রাজনীতি
অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো মহলকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
শনিবার (২২ মার্চ) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের নিশ্চয়তা বিধান করা। সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত করা।
সংস্কার না নির্বাচন—এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার আগে- নির্বাচন পরে, কিংবা নির্বাচন আগে- সংস্কার পরে এ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটোই একই সঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি (সংস্কার সনদ) তৈরি হতেই পারে, নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে যা বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূলত করণীয় হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করা। নির্বাচিত সরকার জনগণের কাঙ্ক্ষিত ঐকমত্যের সংস্কারসমূহ সম্পন্ন করবে। কেননা জনগণের নিকট দায়বদ্ধ এবং ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই গ্রহণযোগ্য সংস্কার সম্পাদন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা প্রকার লক্ষণ ও প্রমাণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে যা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়।
সংস্কার কমিশন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক প্রেরিত স্প্রেডশিটে যে অপশন বা পছন্দগুলোর ঘরে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে তাতে একটি বিষয় প্রতিভাত হয়েছে যে, যে বিষয়গুলো প্রস্তবাকারে আসতে পারত তা প্রস্তাব না রেখে এর পরিবর্তে হ্যাঁ, না, উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন, প্রস্তাবগুলো গণপরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই কি না? হ্যাঁ অথবা না বলুন। কিন্তু প্রথমে সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না? একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ এবং আইনসভা’ হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না ইত্যাদি হ্যাঁ – না বলুন।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে, যার মূল ভিত্তিটা রচনা করেছে বিএনপি ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের অনেক আগে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই। এক্ষণে গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবসমূহ গৃহীত এবং বাস্তবায়ন করা আবশ্যক। জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার প্রস্তাবগুলোর সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই কেবল উপযুক্ত ফোরাম।
কাফি

রাজনীতি
জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে: ড. হেলাল

জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির পথ বন্ধ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা–৮ আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, একটি দল জানে, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে তাদের অবৈধ রাজনীতি টিকবে না- তাই তারা গণভোট এড়াতে নানানভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ঢাকা–৮ সংসদীয় এলাকার ট্রেড ও সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জাতীয় স্বার্থে নভেম্বরে জুলাই সনদের গণভোট এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা জরুরি। যদি সরকার নভেম্বরের মধ্যে গণভোট না দিয়ে নির্বাচনের দিনেই তা আয়োজন করে, তবে প্রমাণিত হবে সরকার একটি দলের নিয়ন্ত্রণে আছে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হবে। কোনো এমপি বা মন্ত্রী সরকারি প্লট, ফ্ল্যাট বা ট্যাক্সবিহীন গাড়ি নেবে না। উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা এমপিদের হাতে যাবে না- বরং কাজ শেষে জনগণের সামনে হিসাব দিতে হবে।
ড. হেলাল উদ্দিন ব্যবসায়ী সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে কোনো ব্যবসায়ীকে এক টাকাও চাঁদা দিতে হবে না। ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন, যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি ও সুদমুক্ত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে। কেউ আর অধিকার আদায়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে না।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনে আল্লাহভীরু, সৎ ও নৈতিক নেতৃত্ব ছাড়া বিকল্প নেই। তাই দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ রাজনীতিবিদদের বয়কট করে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
ঢাকা–৮ আসনের জনগণ তাকে সুযোগ দিলে এই অঞ্চলকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত শান্তির নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এবং ঢাকা–৮ আসনে নির্বাচন পরিচালক মুহাম্মদ শামছুর রহমান। পরিচালনা করেন পল্টন থানা আমীর ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শাহীন আহমেদ খান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মাওলানা শরিফুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার খন্দকার আব্দুর বর এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি সোহেল রানা মিঠু।
অনুষ্ঠানে ঢাকা–৮ আসনের জামায়াতে ইসলামীর সব সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
জোটের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি: সারজিস আলম

আগামী নির্বাচনে এনসিপি এককভাবে অথবা জোটগতভাবে অংশ্রগহণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তবে জোটগতভাবে অংশ নিলেও শাপলা প্রতীকে নির্বাচনে করার আশা করেন তিনি।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে জামালপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনসিপির জেলা ও উপজেলা কমিটির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
শাপলা প্রতীক দিতে আইনগত বাধা না থাকার কথা জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, প্রতীকটি তালিকাভুক্ত করার কাজ ছিল নির্বাচন কমিশনের। কমিশন চাইলে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তালিকা সংশোধন করতে পারে বলে জানান সারজিস। এছাড়া এনসিপি উচ্চ কক্ষে পিআর-এর পক্ষে থাকলেও নিম্নকক্ষে পিআর-এর পক্ষে নয় বলেও জানান তিনি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনগত ভিত্তি, বাস্তবতা ও ডিসেম্বরের মধ্যে গণহত্যার বিচার পেলে আগামী নির্বাচনে কোনো বাধা নেই বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। এরপরও ভারত বা অন্য কোনো এজেন্ট নির্বাচনে বাধা দিলে তা কাজে আসবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন সারিজস আলম।
এনসিপিকে কিংস পার্টি বলার প্রতিবাদে বিএনপির প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সারজিস আলম। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানির কাছে রক্ষণাবেক্ষণের দ্বায়িত্ব দেওয়ার প্রাসঙ্গিতা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে যে প্রতিষ্ঠান থেকে যতটুকু প্রাপ্তি আসার কথা তা আসছে না। সেই জায়গা থেকে দেশের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত সবার নেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে বলে জানান তিনি।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও জামালপুর জেলার প্রধান সমন্বয়ক লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে এনসিপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ) আশিকিন আলমসহ দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সমন্বয় সভায় জামালপুর জেলার ৭ উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
এসময় বক্তারা বলেন- বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে এনসিপি একটি শক্তিশালী বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সংগঠনকে আরও ঐক্যবদ্ধ ও গতিশীল করে তুলতে হবে।
রাজনীতি
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এক বছরেই দেশ ঘুরে দাঁড়াবে: ড. হেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এক বছরেই দেশ ঘুরে দাঁড়াবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ দমনের মাধ্যমে দেশেকে সমৃদ্ধশালী করে তোলা হবে। আমীরে জামায়াত ইতোমধ্যে জাতির সামনে ঘোষণা দিয়েছেন জনগণ জামায়াতে ইসলামীকে সরকার গঠনের সুযোগ দিলে জামায়াতের দলীয় কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি নেবে না, কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী সরকারি প্লট বা ফ্ল্যাট নেবে না, কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী নিজ হাতে রাষ্ট্রীয় টাকা চালাচালি করবে না। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যেই বরাদ্দ দেওয়া হবে কাজ শেষে বরাদ্দকৃত টাকার হিসাব জনগণের সামনে তুলে ধরবে। জনগণের হিসাব জনগণ বুঝিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী জবাবদিহি মূলক সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জবাবদিহি মূলক সরকার কখনো ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারে না। জামায়াতে ইসলামী বৈষ্যম্যহীন সুখি-সমৃদ্ধ একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র জাতিকে উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার রমনা থানার আলেমেদ্বীন, মসজিদের খতিব ও ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকা থেকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত করে এই এলাকাকে শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয়দের ঐক্যবদ্ধ করতে আলেমসমাজের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। আলেমদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনামলে আলেমগণ কুরআন ও হাদীসের কথা বলতে পারেনি। তাদের কন্ঠরোধ করা হয়েছে। জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আল্লাহ ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে কথা বলার স্বাধীনতা ও পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কিন্তু একটি দল সেই স্বাধীনতা ও পরিবেশ নষ্ট করছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী ঐ দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ভূমিকা আর্বিভূত হয়েছে। তারা আলেমদের কন্ঠরোধ করতে চায়, আলেমদের মসজিদ থেকে বের করে দিতে চায়। এরা ক্ষমতায় বসলে আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিত সৃষ্টি করবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ মানুষের মুক্তির সনদ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সনদ। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিকল্প নেই। পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন করার উত্তম পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ভোট হলে লাখ-লাখ ভোট পঁচে চাওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটি ভোটের যথাযথ হিসাব হবে। যেখানে চলমান পদ্ধতিতে একজন প্রার্থী ১ লাখ ভোট পেলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থী যদি ১ লাখ ১ ভোট পায়। তাহলে মাত্র ১ ভোট বেশি পাওয়া প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অপর দিকে ১ লাখ ভোটারের মতামতের কোনো মূল্যায়ন হয় না। ঐ ১ লাখ ভোট বাতিল হয়ে যায়। এই ব্যবস্থায় কখনো জনগণের সরকার গঠিত হয়নি, হতে পারে না। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমেই জনগণের সরকার গঠিত হয়, হওয়া সম্ভব। তাই জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব রেখে গণভোটের আয়োজনের দাবি জানান ড. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, গণভোটে জনগণ যেই রায় দিবে জামায়াতে ইসলামী সেই রায় মেনে নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করা না হলে আবারও ফ্যাসিবাদে উত্থান ঘটবে। জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবে বলে জাতি বিশ্বাস করে। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে ইনসাফ ও ন্যায়ের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় সমর্থন দিতে তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রমনা থানা আমীর মো. আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মতিঝিল মিসবাহুল উমুল কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ওলামা বিভাগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফরচুন মার্কেট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সোহায়ল জামিল, হাফেজ মাওলানা সাইদুর রহমান, মুসলিম উদ্দিন মাদরাসার পরিচালক মুফতি আবু সুফিয়ান সিরাজী, সবজি বাগান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
রাজনীতি
শিলংয়ে আমাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়: সালাহউদ্দিন

গুম নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি ডকুমেন্টারির কাজে সিলেটের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম হওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে যে পথ দিয়ে তাকে ভারতের শিলংয়ে নেয়া হয় ওই সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। পরিদর্শন শেষে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের কাছে সেই দিনের অনুভূতি তুলে ধরেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাকে যেদিন চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন তো আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আর আমি জানতামও না যে, আমাকে বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছে। ভেবেছিলাম আমাকে হয়তো ক্রসফায়ারের উদ্দেশে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে এখানে পরিদর্শনে এসে মনে হচ্ছে এই রাস্তা দিয়েই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, শিলং নিয়ে যখন আমার চোখ খুলে দেয়া হয় তখন বুঝতে পারি, আমাকে হয়তো এখন ছেড়ে দেবে। ছেড়ে দেয়ার পরে পথচারী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় আমি পুলিশের দ্বারস্থ হই। কিন্তু পরে আমাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়। তখন অবশ্য আমি ভাবছিলাম, বাকী জীবনটা হয়তো আমাকে এখানেই কাটাতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিন আহমদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়, তৎকালীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। একই বছর ১১ মে ভারতের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
রাজনীতি
জাতীয় পার্টির সমাবেশে পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

জাতীয় পার্টির (জাপা) সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দলটির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ককটেল বিস্ফোরণ ছাড়াও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
তবে ককটেল বিস্ফোরণের পেছনে কারা জড়িত সে বিষয়ে এবং কোনও হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান করছে।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করার পরও পুলিশ তাদের সমাবেশ করতে দেয়নি। সমাবেশে বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ করে পুলিশ জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘আমরা তাদের সমাবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা সমাবেশ শুরু করে। সমাবেশ ঘিরে যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছি।’