অর্থনীতি
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৩ বছরে সর্বনিম্ন

দেশের অর্থনীতির প্রাণ বেসরকারি খাত থেকে প্রতি বছর তৈরি হয় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। জাতীয় উৎপাদন নির্ভর করে এ খাতের ওপর। তবে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ধারাবাহিকভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমছে।
সবশেষ গত অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে। এটি বিগত ৪০ মাস বা সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, গত দুই বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের ভুল নীতির কারণে অস্থির ছিল ডলার বাজার। এসময়ে ডলারের দাম ৮৫ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছে। এতে ধারবাহিকভাবে ডলারের রেট বাড়ছে। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও আমদানি করার ক্ষেত্রে নানা হিসাব কষছেন। আর এ কারণে তখন থেকেই বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমছে।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও ব্যাংক ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় কমছে বেসরকারি খাতের ঋণ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল হয়নি। এ অনিশ্চিত পরিবেশে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। আবার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বাড়ছে। এতে ব্যাংক ঋণের সুদহার অনেক বেড়েছে। তাই উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগে পিছু হাঁটছেন ব্যবসায়ীরা, এতে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধিও কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের অক্টোবরে ব্যাংক খাতের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫৬ হাজার ২০২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে (অক্টোবর-২০২৩) ছিল ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। যদিও ২০২৩ সালের অক্টোবরে তার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। সে হিসাবে এক মাসে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৯০ পয়েন্ট।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ নির্ধারণ করে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ৫ আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর সেই মুদ্রানীতি আর পরিবর্তন করা হয়নি। যদিও কয়েকবার নীতিসুদহার বাড়ানো হয়েছে।
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অক্টোবরে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, আগস্টে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ, জুলাইয়ে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ, জুনে ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশ, মে’তে ১১ দশমিক ১ শতাংশ, এপ্রিলে ছিল ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এছাড়া মার্চে ছিল ১২ দশমিক ০৪ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে ছিল ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ।
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি
২০২২ সালের প্রথমদিকে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের ওপর ছিল। একই বছরে তা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। পরে মূল্যস্ফীতির পারদ চড়তে থাকলে তা কমিয়ে আনতে নীতি সুদহার রেপো বাড়ানো হয়। মুদ্রানীতিতে আরও সংকোচনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এতে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে আবার কমতে শুরু করে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি। এখন তা কমে ৮ শতাংশের ঘরে এসেছে। এরপরও মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
অপরদিকে সদ্যবিদায়ী নভেম্বর মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে প্রায় ১৪ শতাংশে উঠেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, গত মাসে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তার আগের মাস অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
নভেম্বরে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

অর্থনীতি
তিন মাসে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ব্যাংক সঞ্চয় বেড়েছে ১৪০ কোটি টাকা

প্রান্তিক ও স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবের আমানতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নো-ফ্রিলস (এনএফএ) বা চার্জমুক্ত হিসাবে এ বছরের জুন শেষে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। যা মার্চ শেষে ছিল ৪ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে সঞ্চয় বেড়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থনৈতিক চাপ সত্ত্বেও প্রান্তিক মানুষের ব্যাংক সঞ্চয় বেড়েছে, যা দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও আস্থার উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মার্চ শেষে ব্যাংকগুলোতে নো-ফ্রিলস হিসাবের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৮২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭০টি। জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৬ হাজার ৭৯৯টি। এই হিসাবে তিন মাসে নতুন অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার।
আস্থার ফিরতি সঞ্চয়ে: খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আস্থা ফিরে এসেছে। পাশাপাশি আর্থিক খাতকে সুস্থ রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর প্রভাবেই প্রান্তিক আয়ের মানুষও ব্যাংকে টাকা জমাতে শুরু করেছে।
প্রবাসী আয়েও প্রবৃদ্ধি: মার্চ শেষে এসব হিসাবে প্রবাসী আয় ছিল ৭৭৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় ২৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ শেষে নো-ফ্রিলস হিসাবের আওতায় কৃষকদের আমানতের পরিমাণ ছিল ৭১৮ কোটি, অতি দরিদ্রদের ২৩১ কোটি, পোশাকশ্রমিকদের ছিল ৪৬৭ কোটি, মুক্তিযোদ্ধাদের হিসাবে ১০১৩ কোটি, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের হিসাবে ১ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।
যেখানে চলতি বছরের জুন শেষে কৃষকদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৭০ কোটি, অতি দরিদ্রদের দাড়িয়েছে ২৪৬ কোটি, পোশাকশ্রমিকদের ছিল দাড়িয়েছে ৪৬৫ কোটি, মুক্তিযোদ্ধাদের হিসাবে ৯৬১ কোটি, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের হিসাবে ১ হাজার ৮২১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মন্তব্য: বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, দেশে পালাবদলের পর মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। ফলে প্রান্তিক মানুষের খরচের চাপও হ্রাস পেয়েছে। এজন্য কষ্ট হলেও অনেকে বাড়তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করছেন।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা

ট্রেজারি বিল বন্ড ও সরকারকে দেওয়া সুদে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা বেড়েই চলছে। সদ্যবিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিচালনা বাবদ মোট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে আনুষঙ্গিক খরচ ও ট্যাক্স বাদ দিয়ে নিট মুনাফা হয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালকদের ৪৪৩তম সভায় আর্থিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মোট মুনাফা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে অর্থবছরের ব্যবধানে নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
এর আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে নিট মুনাফা ছিল ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি মুনাফা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘মুনাফা করা বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশ্য নয়। তারপরও বিভিন্ন পরিচালনা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুনাফা করেছে, যা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
বিবরণী অনুযায়ী, গত অর্থবছরের আয় থেকে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি নিট মুনাফা হয়েছে, যা সরকারি কোষাগারে দেওয়া হবে। আগের অর্থবছরে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে দেওয়া হয়েছিল। মুনাফা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিজস্ব বেসিক বেতনের ৬ গুণ ইনসেনটিভ বোনাস অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড।
অর্থনীতি
সোনার দাম বাড়লো, ভরি ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা

দেশের বাজারে নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে সোনার দাম। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এবার ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকেই কার্যকর হবে নতুন এ দাম।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বাড়ার কারণে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের বাজারে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাজুস।
নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ২৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২৪ জুলাই দেশের বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৫৭৪ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ২৫ জুলাই থেকে।
এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৪৬ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৩০ বার, আর কমানো হয়েছে মাত্র ১৬ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে বর্তমানে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা ১ হাজার ৭২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে।
অর্থনীতি
পাঁচ মাসে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ: বিডা

২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশ প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর বিডা অডিটোরিয়ামে বিনিয়োগ বিষয়ক সংবাদদাতাদের একটি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান বিডার ব্যবসায় উন্নয়ন প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি।
বিনিয়োগ প্রস্তাবের প্রবাহকে একটি ইতিবাচক প্রবণতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছেছে- যার মধ্যে রয়েছে স্বাক্ষরিত চুক্তি, জমি ইজারা নিশ্চিতকরণ এবং বরাদ্দপত্র।
রোচি বলেন, পরিসংখ্যানগুলো বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে (এসইজেড) বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়, যা সরকারের শিল্পায়ন অভিযানের একটি মূল স্তম্ভ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মনোযোগ কেবল বিনিয়োগের পরিমাণের ওপর নয় বরং বিনিয়োগের মান এবং স্থায়িত্বের ওপরও। যদি এই গতি অব্যাহত থাকে এবং সুবিধা প্রদান আরও সুগম হয়, তাহলে আগামী পাঁচ মাসে আরও কার্যকর ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, এই প্রবণতা মহামারী-পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক এবং স্থানীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নতুন করে আস্থা অর্জনের প্রতিফলন ঘটাবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) মতে, প্রস্তাবিত বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ বর্তমানে অনুসন্ধানমূলক বা যথাযথ পরিশ্রমের পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন, প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা এবং প্রাথমিক প্রকল্প পরিকল্পনা।
রোচি বলেন, বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ প্রস্তাব অনুসন্ধানমূলক পর্যায়ে শুরু হয় এবং সঠিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যায়। আরও ২০ শতাংশ প্রস্তাব এখন আনুষ্ঠানিক নথিভুক্তির আগে গভীরভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের উত্তরে এবং স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তার জবাবে বিইজেডএ’র নির্বাহী সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, একটি ইউনিফাইড ইনভেস্টমেন্ট পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মটি বিনিয়োগের অবস্থা, অঞ্চল-নির্দিষ্ট উন্নয়ন, জমির প্রাপ্যতা এবং অনুমোদনের সময়সীমা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একীভূত করবে।
অর্থনীতি
তিউনিশিয়া-মরক্কো থেকে ৬৫ হাজার টন সার কিনবে সরকার

তিউনিশিয়া থেকে ২৫ হাজার টন টিএসপি এবং মরোক্ক থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি করবে সরকার। একই সঙ্গে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ করা হবে। এই সার আমদানি ও বাফার গুদাম নির্মাণে ব্যয় হবে ৬১৭ কোটি ৩২ লাখ ২৪ হাজার ২৫২ টাকা।
মঙ্গলবার (২৬ অগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপিদেষ্টা দেশের বাইরে থেকে বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তিউনিশিয়ার গ্রুপ চিমিক তিউনিসিয়ান ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ২৫ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ১৮৪ কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৬০২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৮৩ কোটি ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৩২০ টাকা। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৭৮১ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার।
এছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ-৪ এর লট-১ (ভোলা ১০ হাজার টন)- এর অধীন একটি সাইটে গোডাউন নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার হাতিরপুলের প্রতিষ্ঠান এম/এস এমবিএল-আরইএল (জেভি)- এর সঙ্গে এই কাজের জন্য চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৪৯ লাখ ১৯ হাজার ৪৩২ টাকা।