অর্থনীতি
‘জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে বড় বাধা চোরাকারবারি’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হলে স্বর্ণের চোরাকারবারসহ জুয়েলারি শিল্পের জন্য যেসব বাধা আছে সেগুলো দূর করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে বা একে সামনে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে স্বর্ণের চোরাচালান বা চোরাকারবার। চোরাকারবারিরা স্বর্ণের চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে। চোরাকারবার বন্ধ হলে চাহিদা বাড়বে এবং শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে অচিরেই জুয়েলারি পণ্য রপ্তানি হবে৷
শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা’র (আইসিসিবি) পুষ্পগুচ্ছে হলে প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪’র সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাজুসের মুখপাত্র ও সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার রায়, সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু, রিপনুল হাসান, মাসুদুর রহমান, গুলজার আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ফিতা কেটে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
অনুষ্ঠানে ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে আমি এই প্রদশর্নীতে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা আগামীতে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমরা আর বিদেশি অলংকার বিক্রি করবো না। দেশে ছোট-বড়-মাঝারি শিল্প গড়ে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি বাড়াবো। দ্রুতই বিশ্ববাজারে আমাদের দেশেই তৈরি অলংকার নিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, আমাদের এই জুয়েরারি শিল্প বাঁকে বাঁকে এগিয়েছে। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আমরা আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের শেষপ্রান্তে চলে এসেছি। এই জুয়েলারি শিল্পের দুটি সমস্যা যা আমাদের পেছনের দিকে টানছে। প্রথমত চোরাকারবারি, যা একটি প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমরা এই প্রদশর্নী থেকে প্রতিজ্ঞা নিতে চাই দেশে আর কোনো চোরাকারবারির প্রশ্রয় দেবো না। বাজুস এর প্রতিবাদ করছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো একটি বাজার ও শিল্পকে ধ্বংস করছে এই অবৈধ পথ। সেটা আমাদের বন্ধ করতে হবে, তা না হলে আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে এই শিল্প করছি সবকিছু পণ্ড হয়ে যাবে।
বাজুসের মুখপাত্র বলেন, আমাদের দ্বিতীয় বাধাটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চান। কিন্তু প্রশাসনের দিক থেকে একটু কার্পণ্য লক্ষ্য করছি। আইনগত বিষয় নিয়ে আমদানি রপ্তানিতে ভ্যাট, ট্যাক্স ও উৎসে করের নামে নতুন করে যে আরেকটি কর আরোপিত হতে যাচ্ছে, এসব কিছুকে আমরা রুখে দিয়ে প্রশাসনকে বলতে চাই, স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে স্বর্ণ চোরাকারবারিসহ এই শিল্পের জন্য বাধাগ্রস্ত করে যে বিষয়গুলো রয়েছে- সবকিছু দূর করে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবো। জুয়েলারি শিল্প বিশ্ববাজারে সমাদৃত হবে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলবো, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বাজুসের সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু বলেন, প্রথমবারের মতো এই প্রদশর্নী আয়োজন করা হয়েছে। আগামীতে আমরা আরও বড় পরিসরে করবো। এই প্রদশর্নীর মাধ্যমে আমরা অনেক মেশিনারির সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। এই শিল্প বড় করতে সবচেয়ে বড় বাধা সোনা চোরাচালান বা চোরাকারবারি। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা কখনো এর সঙ্গে জড়িত নন। চোরাকারবারি যারা তাদের পরিচয় তারা চোরাকারবারি। আর যারা ব্যবসায়ী, আমরা সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দেই, তাদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের যেন মিশিয়ে না দেওয়া হয়। এ খাতের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বক্তারা বলেন, আমরা ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হতে চাই। আর যারা চোরাকারবারি তারা চোরাকারবারি হিসেবেই থাকবে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া প্রদশর্নীতে মেশিনারিজ নিয়ে এলে ভালো হতো। এতে করে এ শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখেশুনে মেশিনারিজ কিনতে পারবেন। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি।
দেশে নতুন জুয়েলারি কারখানা স্থাপন ও পুরাতন কারখানাগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন এবং রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের ঐতিহ্যবাহী ও পণ্যভিত্তিক সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন বাজুস ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেস যৌথভাবে এ প্রদশর্নীর আয়োজন করে। প্রদশর্নীর প্রতিপাদ্য ‘গহনায় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়া’।
প্রথম আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ১০ দেশের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ভারতরেই ৮টি প্রতিষ্ঠানঅংশ নিয়েছে।

অর্থনীতি
আরেক দফা বাড়লো স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। এতে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর করা হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেই রেকর্ড ভেঙে গেলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনার দাম ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৯৬ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৪৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭৭ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮৩১ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৩৫১ টাকা।
এর আগে গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়ে আজ সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনার দাম ৪ হাজার ৬১৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৪ হাজার ৪০৯ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৬৭৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম ৩ হাজার ২১৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকা। আজ মঙ্গলবার এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২০৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৯১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ৩ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
১৩ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৫ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা

চলতি অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে দেশে এসেছে প্রায় ১২৭ কোটি (১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৯২ কোটি টাকার প্রবাসী আয়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এ বছরের অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৭ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০০ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৮৮৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-১৩ অক্টোবর ২০২৪) রেমিট্যান্স এসেছিল ৭৫৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ছিল যথাক্রমে—জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
একক কোনো মাস হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চে রেমিট্যান্স প্রবাহ সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল, যা ছিল ওই অর্থবছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের (২০২৩-২৪) অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ওই অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স ছিল—জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি, আগস্টে ২২২.১৩ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯.৫০ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি, মার্চে ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি, মে মাসে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
অর্থনীতি
১১৫ টাকা কেজি দরে ১৫ হাজার টন চিনি কিনছে সরকার

দরপত্র ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১১৫ টাকা ৫৮ পয়সা দরে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) থেকে এ চিনি কিনতে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১৫ হাজার মেট্রিক টন আখের সাদা চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) থেকে এ চিনি সংগ্রহে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১১৫ টাকা ৫৮ পয়সা।
এদিকে বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (চতুর্থ সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের ডব্লিউ-২৩ প্যাকেজের আওতায় নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ রাইস সাইলোর নির্মাণকাজের প্রথম ও চূড়ান্ত ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৮ টাকা। ভেরিয়েশনে প্রকল্পটির ৪ কোটি ২৩ লাখ ৬৮০ টাকা কমানোর ফলে সংশোধিত চুক্তিমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ৯৩০ টাকা। যৌথভাবে এ প্রকল্পের কাজ করছে বাংলাদেশের কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্য জিএসআই গ্রুপ এলএলসি।
অর্থনীতি
৭২২ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তিতে কানাডা, মরক্কো এবং উন্মুক্ত পদ্ধতিতে সৌদি আরব ও কাফকো থেকে এক লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৭২২ কোটি ১৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০ টাকা। এর মধ্যে ৭০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি, ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে ভার্চ্যুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন (সিসিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)’র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৯বম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
কানাডা থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৫৬.২৫ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)’র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৮ম (ঐচ্ছিক-১ম) লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মরক্কো থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ২৪০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৫৬৮.৬৭ মার্কিন ডলার।
এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের সাবিক কৃষি-পুষ্টি কোম্পানি থেকে ৪র্থ লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সৌদি আরব থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১৫৫ কোটি ৪৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৪২২.৬৬ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ-এর কাছ থেকে ৬ষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
কাফকো থেকে এই সার কিনতে ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৯০.৭৫ মার্কিন ডলার।
অর্থনীতি
সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর পূর্বাচলে এক অনুষ্ঠানে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানো ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
এদিকে, গতকাল (সোমবার) বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া প্রতি লিটার পাম ওয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ টাকা করে। ৩ টাকা বাড়নো হয়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দাম।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গত আগস্টে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ব্যবসায়ীরা ১০ টাকা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের মাত্র এক টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হন এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গনমাধ্যমকে জানাননি।
নতুন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ঠিক পরের দিন উপদেষ্টা জানালেন, তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। অর্থাৎ, বাজারে তেলের দাম বাড়নোর প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি।
কাফি