অর্থনীতি
দাম নির্ধারণের পর বাড়তি দরে ডিম-মুরগি
বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিম, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। তবে দাম নির্ধারণের পরদিনই খুচরা বাজারে পূর্বের তুলনায় আরও বেড়ে গেছে ডিম-মুরগির দাম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের পর ডজনপ্রতি ডিম এবং কেজিপ্রতি মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা পর্যন্ত, যা দুইদিন আগেও ছিল ১৭০ টাকা। বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার মধ্যে, যা পূর্বে ছিল ২৮০ টাকা। এ ছাড়া, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, যা পূর্বেও একই দামে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, যা গত শনিবারের বাজারেও ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা ডজন, যা দুইদিন পূর্বেও ১৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরেই ঢাকার বাজারে ডিমের দাম চড়া ছিল; প্রতি ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। এর মধ্যেই হঠাৎ করে আবার ১৭০ টাকা ডজন হয়ে গেছে, যা গত ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও ডজন ১৫০ টাকার নিচে ছিল।
নাহিদ রানা নামে এক বিক্রেতা বলেন, শুনেছি সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, কিন্তু গতকাল পাইকারি বাজারে কিনতে গিয়ে দেখি উল্টো বেড়ে গেছে। আড়তদাররা বলছে বাজারে ডিমের সংকট আছে।
এর আগে রোববার মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এক চিঠিতে বলা হয়, ডিম খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি চিঠিতে ২০২৪ সালের মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্য (উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে) সঠিকভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মতিউরের এসকে ট্রিমসের কারখানা বন্ধ যে কারণে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আলোচিত সদস্য মতিউর রহমানের পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানি এসকে ট্রিমসের কারখানা সম্প্রতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত শুক্রবার কারখানা বন্ধের বিষয়টি নোটিশ আকারে জারি করে শ্রমিকদের জানিয়ে দেয় কোম্পানিটি।
পাশাপাশি এসকে ট্রিমস শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী গত রোববার বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে তারা। একইসাথে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এসকে ট্রিমস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের নির্দেশে গত ২৫ জুন থেকে কোম্পানিটির সব ব্যাংক হিসাব বন্ধ রয়েছে। এ কারণে রপ্তানিমুখী কারখানাটি বিদেশ থেকে কোনো কাঁচামালও আমদানি করতে পারছে না। ফলে কারখানায় বেশ কিছুদিন ধরে কোনো ধরনের কাজ নেই। কারখানা সচল রাখার মতো অর্থায়নেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় কারখানা বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত জুনে ছেলের ছাগল-কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন মতিউর রহমান। এরপর ২৫ জুন বিএফআইইউ মতিউর রহমান পরিবারের মালিকানাধীন এসকে ট্রিমসের ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়। রপ্তানির সুবিধার্থে পরে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১১ জুলাই থেকে আবার সব ব্যাংক হিসাব বন্ধের নির্দেশ দেয়। এর পর থেকে অর্থসংকটে পড়ে কোম্পানিটি। শেষমেশ কাঁচামাল সংকটে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, লে–অফকালে কারখানার যেসব শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ এক বছরের বেশি হয়েছে, তাঁরা শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবেন।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটিতে মতিউর, তার স্ত্রী ও পুত্র-সন্তান কেউই সরাসরি পরিচালনা পর্ষদের সাথে জড়িত নয়। তবে তাদের প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে এসকে ট্রিমসের ৩০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করেছে মতিউর রহমানের পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের ভাই এম এ কাউয়ুম হাওলাদারের হাতে, তিনি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আর ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের ছেলেমেয়ের মালিকানাধীন কোম্পানি গ্লোবাল ম্যাক্স প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজের হাতে। আর প্রায় ৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীর মালিকানাধীন কোম্পানি গ্লোবাল শুজ–এর নামে। আর বাকি প্রায় ৬৯ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তা চেয়েছে এস আলম গোষ্ঠী
ব্যবসায়িক কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে সরকারের কাছে আর্থিক, আইন ও সামাজিক সহায়তা চেয়েছে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধানকে (বিএফআইইউ) দেওয়া এক চিঠিতে এই সহায়তা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের পর্ষদ এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার পাশাপাশি এই গোষ্ঠীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। ফলে এস আলম গ্রুপ লেনদেন করতে পারছে না এবং ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে তারা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির যেসব হিসাব ছিল, সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে বলে কর্মীদের সময়মতো বেতন-ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। তাতে বিভিন্ন শিল্প এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীটির চিঠিতে বলা হয়, লেনদেন স্থগিত হওয়ায় এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ করতে পারছে না। তাদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির মতো পরিষেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের পক্ষে সরকারের কর, ভ্যাট ও কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
এস আলম গ্রুপের চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, এলসি বা ঋণপত্র জোরপূর্বক বাতিল করা হচ্ছে। এর মধ্যে খাদ্য ও সহায়ক অন্যান্য পণ্যের এলসিও আছে। এস আলম গ্রুপ মনে করছে, এর ফলে দেশে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের সংকট হতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির বেচাবিক্রি কমে যাচ্ছে। পরিণামে ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো অনেক শ্রমিক কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এই বিষয়টি তারা বিশেষভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এনেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা পেয়েছে, তাদের অন্যতম ছিল এস আলম গ্রুপ। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ও রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয়ে গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবার গত এক দশকে ব্যাংক দখলসহ নানা ধরনের আর্থিক অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে নামে-বেনামে অর্থ বের করে তা পাচার করা হয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বুধবার বিশ্বের আর্থিক খাতগুলো তাকিয়ে থাকবে মার্কিন ফেডের দিকে
পুরো বিশ্বের আর্থিক খাত এখন তাকিয়ে আছে ফেডারেল রিজার্ভের দিকে। সুদের হার কমানোর বিষয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী বুধবার কী সিদ্ধান্ত নেয়, নজর সেদিকেই। এই বহুল প্রত্যাশিত পদক্ষেপ শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, তার প্রভাব থাকবে পৃথিবীজুড়েই। এমনকি ডলার তেজি থাকবে, নাকি তা তেজ হারাবে, তা–ও নির্ভর করবে ফেডের সিদ্ধান্তের ওপর।
মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে ফেড দীর্ঘ সময় ধরে নীতি সুদহার বাড়িয়েই চলছিল। অনেক বছরের মধ্যে এখন তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছরের মধ্যে নেওয়া প্রথম পদক্ষেপে সুদের হার কতটা কমানো হবে, তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে চলতি বছরের শেষে রয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি বাড়তি উদ্বেগের বিষয়।
সোসাইটি জেনারেলের এফএক্স অ্যান্ড রেটস বিভাগের করপোরেট গবেষণা বিষয়ক প্রধান কেনেথ ব্রো বলেন, ‘আমরা জানি না এই ধারা কেমন হবে। এটি কি ১৯৯৫ সালের মতো হবে, যখন ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট করে হার কমানো হচ্ছিল। নাকি এটা ২০০৭–০৮ সালের মতো হবে, যখন ৫০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো হয়েছিল।’
দেখা যাক বিশ্বের আর্থিক বাজারে প্রত্যাশা কী:
১. নেতৃত্বকে অনুসরণ করা
গত বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ছিল। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তখন এই প্রশ্ন ছিল যে ফেড যদি নীতি সুদ না কমায়, তাহলে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিংবা ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার কতটা কমাতে পারবে। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র যে সুদের হার কমাচ্ছে, তা দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে এখন স্বস্তি দেবে।
ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে যাচ্ছে বলে বাজারে যে আশাবাদ তৈরি হয়েছে, তা ইতিমধ্যে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নীতি সুদ কমাতে উৎসাহিত করেছে। তবে ইউরোপে ফেডের তুলনায় সুদের হার হ্রাস কম হবে। কারণ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক অব ইল্যান্ড মূল্যস্ফীতির বিষয়ে সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছে।
বন্ড বাজারের জন্যও নীতিসুদ কমানো আশীর্বাদ হতে পারে। ২০২৩ সাল শেষের পর এই প্রথম বারের মতো মার্কিন, জার্মান ও ব্রিটিশ সরকারি বন্ডের বিপরীতে সুদ আয় কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২. স্বস্তির জায়গা
উদীয়মান দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য মার্কিন সুদের হার কমানোর বিষয়টি বেশ স্বস্তির ব্যাপার হবে। এর ফলে তারা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির জন্য আরও বেশি সমর্থন জোগাতে পারবে। রয়টার্স যে ১৮টি উদীয়মান দেশের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছে, তাদের অর্ধেকই এরই মধ্যে সুদের হার কমাতে শুরু করেছে। তারা এই কাজ করছে ফেডের পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনিশ্চয়তার বিষয়টিও তাদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে রয়েছে। বিএনপি পারিবাসের কর্মকর্তা ট্রাং নগুয়েন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হবে। রাজস্ব নীতির যে ভিন্নতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তা সুদের হার কমানোর এই কালচক্রকে জটিল করে তুলেছে।
৩. ডলারের শক্তিক্ষয়
যেসব দেশ আশা করছে যে মার্কিন নীতিসুদ কমানোর ফলে ডলারের শক্তি কমবে এবং তাদের মুদ্রা শক্তিশালী হবে, তাদের সেই আশা পূরণ না–ও হতে পারে। বিনিয়োগ ব্যাংক জে পি মর্গান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে ফেডের সুদের হার কমানোর সর্বশেষ চার কালচক্রের তিনটির ক্ষেত্রেই প্রথম দফায় ডলার শক্তিশালী হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহার কমানো অন্যদের জন্য কতটা আপেক্ষিক, তার ওপর ডলারের দামের বিষয়টি নির্ভর করবে। ডলার যদি সত্যিই কম আয়ের মুদ্রা না হয়ে ওঠে, তাহলে অ–মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে এর আবেদন থেকেই যাবে।
তবে এশিয়ার অনেক দেশ মার্কিনদের আগেই সুদের হার কমিয়েছে। এর ফলে জুলাই ও আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার ওন, থাইল্যান্ডের বাথ ও মালয়েশিয়ার রিঙ্গিতের দাম বেড়েছে। আর ডলারের বিপরীতে চীনের ইউয়ানের দাম বছরজুড়ে যতটা কমেছিল, সেই ঘাটতি ওই সময়ে পূরণ হয়ে যায়।
৪. ইকুইটির অগ্রযাত্রা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকার কারণে অর্থ বিনিয়োগ হোঁচট খেয়েছিল। মার্কিন সুদহার কমলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হবে, ফলে ইকুইটি বিনিয়োগ আবার বাড়তে পারে। আগস্টে দুর্বল মার্কিন কর্মসংস্থান পরিসংখ্যান প্রকাশের পরের তিন দিনে বিশ্বে শেয়ারবাজারের ৬ শতাংশ পতন হয়েছিল।
৫. উজ্জ্বল দিন
ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমালে মূল্যবান ও মৌলিক ধাতু সুবিধা পেতে পারে। কম সুদের হার ও দুর্বল ডলার বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধাতু কিনতে উৎসাহিত করতে পারে। স্বর্ণের মতো মূল্যবান ধাতুর দাম বাড়তে পারে। দেখা গেছে বন্ড থেকে আয় কমে গেলে এর দাম বাড়ে, কারণ বিনিয়োগকারীরা সোনা কেনেন।
সোনার দাম এখন রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের জন রিড বলেন, বিনিয়োগকারীদের সোনা কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনাও কোটিপতি
আলোচিত এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের গৃহকর্মী মর্জিনা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টাকার সন্ধান মিলেছে। এসব টাকার মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে মোট ২২টি ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) রয়েছে। যার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১০ হাজার টাকা। আর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে আছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের সম্পদের হিসাব খুঁজতে গিয়ে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। একটি সরকারি সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, মর্জিনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর তথ্য পেতে এই অনুসন্ধানটি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মর্জিনার আরো কিছু অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে, যেখানে তার অর্থের সন্ধান মিলতে পারে।
নথি অনুযায়ী, মর্জিনার নামে চট্টগ্রামের দুটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে খোলা একটি অ্যাকাউন্টে ২২টি এফডি থাকার তথ্য রয়েছে। চট্টগ্রামের ইসলামী ব্যাংক পাঁচলাইশ শাখায় মর্জিনা আক্তারের নামে ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে ২২টি ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে, যা মোট ১ কোটি ১০ হাজার টাকার সমান। এছাড়া, প্রবর্তক মোড়ের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শাখায় তার নামে রয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে, এই গৃহকর্মীর দুটি ব্যাংকে মোট ২ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
দুটি অ্যাকাউন্টে এত অর্থ জমা থাকা বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
মর্জিনা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, তার স্বামী সাদ্দাম হোসেন জানিয়েছেন, এস আলমের মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন মর্জিনা। তিনি বলেন, এই টাকার মধ্যে বেশিরভাগই ইসলামী ব্যাংকের যাকাত ফান্ডের এবং আমাদের সঞ্চিত অর্থ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখলে মালিক-শ্রমিক দুই পক্ষেরই ক্ষতি: বিজিএমইএ
ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখলে মালিকেরও লস (ক্ষতি), শ্রমিকেরও লস। আমাদের কারখানা চালু রেখে যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের দিকে এগোতে হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বিকেএমইএর ভবনে সংগঠনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় একথা বলেন তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সারা পৃথিবীতে বর্তমান সরকার প্রধান গ্রহণযোগ্য। তিনি সারা বিশ্বে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিকে প্রোমোট করতে পারবেন। আমরা যখন তার সাথে দেখা করতে গিয়েছি, তিনি বলেছেন তোমরা কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাও। আমি বাংলাদেশের গার্মেন্টসের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে সারাবিশ্বে কাজ করবো।
তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষের জন্য সুযোগ এসেছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ অনেক বড় বড় ব্র্যান্ডের সাথে ড. ইউনুসের সুসম্পর্ক। অনেক শর্ট ডেলিভারি আমরা এবার মিস করেছি। অনেক বায়ার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকায় তাদের অর্ডার সরিয়ে নিয়েছে। আরও দুই-তিনটি বড় ফ্যাক্টরি ইতোমধ্যে অনেকদিন ধরে বন্ধ। সেই ফ্যাক্টরিগুলোর শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ হাজার। অনেক মালিক দেখছে, লাভ করছে এবং ব্যয় বাড়ছে। এমন অবস্থায় যখন ব্যয় আয়ের চেয়ে বেশি হয়ে যায় তখন আর ফ্যাক্টরি চালানো সম্ভব হয় না। এই সংকটের সময় আমরা যদি একসাথে কাজ না করি ও বায়ারদের একটি মেসেজ দিতে না পারি তাহলে ভবিষ্যতে আরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
খন্দকার রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করছে। আমরা মনে করি একটি ফ্যাক্টরিকে শ্রম আইন অনুযায়ী চলতে হবে। আমরা উভয় পক্ষ যেন শ্রম আইন অনুযায়ী চলি সেটাই আমাদের কামনা।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, সেনাবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ জেলার কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আতিক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুজ্জামান প্রমুখ।
কাফি