অব ডিপার্টমেন্ট খুঁজে পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।
সেটা করপোরেট বিভাগ হোক বা কনজিউমার বিভাগ—প্রতিটি ক্ষেত্রেই দক্ষ জনবলের ঘাটতি স্পষ্ট।’
গভর্নর আরো বলেন, ‘প্রোপার নলেজ ও প্রোপার ট্রেনিংপ্রাপ্ত এমডি আমরা পাচ্ছি না। এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য এক ধরনের ব্যর্থতা। ফলে সামনে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ আরো বাড়বে।’
ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা যখন ডিজিটাল ব্যাংকিং ও আধুনিক প্রশাসনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, তখন প্রতিটি সেক্টরে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক এখনো ভারতীয় কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারের ওপর নির্ভর করছে। বাংলাদেশে এখনো নিজস্ব সফটওয়্যার তৈরি সম্ভব হয়নি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থনীতিবিদ ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মানসিকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কারণ প্রশিক্ষিত কিন্তু মানসিকভাবে সঠিকভাবে প্রস্তুত নয়, এমন জনবল অনেক সময় অপ্রশিক্ষিত জনবলের চেয়েও বেশি ক্ষতি করতে পারে। আগামী ৪-৫ মাসে আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আসছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
অর্থনীতি
সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ : নৌ উপদেষ্টা

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক নৌপরিবহন সংস্থা (আইএমও) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ডে প্যারালাল ইভেন্ট-২০২৫’-এর প্যানেল আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি। এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, কূটনীতিক, নৌপরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা অংশগ্রহণ করেন। আগামী বছর অনুষ্ঠানটি দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত হবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ‘টেকসই সমুদ্রের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির বিভিন্ন কৌশল ও উদ্যোগ তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে এ প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
ড. সাখাওয়াত হোসেন তার বক্তব্যে টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনা, নৌপরিবহন খাতে দক্ষ জনশক্তি উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্যানেল ও বৈঠকের পাশাপাশি উপদেষ্টা অন্যান্য দেশের প্রতিনিধি ও কৌশলগত অংশীদারদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের নৌপরিবহন খাতের অর্জন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
উপদেষ্টা আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় আইএমও কাউন্সিল নির্বাচনে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে সদস্য পদে বাংলাদেশের পক্ষে সদস্য দেশগুলোর সমর্থন কামনা করেন।
এ ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশগ্রহণ বাংলাদেশকে নৌপরিবহন খাতে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে এবং আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে বাংলাদেশের ভূমিকা আরও শক্তিশালী করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।