অন্যান্য
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় বাংলাদেশের আজিজ খান

২০২৪ সালের বার্ষিক বিলিয়নিয়ারের তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস ম্যাগাজিন। শীর্ষ দশে কিছুটা রদবদল হলেও ঘুরেফিরে কার্যত একই ব্যক্তিদের নাম এসেছে। তবে এই তালিকায় কিছু চমকও রয়েছে।
ফোর্বসের বিলিয়নিয়ারের তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান। সম্পদের হিসাবে বৈশ্বিক তালিকায় অবশ্য অনেক পেছনে রয়েছেন তিনি। ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় ৬৯ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ী রয়েছেন ২ হাজার ৫৪৫তম স্থানে।
আজিজ খানের মোট সম্পদের পরিমাণ বলা হয়েছে ১১০ কোটি মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
জ্বালানি, বন্দর, ফাইবার অপটিকস এবং রিয়েল এস্টেটসের ব্যবসা রয়েছে তার মালিকানাধীন সামিট গ্রুপের। আজিজ খান বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বসবাস করেন। ছোট্ট দেশটির শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় তার নাম রয়েছে।
ফোর্বসের হিসাবে, বিশ্বে মোট বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ২ হাজার ৭৮১ জন, যা গত বছরের তুলনায় ১৪১ জন বেশি। তাদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৪ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের তুলনায় দুই ট্রিলিয়ন ডলার বেশি।
তবে অধিকাংশ সম্পদই শীর্ষ ২০ জনের দখলে। ২০২৩ সালের পর তারা সমন্বিতভাবে ৭০০ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছেন।
বিলিয়নিয়ারের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ৮১৩ জন স্থান পেয়েছেন, তাদের সমন্বিত সম্পত্তির পরিমাণ ৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার।
৪৭৩ জন নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন। দেশটির বিলিয়নিয়ারদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার।
২০০ জন বিলিয়নিয়ার নিয়ে তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। তাদের সমন্বিত সম্পত্তির পরিমাণ ৯৫৪ বিলিয়ন ডলার।
এককভাবে ২৩৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি নিয়ে ধনীদের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছেন ফরাসি ব্যবসায়ী ও এলভিএমএইচের সিইও বার্নার্ড আর্নল্ট। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৯৫ বিলিয়ন ডলার।
তৃতীয় হয়েছেন অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস, চতুর্থ মেটা সিইও মার্ক জুকারবার্গ, পঞ্চম ওরাকলের ল্যারি এলিসন, ষষ্ঠ বার্কশায়ার হাথওয়ের ওয়ারেন বাফেট, সপ্তম মাইক্রোসফটের বিল গেটস, অষ্টম মাইক্রোসফটের স্টিভ বালমার, নবম রিলায়েন্স গ্রুপের মুকেশ আম্বানি এবং ১০ম স্থানে রয়েছেন গুগলের সাবেক সিইও ল্যারি পেজ।
প্রথমবারের মতো বিলিয়নিয়ারের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন মার্কিন সংগীতশিল্পী টেইলর সুইফট। এক ট্যুরেই তিনি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাস ভেঙে কামিয়েছেন প্রায় ১০০ কোটি ডলার। পোলস্টারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে চলা এরাস ট্যুরের প্রথম ৬০টি শো থেকেই আয় হয়েছে ১০৪ কোটি ডলার। এই ট্যুরের ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা মহাদেশের শো এখনো বাকি।
এশিয়ার প্রথম ব্যবসায়ী হিসেবে ১০ হাজার কোটি ডলারের ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন ভারতের মুকেশ আম্বানি। রিলায়েন্স গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের আওতায় নানা ধরনের ব্যবসা থেকে এই অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। আম্বানির সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১১ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য
গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইন প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্ত মত প্রকাশের গুরুত্ব

একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হলো নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করা। সুইডেন একটি গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে জনগণের অধিকার সংরক্ষিত, তারা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদেরও প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে পারে, প্রশ্ন তুলতে পারে এবং সরকারি নীতির জবাবদিহিতা দাবি করতে পারে। জনগণের এই অধিকারই একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের পরিচয় বহন করে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যখন আমরা গণতন্ত্রের চর্চার কথা বলি, তখন দেখা যায় যে, সেখানে এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানো হয়, সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয় না, এবং দেশকে এক ধরনের পারিবারিক শাসনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, আইনের শাসন, জনগণের মৌলিক অধিকার, এবং গণতন্ত্রের সর্বোত্তম অনুশীলন নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশেও সুইডেনের মতো উন্মুক্ত আলোচনা ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারে।
এবার সুইডেনে বর্তমান সংকট ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা যাক
‘দেশীয় সন্ত্রাসবাদ’ মোকাবিলার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ঘোষণা করুন
সরকার ও সুইডিশ ডেমোক্র্যাট (Sverigedemokraterna – SD) দল থেকে অপরাধ মোকাবিলায় খালি কথা ও প্রতীকী রাজনীতি আর সহ্য করা যাবে না। এখন প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন (Ulf Kristersson) – যিনি মোডারেট পার্টির (Moderata samlingspartiet – M) নেতা, তাকে স্পষ্ট করতে হবে যে, “দেশীয় সন্ত্রাসবাদ” মোকাবিলা করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, লিখেছেন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (Socialdemokraterna – S) দলের প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
আজকের সুইডেনে, ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মাফিয়া গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা ঠান্ডা মাথায় তাদের শত্রুদের হত্যা করছে, সাধারণ মানুষের বসতবাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে, এবং দোকান ও ভবন লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালাচ্ছে। মাত্র ২৮ দিনে দেশে ৩২টি বিস্ফোরণ ঘটেছে, যার বেশিরভাগই রাজধানী স্টকহোমে।
১৩-১৪ বছর বয়সী শিশুদের, যাদের বেশিরভাগই অভিবাসী পটভূমি থেকে এসেছে এবং যারা সুইডেনে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের আশা হারিয়ে ফেলেছে, তারা গ্যাংস্টার ও মাফিয়াদের হাতে ঘাতকের ভূমিকায় পরিণত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী করছে? গত দুই বছরে, তারা শুধুই একের পর এক হাস্যকর সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে এবং নিজেদের গৃহীত ‘শক্তিশালী’ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। কিন্তু বাস্তবে, হত্যা ও বিস্ফোরণের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে এবং নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতাও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন যখন এই পরিস্থিতিকে ‘দেশীয় সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যা দেন, তখন ধরে নেওয়া যায় যে তিনি তার কথার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন। তাহলে, তিনি কি নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চান?
• গ্যাং সদস্যদের “সন্ত্রাসী” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা?
• সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রয়োগ করা, যার ফলে সমাজ ও নাগরিকদের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে?
• বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই অ-নাগরিকদের নির্বাসিত করা?
• বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের জন্য আজীবনের জন্য সুইডেনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা?
• পুলিশের মধ্যে একটি বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট গঠন করা, যা শুধুমাত্র গ্যাং সংক্রান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য দায়ী থাকবে?
• সন্ত্রাস মোকাবিলায় অভিজ্ঞ দেশগুলোর (যেমন জার্মানি, ইতালি, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড) সঙ্গে সহযোগিতা ও শিক্ষা বিনিময় বৃদ্ধি করা?
প্রধানমন্ত্রী কি এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে চান? এই ধরনের পদক্ষেপ কি আইনের শাসনের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য? এটি কি মাফিয়া ও সহিংসতা দমনের কার্যকর সমাধান?
সরকার ও SD দল, খালি প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট হয়েছে, প্রতীকী রাজনীতিও আর চলবে না। আপনারা গ্যাং অপরাধ দমন ও সহিংসতা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন স্পষ্টভাবে বলুন—আপনারা কীভাবে তা বাস্তবায়ন করবেন?
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার একটি গ্রহণযোগ্য উদাহরণ
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, জনগণের ভোটাধিকার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্ব গণতন্ত্রের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামের পর, দক্ষিণ আফ্রিকা যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে, তখন তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
সরকারের সমালোচনা করার অধিকার নিশ্চিত করা হয়, যাতে জনগণ তাদের দাবি সঠিকভাবে জানাতে পারে এবং রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে।
সুইডেন ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য এই উদাহরণ গুরুত্বপূর্ণ। সুইডেনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে, কিন্তু সরকার এখনো গ্যাং সহিংসতা দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চার সীমাবদ্ধতা জনগণের কণ্ঠরোধ করছে, যা শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবও সৃষ্টি করছে।
তাই, একটি কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে, সরকারকে অবশ্যই জনগণের মতামত গ্রহণ করতে হবে, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নীতি প্রণয়ন করতে হবে এবং সর্বস্তরে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু আইন প্রণয়ন করলেই যথেষ্ট নয়, আইনের যথাযথ প্রয়োগ, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং জনগণের অধিকার সংরক্ষণই প্রকৃত গণতন্ত্রের ভিত্তি।
এটি শুধু রাজনৈতিক লড়াই নয়, বরং একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সংগ্রাম। যখন নাগরিকদের কণ্ঠরোধ করা হয়, তখন কেবল গণতন্ত্র নয়, বরং একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও জনগণের মৌলিক অধিকারও হুমকির মুখে পড়ে। শুধুমাত্র শক্তিশালী আইন নয়, বরং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চাই একটি সমাজকে সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতা, দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্ত করতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য বাস্তবসম্মত প্রস্তাব
বাংলাদেশে সুইডেনের মতো গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠা এবং আইনের শাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব, তবে এটি অর্জন করতে হলে সুনির্দিষ্ট কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন:
✅ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, যেখানে সাংবাদিকরা নির্ভয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারবে এবং সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে পারবে, যা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে।
✅ বিচারব্যবস্থাকে আরও স্বাধীন ও শক্তিশালী করা, যাতে বিচারপ্রক্রিয়া কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া সঠিকভাবে পরিচালিত হয় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
✅ সরকারের কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বিশেষ করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, সুশাসন এবং সরকারি নীতিনির্ধারণে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানো।
✅ বিরোধী মতের প্রতি সহনশীলতা বৃদ্ধি করা, যাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক গোষ্ঠী নির্বিঘ্নে তাদের মত প্রকাশ করতে পারে এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ গড়ে ওঠে।
✅ শিক্ষাব্যবস্থায় গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গণতন্ত্রের মূল্যবোধ বুঝতে পারে এবং সক্রিয়ভাবে নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে পারে।
এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশকে শুধু একটি কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে না, বরং সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
গণতন্ত্র কেবল একটি শাসনব্যবস্থা নয়, এটি একটি মূল্যবোধ, যা জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে। তাই, একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের জন্য শুধু সরকার নয়, জনগণকেও সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাতিসংঘ: আন্তোনিও গুতেরেস

বাংলাদেশের বর্তমান সংস্কার ও পরিবর্তনে জাতিসংঘ সবসময় পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এক্স বার্তায় তিনি বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বাংলাদেশের জনগণকে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংস্কার ও রূপান্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতিসংঘ সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবে।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছান গুতেরেস। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।
আজ শুক্রবার সকালে প্রথমে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পরে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর সকাল ১০টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পৌঁছান তিনি। সেখানে ড. ইউনূসের সঙ্গে তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তারা। সেখানে অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেবেন। প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন তারা।
এদিকে, আগামীকাল জাতিসংঘ মহাসচিব সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
প্রসঙ্গত, পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিও গুতেরেস কূটনীতিক হিসেবেও অভিজ্ঞ। জাতিসংঘ মহাসচিব নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান ছিলেন। ওই সময়েও তিনি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
আজ একই ফ্লাইটে কক্সবাজার যাচ্ছেন ড. ইউনূস ও গুতেরেস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। একই ফ্লাইটে তারা কক্সবাজার যাবেন। সফরকালে দিনভর উভয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে ব্যস্ত সময় কাটাবেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমদ।
দুদিন আগে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছিলেন, কক্সবাজার থেকে জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন যাবেন এবং বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন। প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্যে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
ধর্ষণের শিকার শিশুটি এখনো লাইফ সাপোর্টে: আইএসপিআর

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি এখনো ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সেখানে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১০ মার্চ) রাতে আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, গত ৮ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় মাগুরা সদর উপজেলায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটি সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন অবস্থায় সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে ভর্তি হয়। এ সময় শিশুটি সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থায় ছিল। এই সময় তার রক্তচাপ ১২০/৭০ মি.মি. (কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ), হৃদ স্পন্দন ১১৮/মিনিট, অক্সিজেনের মাত্রা ৯৬ শতাংশ পাওয়া যায়।
শিশুটির গলার সামনের দিকে গভীর ক্ষত এবং শরীরের অন্যান্য স্পর্শকাতর স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। রোগীর যথাযথ অবস্থার নিরূপণ এবং সঠিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট, চিফ সার্জন জেনারেল, শিশু বিভাগের উপদেষ্টা ও বিভাগীয় প্রধান, স্ত্রী ও ধাত্রী বিদ্যা বিভাগের উপদেষ্টা ও বিভাগীয় প্রধান, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের উপদেষ্টা ও বিভাগীয় প্রধান, শিশু সার্জারি বিভাগের উপদেষ্টা ও বিভাগীয় প্রধান, সিনিয়র অবেদনবিদ্যা বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র শিশু নিউরোলজিস্টের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা করে যথাযথ চিকিৎসা শুরু করা হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, পরীক্ষায় শিশুটির নিউমোথ্রোক্স (আরটি), এআরডিএস ও ডিফিউজ সেরিব্রাল ইডমা ধরা পড়ে এবং একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা হয়। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে শিশুটি লাইফ সাপোর্টে আছে।
গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) গত বুধবার ঘটে যাওয়া ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তাকে আসামি করে এই মামলা করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত গানম্যান আশিকুর রহমান।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগের পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। শেরে বাংলা নগর থানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মামলার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭), নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিরাসহ আরও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশের মাধ্যমে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করেন। এরই মধ্যে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিরা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন, সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।
এর আগে, গত বুধবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংস্থাটির কর্মকর্তা- কর্মচারীরা চার দফা দাবিতে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় চেয়ারম্যানসহ পুরো কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। ফলে গতকাল কার্যত অচল ছিল বিএসইসি।
এদিকে গতকাল সকালে অর্থ উপদেষ্টা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কাছে পুরো পরিস্থিতি তুলে ধরেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার। ওই দিনই সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কঠোর বার্তা নিয়ে বেলা তিনটার পর যৌথ বাহিনীর কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীতে কার্যালয়ে ফেরেন চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনার। এরপর চেয়ারম্যানের গানম্যান বুধবারের ঘটনায় থানায় মামলা করেন।
এসএম