অর্থনীতি
পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারেন না সাড়ে ১২ কোটি মানুষ

দেশে পণ্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে যাবতীয় ব্যয় বহন শেষে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারছেন না ১২ কোটি ৫২ লাখ মানুষ। গত ২০২১ সালে করা বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
গতকাল শনিবার সিপিডির নিজস্ব কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিবারের মতো আগামী অর্থবছরেও সরকার একটি গতানুগতিক বাজেট দিতে যাচ্ছে।
কিন্তু অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে হলে বাজেটে কাঠামোগত সংস্কার ও মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই আগামী বাজেটে মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার, রাজস্ব আয় বাড়ানো, সরকারের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে মধ্যমেয়াদি সংস্কার এবং সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্ব আরও বাড়ানো।
মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বব্যাংকের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং টুফটস ইউনিভার্সিটি ২০২১ সালে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের ১২ কোটি ৫২ লাখ মানুষ পণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে পারছে না। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটি আরও বিশাল হবে। সিপিডি বলছে, নানা কারণে খাদ্যের দাম বাড়ছে।
এরমধ্যে রয়েছে-বাজারের বিভিন্ন কারসাজি, কিছু শক্তিশালী কোম্পানির বাজারে আধিপত্য এবং সরকারের প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণের অভাব। সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়েছে। এরমধ্যে রয়েছে-মসুর ডাল, পেঁয়াজ, ছোলা, বেসন, ভোজ্যতেল, চিনি, আলু, মাংস, কাঁচামরিচ, চিড়া, মুড়ি, খেজুর এবং বেগুনসহ রমজানকেন্দ্রিক পণ্য। প্রতিবছরই রমজানে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এখানে সফলতা খুব কমই আসে।
মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বড় ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষের জীবনযাত্রা সংকটে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। সিপিডি বলেছে, ১০ থেকে ১১ বছর ধরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আহরণে বড় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও এই ঘাটতি থাকবে। বছর শেষে তা ৮২ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। তারা আরও বলেছে, সরকারের বাজেট ঘাটতি কমেছে ঠিক, কিন্তু ঘাটতি নিরসনে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। বছরজুড়ে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে। এছাড়া রপ্তানি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, প্রবাসী আয়, বিদেশি বিনিয়োগসহ বহিঃস্থ খাতের প্রায় সব সূচকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অর্থনীতি এখন বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এরমধ্যে রাজস্ব আহরণ ও বাজেট বাস্তবায়নে শ্লথগতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকে তারল্যের সংকট, রপ্তানি, প্রবাসী আয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় আগামী বাজেট প্রণয়নে তিনটি বিষয়কে মূল লক্ষ্য নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি। প্রথমত, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া, দ্বিতীয়ত, রাজস্ব আহরণ বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া, যাতে ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রাজস্ব আয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয় করা যায় এবং তৃতীয়ত, দক্ষতার সঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি ব্যয় করা, যাতে অর্থের অপচয় না হয়।
সংস্থাটির মতে, শেয়ারবাজারের বাইরে থাকা কোম্পানির কর সাড়ে ৭ শতাংশ বেশি হওয়া উচিত। না হলে কোম্পানিগুলো বাজারে আসতে চাইবে না। এছাড়াও ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে কর প্রত্যাহার এবং মোটরসাইকেলের মালিকদের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব করে সিপিডি। এক্ষেত্রে ১০০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেলের কর দেড় হাজার টাকা, ১০১ থেকে ১৫০ সিসি ৩ হাজার এবং ১৫০ সিসির উপরে মোটরসাইকেলের জন্য ৫ হাজার টাকা অগ্রীম আয়করের প্রস্তাব করা হয়।
অর্থসংবাদ/এমআই

অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৬.১৫ বিলিয়ন ডলার

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রোববার (১৫ জুন) পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬১৫ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্দেশিত হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৮৬ কোটি ৩৮ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৭ মে পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল প্রায় ২ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার বা ২৫.৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্দেশিত হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৬ কোটি ২২ লাখ ডলার বা ২০.৫৬ বিলিয়ন ডলার।
তার আগে গত ২২ মে পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার বা ২৫.৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার বা ২০.২৭ বিলিয়ন ডলার।
দেশের নিট (প্রকৃত রিজার্ভ) রিজার্ভ নির্ধারণ করা হয় বিপিএম৬ মানদণ্ড অনুসারে। যেখানে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিয়ে প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ নিরূপণ করা হয়।
এদিকে চলতি জুন মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ১১৫ কোটি (১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে জুন মাসের ১৪ দিন পর্যন্ত মোট ২৮ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৮৬৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যা তার আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৩০২ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স।
অর্থনীতি
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৪ হাজার কোটি টাকা

চলতি (জুন) মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ১১৫ কোটি (১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য বলছে, চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে জুন মাসের ১৪ দিন পর্যন্ত মোট ২৮ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৮৬৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা তার আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৩০২ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স।
এর আগে সদ্যবিদায়ী মে মাসও নতুন রেকর্ড গড়ে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। পুরো মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি বা ২.৯৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা। প্রতিদিন আসে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত এপ্রিল মাসে, সে রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে মে মাস। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত মার্চ মাসে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এবং সবশেষ মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ বেড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়ালো

মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বিতরণ করা ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশই খেলাপি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে খেলাপি ঋণের নতুন রেকর্ড। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই খেলাপি। মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে খেলাপি ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
এ সময়ে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে ১৩ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ২ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং বিশেষ ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ হার ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। খেলাপি ঋণের সাথে বেড়েছে প্রভিশন সংরক্ষণের ঘাটতিও।
অর্থনীতি
এনবিআরের রাজস্ব সভায় ট্রাম্প-ইলন মাস্ক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অনুবিভাগের রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় সরাসরি ও ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়ার রীতি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। তবে রবিবার (১৫ জুন) আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়া আইডিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, শীর্ষ ব্যবসায়ী ও প্রযুক্তিবিদ ইলন মাস্ক ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন নাম দেখা গেছে।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সভায় এমন আরও অনেক আইডি থেকে যোগ দেওয়া হয়েছে, যাদের বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। আইডিতে স্যামসাং ফোনের বিভিন্ন মডেলের নাম, বিভিন্ন সালের নাম ও নানা ধরনের সংখ্যা দিয়ে সভায় অংশ নিতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, গত মাসে অধ্যাদেশ বাতিলসহ চারটি দাবিতে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। সরকারি আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও চেয়ারম্যানকে অপসারণ বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। এরপর চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সশরীরে ঢাকার বিভিন্ন কমিশনার সভায় অংশ নিলেও মাঠপর্যায়ে অসন্তোষ আছে। তাই জুমে বেশি উপস্থিতি দেখাতেই এমনটা করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের মুঠোফোনে যোগোযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত আয়কর খাতে আদায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জানা গেছে, অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে, এসময়ে আদায় হয়েছে এক লাখ ৫ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে অর্থবছরের মে মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
অর্থনীতি
পাঁচ ব্যাংক শিগগিরই একীভূত, চাকরি হারাবেন না কর্মীরা: গভর্নর

বেসরকারি খাতের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে খুব শিগগিরই একীভূত করা হবে। একত্রিত হলেও এসব ব্যাংকের কর্মীরা চাকরি হারাবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। রবিবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান গভর্নর।
ব্যাংকগুলোর একীভূত করার বিষয়ে গভর্নর বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে ব্যাংক মার্জারের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করব পরবর্তী সরকার এসে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মার্জার করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে প্রয়োজনে শাখাগুলো স্থানান্তর করা হবে। যেসব ব্যাংকের শাখা শহরে বেশি, সেসব ব্যাংককে গ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, পাচারকৃত সম্পদ উদ্ধারের প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত রায় ছাড়া কোনো সম্পদ উদ্ধার সম্ভব নয়। এজন্য আগে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনি নথিপত্র তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আদালতের মাধ্যমে যাচাই হোক—আমাদের দাবি যথাযথ কি না। আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই অর্থ উদ্ধার সম্ভব হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থাও রয়েছে। এই পদ্ধতিতেও একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, যেখানে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা আলোচনা করে সমাধান খুঁজবেন।
তিনি জানান, কোন পথে এগোনো হবে, আদালত নাকি এডিআর, সেটি নির্ধারণ করবে সরকার। সরকারের নির্দেশনা পেলেই বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পদ উদ্ধারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে।
গভর্নর বলেন, দেশীয় সম্পদের জন্য দেশের আদালতে এবং বিদেশি সম্পদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের আদালতে মামলা পরিচালনা করতে হবে। এই লক্ষ্যেই প্রস্তুতি চলছে।