ব্যাংক
পাঁচ ব্যাংককে ঋণ গ্যারান্টি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো তুলনামূলক ভালো ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে পারবে, যাদের গ্যারান্টি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো কি পরিমাণ তারল্য সহায়তা নিতে পারবে তা-ও ঠিক করে দেবে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। প্রাথমিকভাবে সমস্যায় থাকা এমন পাঁচটি ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ গ্যারান্টি চুক্তি সই করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে নির্ধারিত মেয়াদে বিশেষ ধার পাবে।
চুক্তিতে সই করা ব্যাংকগুলো হলো- বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে রোববার চার ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে আর গত বৃহস্পতিবার চুক্তি করেছিল ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে। যদিও এখন পর্যন্ত বিশেষ ধার চেয়ে আট ব্যাংক চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, যেসব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, তারা এখন আন্তঃব্যাংক বাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ করে বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে গ্যারান্টির জন্য পাঠাবে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্যারান্টির আওতায় কোন ব্যাংক কত টাকা নিতে পারবে তা বিবেচনা করে অনুমতি দেবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করা হয়। এগুলোসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নামে-বেনামে ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে পাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা। নামে-বেনামে টাকা বের করে নেয়ায় তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে ব্যাংকগুলোতে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরআর ও এসএলআর রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবেও ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। ঋণাত্মক হলেও লেনদেন অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন সাবেক পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। টাকা ছাপিয়ে দেওয়া সেই বিশেষ সুবিধা এখন বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
এ অবস্থায় সাময়িক সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর দুর্বল ব্যাংকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিমান্ড প্রমিসরি (ডিপি) নোট নিয়ে রাখবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
পদত্যাগ করিনি, বৃহস্পতিবার ব্যাংকে যাব: ইসলামী ব্যাংকের এমডি
এমডি পদ থেকে সরে যাওয়ার গুঞ্জনের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে বাসা থেকে অফিস করছি। পদত্যাগ করিনি। আজকেও বাসা থেকে অফিসিয়াল কিছু কাজ করেছি। আগামী বৃহস্পতিবার সশরীরে অফিস করব।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর মুহাম্মদ মনিরুল মওলা অফিস ছাড়তে বাধ্য করা হয় বলে খবর বেরিয়েছে। এরপর থেকেই তিনি অফিসে আসেননি। তখন থেকেই গুঞ্জন শোনা যায় যে, এমডি পদ থেকে সরে গেছেন মনিরুল মওলা।
জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন এমডি হিসেবে নিয়োগ পান মনিরুল। সেই সময়কালেই ব্যাংকটি বড় আকারে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এস আলমকে অনৈতিকভাবে ঋণ পাইয়ে দিতে মনিরুল সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর জেরে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা মনিরুলকে আর এমডি পদে দায়িত্ব পালন করতে দিতে রাজি নন এবং এর জন্যই ১৯ ডিসেম্বর মনিরুলকে ব্যাংক ছাড়তে বাধ্য করা হয়। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও এমডি মনিরুল মওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৯২ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ আছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, উনি মামলার আসামি। সঙ্গত কারণেই উনার পদে থাকার বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে, আমরা জানি, উনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এখন উনি যদি অস্বীকার করেন, তাহলে কিছু করার নেই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
রূপালী ব্যাংকের এমডি হিসেবে ওয়াহিদুল ইসলামের যোগদান
রূপালী ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগদান করেছেন কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) তিনি এ পদে যোগদান করেন।
চলতি মাসের ১২ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৩ বছরের জন্য কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলামকে রূপালী ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। রূপালী ব্যাংকে যোগদানের আগে তিনি সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সোনালী ব্যাংকে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনের আগে কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৮ সালে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির (বিআরসি) মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার হিসেবে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। ২৬ বছরের চাকরি জীবনে তিনি ব্যাংকের বিভিন্ন এডি, নন-এডি ও কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রধান কার্যালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণ ও আন্তর্জাতিক বিভাগ, ট্রেজারি, নিরীক্ষা ও পরিদর্শনসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি এমবিএ ডিগ্রিও অর্জন করেন। তিনি দেশে বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম এক কন্যা সন্তানের জনক। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার মাসুমাবাদ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
সরে যেতে বাধ্য হলেন ইসলামী ব্যাংকের এমডি মনিরুল মওলা
অবশেষে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেন মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। কর্মকর্তাদের বাধার মুখে তিনি গত ১৯ ডিসেম্বর অফিস ছাড়তে বাধ্য হন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
তবে এ নিয়ে মনিরুল মওলার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া দেননি তিনি।
চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগ্রুপ এস আলমের ঋণ জালিয়াতির সহায়তাকারী হিসেবে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা মুহাম্মদ মনিরুল মওলার বিরুদ্ধে নানাভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের তোপের মুখে তিনি সরে যেতে বাধ্য হন। পরে আবারও আগের দায়িত্বে (এমডি) থেকে অফিস শুরু করেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ঋণে অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকে মামলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ব্যাংকের একজন ঊধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এখন অনুপস্থিত আছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে আমরা শুনেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পর্ষদ অবরুদ্ধ
অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। তাদের দাবি সরকার পরিবর্তন হলেও অগ্রণী ব্যাংকের পদোন্নতিতে দুর্নীতি করছে নতুন পর্ষদ।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, বিগত সরকারের আমলে ঋণ জালিয়াতিতে সহায়তাকারী ডিএমডি-জিএমরা এখনও স্ব-পদে বহাল। এমনকি তারা ঋণগুলো নবায়ন ও আদায়ের ক্ষেত্রেও অনৈতিক সুবিধা বাগিয়ে নিচ্ছেন ব্যাংক থেকে। বিষয়গুলো অধস্তন কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে পর্ষদকে অবহিত করলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে পুরো পর্ষদকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন সাধারণ কর্মকর্তারা।
বিষয়টি জানার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবু নাসের বখতিয়ারকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কোনো সারা পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তারা লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ৫ আগষ্ট এ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পরে দেশের পুলিশ, সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্বৈরাচারের সরাসরি সহযোগীদের বিদায় হলেও যে ব্যাংক ও আর্থিক সেক্টরের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকার টাকা পাচার করে দেশকে পঙ্গু করে দিয়েছে। সেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিশেষ করে সরকারি ব্যাংক গুলো হতে শুধুমাত্র চেয়ারম্যান এবং এমডিদের বিদায় দেয়া হয়।
কিন্তু স্বৈরাচারের এইসব চেয়ারম্যান-এমডিদের অনিয়ম, জালিয়াতি এবং অর্থপাচারের সরাসরি সহযোগী ডিএমডি-জিএম এবং কিছু কিছু ডিজিএমরা এখনো বহালতবিয়তে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কেউ কেউ এই সুযোগে নিজেদের রং বদলাতে যা যা করার প্রয়োজন তাই করে যাচ্ছেন।
অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির ব্যতিক্রম নয়। এখানেও স্বৈরাচারের দোসর ডিএমডি-জিএমদের স্ব-পদে রেখেই নতুন চেয়ারম্যান-সিইও নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ব্যাংক নিরীক্ষায় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
দেশের ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সমন্বিত নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার লক্ষ্যে যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বিশেষ বিধান প্রণয়ন করেছে। এই বিধানবলে ব্যাংক কোম্পানি ও ব্যাংকিং নীতিমালার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে, যারা নির্দিষ্ট ব্যাংকে গভীর নিরীক্ষা চালাবে।বাংলাদেশ ব্যাংক আইন অনুযায়ী ‘স্পেশাল রেগুলেশনস অব বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪’ শীর্ষক এই বিধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক বৈঠকে প্রণয়ন করা হয়েছে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দেশের সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই বিধান অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এই বিধানে বলা হয়েছে, ব্যাংকের সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে। সমন্বিত নিরীক্ষার শর্তাবলি এবং এ কাজের জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে যে সম্মানী দেওয়া হবে এবং যে পদ্ধতিতে তা পরিশোধ করা হবে, তা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ তারা যেভাবে সুবিধাজনক মনে করে, সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। তবে এ–সংক্রান্ত শর্তাবলি নির্ধারণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তাদের আলাদা চুক্তি হতে হবে।
সমন্বিত নিরীক্ষা কাজের জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলো যাতে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে তাদের গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য জানায়, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ এই বিধানের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে সাধারণ অনুমতি দিয়েছে।
তফসিলি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সমন্বয় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট বিভাগকে দায়িত্ব দেবে। চুক্তি অনুসারে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর গভর্নর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই প্রতিবেদন পরিচালনা পর্ষদের কাছে পেশ করবেন।
বিশেষ বিধানে সমন্বিত নিরীক্ষার সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে ঝুঁকিভিত্তিক বিস্তারিত নিরীক্ষা করা হবে, যার মধ্যে থাকবে সম্পদের মান পর্যালোচনা, করপোরেট সুশাসন পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং ব্যাংকের নীতি, পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং আইন ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিবিধানের পরিপালন বিষয়ে পর্যালোচনা।
এই বিধান জারি করার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রনমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও দেশের বেশ কিছু ব্যাংক বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে সম্পদের মান, করপোরেট সুশাসন, নীতিমালা এবং আইন ও বিধিবিধানের পরিপালনের ক্ষেত্রে এই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর সাধারণভাবে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি পুরো ব্যাংকিং খাতের বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই বিশেষ বিধান সম্পর্কে জানতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, কিছু ব্যাংক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে নিরীক্ষা করা হবে। এ জন্য এই বিধি প্রনয়ণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, অনিয়মের কারণে সংকটে পড়া কয়েকটি ব্যাংককে জানুয়ারি মাসের শুরুতে নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর আগে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দিয়ে ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান পরীক্ষা করা হবে। শুরুতে ১২টি ব্যাংকে নিরীক্ষা চালানো হবে। ফলে এসব ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসবে।