রাজনীতি
অর্থবহ নির্বাচন চাইলে ৫ দফা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই: ড. হেলাল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা–৮ আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাবিত ৫ দফা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এই দাবিগুলো শুধু জামায়াতের নয়, একটি দল ছাড়া দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর কাকরাইলে ভয়েস অব সিভিল রাইটস ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে মানবাধিকার, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনে জাতীয় ঐকমত্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা, সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তন, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার, এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা—এই ৫ দফাই আজ জাতির দাবি। এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশ একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই জন্মের পর থেকে একটিবারও ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই বিপ্লব সেই অধিকার পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি করেছে। সরকার যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারে, তবে জনগণ ইসলামের পক্ষে আরেকটি বিপ্লব ঘটাবে।
ড. হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, বিচার ও সংস্কার ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিচারের আওতায় না আনলে তারা কালো টাকার প্রভাবে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। তিনি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। জনগণ সুযোগ পেলে ভোটের মাধ্যমে এই চাঁদাবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে।
তিনি বলেন, জাতি চায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি বৈষম্যহীন, সুখী ও সমৃদ্ধ কল্যাণরাষ্ট্র গড়ে উঠুক। জামায়াত দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভয়েস অব সিভিল রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মারুফ শাহারিয়ার এবং সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি ফর ন্যাশনাল চ্যারিটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন আহমেদ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মারুফুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ফ্যাক্টচেক
জামায়াতের আবদুল্লাহ তাহের দিল্লিতে নয়, নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন

শনিবার (৪ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন একাউন্ট থেকে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, এটি ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে আজ জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সাক্ষাতের ছবি।
পোস্টে ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশন দেয়া হয়েছে, ‘জামায়াতের নায়েবে এ আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে দিল্লিতে স্বাগতম জানিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান! আজকে রাত ৯ টায় দিল্লির একটি ৫ স্টার হোটেলে তাঁদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’
তবে, প্রকৃতপক্ষে এই ছবিটি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) দিয়ে তৈরি বলে জানিয়েছে ‘দ্য ডিসেন্ট’ ম্যাগাজিন।
জামায়াতের প্রচার বিভাগের একজন মুখপাত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, জামায়াত নেতা তাহের বর্তমানে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৭ অক্টোবর চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু কাজ শেষে দেশে ফিরবেন।
রাজনীতি
চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন নুরুল হক নুর

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর। শনিবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। তাকে সংবর্ধনা দিতে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে গণঅধিকার পরিষদ ও তার অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত হন।
এর আগে সকাল পৌনে ১১টার দিকে নুরের দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
১২ দিন সিঙ্গাপুরে অবস্থানকালে শারীরিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান নুরুল হক নূর।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর বিজয় নগরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন বলে দাবি করে দলটির নেতাকর্মীরা।
গুরুতর আহত অবস্থায় নুরকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত ১১টার দিকে তাকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সেখানে দীর্ঘ ১৮ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত সপ্তাহে বাসায় যান নূর। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাজনীতি
পিআর নিয়ে আন্দোলনকারীরা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে: সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সহযোগী দলগুলোর ভূমিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির দাবিতে আন্দোলনকারীরা দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে নির্বাচন বিলম্ব ও বানচালের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’র (এনডিপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপি’র এই জ্যেষ্ঠ নেতা তার বক্তব্যে জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের প্রতি প্রশ্ন তোলেন যে, ২৪ এর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাদের ভূমিকা কী ছিল? এবং এটি প্রকাশের দাবি জানান।
তিনি মনে করেন, পিআর’সহ বিভিন্ন দাবিতে জামায়াত ও অন্যান্য দলের কার্যক্রম গণতান্ত্রিক চর্চারই অংশ। জনগণের কাছে তাদের ইশতেহার গ্রহণযোগ্য হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আন্দোলনকারীদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পিআর নিয়ে যারা আন্দোলন করছে, তারাই নির্বাচন বিলম্ব ও বানচালের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো আন্দোলন পরিচালনা করা সঠিক হবে না বলেও মন্তব্য করেন এবং সবাইকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
রাজনীতি
ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন নয়, ঐক্যবদ্ধ জাতি দেখতে চাই: জামায়াত আমির

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই। নিজের জ্ঞানকে কোরআন-হাদিসের আলোকে জাতির জন্য কাজে লাগাতে হবে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় উলামা কমিটির উদ্যোগে দেশের বিশিষ্ট দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ বাংলাদেশ। স্বাধীনতার এত বছরেও একটি মানবিক সমাজ গঠন হয়নি।
এ ক্ষেত্রে জাতিকে ওলামায়েদের পথ দেখাতে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ জাতি হিসেবে এখানে মিলেমিশে আমরা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান দশকের পর দশক বসবাস করে আসছি। দুনিয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে কয়টি দেশ আছে, উল্লেখ করার মতো বাংলাদেশ এই জায়গায় বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের ৯০.৮ শতাংশ মানুষ মুসলমান। বাকি হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান। তবে আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজনের পক্ষে নই। আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি দেখতে চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি মানবিক ও দায়িত্বশীল সমাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। তাই এই জাতি এখনো সংকটে রয়েছে।
এই সংকটে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ওলামায়ে কেরাম যদি জাতিকে পথ দেখান, আশা করা যায় জাতি পথ পাবে। জাতি এটিই আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করে।
ওলামায়ে কেরামের মধ্যে জাতীয় একটি ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্য দেখতে চায় জাতি। জাতি চায় ইসলামের মৌলিক বিষয়ে ও জাতীয় জীবনের প্রয়োজনীয় বিষয়ে ওলামায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ থাকবেন— এটাই একটি জাতির প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, ‘ওলামায়ে কেরামের একটি ইস্পাতের মতো দৃঢ় হৃদয় চায় জাতি। পরস্পরের মধ্যে বিবাদে না জড়িয়ে সবার মত শোনার মানসিকতা রাখতে হবে ওলামায়ে কেরামদের। তাহলেই এই জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে পারবেন তারা। ’
যে নামাজের ইমাম, তিনি সেই এলাকার মানুষেরও ইমাম। তাই সবার দায়িত্ব নিয়ে কথা ও কাজ করতে হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, একজন শিক্ষিত মানুষ জাতির যে ক্ষতি করতে পারে, হাজারো মানুষ মিলে সেই ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহভীরু মানুষরা সমাজের নেতৃত্বে এলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আমির বলেন, ‘কলমের খোঁচায় যত মানুষের ক্ষতি করা সম্ভব, তা অনেক মানুষ মিলেও করা সম্ভব নয়। তাই ওলামায়ে কেরাম জাতি গঠনে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। ’
রাজনীতি
প্রশাসনে একটি ধর্মভিত্তিক দলের অনুগতদের বসানো হচ্ছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে একটি ধর্মভিত্তিক দলের অনুগতদের বসানো হচ্ছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) নবগঠিত কমিটির সদস্যদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ অভিযোগ তোলেন।
নতুন ইস্যু তৈরি করে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভ্রান্ত কথা বলে ও মিথ্যা পরিসংখ্যান দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। গত ১৫ বছর কারা আপোষহীন লড়াই করেছে, তা সাধারণ মানুষ জানে।
তিনি আরও বলেন, দল অনুগত প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য জনগণ প্রস্তুত, তারা পূর্বের মতো ডামি নির্বাচন চায় না।
এ সময় ভারতের পূজামণ্ডপে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিকৃতি করার সমালোচনাও করেন এই বিএনপি নেতা।
রিজভী বলেন, আমরা দেখতে পেলাম যে, ভারতে ড. ইউনূসসহ আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার মূর্তি বানানো হয়েছে। এগুলো অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয়, এটা একেবারেই একটা অপসংস্কৃতির পরিচয়।