শিল্প-বাণিজ্য
উন্নত দেশ গঠনে লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য: এফবিসিসিআই
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পণ্য পরিবহন, সংরক্ষণ ও গুণগত মান বজায় রেখে স্বল্প সময়ে ও সাশ্রয়ী মূল্যে সেটি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে আধুনিক ও মানসম্মত লজিস্টিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে টিকে থাকতে আমদানি রপ্তানি সহজ করার ক্ষেত্রে লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (২ মার্চ) সকালে এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটি অন লজিস্টিকস, কুরিয়ার সার্ভিস এবং ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিংয়ের সভায় এসব কথা বলেন উদ্যোক্তারা।
সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের দক্ষ লজিস্টিকস খাতের উন্নয়ন করতেই হবে। নতুবা আমরা বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাবো। শিল্প নীতির আলোকে ২১টি উপ-খাতে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।
জাতীয় লজিস্টিকস উন্নয়ন নীতি-২০২৪ এর খসড়ার ওপর আলোচনায় তিনি বলেন, আগামীতে দক্ষ লজিস্টিকস সেবা খাতের উন্নয়নে আকাশপথ, সড়ক ও রেল যোগাযোগের পাশাপাশি নৌপথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ব্যবসার খরচ কমাতে এবং ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের জন্য এক জায়গা থেকে সব ধরনের লাইসেন্স প্রাপ্তি এবং নবায়ন চান তিনি। পাশাপাশি অটোমেশনের ওপর জোর দেন তিনি।
লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে যথাযথ আইন ও বিধি-বিধান মেনে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ সৈয়দ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, পণ্যের সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখা এবং পণ্য উৎপাদন থেকে ভোক্তার কাছে যত দ্রুত পৌছানো যায় ব্যবসার খরচ তত কমে। পণ্যের দামও কমে। ২০৪১ সালে আমাদের উন্নত দেশ গড়তে হলে পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ কমাতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সড়ক ও রেল যোগাযোগের বিস্তৃতি, স্থল, নৌ, সমুদ্র ও বিমানবন্দর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের ফলে লজিস্টিক খাতের প্রাথমিক অবকাঠামোগত সক্ষমতা অর্জিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২১ সালের তুলনায় ২০৪১ সালে বিভিন্ন নির্দেশক যেমন প্যাসেঞ্জার ট্রাফিক ২৯ গুণ, ফ্রেইট ট্রাফিক ১০ গুণ, পোর্ট কন্টেইনার ট্রাফিক ১৩ গুণ, সমুদ্রগামী কার্গো ট্রাফিক ২২ গুণ বাড়বে। তাই লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে এখনই সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশেল সভাপতি হাফিজুর রহমান পুলক। তিনি জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মিরপুরসহ দেশের বেশকিছু স্থানে হাব তৈরি করা গেলে লজিস্টিক খাতের গাড়িগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রাখা যাবে এবং কম সময়ে পণ্য পরিবহনে সহায়ক হবে।
উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে উদ্যোক্তারা বলেন, লজিস্টিক খাত সরবরাহ শৃঙ্খলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার কাছে পৌছে দিয়ে অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে এ খাত। কিন্তু প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ এ খাতে এখনও অনেক পিছিয়ে। এ খাতে সবাইকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
এসময় হাব নির্মাণের জন্য পাট মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অব্যবহৃত জমিতে সরকার নির্ধারিত হারে জমি পাওয়া, লজিস্টিক খাতে পরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণ, লাইসেন্স সহজীকরণ, ক্রসবর্ডার ই-কমার্স ইত্যাদি সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা। এছাড়া শিল্পনীতি ২০২২ এ উল্লেখিত লজিস্টিক খাতের ২১টি উপখাতসমূহ যেমন, সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ সেবা, অ্যাভিয়েশন সেবা, সমুদ্র বন্দর সেবা, তথ্য ও প্রযুক্তিগত লজিস্টিক সেবা, ফাইনান্সিয়াল লজিস্টিক সেবা, ইকমার্স লজিস্টিক সেবা ইত্যাদির সঠিক বাস্তবায়ন চান তারা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হারুন অর রশীদ, ইসহাকুল ইসলাম সুইট, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভারত থেকে পেঁয়াজবোঝাই একটি ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্স এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে। প্রথমদিন একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
আমদানি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে পাইকার ও সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা গেল ৪ মে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় নানা জল্পনাকল্পনা শেষে ১১ দিন পর আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
আমদানি স্বাভাবিক থাকলে পেঁয়াজের দাম কোরবানি ঈদে বাড়বে না বলেও জানান তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান পাটমন্ত্রীর
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক। এসময় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এবং বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।
রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রীর অফিস কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
পাটমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বিশেষত বস্ত্র ও পোশাকখাতে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এসময় মন্ত্রী বস্ত্র ও পোশাক খাতে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান এবং উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোরিয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমরা বাজারের বৈচিত্র্য বাড়ানো, পণ্য উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ইত্যাদিতে জোর দিচ্ছি।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির জন্য আমরা কোরিয়ান কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করছি।
এসময় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত তিনটি বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এগুলো হলো-
প্রথমত, কাঁচামাল আমদানি করতে প্রচুর ট্যারিফ দিতে হয়। তার মধ্যে ৫টি পণ্য বস্ত্র ও পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোর ট্যারিফ কমাতে তিনি মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
দ্বিতীয়ত, ভিসা জনিত সমস্যা। বাংলাদেশে যারা কাজ করছেন তাদের খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। তিন মাস পর পর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হয়। এ সমস্যা উত্তরণে মন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
তৃতীয়ত, কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ে দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
সাক্ষাৎকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব তসলিমা কানিজ নাহিদা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান, জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের কনসাল জেয়ং কি কিম উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দেওয়ার প্রস্তাব
বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে চলতি অর্থবছর। তথ্যপ্রযুক্তিতে কর অব্যাহতির মেয়াদ আর বাড়াতে চায় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন (২০২৪-২০২৫) বাজেটে এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিষয়টি এনবিআরকে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ।
নতুন বাজেট কেন্দ্র করে রোববার (১২ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব ভবনে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর ওয়াসিকা আয়শা খান এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক এ তিন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি উঠানোর প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী বাজেটের বিভিন্ন দিকে সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করেছে উভয়পক্ষ। রোববার সকালে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়।
২০১১ সাল থেকে ২৭টি ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতি দিয়েছিল সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হলে তা আবার চার বছরের জন্য বাড়ানো হয়। নতুন কোনো ঘোষণা না এলে চলমান এ কর অব্যাহতির মেয়াদ এ অর্থবছরে শেষ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো এরই মধ্যে এ অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ নতুন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার। অর্থমন্ত্রী কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দিয়ে, এ খাতে অল্প অল্প করে করারোপ করা যায় কি না বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশীয় শিল্প যাতে সুরুক্ষা পায় ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যাতে নাগালের মধ্যে রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
এনবিআরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাত থেকে কর ও ভ্যাট অব্যাহতি তুলে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। পাশাপাশি আগামী বাজেটের এর উপযোগিতা ও যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেন।
সূত্র জানায়, আগামী বাজটে কার্বোনেটেড পানীয় বা কোমল পানীয়র ওপরে ন্যূনতম কর ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার বিষয়টি জানানো হয়।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ড্রাফট মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের দিনব্যাপী বৈঠক হবে। এর পরই বাজেট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী সবার কথা মনযোগ দিয়ে শুনেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না হলেও তিনি আমাদেরটাই রাখেন, না হলে বিষয়টা নিয়ে অন্যকিছু করার সুযোগ আছে কী না জানতে চান। আমরা ১৪ মের এর জন্য আমাদের পেপার ও প্রেজেন্টেশন তৈরি করছি।
বৈঠকে উপস্থিত ওই কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তিন বিভাগের বাজেট প্রস্তাবনা শুনেছেন। তাদের কিছু কোয়ারি ছিল। সিদ্ধান্তের পক্ষে বিপক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। একটা ফলপ্রসু বৈঠক হয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থপ্রতিমন্ত্রী জানতে চান বিদেশ থেকে আমদানি করা চিকিৎসা কিট ও অন্যান্য সামগ্রীতে শুল্কের পরিমাণ বেশি কেনো। তবে তাকে জানানো হয় দেশীয় শিল্পকে সুরুক্ষা দিতে শুল্ক যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতি উঠানো প্রসঙ্গে বেসিস সভাপতি রাসল আহমেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাত যদি করের আওতায় আনা হয়, সেটা মোট রাজস্ব আয়ের ১ শতাংশও হবে না। এ খাত সবেমাত্র দাঁড়াতে শুরু করেছে। একটা সম্ভাবনাময় খাত হুমকির মুখে ফেলা ঠিক হবে না। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ খাতে কর অব্যাহতি বজায় রাখা আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) প্রেসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আগামী ৩ বছর কর অব্যাহতি রাখার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ এর মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
অনলাইনে যাত্রী সুবিধা চার্জ নেবে চার স্থলবন্দর
ভারত ভ্রমণে পাসপোর্টধারীদের যাত্রা সহজ ও ভোগান্তি কমাতে অনলাইনে যাত্রী সুবিধা চার্জ (পোর্ট ট্যাক্স) আদায় করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোলসহ বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী ও নাকুগাঁও স্থলবন্দরের যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে একযোগে আদায় করা হবে।
রবিবার (১২ মে) থেকে ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজেই ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে। এর মেয়াদ ইস্যু তারিখ থেকে সাত দিন বলবৎ থাকবে। এর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর যাত্রী টার্মিনাল থেকে পাসপোর্টধারীদের পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হতো।
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন এটুআই প্রগ্রাম আইসিটি ডিভিশনের যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক মোল্লা মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং ইন্টিগ্রেটেড স্মার্ট ল্যান্ডপোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে একটিমাত্র প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে এ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী ও নাকুগাঁও স্থলবন্দরের যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে আদায় করতে একপে, এটুআই কর্তৃক কেন্দ্রীয় (সেন্ট্রাল) ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করা হয়েছে। এ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে যাত্রীদের সুবিধা চার্জ অনলাইনে আদায় করতে হবে। এসব স্থলবন্দরে তা আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছয় হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। এতে প্রতিবছর বেনাপোল স্থলবন্দরে ভ্রমণ খাতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয় এবং পোর্ট ট্যাক্স খাতে আয় হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।
যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় স্থলপথে ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ৯০ শতাংশই বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করে। ভারত যাতায়াতে পাসপোর্টধারীদের বর্তমানে এক হাজার টাকা ভ্রমণ ট্যাক্স এবং ৫৫ টাকা পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। এর মধ্যে ভ্রমণ ট্যাক্স সোনালী ব্যাংকে বা অনলাইনে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে।
তবে এই সুযোগ পোর্ট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে এত দিন না থাকায় যাত্রীদের স্থলবন্দরে পৌঁছে আবারও দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি দালালের হয়রানির শিকার হতো যাত্রীরা।
এ বিষয়ে ভারতগামী আনিছুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, অনলাইনে পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করার পদ্ধতি করায় আমাদের বেশ উপকার হয়েছে। তা ছাড়া অনলাইনে তাড়াতাড়ি ও স্বচ্ছভাবে হচ্ছে।
খাদিজা আক্তার নামের আরেকজন যাত্রী বলেন, অনলাইনে পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধের নিয়ম করায় আমরা ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি। আগে বাচ্চা কোলে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. রেজাউল করিম জানান, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন লিংক ব্যবহার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের প্রযোজ্য যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে পরিশোধপূর্বক প্রামাণিক হিসেবে মানি রিসিট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের প্রদর্শনের জন্য পাসপোর্টযাত্রীদের অনুরোধ করা হলো। অনলাইনে ইস্যুকৃত মানি রিসিটের মেয়াদ যাত্রার নির্ধারিত তারিখ থেকে সাত দিন বলবৎ থাকবে। এতে যাত্রীদের যাত্রা সহজ হবে ও ভোগান্তি কমে আসবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
সব ব্যবসায়ীদের করের আওতায় আনতে হবে: সালমান এফ রহমান
যারা ট্যাক্স দিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তাদের ওপর আরও বেশি ট্যাক্স চাপিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি মনে করেন, যাদের টিন আছে তাদের সবাইকে ট্যাক্সের আওতায় আনা উচিত।
বৃহস্পতিবার ইউএস ট্রেড শোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিফ্রিংয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডলারের দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না।
যাদের টিন আছে তাদের সবাইকে ট্যাক্সের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ট্যাক্স রেট কমিয়ে ট্যাক্স নেট বাড়ানো দরকার। বিশ্বের যে সকল দেশ ট্যাক্স রেট কমিয়েছে এবং ট্যাক্স নেট বাড়িয়েছে তাদেরই রাজস্ব বেড়েছে।
সব ব্যবসায়ীদের করের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উপজেলা এমনকি গ্রাম অঞ্চলেও অনেকে ভালোভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। তাদেরও ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে।
বিশ্বের যেসব দেশ থেকে বেশি পরিমাণে আমদানি করা হয় সেসব দেশের মুদ্রায় যদি ট্রেড করা হয় তাহলে ডলারের ওপর চাপ কমে যাবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা।
ডলারের দাম বাড়ায় দেশে রপ্তানির ওপর প্রচুর প্রভাব পড়বে। এর ফলে রেমিট্যান্স আয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প উপকৃত হবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা খুবই প্রয়োজন ছিল। মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে যা আমাদের কমানো দরকার। একই সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর কোনো চাপ পড়বে না। তার কারণ কৃষিখাত দেশ অনেক ভালো করছে। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পন্ন হতে পেরেছি।