অর্থনীতি
অর্থ আত্মসাৎ: এস আলমের দুই ছেলেসহ আসামি ৫৪
চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখা থেকে প্রায় ৯৯৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আশরাফুল আলম ও আহসানুল আলমসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের মালিকের সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম এবং অপর ছেলে ও ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের মালিক আশরাফুল আলম।
এ ছাড়া মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী, বাণিজ্য বিতান কর্পোরেশনের মালিক মো. তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাপার্চার ট্রেডিং হাউজের মালিক এস. এম নেছার উল্লাহ, ড্রিমস্কেপ বিজনেস সেন্টারের মালিক মোহাম্মদ মহসিন মিয়াজী, এক্সিসটেন্স ট্রেড এজেন্সির মালিক মো. সালাহ উদ্দিন (সাকিব), ফেন্সিফেয়ার কর্পোরেশনের মালিক মোহা. আব্দুল মজিদ খোকন, এপিক এ্যাবল ট্রেডার্সের মালিক মো. ইকবাল হোসেন, ফেমাস ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক আরশাদুর রহমান চৌধুরী, প্রোপ্রাইটর জিনিয়াস ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ আবুল কালাম, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফারজানা বেগম, এমডি আব্দুল ওয়াহিদ, ইনিফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের হিসাব পরিচালনাকারী মনতোষ চন্দ্র রায়, চেমন ইস্পাত লিমিটেডের পরিচালক মুহা. নজরুল ইসলাম, ওই প্রতিষ্ঠানের এমডি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আনছার এন্টারপ্রাইজের মালিক আনছারুল আলম চৌধুরী, রেইনবো কর্পোরেশনের মালিক রায়হান মাহমুদ চৌধুরী, গ্রিন এক্সপোজ ট্রেডার্সের মালিক এম এ মোনায়েম, সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মাহাফুজুল ইসলাম, মেসার্স শাহ আমানত ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী চৌধুরী, সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সহিদুল আলম ও মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার চৌধুরী।
ইসলামী ব্যাংকের আসামিরা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী ও কে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি ও চিফ হিউম্যান রিসার্চ অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ সাব্বির, মিফতাহ উদ্দিন, সাবেক ডিএমডি আবুল ফাইয়াজ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সাবেক এসইভিপি ও এএমডি মো. আলতাফ হোসেন, এসইভিপি জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের জুবিলী রোড শাখা প্রধান ও এসভিপি সোহেল আমান, ওই শাখার সাবেক প্রধান একজো শাহাদাৎ হোসেনসহ অন্তত ৩০ কর্মকর্তা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ঋণের নামে শুধুমাত্র ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জুবিলী রোড শাখা থেকে প্রায় এক হাজার ১১৪ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। যার নেতৃত্ব দেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম। আত্মীয় স্বজন ও নিজ কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মচারীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক দেখিয়ে মাত্র তিন বছরে ওই টাকা হাতিয়ে নেয় আলোচিত গ্রুপটি।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জুবিলী রোড শাখায় মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীকে সাপ্লায়ার হিসেবে দেখানো হয়। মূলত ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক, অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যাংকের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে অপকর্ম ঘটিয়েছেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা ব্যাংকিং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের অনুকূলে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বরে ৮৯০ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা গ্রহণ করলেও তার বিপরীতে কোনো মালামাল ক্রয় এবং বিক্রয় না করে বিভিন্ন জাল কাগজপত্র তৈরি করে। এরপর ওই টাকা উত্তোলন ও বিতরণ করে রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে অপরাধ গোপন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ওই চক্রটি নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আবারও বিনিয়োগসীমা ৮৯০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০০০ কোটি করে। আর ২৮টি ডিল সাজিলে চক্রটি ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ৯৯৫ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এ সব কাজের মধ্য দিয়ে ব্যাংকিং নীতিমালা এবং ইসলামী ব্যাংকের জন্য প্রচলিত শরীয়াহ নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২৩ সালে আরও নতুন করে ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে চারটি ডিল সৃষ্টি করে আরও ১৮১ কোটি টাকা উত্তোলন করে নতুন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এভাবে জুবিলি রোড শাখার গ্রাহক মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের নামে ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ইস্যুকৃত অসমন্বিত ৩২টি ডিলে মোট এক হাজার ৭৪ কোটি ৮৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা ছাড় করে যা ব্যাংকের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, অডিট প্রতিবেদন কিংবা দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বিষয়টির প্রমাণ মিলেছে। পরবর্তী সময়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে জাল নথি তৈরি করে কৃত্রিম উপায়ে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ৮৭ হাজার পরিশোধ দেখানো হয়েছে।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত ঋণ হিসাবে ৯৯৩ কোটি ৭০ লাখ ২৪ হাজার টাকা ও মুনাফা হিসাবে ১২০ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ মোট এক হাজার ১১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রেস্তোরাঁ-ইন্টারনেটসহ শতাধিক পণ্যে ভ্যাট বাড়লো
মোবাইলফোনে কথা বলা, হোটেল-রেস্তোরাঁ সেবা, ইন্টারনেট সেবা, কোমল পানীয়, সিগারেটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক ও কর বাড়িয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে এ সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশ দুটি হলো মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫।
এই দুটি অধ্যাদেশ জারির পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। ফলে এই অধ্যাদেশের পরিবর্তনগুলো সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়ে গেছে।
এছাড়া মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আরও যুক্ত হবে মিষ্টি, ওষুধ, এলপি গ্যাস, ফলের রস, ড্রিংক, বিস্কুট, চশমার ফ্রেম, সিগারেটসহ নানা পণ্য।
ফ্রিজ, এসি ও মোটরসাইকেলের করপোরেট কর বাড়ানোর পর শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ালো সরকার।
ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরও বেড়ে যেতে পারে। মোবাইলফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়বে। বাড়বে রেস্তোরাঁর খাবারের খরচও।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির এনবিআরের প্রস্তাব পাস করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ না থাকায় অধ্যাদেশের মাধ্যমে শুল্ক-কর বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
যেসব পণ্য ও সেবার খরচ বাড়বে:
আগে মোবাইলফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের ওপর ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ হতো। এটি বাড়িয়ে এখন ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচও বাড়বে। ব্র্যান্ডের দোকান ও বিপণিবিতানের তৈরি পোশাকের আউটলেটের বিলের ওপর ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া সব ধরনের রেস্তোরাঁর ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
শুল্ক-কর বৃদ্ধির তালিকায় আরও আছে টিস্যু, সিগারেট, বাদাম, আম, কমলালেবু, আঙুর, আপেল ও নাশপাতি, ফলের রস, যে কোনো ধরনের তাজা ফল, রং, ডিটারজেন্ট, রং, মদের বিল, পটেটো ফ্লেক্স, চশমার প্লাস্টিক ও মেটাল ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, সানগ্লাস, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও তাতে ব্যবহৃত তেল, বিদ্যুতের খুঁটি, সিআর কয়েল, জিআই তার ইত্যাদি। এছাড়া ভ্রমণ করও বাড়ানো হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজের আবগারি শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। সার্কভুক্ত দেশের জন্য এই শুল্ক বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। এশিয়া মহাদেশের দেশদ (সার্ক ভুক্ত দেশ বাদে) ২০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা করা হয়েছে। আর এসবের বাইরে অন্যান্য দেশে ৩০০০ টাকার আবগারি শুল্ক ৪০০০ টাকা করা হয়েছে।
নিম্ন, মধ্য, উচ্চ ও অতিউচ্চ সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৬০, ৬৫.৫, ৬৫.৫ ও ৬৫.৫ শতাংশ।
স্থানীয় ব্যবসায় ভ্যাটের হার ৫ থেকে ৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে ওষুধ ব্যবসার ক্ষেত্রে এ হার ২.৪ থেকে ৩ শতাংশ করা হয়েছে।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক (প্রেক্ষাগৃহ), চলচ্চিত্র পরিবেশক, মেরামত ও সার্ভিসং, স্বয়ংক্রিয় ও যন্ত্রচালিত করাতকল, খেলাধুলার আয়োজক, পরিবহন ঠিকাদার, টেইলার্স, ভবন রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা, খেলাধুলার ক্লাব, বোর্ড সভায় যোগদানকারী, মোটর গ্যারেজ, ডকইয়ার্ড, ছাপাখানা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, ইলেক্ট্রিক পোলের ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
নন এসি হোটেলে, কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, জোগানদার, সানগ্ল্যাস (প্লাস্টিক, মেটাল ফ্রেম) ফ্যাশন হাউজের ভ্যাট ৭.৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
রেস্তোরাঁ, ইভেন্টিং সংস্থার ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের ট্র্যান্সফরমার, নারকেল ছোবড়ার ম্যাট্রেস, চশমার ফ্রেম ও রিডিং গ্লাস (প্ল্যাস্টিক ও মেটাল), আম, আনারস, কলা, পেয়ারা ও তেঁতুলের পেস্ট বিআরটিএ থেকে সরবরাহ করা লেমেনেটেড ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। চাটনি কেচাপ, হাতে তৈরি বিস্কুট, কেক, আচারের ভ্যাট হার একইভাবে বাড়ানো হয়েছে।
বার ও বার যুক্ত হোটেল মোটেলে সেবায় ভ্যাট হার ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া এলপি গ্যাসে ভ্যাট ৫ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা (আইএসপি) তে ১০ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে।
ফলের রসে ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। কার্বোনেটেড ও নন কার্বোনেটেড পানীয়তে যথাক্রমে ৩০ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে। বিভিন্ন ফল ও বাদামে ভ্যাট ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।
ডিটারজেন্ট ১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ, সাবানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ, পেইন্টস ও ভার্নিসে ১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিএফআইইউ প্রধান হলেন এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম
অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধের তদারকি সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম। আগামী দুই বছরের জন্য এ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপনে জারি করেছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এর ধারা ২৪(১) (ঘ) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ২২ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম শাহীনুল ইসলামকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর পদমর্যাদায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান কর্মকর্তা পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে তাঁর যোগদানের তারিখ থেকে ০২ (দুই) বছর মেয়াদে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
এ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের শর্তাবলি অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নতুন প্রধান নিয়োগের সাক্ষাৎকার নিতে ১০ জনকে ডাকেন বাংলাদেশ ব্যাংক। ১১ ও ১২ ডিসেম্বর সাক্ষাৎকার হয়।এর আগে, ৩১ অক্টোবর এ পদের জন্য আবেদনপত্র জমা দেন এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম।
এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে বিএসসি (অনার্স) ও এমএসসি করেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। এর পর থেকে বিভিন্ন পদে কর্মরত অবস্থায় পর্যায়ক্রমে ব্যাংকিং সুপারভিশন, বৈদেশিক মুদ্রা ট্রেজারি ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশ সরকারের বাজেট ব্যবস্থাপনা, কৃষিঋণ ব্যবস্থাপনা, আইন বিভাগ, সচিব বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী অফিসে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২২ সালের ২ মার্চ তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের বগুড়া অফিস প্রধান হিসেবে বগুড়া অঞ্চলের ব্যাংকসমূহের সার্বিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ থেকে বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্বাহী পরিচালক ও উপ-প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যান তিনি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ওএমএসের আওতায় এলো দেশের সব উপজেলা
ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় দেশের ৪২২ উপজেলার মোট ১৭৫২টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে প্রতিদিন দুই মেট্রিক টন চাল বিক্রি করা হবে। জনপ্রতি পাঁচ কেজি চাল প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।
এর আগে মোট ৯০৮টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। সেই কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে নতুন ৮৪৪টি কেন্দ্র যুক্ত হচ্ছে। নতুন কেন্দ্রগুলো উপজেলা সদরের বাইরে স্থাপিত হবে।
প্রথম পর্যায়ে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রোজার পণ্যে কোনো সমস্যা হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিতে ৬৩ শতাংশ শুল্ক ছিল, সেটা কমিয়ে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নিয়েছি।
আমরা আমদানি উদারিকরণ করছি। খাদ্য মন্ত্রণালয় বার্মা, পাকিস্তান ও ভারত থেকে সরাসরি কয়েক লক্ষ্য টন চাল আমদানি করছে। বাজারে যে একটা সাময়িক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ঠিক হয়ে যাবে। রোজার পণ্যে কোনো সমস্যা হবে না।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ড. প্রফেসর ওমর বোলাটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
রজমান মাসের প্রস্তুতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, রমজান নিয়ে আমরা সামগ্রিকভাবে প্রস্তুত। কিছু জিনিসের বিষয়ে যেমন চালের বাজার নিয়ে আমরা বিভিন্ন রকমের পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা আমদানি উদারিকরণ করছি। চাল আমদানিতে ৬৩ শতাংশ শুল্ক ছিল, সেটা আমরা কমিয়ে ৩ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয় বার্মা, পাকিস্তান ও ভারত থেকে সরাসরি কয়েক লক্ষ্য টন চাল আমদানি করছে। আমাদের আমনের ভরা মৌসুম চলছে। এপ্রিল নাগাদ বোরো ধান আসবে। আমরা আশা করছি যে, এখন থেকে এপ্রিল আগামী তিন মাস বাজারে যে একটা সাময়িক অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ঠিক হয়ে যাবে। এ ছাড়া অন্য কোনো পণ্যে সমস্যা নেই বলে আমার ধারণা। রোজার পণ্যে কোনো সমস্যা হবে না।
এখন আমনের ভরা মৌসুম কিন্তু চালের দাম বেড়ে গেছে। আগে শুনতাম সিন্ডিকেট, এখন আগের জায়গায় নতুন সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে কি না, আপনারা কতখানি বাজার মনিটরিং করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আপনারা সাংবাদিক হিসেবে যদি আমাদের (সিন্ডিকেট) চিহ্নিত করে দেন, তাহলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে। আমাদের জানা মতে আবহাওয়াগত কারণ, বন্যা, বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে হয়তোবা (চালের দাম বেড়েছে)… আমাদের নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত বলছে, আমাদের চালের কোনো ঘাটতি নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সরকারি মজুতে কোনো ঘাটতি নেই। তারপরেও প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে আমরা যে ব্যত্যয়টা চালের বাজারে দেখছি, সেটাকে হ্যান্ডেল করার জন্য আমদানিকে আরও বেশি উদার করেছি। আমরা আশা করি, আমদানি শুরু হলে যদি কেউ মজুদ করে থাকে অন্যায্যভাবে, এই মজুতটা তারা ছাড়তে বাধ্য হবে এবং বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।
এই সময়ে তো বাজার থেকে হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে। মানুষের কষ্ট হচ্ছে—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, নিশ্চিতভাবেই হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আমার কাছে মনে হচ্ছে সময়টা সাময়িক। কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই যে, সেটাতে সুইচ দিলে আগামীকাল বাজারটা ঠিক হয়ে যাবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সুদহার বাড়ছে সঞ্চয়পত্রের
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সঞ্চয় কর্মসূচিগুলোর (স্কিম) মুনাফার হার বাড়ছে। সঞ্চয়পত্রের ধরন অনুযায়ী এ হার বেড়ে হতে যাচ্ছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত। বর্ধিত হার নির্ধারণের আদেশ জারি করতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে (আইআরডি) বুধবার (৮ জানুয়ারি) অনুরোধ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
আইআরডিকে অর্থ বিভাগ বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অর্থ বিভাগের তৈরি এ বিষয়ে প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। আর সুপারিশটি এসেছে অর্থসচিবের নেতৃত্বাধীন নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিডিএমসি) থেকে। এ কমিটিকে সহায়তা করেছে অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ।
আইআরডিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার নির্ধারণ করা হবে ৫ বছর মেয়াদি ও ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদের হার অনুযায়ী। তবে নতুন মুনাফার হার নির্ধারণ করতে এ দুই ধরনের ট্রেজারি বন্ডের সর্বশেষ ছয়টি নিলামকে বিবেচনায় রাখতে হবে। ছয় মাসের বন্ডের সুদের গড় হার বেরও করে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এহার ১২ দশমিক ২৫ থেকে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত।