রাজনীতি
গণতন্ত্রের উত্তরণে বাধা দিতে ভয়ংকর চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল
গণতন্ত্র উত্তরণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল ‘ভয়ংকরভাবে চক্রান্ত’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন একটা ট্রাজিশন পিরিয়ডে আছে। একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শাসন, যে শাসন আমাদের সমস্ত মূল্যবোধগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। সেই ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে বেরিয়ে এসে আমরা এখন একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি এবং নির্বাচনের পরে একটা নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত পার্লামেন্ট আমাদের দেশকে আমাদের জাতিকে সঠিক পথ এগিয়ে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা আমরা সবাই করছি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে যে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি, মহল তারা এই ট্রাজিশনাল যে প্রসেস এটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভয়ঙ্করভাবে চক্রান্ত করছে।’
ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান বিন হাদি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আজকে আবারো এই চক্রান্তের ফলে নিহত শহীদ হয়ে যাওয়া ওসমান বিন হাদির আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং পরম করুনাময় আল্লাহ তালার কাছে এই দোয়া চাইছি যে, আল্লাহতালা তাকে যেন বেহেশতে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থানে নিয়ে যান।’
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল জানান, শতবর্ষী রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কাছে চারটি আসন ছেড়ে দিচ্ছে বিএনপি।
যে চারটি আসনে সমঝোতা হয়েছে, সেগুলোতে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী হচ্ছেন— নীলফামারী-১ আসনে দলের মহাসচিব মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনির হোসাইন কাসেমী, সিলেট-৫ আসনে দলের সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনে জুনায়েদ আল হাবীব।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারা তাদের কথা রেখেছেন যে, ২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশন সেটাই করছেন। নির্বাচনের যে পরিবেশ তৈরি করা এই পরিবেশ তৈরি করার জন্য তাদেরকে আরও সচেতন এবং ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা দরকার, আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করা দরকার এবং এই বিষয়গুলোতে তাদের ফোকাস আরও বেশি দেবেন এবং তারা আরও ভালোভাবে নির্বাচন যেন অত্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেই বিষয়গুলো দিকে লক্ষ্য রাখবেন এটা আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, শরিকদের সঙ্গে ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে। শরিকদের সাথে আমাদের সমঝোতা শেষ হয়ে গেছে। শরিকদের সাথে আমাদের ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে। এ বিষয়ে আপনারা যথাসময় জানতে পারবেন, যথাসময় তা ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মো. মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, সহসভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা আল হাবীব, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস কাসেমী, মাওলানা শেখ মজিবুর রহমান , মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাজহারী উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
রাজনীতি
সিলেট পৌঁছেছেন তারেক রহমান
যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সিলেট এসে পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
উড়োজাহাজটি যাত্রাবিরতি শেষে সিলেট থেকে রওনা হয়ে দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
এর আগে তারেক রহমানকে বহনকারী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিজি-২০২ ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরার এই যাত্রায় তার সঙ্গে আছেন স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।
জানা যায়, ফ্লাইট ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের চার ঘণ্টা আগে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বাসা থেকে বের হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে।
ডা. জোবাইদা রহমান ও ব্যারিস্টার জাইমা রহমান ছাড়াও এ যাত্রায় তারেক রহমানের সফরসঙ্গী হয়েছেন তারেক রহমানের মিডিয়া টিমের প্রধান আবু আবদুল্লাহ সালেহ, ব্যক্তিগত সহকারী রহমান সানি ও তাবাসসুম ফারহানা।
রাজনীতি
ছয় স্তরের নিরাপত্তায় থাকবেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেগা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, যার আওতায় রয়েছে ছয় স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে গুলশান এলাকার তার বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে আচ্ছাদিত থাকবে। বিশেষভাবে, এভারকেয়ার হাসপাতাল, বিমানবন্দর এবং তিনশ’ ফিট রোড এলাকা ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নিরাপত্তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারেক রহমানের চারপাশে ১২ ঘণ্টা ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা টানেল তৈরি করবে। ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে প্রায় ১৫০-২০০ সাদা পোশাকধারী সদস্য মোতায়েন করা হবে, যারা তার কনভয়ের সঙ্গী হয়ে তাকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাবে। এছাড়া, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে নিরাপত্তার তদারকি করবে।
এদিকে, তারেক রহমানের সমাবেশ উপলক্ষে স্থাপিত মঞ্চের উচ্চতা ১৫ ফুট পর্যন্ত করা হয়েছে। স্নাইপার হামলা ও গ্রেনেড নিক্ষেপের সম্ভাবনা মাথায় রেখে মঞ্চের অবস্থান সাতবার পরিবর্তন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিবারই স্নাইপার অ্যাটাকের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং মঞ্চের চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাঁচ স্থাপন করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ‘তারেক রহমানের নিরাপত্তায় কোনো রকম শঙ্কা নেই। ডিএমপি ও অন্যান্য সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিএসএফ, সেনাবাহিনীর এয়ার ডিফেন্স ইউনিট, ডিবি, র্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ বিভিন্ন সংস্থা তাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উঁচু ভবনের ছাদেও অবস্থান নিয়েছেন, যাতে স্নাইপার হামলার কোনো সুযোগ না থাকে।
ডিএমপি কমিশনার একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং তার চলাচলের সড়ক পথে যেকোনো প্রকার ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ড্রোন উড্ডয়ন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, বিএনপি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, দলের নেতারা শুধুমাত্র বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানাতে যাবেন। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য বিমানবন্দরের অভ্যর্থনাস্থল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে।
তারেক রহমানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সিএসএফ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং দশ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকও নিরাপত্তা কাজে সহায়তা করবেন। এছাড়া, তার দেশে ফেরার পর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের দুটি কেবিন ক্রু সদস্যকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে, যাতে তার নিরাপত্তা কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।
রাজনীতি
রাজকীয় সংবর্ধনার জন্য প্রস্তুত মঞ্চ, ‘লিডার আসছে’ স্লোগানে মুখর ৩০০ ফিট
দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশের মাটিতে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজকীয় সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেছে তার দল বিএনপি; রাজধানীর পূর্বাচলে ৩০০ ফিট এলাকায় তৈরি করা হয়েছে সুবিশাল এক মঞ্চ।
এদিকে নেতাকে একনজর দেখতে এবং তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকেই ৩০০ ফিট হাইওয়ে এলাকায় ঢল নেমেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিএনপির নেতাকর্মীদের। কুড়িল থেকে শুরু করে মঞ্চ এলাকা পর্যন্ত যেন তিল ধারণের জায়গা নেই।
কেউ কেউ এলাকাভিত্তিক জটলা পাকিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, আবার কেউ সমবেতভাবে মিছিলে মুখর। এককথায় সবার মনেই উৎসবের আমেজ। সবার মুখে মুখে ফিরছে একটিই স্লোগান— লিডার আসছে।
এ ছাড়া, স্লোগান-প্ল্যাকার্ড আর নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাসে পুরো এলাকা যেন বিশাল ‘উৎসবকেন্দ্রে’ পরিণত হয়েছে। আর নেতাকর্মীদের খাবারের জোগান দিতে পথে পথে হরেক রকমের খাবার ও পানি বিক্রি করছেন হকাররা। কিছু দূর পরপর দেখা মিলছে স্পিকারবাহী ট্রাক। সেখানে বাজছে দলীয় ও দেশাত্মবোধক গান।
পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য সদস্য। রাত ৯টার দিকে মঞ্চ এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বাহারুল আলম।
রংপুর থেকে সমাবেশ এলাকায় এসেছেন বিএনপি কর্মী রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, বহু বছর পর নেতা দেশে আসছেন। এটি আমাদের কাছে ঈদের দিনের মতো উৎসবের। সব কষ্ট ভুলে আমরা এখানে উদযাপন করতে এসেছি। নেতার ফেরার মধ্য দিয়ে আমাদের দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে।
সরিষাবাড়ী থেকে আসা রুদ্র পলাশ বলেন, আমাদের দীর্ঘ সময় নির্যাতন সহ্য করে পার করতে হয়েছে। গ্রাম থেকে অনেক মানুষ উচ্ছ্বাস নিয়ে এসেছেন শুধু প্রিয় নেতার প্রত্যাবর্তন উদযাপন করতে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আজকের এই রাত আমাদের কাছে ‘চাঁদ রাতের’ মতো মনে হচ্ছে। আমরা সারারাত এখানেই থাকব।
জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে এসে সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হবেন তারেক রহমান। এই প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। গত রোববার দুপুর থেকে দিন-রাত কঠোর পরিশ্রমে এটি প্রস্তুত করেছেন শ্রমিকরা। সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান আসবেন। ওইদিন এই এলাকা মানুষের মহামিলন ও মহামেলায় পরিণত হবে বলে আমরা নিশ্চিত।
এমকে
রাজনীতি
হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার করতে না পারার খেসারত দিল সিয়াম: জামায়াত আমির
রাজধানীর মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে ছোড়া ককটেল বোমা বিস্ফোরণে সিয়াম নামের এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্ট্যাটাসে জামায়াত আমির লিখেছেন, ‘নিহত সিয়ামের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করুন, তার ওপর রহম করুন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে উত্তম ধৈর্যধারণের তাওফিক দান করুন।’
‘শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার করতে না পারার খেসারত দিতে হলো নিরীহ সিয়ামকে। একটি দুষ্টু চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করতে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে।’ ‘প্রশাসনকে তার দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে এবং জনগণকেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
এর আগে মগবাজারে মুক্তিযোদ্ধা গলির সামনে ফ্লাইওভারের ওপর থেকে বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে সিয়াম (২০) নামে একজন নিহত হন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মুর্তজা জানান, বোমা নিক্ষেপের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করে ফ্লাইওভারের ওপর থেকে কে বা কারা একটি বোমা নিক্ষেপ করে, যা এক যুবকের মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত সিয়ামের বাবা বলেন, আমার ছেলে মোটরপার্টসের দোকানে কাজ করত। কাজ শেষে রাস্তায় দিয়ে হাঁটার সময় তার ওপর বোমাটি নিক্ষেপ হয়। এতে ঘটনাস্থলে সিয়াম মারা যায়।
পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরাও সেখানে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করে।
রমনা থানার উপপুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্লাইওভার থেকে বোমাটি ফেললে ভিকটিমের মাথায় লাগে। সাথে সাথেই তিনি মারা গেছেন। কে বা কারা এ নাশকতা ঘটিয়েছে তার অনুসন্ধান চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে এটা ঘটানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ডিসি মাসুদ আলম আরও বলেন, নিহত ব্যক্তির নাম সিয়াম। তিনি সেখানে চা খেতে এসেছিলেন। ওপর থেকে বোমা এসে তার মাথার ওপর পড়ে।
এমকে
রাজনীতি
হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন তারেক রহমান
লন্ডনের বাসা থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার পরে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিমানবন্দরে যান।
বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে তিনি লন্ডনের মাটি ছাড়ছেন।
তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দীর্ঘ যাত্রায় সিলেটে যাত্রাবিরতির পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। সেখানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন।
এদিকে বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে তারেক রহমানের তিন দিনের কর্মসূচির কথা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, আগামীকাল দুপুরে বিমানবন্দরে নামার পর দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তারেক রহমানকে স্বাগত জানাবেন। এরপর তিনি জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে তথা ৩০০ ফিট রাস্তায় সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখানে অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন তিনি। এরপর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখান থেকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে কাকলীর মোড় হয়ে গুলশান–২ নম্বরে বাসভবনে চলে আসবেন। সেদিন আর অন্য কোনো অনুষ্ঠান হবে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, পরদিন ২৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারেক রহমান বাসভবন থেকে প্রথমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর ২৭ ডিসেম্বর, শনিবারও দুটি কর্মসূচি রয়েছে। ওই দিন জাতীয় পরিচয়পত্রের কাজ করবেন তিনি। এ জন্য তারেক রহমান সশরীর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন অফিসে যাবেন কি না, সেটা পরে জানানো হবে। ওই দিনই ভোটার হতে সব কাজ করবেন। এরপর শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবেন।
শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত শেষে সেখান থেকে রাজধানীর শ্যামলীতে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের দেখতে যাবেন তারেক রহমান। এরপর আরেকটি অনুষ্ঠান হবে, সেটার বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমদ।
এমকে




