ব্যাংক
রবিবারের মধ্যে মার্চের বেতন পাবেন ব্যাংকের কর্মীরা

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মার্চের বেতনভাতা রবিবারের (২৩ মার্চ) মধ্যে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ পৃথক নির্দেশনা দিয়েছে এ নিয়ে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ৩১ মার্চ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। বিধায় সরকার কর্তৃক সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী (গেজেটেড-নন-গেজেটেড), সামরিক বাহিনীর কমিশন্ড বা নন-কমিশনড অফিসারের বেতন ভাতাদি এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশনারদের অবসর ভাতা ২৩ মার্চ তারিখে প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন ভাতাদি এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশনারদের মার্চ মাসের অবসর ভাতা ২৩ মার্চ তারিখে প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অন্যদিকে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩ এপ্রিলও ছুটি থাকবে। এর ফলে এবারের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় ব্যাংকও বন্ধ থাকবে। তবে কিছু শাখা বিশেষ ব্যবস্থায় বিশেষ করে শিল্পঘন এলাকায় খোলা রাখা হতে পারে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ বাড়ছে

সাধারণত অর্থবছরের শেষ দিকে সরকারের ঋণ বেড়ে থাকে। তবে সরকারের এখন পর্যন্ত নেওয়া ঋণ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, সরকারের ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখা হবে। এদিকে, হঠাৎ করেই ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ বাড়তে শুরু করেছে। অর্থবছরের শুরু থেকে গত ১০ মার্চ পর্যন্ত নিট ৩৮ হাজার ৫১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
যেখানে গত জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক ঋণ ছিল ১৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল, শেষ এক মাস ১০ দিনে তা দ্বিগুণ হয়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ বাড়ার কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, বিদেশি উৎস থেকে ঋণছাড় কমে যাওয়া এবং সঞ্চয়পত্র থেকে প্রত্যাশিত ঋণ না পাওয়া।
গত ১০ মার্চ সার্বিকভাবে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় পাঁচ লাখ ১২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। যা গত জুন শেষে ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণস্থিতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। গত জুন শেষে এর পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থিতি কমে এক লাখ ৮ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা হয়েছে। যেখানে গত জুন শেষে ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিগত সরকারের সময়ে গোপনে ‘ওভার ড্রাফট’ খাতে নেওয়া ৪৮ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা সমন্বয় করে বর্তমানে ৬ হাজার ৭৪২ কোটি টাকায় নেমেছে।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। গত বছর আমানত বেড়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আলোচিত সময়ে ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের বিপরীতে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের দায় শোধ করা হচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিতর্কিত ইকবালের নিয়ন্ত্রণে এনআরবি ব্যাংক!

পণ্য রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার এবং পাচারকৃত অর্থে যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে ইকবাল আহমেদ ওবিইর বিরুদ্ধে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনা-রেহানার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী। শেখ হাসিনার ছত্রচ্ছায়ায় রাজনৈতিক বিবেচনায় গড়ে তোলেন এনআরবি ব্যাংক। দুর্নীতির দায়ে ২০১৫ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি।
‘সব কাজের কাজি’ সেই ইকবাল আহমেদকে পরিচালনা পর্ষদে রেখে পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংকটির ভবিষ্যত্ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি ব্যাংকে সুশাসন ফেরাতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে পর্ষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পরিচালক করা হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিইকে।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো. সেলিম, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক এমডি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি শেখ মতিউর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরীফ নুরুল আহকাম ও হিসাববিদ মিজানুর রহমানকে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের মতো জুলাই বিপ্লবে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে ফের এই ইকবালদের মাধ্যমে লুটপাট হোক, তা চাইছেন না ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের সহযোগী, হিমায়িত মাছ ব্যবসার আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়া ইকবালকে কেন ব্যাংকের শীর্ষ পদে বসানো হলো? তাঁর ক্ষমতার উৎস কী?
তাঁদের দাবি, অতি দ্রুত ইকবাল আহমেদ এবং তাঁর দুই ভাই কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদের সম্পদের উৎস খুঁজে বের করে তাঁদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ইকবাল আহমেদ, কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদ তিন ভাই এবং তাঁরা এনআরবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার।
১৭ মার্চ ২০২৫ শেষে তাঁরা যথাক্রমে ৩.৮০ শতাংশ, ১.৫১ শতাংশ ও ২.১৩ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার। এ ছাড়া সিমার্ক (বিডি) লিমিটেড, আইবিসিও লিমিটেড, আইবিসিও এন্টারপ্রাইজ, আইবিসিও ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ম্যানরু ইন্টারন্যাশনাল ও ম্যানরু শপিং সিটিতেও তাঁদের যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, যুক্তরাজ্যে একাধিক কম্পানি রয়েছে তাঁদের। এর মধ্যে রয়েছে সিমার্ক পিএলসি, আইবিসিও হোল্ডিংস, এমএআই ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস, ভার্মিলিয়ন গ্রুপ লিমিটেড, ফ্লাইং ইউনিকর্ন, ওপেনশ হোল্ডিংস লিমিটেড, আইবিসিও লিমিটেড, ইউকেবিসিসিআই, ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং নিউ ইস্ট ম্যানচেস্টার লিমিটেড। এই কম্পানিগুলো মূলত রিয়েল এস্টেট, বিনিয়োগ ও আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত।
শেখ রেহানাসহ শেখ পরিবারের অন্য সদস্যদের নামেও এই কম্পানিগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া লন্ডন-ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক সম্পদের মালিকানা গড়ে তুলেছেন। শুধু লন্ডনেই তাঁর প্রায় দুই ডজন বাড়ি ও অত্যাধুনিক প্রপার্টি রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিগত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নিজের অবস্থান গড়ে তোলেন ইকবাল। তাঁর ফেসবুক প্রফাইলজুড়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে অসংখ্য ছবি শেয়ার করা হতো, যা তাঁকে ‘হাসিনা বিশ্বস্ত’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। যদিও ৫ আগস্টে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ফেসবুক থেকে ছবিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার শীর্ষ ২০ জন অর্থদাতার মধ্যে ওবিইও একজন। পতিত সরকারের আমলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিমার্ক গ্রুপের আড়ালে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের অর্থপাচারের ক্যারিয়ার (বাহক) হিসেবেও কাজ করতেন ওবিই। ইকবাল সিমার্ক গ্রুপের প্রধান ব্যবসা হলো মাছ রপ্তানি। মাছের আড়ালে তিনি বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ও সোনা চোরাচালান করতেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাড়া চুক্তির অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইকবাল আহমেদ, কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদ- তিন ভাইকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে এনআরবি ব্যাংক। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, নোটিশ পাওয়ার পর অতিদ্রুত অতিরিক্ত ভাড়া বাবদ ব্যাংক থেকে নেওয়া চার কোটি ৫১ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। না দিলে ফৌজদারি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে নোটিশদাতা ব্যারিস্টার হেলাল উদ্দিন বলেন, আইনি নোটিশ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত বিবাদীপক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ইকবাল আহমেদ ক্ষমতার জোরে করেছেন নানা অভাবনীয় কাণ্ডও। ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সে অনিয়ম করে গায়েব করেন দুই লাখ পাউন্ড। এরপর ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের নেতারা ইকবাল আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করলে তিনি মামলায় হেরে যান। দেশটির আদালত ইকবাল আহমেদকে পাঁচ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেন এবং চেম্বার অব কমার্স থেকে আজীবন বহিষ্কার করেন। এর আগে ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির গোপন অর্থদাতা ওবিই দলটিকে ১২ হাজার পাউন্ড ডোনেশন দেওয়ার পর খরচ ফেরতের দাবি করে বিতর্কিত হয়েছেন।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দাতা তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য পার্টির তহবিল ব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর এই আচরণ নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, যেখানে জনগণের করের টাকা দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তীব্র হয়েছিল।
এই ঘটনা ঘিরে দলটির অভ্যন্তরীণ আর্থিক নীতিমালা ও নৈতিকতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম ও সুধীসমাজের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়নে কঠোর নিয়মকানুন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছিল।
এদিকে ওবিইর অর্থপাচারের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বাংলাদেশকে ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্ত করতে ওবিইর কেলেঙ্কারি দ্রুত বিচারাধীন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থপাচার ও ব্যাংকের অর্থ লুটে কারো বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, সে ক্ষেত্রে এমন ব্যক্তিকে পুনারায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার চলছে। বিতর্কিত ব্যক্তিকে ব্যাংকের শীর্ষ পদে দিয়ে ব্যাংকটির সংস্কার সম্ভব হবে না।
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে ইকবাল আহমদ ওবিইর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সময়ে এনআরবি ব্যাংকের সচিব রেজাউল করিমকে ফোন দেওয়া হলে তিনি জনসংযোগ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সালাউদ্দিন মুরাদকে ফোন দেওয়া হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সূত্র: কালের কণ্ঠ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জামানত ছাড়াই ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ছোট উদ্যোক্তারা

করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিন) নেই এমন ছোট ছোট উদ্যোক্তারা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। ঋণ নিতে জামানতও লাগবেনা। তাঁরা অন্য ব্যবসা সংক্রান্ত সনদ দিয়ে এই ঋণ পাবেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) আগামী পাঁচ বছরের জন্য সিএমএসএমই খাতের নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সেখানে ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোক্তা’ নামের একটি নতুন শ্রেণি যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশে এই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের উদ্যোক্তাদের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
কোন উদ্যোক্তারা অপ্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোক্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন, নীতিমালায় তাও পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২-এর আলোকে ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প খাতের উদ্যোক্তা’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা–২০২১ অনুযায়ী এই উদ্যোক্তাদের সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে। ইউনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন (ইউবিআইডি), ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিফিকেশন (ডিবিআইডি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে পারসোনাল রিটেইল অ্যাকাউন্ট (পিআরএ) আছে, এমন শ্রমনির্ভর অতিক্ষুদ্র বা ভাসমান উদ্যোক্তা বা সেবাপ্রদানকারীরা ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক বা প্রান্তিক উদ্যোক্তা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।
উৎপাদন, সেবা ও ব্যবসা এই তিন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের উদ্যোক্তারা, যাঁদের জনবল পারিবারিক সদস্যসহ ১০ জনের বেশি নয়, তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। এই শ্রেণির উদ্যোক্তাদের টার্নওভারের শর্ত রাখা হয়নি। তবে তাঁদের জমি ও কারখানা ভবন ব্যতীত প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সম্পদের মূল্য পাঁচ লাখ টাকার কম হতে হবে।
সিএমএসএমই খাতের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, মাঝারি শিল্প–উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। ১২১ থেকে ৩০০ কর্মী আছেন, এমন তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান অথবা এক হাজার কর্মী আছেন, এমন শ্রমঘন শিল্পে এই ঋণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাঝারি শিল্পের মধ্যে সেবা খাতে সর্বোচ্চ ৭৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে, যেখানে কর্মীর সংখ্যা ৫১ থেকে ১২০।
উৎপাদন খাতের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মাইক্রো শিল্পে সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা ও ক্ষুদ্র শিল্পে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। মাঝারি শিল্পের ট্রেডিং খাতে ১০ কোটি টাকা এবং ক্ষুদ্র শিল্পের ট্রেডিং ও সেবা খাতে সর্বোচ্চ আট কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। অন্যদিকে মাইক্রো শিল্পের ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। কুটিরশিল্পে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
এসবিএসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদত্যাগ

বেসরকারি খাতের এসবিএসি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।
রবিবার (১৬ মার্চ) ব্যাংকটির পরিচালনা সভায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পর্ষদের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংকটির সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত দিনে ব্যাংকটির বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বের করতে কাজ শুরু করেছে। প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমডি নিজেও বিভিন্ন অনিয়মে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চাপে রয়েছেন। এমন সময় হঠাৎ এমডি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। এখন পর্যন্ত হাবিবুর রহমানের মেয়াদ ছয় মাস বাকি আছে। তবে তার পদত্যাগপত্র এখনো গ্রহণ করা হয়নি।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে পদত্যাগ করা সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর মোহাম্মদ শফিউদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল হাবিবুর রহমানের। তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিন বছরের জন্য ব্যাংকটির এমডি ও সিইও হিসেবে যোগদান করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নয় ব্যাংককে ২৯ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমানতকারীরা কয়েকটি ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে ভিড় করেন। এতে তীব্রতর হয় তারল্য সংকট। সংকটে টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ধার দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের আমলে ৯টি ব্যাংককে প্রায় সাড়ে ২৯ হাজার কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এরমধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে (এসআইবিএল) ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। টাকা ছাপিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংককে ২ হাজার কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংককে ১০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে ২ হাজার কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংককে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং এবি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়েছে।
এসব ব্যাংককে টাকা ধার দেওয়া হয় জামানত ছাড়া। বিদায়ী বছরের শেষ দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর জানান, বলেছিলাম আমরা আর টাকা ছাপাব না। আগের সে অবস্থান থেকে সাময়িকভাবে সরে এসেছি, পুরোপুরিভাবে নয়। সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে যে পরিমাণ তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে সমপরিমাণ টাকা বাজার থেকে বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে তুলে ফেলবো। অর্থাৎ এক হাতে টাকা দেবো, অন্য হাতে বাজার থেকে তুলে নেবো।