ধর্ম ও জীবন
প্যান্ট টাখনুর নিচে থাকলে নামাজ শুদ্ধ হবে কি?

নামাজে ও নামাজের বাইরে যে কোনো সময়ই পুরুষদের জন্য প্যান্ট, পায়জামা, লুঙ্গি, জুব্বা বা পরিধেয় যে কোনো পোশাক টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা নাজায়েজ। হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, টাখনুর নিচের যে অংশ ইজারে বা লুঙ্গিতে ঢেকে থাকবে, তা জাহান্নামে যাবে। (সহিহ বুখারি: ৫৭৮৭)
এ অবস্থায় নামাজ পড়া আরও বেশি নিন্দনীয় কাজ। সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) একবার এক গ্রাম্য লোককে লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখে বলেছিলেন, যে ব্যক্তি নামাজে লুঙ্গি এভাবে ঝুলিয়ে রাখে, সে আল্লাহর হালাল-হারামের কোনো তোয়াক্কা করল না। (আলমুজামুল কাবীর: ৯৩৬৮)
তবে কাজটি নাজায়েজ হলেও এ অবস্থায় নামাজ পড়লে নামাজ শুদ্ধ হবে। নামাজে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে প্যান্ট, পায়জামা বা অন্য কোনো পোশাক টাখনুর নিচে ঝুলে থাকলে নামাজ নষ্ট হবে না বা পুনরায় আদায় করতে হবে না।

ধর্ম ও জীবন
বাংলাদেশ ব্যাংকে সীরাত মাহফিল, প্রধান আলোচক আহমাদুল্লাহ

আগামী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেবেন আস্ সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী।
রোববার (১২ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আনিচুর রহমান এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন।
আয়োজকের পক্ষ থেকে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আগ্রহীদের অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ধর্ম ও জীবন
মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট দিয়ে করা যাবে হজযাত্রী নিবন্ধন

এবার হজে গমনেচ্ছুদের নিবন্ধনের সুবিধার্থে পাসপোর্টের মেয়াদ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এখন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট দিয়েও হজযাত্রী নিবন্ধন করা যাবে।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি জরুরি পত্র জারি করা হয়েছে।
পত্রে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, ২০২৬ সনের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়েছে। তবে এই সুযোগ গ্রহণকারী হজযাত্রী বা হজ এজেন্সিগুলোকে অবশ্যই একটি শর্ত পূরণ করতে হবে।
ভিসা ইস্যুর জন্য পিআইডি (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন) নির্ধারণ করার সময় মেয়াদ সম্বলিত বা হালনাগাদ পাসপোর্ট সিস্টেমে আপডেট করতে হবে। যদি মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট সিস্টেমে হালনাগাদ করা না হয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হবে না।
সৌদি সরকার ঘোষিত হজের রোডম্যাপ অনুসারে, আসন্ন ২০২৬ সালের হজযাত্রী নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হবে আগামী ১২ অক্টোবর।
হজযাত্রীদের সুবিধার্থে মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত নিবন্ধনে গতি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ধর্ম ও জীবন
রোজা শুরু হতে বাকি আর কত দিন, জানা গেল সম্ভাব্য তারিখ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী বছর রমজান মাস শুরু হতে পারে ১৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার)। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী এখন রমজান শুরু হতে বাকি রয়েছে ১৩৯ দিন।
আমিরাত জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান জানান, রমজান শুরুর নতুন চাঁদ জন্ম নেবে ইউএই সময় মঙ্গলবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৪টা ১ মিনিটে। তবে ওই দিন সূর্যাস্তের মাত্র এক মিনিট পরই চাঁদ অস্ত যাবে, ফলে সেদিন তা দেখা সম্ভব নয়। সে কারণে রোজা শুরু হওয়ার সম্ভাব্য দিন বৃহস্পতিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি—যা চাঁদ দেখা কমিটির চূড়ান্ত ঘোষণার ওপর নির্ভর করবে।
আল জারওয়ান বলেন, আবুধাবিতে রমজানের শুরুতে দৈনিক রোজার সময় হবে প্রায় ১২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট, যা মাস শেষে বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ১৩ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে। এ সময়ে দিনের আলোর দৈর্ঘ্যও ১১ ঘণ্টা ৩২ মিনিট থেকে বেড়ে ১২ ঘণ্টা ১২ মিনিটে পৌঁছাবে।
তিনি আরও জানান, রমজানের শুরুতে আবুধাবিতে তাপমাত্রা থাকবে ১৬-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মাস শেষে বেড়ে ১৯ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাবে। শুরুতে উত্তর দিকের শীতল বাতাসের প্রভাব থাকলেও মাসের শেষ দিকে বসন্তকালীন আবহাওয়া ও পশ্চিমা বাতাস প্রবল হবে।
আল জারওয়ান সতর্ক করে বলেন, রমজানজুড়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমি গড় হিসাব অনুযায়ী এ সময়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫ মিলিমিটারেরও বেশি হতে পারে। সূত্র : গালফ নিউজ
ধর্ম ও জীবন
সন্তানের কল্যাণের জন্য বাবা-মায়ের চার দোয়া

আল্লাহর নবী ইবরাহিমকে (আ.) আবুল আম্বিয়া বা নবীদের পিতা বলা হয়। আল্লাহ তাআলা তার বংশের বহু সংখ্যাক ব্যক্তিকে নবুয়্যত দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আল্লাহর শেষ নবী হজরত মুহাম্মাদও (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) তার বংশধর।
নবী ইবরাহিম (আ.) সব সময় তার সন্তান ও বংশধরদের জন্য দোয়া করতেন। কোরআনে তার জীবনের ঘটনাবলিতে তার অনেক দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো দোয়ায় তিনি নিজের পাশাপাশি নিজের সন্তান ও বংশধরদের জন্যও দোয়া করেছেন।
এখানে আমরা সন্তানদের জন্য নবী ইবরাহিমের ৪টি দোয়া উল্লেখ করছি। বাবা-মায়েরা নিজেদের সন্তানদের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণের জন্য দোয়াগুলো পড়তে পারেন।
১. ইবরাহিম (আ.) দোয়া করেছিলেন,
رَبَّنَا وَ اجۡعَلۡنَا مُسۡلِمَیۡنِ لَكَ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِنَاۤ اُمَّۃً مُّسۡلِمَۃً لَّكَ وَ اَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَ تُبۡ عَلَیۡنَا اِنَّكَ اَنۡتَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ
উচ্চারণ: রাব্বানা ওয়াজ‘আলনা মুসলিমাইনি লাকা ওয়া মিন জুররিয়্যাতিনা উম্মাতান মুসলিমাতান লাকা, ওয়া আরিনা মানাসিকানা, ওয়াতুব ‘আলাইনা, ইন্নাকা আন্তাত-তাওয়্বাবুর রাহীম।
অর্থ: হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আমাদের ইবাদতের নিয়ম-কানুন শিক্ষা দিন এবং আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন।নিশ্চয়ই আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা বাকারা: ১২৮)
২. ইবরাহিম (আ.) দোয়া করেছিলেন,
رَبِّ اجۡعَلۡنِیۡ مُقِیۡمَ الصَّلٰوۃِ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ رَبَّنَا وَ تَقَبَّلۡ دُعَآءِ
উচ্চারণ: রাব্বিজআলনি মুকীমাস-সালাতি ওয়া মিন জুররিয়্যাতি রাব্বানা ওয়া তাকাব্বাল দু‘আ।
অর্থ: হে আমার রব, আমাকে ও আমার সন্তানদের নামাজ কায়েমকারী বানান। হে আমাদের রব, আমার দোআ কবুল করুন। (সুরা ইবরহিম: ৪০)
৩. ইবরাহিম (আ.) দোয়া করেছিলেন,
رَبِّ اجۡعَلۡ هٰذَا الۡبَلَدَ اٰمِنًا وَّ اجۡنُبۡنِیۡ وَ بَنِیَّ اَنۡ نَّعۡبُدَ الۡاَصۡنَامَ
উচ্চারণ: রাব্বিজআল হাযাল বালাদা আমিনাওঁ ওয়াজনুবনি ওয়া বানিয়্যা আন্না’বুদাল আসনাম।
অর্থ: হে আমার রব, আপনি এ শহরকে নিরাপদ করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদের মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন। (সুরা ইবরাহিম: ৩৫)
৪. ইবরাহিম (আ.) দোয়া করেছিলেন,
رَبَّنَا لِیُـقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ فَاجۡعَلۡ اَفۡئِدَۃً مِّنَ النَّاسِ تَهۡوِیۡۤ اِلَیۡهِمۡ وَارۡ زُقۡهُمۡ مِّنَ الثَّمَرٰتِ لَعَلَّهُمۡ یَشۡكُرُوۡنَ
উচ্চারণ: রাব্বানা লিয়ুকিমুস-সালাতা ফাজআল আফইদাতাম মিনান-নাসি তাহউই ইলাইহিম ওয়ারযুকহুম মিনাস সামারাতি লা‘আল্লাহুম ইয়াশকুরূন।
অর্থ: হে আমার রব, তারা যেন নামাজ কায়েম করে, আপনি মানুষের অন্তর তাদের প্রতি অনুরাগী করে দিন আর ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করুন যেন তারা শুকরিয়া আদায় করে। (সুরা ইবরাহিম: ৩৭)
ধর্ম ও জীবন
প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো শারদীয় দুর্গাপূজা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী তিথিতে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হলো। বিদায়ের সুর আর ভক্তদের চোখের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়ে শেষ হলো পাঁচ দিনের এই মহাআয়োজন।
বিকাল থেকেই পুরাণ ঢাকার সদরঘাট এলাকার বীণা স্মৃতি স্নানঘাটে প্রতিমা বিসর্জন কার্যক্রম শুরু হয়। ধানমন্ডি থানার দুর্গামন্দিরের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এই পর্বের সূচনা হয়।
এছাড়াও পল্টন বধির স্কুলে আয়োজিত পূজামণ্ডপের প্রতিমা বুড়িগঙ্গার ওয়াইজ ঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে সদরঘাট টার্মিনালের পাশে বীণা স্মৃতি স্নানঘাটে একটি অস্থায়ী বিসর্জন মঞ্চ তৈরি করা হয়। ঘাট এলাকা ও বুড়িগঙ্গার তীরজুড়ে ছিল আলোকসজ্জার ব্যবস্থা। প্রতিমা বিসর্জন দেখতে বিকাল থেকেই হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীরা সদরঘাট এলাকায় ভিড় করেন।
ভক্ত রবি দাস বলেন, ‘গত চার দিন বেশ আনন্দের সঙ্গে পূজা উদযাপন করেছি। আজ দেবী মাকে বিসর্জন দিতে এসেছি। খুব খারাপ লাগছে, তবে এটা ভেবে আনন্দ লাগছে আসছে বছর মা আবার আসবেন।’
তিনি নিরাপত্তার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও কিছুটা নিরাপত্তার শঙ্কায় ছিলাম। তবে এবার কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। চারদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বেশ জোরদার। সব মিলিয়ে সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল খুব ভালো।’
আরেক ভক্ত হৈমন্তী রানী সিংহ বিদায়ের ক্ষণ নিয়ে বলেন, ‘মা আমাদের মাঝে কল্যাণ নিয়ে এসেছেন। এখন ফিরে যাচ্ছেন সতর্ক করে। প্রতিবার মনে হয় মা আরও কিছুদিন থাকলে ভালো হতো। কারণ এই সময়টাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ আনন্দের সময় কেটেছে। এখন আবার যান্ত্রিক জীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে।’
প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রীয় ঘাট কমিটির কর্মকর্তা রজত কুমার সুর জানান, ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমা বীণা স্মৃতি ঘাটে আসবে এবং এ উপলক্ষে ঘাটকেন্দ্রিক সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে বুড়িগঙ্গার তীরে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, নৌ-পুলিশ ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন টিম ও সোয়াট দলের সদস্যসহ সাদা পোশাকে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্কতার সঙ্গে তৎপর ছিল।