অর্থনীতি
প্রথম ১০ দিনেই ১ লাখ করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল

২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন চালুর পর থেকে প্রথম ১০ দিনে (১৩ আগস্ট পর্যন্ত) ৯৬ হাজার ৯৪৫ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অনলাইন রিটার্ন দাখিল শুরুর প্রথম ১০ দিনে ২০,৫২৩ জন করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। সে হিসেবে এ বছরের ই-রিটার্ন দাখিলের দৈনিক গড় সংখ্যা গত বছরের দৈনিক গড় সংখ্যার প্রায় ৫ গুণ।
চলতি বছর গত ৩ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিশেষ আদেশ জারি করে জানায়, দেশে ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি ব্যতীত সারা দেশের সব ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার (Individual Taxpayers) অনলাইনে (www.etaxnbr.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১১ আগস্ট বিশেষ আদেশটি প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদেরকেও অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত/যুগ্মকর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য যেকোনো মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip প্রিন্ট নিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট করতে পারেন।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। উক্ত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতাগণ ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন হতে করদাতাগণ ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা লিখিতভাবে জানাতে পারবেন এবং সমাধান পাবেন।
এছাড়াও ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাগণকে যথাসময়ে www.etaxnbr.gov.bd পোর্টাল ব্যবহার করে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

অর্থনীতি
বেড়েছে কাঁচা মরিচের ঝাঁজ, মাছ-মাংসের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

কয়েকদিনের বৃষ্টিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বাড়িয়েছে কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজি কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছে। কিন্তু খুচরা বাজারে সবজির কোনো সংকট নেই। পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে সাত দিনের ব্যবধানে ভোজ্যতেল ও মসুর ডালের দামও বাড়ানো হয়েছে। অসহনীয় মাছ-মাংসের দামও। ফলে এসব পণ্য কিনতে এসে ক্রেতাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৬০-৭০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি ঝিঙা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা, যা আগে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সিম ২০০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া প্রতি কেজি কচুমুখী ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, শসার কেজি ৬০-৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে প্রতি পিস ফুলকপি ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
রাজধানীর নয়াবাজারে সবজি কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, বৃষ্টি হলেই বিক্রেতারা সবজির দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা স্বাভাবিক যে বৃষ্টির কারণে সবজি নষ্ট হয়। পরিবহণেও ঝামেলা হয়। এতে সরবরাহ কমে। তবে বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত। কিন্তু বিক্রেতারা বৃষ্টির অজুহাতে সরবরাহ কম বলে বাড়তি দামে বিক্রি করছে। যা কোনোভাবেই ঠিক নয়।
একই বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আল আমিন বলেন, আড়তে সবজির সরবরাহ কমেছে। আড়ত পর্যায়ে দাম বাড়ায় আমাদের বাড়তি দরে কিনতে হয়েছে। বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামেই। বৃষ্টি এমন চলতে থাকলে দাম আরও কিছুটা বাড়তে পারে।
এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে ভোজ্যতেল ও ডালের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ব্র্যান্ড ভেদে ৩৮০-৩৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাত দিন আগেও ৩৭৫-৩৮০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে পাম তেলের দামও। লিটারপ্রতি পাম তেল সুপার বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকা। যা আগে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সঙ্গে মাঝারি দানার প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। যা সাত দিন আগে সর্বনিম্ন ১১০ টাকায় পাওয়া গেছে।
এছাড়া ছোট দানার প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১৫০-১৬০ টাকা। যা এক মাস আগেও ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সেক্ষেত্রে মাসের ব্যবধানে এই পণ্যের দাম সর্বোচ্চ কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। আর বড় দানার মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা।
রাজধানীর কাওরান বাজারে মুদি পণ্য কিনতে আসা নাজমুল বলেন, মিডিয়ায় দেখেছি তেল কোম্পানিগুলো তেলের দাম বাড়াতে সরকারের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু সরকার দাম বাড়ায়নি। তারপরও দোকানে এসে দেখি বিক্রেতারা তেলের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। সঙ্গে ডালের দামও বাড়ছে হু হু করে। দেখার যেন কেউ নেই।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা। যা আগে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা। আর খাসির মাংসে কেজিপ্রতি ১১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৩০০-২৫০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০০-১৮০০ টাকা। আর ছোট আকারের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি রুই ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০-২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অর্থনীতি
কাঁচা মরিচের দাম ফের ৩০০ টাকা ছাড়ালো

কাঁচা মরিচের দাম আবার ৩০০ টাকা ছাড়াল। খুচরা বাজারে এখন এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৩২০ টাকার আশপাশে। অবশ্য সাধারণ ক্রেতারা একসঙ্গে এক কেজি কাঁচা মরিচ কেনেন না। ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনতে তাঁদের অন্তত ৭৫-৮০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
পাঁচ দিন আগেও এক কেজি মরিচের দাম ছিল ২০০-২২০ টাকা। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে প্রতি কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ১০০-১২০ টাকা করে। গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছিল।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার, বিজয় সরণিসংলগ্ন কলমিলতা বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে কাঁচা মরিচের দামের এ তথ্য জানা গেছে।
মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৫টির মতো সবজির দোকান রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এই বাজারে গিয়ে দেখা গেল, কোনো সবজির দোকানেই ৩২০ টাকা কেজির নিচে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে না। আর মান একটু ভালো হলে সেই দাম আরেকটু বেশি রাখা হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত তিন দিনে দেশে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রায় একই সময়ে পূজার ছুটিতে পণ্য আমদানির পরিমাণ কমেছে। এতে সব মিলিয়ে বাজারে কাঁচা মরিচসহ সবজির সরবরাহ কমেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।
শুধু কাঁচা মরিচ নয়; বাজারে বেশির ভাগ সবজির দামও বাড়তি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাছ, মুরগি, ডাল ও চালের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন এক কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ১০০ টাকার আশপাশে। আর ছয়-সাত দিন আগে ধরনভেদে এক কেজি বেগুন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, যা আজ বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ১২০-১৪০ টাকায়। যদিও সবচেয়ে চড়া দাম তাল বেগুনের; কেজি ২২০ টাকার ওপরে।
অন্যান্য সবজির দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। দাম বাড়ার পরে পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধুন্দুল, লাউ প্রভৃতি সবজি ৭০-৮০ টাকায় এবং কাঁকরোল, করলা, ঢ্যাঁড়স, বরবটি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ ৭০-৮০ টাকার নিচে তেমন কোনো সবজি কেনা যাচ্ছে না। টাউন হল বাজার ও কলমিলতা বাজার ঘুরেও কাছাকাছি দাম দেখা গেছে। অবশ্য কারওয়ান বাজারে এসব পণ্যের দাম কিছুটা কম থাকে।
কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা আব্বাস আকন্দ জানান, বর্তমানে বাজারে দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও টমেটো নেই বললেই চলে। যেসব কাঁচা মরিচ ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে, তার প্রায় পুরোটাই ভারত থেকে আমদানি করা। কিন্তু পূজার ছুটির কারণে এসব পণ্যের আমদানি কমেছে। অন্যদিকে দুই-তিন দিন বৃষ্টির কারণে দেশীয় সবজির সরবরাহও কিছুটা কম। এসব কারণে সবজির দাম এতটা চড়া।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সাইয়েদ হুদা বলেন, সবজির দামে কোনো লাগাম নেই। তিন-চার পদের সবজি কিনলেই ৪০০ টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে।
অর্থনীতি
এনভয় টেক্সটাইলকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে তাদের প্রথম সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ সুবিধা হিসেবে এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের সঙ্গে ৩০ মিলিয়ন ডলার বা ৩ কোটি ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ ঋণ পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নকে এগিয়ে নেবে এবং গার্মেন্টস খাতে নতুন মানদণ্ড তৈরিতে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এডিবি জানিয়েছে, এটি বাংলাদেশে এডিবির প্রথম সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ। এ ধরনের ঋণ হলো ভবিষ্যৎমুখী, পারফরম্যান্সভিত্তিক ঋণ সুবিধা, যেখানে পূর্বনির্ধারিত কর্মক্ষমতার সূচক এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়।
এনভয়ের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কারখানার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস।
ঋণের অর্থ ব্যবহার করা হবে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়ার কারখানায় নতুন স্পিনিং ইউনিট নির্মাণ ও নকশা কাজে, যেখানে বছরে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫৫০ টন সুতা উৎপাদন ক্ষমতা যুক্ত হবে। এটি মূলত ডেনিম উৎপাদনে ব্যবহার হবে। নতুন ইউনিট সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী হবে। এছাড়া কারখানার ছাদে ৩.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর প্যানেল বসানো এবং স্বল্পমেয়াদি স্থানীয় কার্যকরী মূলধন ঋণ পুনঃঅর্থায়নেও এই অর্থ ব্যবহার হবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি জোগান দেয়। এনভয় দেশের শীর্ষ ডেনিম প্রস্তুতকারক। এডিবি আনন্দিত যে এনভয়কে বাংলাদেশে প্রথম সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ দিচ্ছে। এটি পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নকে এগিয়ে নেবে এবং গার্মেন্টস খাতে নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে।’
এনভয়ের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এডিবির অব্যাহত সহায়তা আমাদের জন্য গর্বের। এই সাসটেইনেবিলিটি-লিঙ্কড ঋণ আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে এবং পরিবেশগত প্রভাব আরও কমাতে সহায়তা করবে। এনভয় সবসময় মান, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের সর্বোচ্চ মান ধরে রাখার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এনভয় বর্তমানে বছরে ৫ কোটি ৪০ লাখ গজ ডেনিম উৎপাদন করে, যা দেশের মোট উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ১০ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের প্রথম প্লাটিনাম লিড সনদপ্রাপ্ত ডেনিম কারখানার মালিক, যা মার্কিন গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত।
এই প্ল্যান্টটি ময়মনসিংহে ৪৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি একটি শতভাগ রপ্তানিমুখী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা ২০০৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০১২ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের প্রথম ডেনিম কারখানা হিসেবে এখানে রোপ ডাইং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
এটি একটি ব্যাকওয়ার্ড ইন্টিগ্রেটেড কারখানা হিসেবে এনভয়ের নিজস্ব স্পিনিং সুবিধা রয়েছে, যা প্রতিদিন ৭০ টন সুতা উৎপাদনে সক্ষম।
অর্থনীতি
চট্টগ্রাম বন্দরে বর্ধিত মাশুল ১৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘোষিত বর্ধিত মাশুল (ট্যারিফ) আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে কার্যকর হচ্ছে। এক মাসের স্থগিতাদেশ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এ তারিখ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর নতুন মাশুল কার্যকরে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল। পরে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে এটি এক মাস স্থগিত করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
নতুন মাশুলের কারণে বন্দরে গড়ে ৪১ শতাংশ খরচ বাড়বে ব্যবসায়ীদের। সবচেয়ে বেশি বাড়বে কনটেইনার পরিবহনের মাশুল। এতদিন ২০ ফুট লম্বা একটি কনটেইনারে গড়ে মাশুল ছিল ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা। নতুন সিদ্ধান্তে তা দিতে হবে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকা। নতুন প্রজ্ঞাপনে মাশুলের ক্ষেত্রে ডলারের বিনিময় মূল্য ধরা হয়েছে ১২২ টাকা।
প্রতি একক কনটেইনার জাহাজ থেকে ওঠানো বা নামানোর জন্য আগে মাশুল ছিল ৪৩ দশমিক ৪০ ডলার বা পাঁচ হাজার ২৯৪ টাকা। এখন তা বাড়িয়ে ৬৮ ডলার বা আট হাজার ২৯৬ টাকা করা হয়েছে। কনটেইনার পণ্যে প্রতি কেজিতে আগে গড়ে মাশুল দিতে হতো এক টাকা ২৮ পয়সা। এখন দিতে হবে ৪৭ পয়সা।
বন্দর দিয়ে কনটেইনার ছাড়াও সাধারণ পণ্য পরিবহন করা হয়। সব ধরনের সাধারণ পণ্যে কেজিপ্রতি মাশুল বাড়বে গড়ে ১৪ পয়সা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে আসা মোট পণ্যের ৬০ শতাংশ ছিল সাধারণ পণ্য, যেগুলো খালাস হয় বহির্নোঙরে।
অর্থনীতি
বিদেশি বিনিয়োগ হিসাব খোলার তথ্য জানানোর শর্ত শিথিল

বিদেশি বিনিয়োগ হিসাব খোলার তথ্য জানানোর শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে এখন থেকে বিনিয়োগকারীদের হিসাব খোলার সঙ্গে সঙ্গে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে হবে না। কর্মকর্তাদের আশা, এতে ব্যাংকগুলো বিদেশি বিনিয়োগের হিসাব খোলায় আরও আগ্রহ দেখাবে।
বুধবার (১ অক্টোবর) এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এক প্রজ্ঞাপনে।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে শুরু থেকেই বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অনাবাসী টাকা হিসাব (এনআরটিএ) ও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ব্যবহৃত অস্থায়ী বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবের (এফসি) রিপোর্টিংয়ের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করা হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলো এসব হিসাব খোলার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য না জানিয়ে ১৪ দিনের মধ্যে নগদায়ন সার্টিফিকেট, অনলাইন ট্রানজেকশন আইডি, হিসাবের বিবরণী ও সংশ্লিষ্ট স্থায়ী হিসাবের বিবরণী পাঠাতে পারবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি তহবিল স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর অথবা এক বছরের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় রাখা যাবে। দেশীয় মুদ্রায় রূপান্তর হলে অনলাইনে ‘ফরম–সি’ জমা দেওয়া যাবে এবং কোম্পানি গঠনের ১৪ দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট নথিতে স্বাক্ষর করতে হবে।
এছাড়া, প্রস্তাবিত বিনিয়োগ নিবন্ধিত না হলে প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট অর্থ বিদেশে নিয়ে যাওয়া যাবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না।