রাজনীতি
জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতায় এনসিপিকে কঠিন মূল্য চুকাতে হবে: সামান্তা শারমিন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সমঝোতায় গেলে এনসিপিকে কঠিন মূল্য চুকাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না। তার রাজনৈতিক অবস্থান বা দর্শনসহ কোন সহযোগিতা বা সমঝোতায় যাওয়া এনসিপিকে কঠিন মূল্য চুকাতে হবে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক জোট প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতারা মন্তব্য করেছিলেন জামায়াতের জুলাইয়ের স্পিরিট, বাংলাদেশের নিয়ে পরিকল্পনা নিয়ে একমত হলে জামায়াতের সঙ্গে জোট করতে আসতে পারে যে কোনো দল।
সামান্তা শারমিন আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির এত দিনের অবস্থান অনুযায়ী তার মূলনীতি, রাষ্ট্রকল্প জামায়েত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন তথা সেকেন্ড রিপাবলিককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দল এনসিপি। ফলে এই তিনটি বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান যেকোনো রাজনৈতিক মিত্রতার পূর্বশর্ত।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, আমার বর্তমান অবস্থান পার্টির গত দেড় বছরের অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিম্নকক্ষে পি আর আওয়াজ তুলে সংস্কারকে ব্যাহত করায় লিপ্ত হয়েছিল জামায়াত। ফলত এনসিপির আহ্বায়ক বলেছিলেন ‘যারা সংস্কারের পক্ষে নয় তাদের সাথে জোটও সম্ভব নয়’। তাই জুলাই পদযাত্রার পর থেকে ‘৩০০’ আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয় আহ্বায়কসহ একাধিক বরাতে এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে এনসিপি- এই মর্মে সারা দেশ থেকে প্রার্থীদের আহ্বান করা হয়।
সবশেষ তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট করার সমস্যাসমূহ তুলে ধরা মানেই বিএনপির পক্ষে অবস্থান বোঝায় না। বরং বিভিন্ন বিষয়ে এতদিন ধরে প্রকাশিত ও নানান মহলে প্রশংসিত এনসিপির অবস্থান আমি সঠিক মনে করি ও নিজেকে এই আদর্শের সৈনিক মনে করি। বিএনপি-জামায়াতের যেকোনটির সঙ্গে জোট এনসিপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পলিসি থেকে সরে গিয়ে তৈরি হচ্ছে।
এমকে
রাজনীতি
বিএনপি ব্যতীত এই দেশ কেউ চালাতে পারবে না: নূর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় বিএনপি ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক শক্তির পক্ষে রাষ্ট্রকে স্থিতিশীলভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, জাতীয় সংকট কাটিয়ে দেশকে স্থিতিশীল পথে ফিরিয়ে আনতে হলে আগামী দিনে বিএনপিকেই ক্ষমতায় আনতে হবে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে গলাচিপা বিএনপি কার্যালয়ে দলটির একাংশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নুরুল হক নূরকে বিজয়ী করতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
নুরুল হক নূর বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর আলোচনা চলছে। গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হয়নি—এমন বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সময় এলেই সবকিছু স্পষ্ট হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তারেক রহমানের নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা প্রকাশ করে নূর বলেন, তার সঙ্গে যে সমঝোতা হয়েছে, তা এখনই প্রকাশ্যে আনার প্রয়োজন নেই।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে একটি আন্তরিক রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিলেও কিছু অরাজনৈতিক শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করতে নতুন আন্দোলন সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে-যা রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের সংকট ডেকে আনতে পারে।
নুরুল হক নূর বলেন, সম্প্রতি তাদের আন্দোলনের এক সাহসী কর্মী ওসমান হাদিকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সারা দেশে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার রেশ ধরে দেশের দুটি শীর্ষ সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি আরও দীর্ঘ হলে রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, শুধু নির্বাচন হলেই সংকটের সমাধান হবে-এমনটি ভাবার সুযোগ নেই। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে যে ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা আগামী পাঁচ বছরে একটি স্থিতিশীল সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর মূল লক্ষ্য হবে দেশের উন্নয়ন, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ ও বিনিয়োগবান্ধব রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরা।
নুরুল হক নূর আরও বলেন, ব্যক্তিগত প্রাপ্তি বা দল কতটি আসন পেল-এসব বিষয় তাদের কাছে মুখ্য নয়। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের স্বার্থ রক্ষাই তাদের প্রধান অগ্রাধিকার। সে কারণেই কোনো ধরনের ভাগ-বাটোয়ারার প্রশ্ন নেই। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- আগামী দিনে বিএনপিকেই রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার কবির। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নুরুল হক নূর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং বিএনপি তাকে সমর্থন দিয়েছে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত-এটি সবাইকে মেনে নিতে হবে। মনোনয়ন নিয়ে কারো ব্যক্তিগত কষ্ট থাকতেই পারে, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানিমূলক বা অশোভন মন্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এমকে
রাজনীতি
এবার এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন তাজনূভা জাবীন
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে দেয়া পোস্টে তিনি এ কথা জানান।
পোস্টে তিনি লিখেন, আপনারা অনেকে ভাবছেন, হয়তো জামায়াতের সাথে জোটে ঐতিহাসিক কারণ বা নারী বিষয়ের কারণে আমার আপত্তি। এর চেয়েও ভয়ঙ্কর যে কারণ, সেটা হল যে প্রক্রিয়ায় এটা হয়েছে। এটাকে রাজনৈতিক কৌশল, নির্বাচনী জোট ইত্যাদি লেভেল দেয়া হচ্ছে। আমি বলব এটা পরিকল্পিত। এটাকে সাজিয়ে এ পর্যন্ত আনা হয়েছে।
এটা আদর্শের চেয়েও অনেক বড়, সেটা হল বিশ্বাস। মাত্র কিছুদিন আগে সমারোহে সারাদেশ থেকে মনোনয়ন সংগ্রহের ডাক দিয়ে ১২৫ জনকে মনোনয়ন দিয়ে ৩০ জনের জন্য সীট সমঝোতা করে বাকিদের নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তে সীল মোহর বসানো হয়েছে। বিষয়টা ঠেলতে ঠেলতে একদম শেষ অবধি এনেছে যাতে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচনও করতে না পারে। আগামীকাল মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ। আমার অবশ্য এই মুহূর্তে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ইচ্ছা নাই। পুরো আগোছালো করে চোখের পলকে ডিসওউন করে দিয়েছে।
বিভিন্ন পত্রিকায় নানান খবর প্রকাশিত হচ্ছে। আমি মনোনয়ন হারানোর ভয়ে জোটের বিরোধিতা করছি। আমি কিছুদিন আগে লিখেওছিলাম আমার আসনে নেগোনিয়েশন হলে আমি নির্বাচন করব না, যত কঠিন প্রতিপক্ষ হোক আমি ফাইট দেব। দিলো না। তাদের গোষ্টীর ভাইরা তাদের পক্ষে দিস্তায় দিস্তায় লিখে ভরায় ফেলছে কেন আর কিভাবে এই জোট। কিন্তু কোন জেনারেল, ইসি মিটিং এর সিদ্ধান্ত এরকম ছিল না জোট হলে বাকি আসনে প্রার্থীকে বসে যেতে হবে। আবার বাকি আসনগুলোতে জামায়াতের হয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করতে হবে। জামায়াতের সাথে চরমোনাই পীরের ৭০ টা আসনে সমঝোতা হচ্ছে। আর গণঅভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেয়া দলের ৩০ টা আসনে।
তিনি বলেন, এনসিপি শুরু থেকে যে গণপরিষদ, সেকেন্ড রিপাবলিক মধ্যপন্থার, নারী, বিভিন্ন জাতিসত্তাকে নিয়ে রাজনীতি করার কথা বলছে সেটা ধারন করে যে কয়জন পার্টিতে ছিল তাদের মধ্যে আমি একজন। এই পার্টির একজন ফাউন্ডার মেম্বার আমি। স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ মন খারাপ। কিন্তু এই দল ছেড়ে দেয়া ছাড়া আমার সামনে আর কোন সম্মানজনক অপশন নাই। দলের খারাপ সময়ে দল ছেড়ে দিয়ে অরাজনৈতিক, অপরিপক্কতার পরিচয় ইত্যাদি বয়ান দিবে অনেকে। জাস্ট বুলশিট। শুধু এটুকু বলি, আমি বহিরাগত ওখানে, আমাকে প্রতারিত করলে মেইক সেন্স। কিন্তু এক শীর্ষ নেতা আরেক শীর্ষ নেতার সাথে যে মাইনাসের রাজনীতি করে ওখানে সেটা ভয়ঙ্কর। এরা নিজেদের মধ্যে রাজনীতি করতে এতো ব্যস্ত এরা কখনো দেশের জন্য নতুন একটা মধ্যপন্থার বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে পারবে না।
সবাই খুব বলছেন কালকে থেকে, রাজনীতি লম্বা, অনেক দূর যেতে হয়। একদম ঠিক। কিন্তু সেই নীতি এনসিপির নিজেরই নাই। নেতারা বিতর্কের পর বিতর্ক জন্ম দিয়ে সেটাকে বিপ্লব নাম দিয়েছে আর আমাদের মত যারা আসলেই এনসিপির নীতি ধারণ করেছি তাদের আবেগী লেবেল দেয়া হয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণাপত্র থেকে শুরু করে সবশেষ ডেইলি স্টারের ডিবেটে বলা কথা শীর্ষ নেতারা কতটুকু ধারণ করে সময় মতো মিলিয়ে নিয়েন।
ওই পুরোনো ফাঁকা বুলির রাজনীতি করতে হলে পুরোনো দলই করতাম, নতুন কেন? এবার আবারও আসি, জামায়াতের সাথে জোট প্রসঙ্গে, এনসিপি স্বতন্ত্র স্বকীয়তা নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলে যে কারো সাথে রাজনৈতিক জোটে অসুবিধা ছিল না। সেটা ৫ বছর পরে হতো, ঠিক প্রথম নির্বাচনেই কেন? কিন্তু আর সব অপশনকে ধীরে ধীরে রাজনীতি করে বাদ দেয়া হয়েছে যাতে জামায়াতের সাথে জোট ছাড়া কোন উপায় না থাকে। সুনিপুণভাবে এখানে এনে অনেককে জিম্মি করা হয়েছে। যাই হোক। এটা কোন রাজনৈতিক কৌশল না। এটাই পরিকল্পনা।
এই লেখার পরে আমার উপর অনেক আক্রমণ আসবে। আমার অনেক ব্যথতার ঢালি সাজানো হবে। চরিত্রহননের চেষ্টা হবে। কিন্তু নিজের কাছে নিশ্চিত। আমি এদের সাথে রাজনীতি করতে এসেছিলাম, এদের বিরুদ্ধে না। আমার আজকে মনোনয়ন জমা দেয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করার কথা, আর আমি এখানে বসে এসব লিখছি। জোট নাকি হবে দেড় মাসের, তারপর তারা মধ্যপন্থায় ব্যাক বাউন্স করবে। ট্রু। ব্যাক করে আবার দ্বিচারিতা, ভন্ডামি শুরু করবে। যে জবাবদিহিতার কথা বলে এরা মুখে ফেনা তুলে, সেটা নিজেদের কেউ করলে তাকেই মাইনাস করে।
আমি আগে রাজনীতি করি নাই, ঠিক। কিন্তু এরা কে আগে জাতীয় রাজনীতি করেছে? আমি নিজে বের হয়ে দলের বদনাম করছি, বলতে পারেন। বিষয়টা আমারও ভালো লাগছে না। কিন্তু সেটার থেকে আমার কাছে বেশি জরুরি মানুষ যে এনসিপির দিকে তাকিয়ে আছে, এনসিপিকে এটা সেটা ভেবে, এনসিপি ওটা না। এনসিপিকে আমরা যারা ওটা করতে চেয়েছি তাদেরকে ট্যাগিং করা হয়েছে নানাভাবে। আমরা যারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, তারা একে একে ছাড়ছি। যাতে এই এনার্জিটা গঠনে ব্যয় হয়, এই চেষ্টাটা প্রোডাকটিভ ভাবে করতে পারি। এখন কলুর বলদ খাটছি।
নিজেরও ভাল লাগছে না, এভাবে ছেড়ে যেতে। কিন্ত যারা এই দেশ, এই সংসদই চায় নাই তাদের সমঝোতায় একদম শুরুতেই এমপি হতে চাওয়া, বা যারা এদের কল্যাণে এমপি হওয়ার জন্য হাভাইত্তার মতো করছে তাদের নেতৃত্ব মানা আমার পক্ষে ঠিক গণঅভ্যুত্থানের পরের বছর অসম্ভব। এই জিনিস হজম করে মরতেও পারব না আমি। আমার নেতা হবে মাজাওয়ালা, জুলাই রাজনীতির ধারক। কিন্তু পুরো জুলাইকে নিয়ে রাজনৈতিক কৌশলের নাম করে তুলে দিচ্ছে জামায়াতের হাতে। আবার নাকি বাউন্স ব্যাক করবে। হাস্যকর। বিএনপি, এই জামাতের সাথে জোট করে ১৭ বছর ক্ষমতা থেকে দূরে ছিল। আর বিএনপির অধীনে জামায়াতের সাথে জোট হয়েছিল। জামায়াতের অধীনে না। যেখানে এনসিপিকে বলাই হয় জামায়াতের আরেকটা দোকান, তাহলে কেন এনসিপি আগে নিজের স্বকীয়তা, নিজের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা না করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জামায়াতকে বেছে নিতে মরিয়া হয়ে যাচ্ছে? তিনজন মন্ত্রী ছিল না ক্ষমতায় ? পারে নাই তো।
ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা যায় কৌশল করে, কিন্তু সংগঠন দাঁড় করাতে যোগ্যতা লাগে। আপনারা মিলায় নেবেন, যারা এনসিপি ছাড়ছি তারাই এনসিপির বলা নয়া বন্দোবস্তের রাজনীতি করেছি। কিন্তু ছাড়তে হচ্ছে আমাদের। পার্টিতে থাকা অবস্থায় কোন শোকজ না পেয়ে, সম্পূর্ণ পার্টির ইন্টিগ্রিটি মেনে যখন ছেড়ে আসতে চাই, তখন “অরাজনৈতিক” তকমা পরে। আপনারা এটাও মিলায় দেখেন কত কয়েকমাসে কোন কোন নেতা কত অসংখ্যবার পাটির ইন্টিগ্রিটি ভেঙ্গে বক্তব্য দিয়েছে, বিভিন্ন কাজ করেছে কিন্তু তারা মিলিয়ন ফলোয়ার ওয়ালা গণঅভ্যুত্থানের নেতা তাই তারা নির্বাচনী জোটের নামে বাকিদের নির্বাচন করার অধিকার কেড়ে নিয়ে এমপি হতে পারেন আর আমরা পদত্যাগও করতে পারব না। সেটাকে অপরাধ হিসেবে দেখা হবে।
নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রচুর পজিটিভ পিআর হবে এসকল নেতাদের ঘিরে। কিন্তু আমি নিশ্চিত এরা নয়া বন্দোবস্ত না, এরা মধ্যপন্থার রাজনীতি না। আপনারা বলতে পারেন, এসব আগে থেকেই জানতেন। কিন্তু এই দলে অনেকে আছে/ছিল যারা আদৌতেই এনসিপির রাজনীতি করেছে। তাদেরকে এম্পাওআরড করা হয় নাই ইচ্ছাকৃতভাবে। আপনারা তাদেরই চেনেন যাদের এনসিপি চেনাতে চেয়েছে। জুলাই এর যে স্পিরিট সেটা এনসিপিতে চর্চা করা হয় না, ব্যবহার করা হয়।
যারা চর্চা করত, তাদের “নীতি কথা বলা যায় অনেক, বিপ্লব দিয়ে রাজনীতি হয় না, আবেগ দিয়ে রাজনীতি হয় না” ইত্যাদি বলে থামানো হয়, যাতে তারা নিজেদের ভন্ডামি চালিয়ে যেতে পারে।
আরেকটা বিষয় দেখলাম, বিএনপি গণভোটে না ভোটকে জেতায় আনবে তাই সেটা ঠেকানোর জন্য এই কৌশল। আমার প্রশ্ন, হ্যাঁ ভোট জেতানোর জন্য এনসিপিকে ৩০ টা আসনে সীমিত হতে হল???? যে লিস্ট ঘুরছে তাদের ৬০-৭০% এর রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখেন। আমার চেয়ে ভাল জানবেন। এরপরও এনসিপির জোর করে চেপে বসে থাকা নেতাদের মধ্যে যদি এনসিপির রাজনীতি নিয়ে পরিকল্পনা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দেখতাম, জবাবদিহিতা পেতাম, তাহলে আমি আরো চেষ্টা করতাম টিকে থাকার। এখন সময় নষ্ট না করি আর।
তিনি আরও লিখেন, ভেবেছিলাম, জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর আমি পদত্যাগ দেবো। শেষ আশাই ছিলাম। কিন্তু গতকাল সবাই নিশ্চিত করেছে এই জোটে সীল পরেছে। আর আবারও বলি, আমার পদত্যাগের কারণ যতটা না জোট তার চেয়ে বেশি যে প্রক্রিয়ায় জোট হয়েছে। অবিশ্বাস, অনাস্থা মূল কারণ। দল অনেক বড় হয়ে স্টাবলিশ করতে পারলে অনেক কিছু বিবেচনা করে ছাড় দেয়া যেত কিন্তু গঠনের শুরুটাই নাকি আগে সংসদে যেতে হবে, তারপর ওই যে কজন এমপি বের হবে তাদেরকে কেন্দ্র করে নাকি সংগঠন বড় হবে। কিয়েক্টাবস্থা।
যাই হোক, আমি আজকে পদত্যাগ করেছি এনসিপি থেকে। অত্যন্ত ভাঙ্গা মন নিয়ে জানাচ্ছি আমি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছি না। সবচেয়ে কষ্ট লাগছে আজকেই আম্মু চট্টগ্রাম থেকে আসছে আমার নির্বাচন করা উপলক্ষ্যে, আর আজকেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম। আমি জানি অনেকে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন আমার এই সিদ্ধান্তে। কিন্তু এটাই আমার জন্য সঠিক। এখানে ন্যুনতম আশা থাকলে, আমি আমার আত্মসম্মানবোধকেও বোধ হয় ডাউট অফ বেনিফিট দিতাম।
আমি আপনাদের পাঠানো ডোনেশন ফেরত দেব এক এক করে। আমাকে একটু সময় দেবেন। সেটার জন্য বিস্তারিত লিখে আপডেট দেব কিভাবে ধীরে ধীরে ফেরত দেব। প্রত্যেকটা পয়সা ফেরত দেব। আপনাদের সমর্থন, আপনাদের ভালোবাসার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
শেষ কথা বলি, আমি আগে কখনো রাজনীতি করি নাই। জুলাই এ আমার রাজপথে নামা, পরিবর্তনের লক্ষ্যে নতুন কিছুর জন্য।
আমি মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেই চেষ্টা করতে থাকব। আমার আওয়াজ, দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য কাজ আরো জোরালোভাবে জারি থাকবে। মধ্যপন্থার বাংলাদেশ পন্থী নয়া বন্দোবস্তের রাজনীতির জায়গাটা খালিই পরে থাকল। আমি ওই জায়গা পূরণ করার চেষ্টায় থাকব। সময় বলে দিবে বাকিটা।
এমকে
রাজনীতি
জামায়াতের সঙ্গে জোট নিয়ে এনসিপিতে বিভক্তি
জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দলের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জোট বা আসন সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত। দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তরুণদের গড়া দলের নেতারা। তবে এ সমঝোতা নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে এনসিপিতে। নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ সদস্য জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে থাকলেও আপত্তি জানিয়ে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিয়েছেন ৩০ নেতা। এছাড়া ডা. তাসনিম জারা গতকাল শনিবার দল থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গণমাধ্যমে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় নাম প্রকাশ না করে এনসিপির ডজনখানেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে জামায়াতের সঙ্গে জোট-সমঝোতার পক্ষে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ৯০ শতাংশ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির ৮০ শতাংশ নেতা মত দিয়েছেন। ফলে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সমঝোতার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আজ রোববার এ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
একই কারণে নাম প্রকাশ না করে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সদস্য সচিব বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে এজেন্ডা আকারে আনা হয় ৫৯ সদস্যের দলের নির্বাহী পরিষদের সভায়। সেখানে সবার মতামত চাওয়া হলে মাত্র চারজন বিরোধিতা করেন। এছাড়া বিরোধিতা করতে পারেন, এমন কয়েকজন সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।
কয়েকটি সূত্র জানায়, গত বুধবার এনসিপির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত থাকা নেতাদের ৯০ শতাংশই জামায়াতের সঙ্গে তাদের জোটের প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন। এরপর জামায়াত আমিরের সঙ্গে বৈঠকে করেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা। সবশেষ গতকাল এর বিরুদ্ধে নীতিগত আপত্তি জানিয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন ৩০ কেন্দ্রীয় নেতা। তবে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে বর্তমানে ২১৪ জনের মতো সদস্য আছেন। সে হিসাবে সমঝোতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ২০ শতাংশের কম নেতা।
এনসিপির আসন সমঝোতা নিয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেন ছাড়া অন্যদের গণমাধ্যমে কথা বলায় নিষেধজ্ঞা আছে। সে কারণে কেউ নাম প্রকাশ না করলেও কয়েকজন নেতা জানান, সময়ের প্রয়োজন অনুধাবন করেই সমঝোতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এর আগে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করা হলেও অবমূল্যায়িত হতে হয়েছে। জুলাই বিপ্লবীদের জন্য ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি এবং সামনের সম্ভাব্য বিভিন্ন শঙ্কার বিষয় বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জামায়াতের সঙ্গে জোট করার বিরুদ্ধে নীতিগত আপত্তি জানানো ৩০ জনের মধ্যে অন্যতম এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মুহাম্মদ মুরসালীন। তিনি বলেন, জামায়াতের জোটে যাওয়া না যাওয়া দলের একটি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এক্ষেত্রে দুই শতাধিক নেতার মধ্যে মত-দ্বিমত বা ভিন্নমত থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি। এটা পদত্যাগ নয়।
গতকাল এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদের বরাবর ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দায়বদ্ধতা ও দলীয় মূল্যবোধের আলোকে সম্ভাব্য জোট বিষয়ে নীতিগত আপত্তিসংক্রান্ত স্মারকলিপি’ দেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ সদস্য। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ও এক ধরনের প্রচার চালিয়ে ৩০ জন একমত হতে পেরেছেন। তবে চিঠিতে সই থাকা একাধিক নেতা বলেন, তারা চিঠির সঙ্গে একমত নন। মৌখিক কথা বলে তাদের নাম যুক্ত করা হয়েছে।
চিঠিতে নেতারা তাদের আপত্তির কারণ হিসেবে এনসিপির ঘোষিত আদর্শ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার দায়বদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক নৈতিকতার কথা বলেছেন। এর সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ভূমিকা, ধর্মকেন্দ্রিক সামাজিক ফ্যাসিবাদের উত্থানের শঙ্কা এবং জামায়াতের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণে জামায়াতের সঙ্গে জোট করলে এনসিপির নৈতিক অবস্থান দুর্বল হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেনÑএনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মোহাম্মদ মুরসালীন, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী প্রমুখ।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি না হলেও জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে এগিয়েছে এনসিপি। আজ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। শুরুর দিকে এনসিপির নেতারা খুব আগ্রহ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়েছেন। ফলে গত কয়েক দিনে জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির সমঝোতার আলোচনায় গতি আসে এবং দুই দলের দায়িত্বশীল নেতাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে এগিয়েছে। কোন কোন আসনে দুই দলের কোন কোন প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা বেশি, সেটি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী আসন সংখ্যাও চূড়ান্ত হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। দলীয় প্রার্থী হতে হলে মনোনয়ন ফরমের সঙ্গে দলের প্রত্যয়নপত্রও জমা দিতে হয়। সেজন্য এই সময়ের মধ্যেই আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে সমঝোতা হলেও দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ার কারণে এ ব্যাপারে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে।
গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সদস্য সচিব বলেন, তারেক রহমান দেশে আসার পরও এনসিপির সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় আগামী সংসদে জুলাই বিপ্লবীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা হয়।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা দল ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে দলটির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পদত্যাগের কথা জানান তিনি। পরে ঢাকা-৯ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার কথা জানিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন ডা. জারা। এছাড়া তার স্বামী দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহও এনসিপি থেকে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি ব্যক্তিগত কারণে এনসিপি থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন।
জামায়াতের সঙ্গে দলটির নির্বাচনি জোট বা আসন সমঝোতার আলোচনার মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত এলো। কয়েকটি সূত্র জানায়, জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির সমঝোতায় আপত্তি থাকায় পদত্যাগ করেছেন জারা। তবে ঢাকা-৯ আসনে এনসিপির প্রার্থী হতে পারেন দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব হুমায়রা নুর।
ফেসবুক পোস্টে তাসনিম জারা জানান, আমার স্বপ্ন ছিল একটি রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম থেকে সংসদে গিয়ে আমার এলাকার মানুষ ও দেশের সেবা করা। তবে বাস্তব প্রেক্ষাপটে আমি কোনো নির্দিষ্ট দল বা জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর প্রয়োজন হওয়ায় আজ রোববার থেকে স্বাক্ষর অভিযানে নামার কথা জানিয়েছেন জারা। তবে একদিনে এত মানুষের স্বাক্ষর নেওয়া অসম্ভব হওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে আগ্রহীদের স্বতঃস্ফূর্ত সাহায্য চেয়ে একটি ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে আগামী সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ৪৭ লাখ টাকা গণচাঁদা সংগ্রহ করেছেন ডা. জারা। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের কারণে অনুদান ফেরত নিতে চাইলে ফেসবুকে দেওয়া একটি ফরম পূরণ করার অনুরোধ করে জারা বলেছেন, আপনাদের ট্রানজেকশন আইডি ও ডিটেইলস ভেরিফাই করার পর অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। আর যারা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন, তাদের শিগগির জানাব কী প্রক্রিয়ায় আপনাদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।
গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। সেখানে লেখা হয়, ‘ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির সঙ্গেই অন্য দলগুলোর মতভিন্নতা পরিলক্ষিত হতো। সেখানে সংস্কারের পয়েন্টগুলোয় ন্যাচারালি (স্বাভাবিকভাবেই) এনসিপি, জামায়াত ও অন্য দলগুলো একমত হয়েছে।’
তিনি আরো লেখেন, ‘সেক্ষেত্রে সংস্কারের বিষয়, দেশকে নতুন করে গড়া, নতুনভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে গড়ে তোলার জন্য যে রাজনীতি, সে রাজনীতির প্রতি যে কমিটমেন্ট সেটাকেই নির্বাচনি রাজনীতিতে জোটের বা সমঝোতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রধানতম বিবেচ্য বিষয় হিসেবে এটাকে মূল্যায়ন করছি।’
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের আসন সমঝোতার চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে আজ। এ প্রক্রিয়ায় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ আট দলের পাশাপাশি এনসিপি ও নতুন কিছু দল যুক্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের গতকাল রাতে জানান, আসন সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে নেতারা কাজ করছেন। রাতেই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। আজও এ নিয়ে বৈঠক শেষে চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে।
এমকে
রাজনীতি
ঢাকা-১৭ আসনে তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
বগুড়ার পৈতৃক আসনের পর এবার রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৭ আসন থেকেও নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে তার পক্ষে সেগুনবাগিচায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার।
গুলশান ও বনানী নিয়ে গঠিত এই অভিজাত আসনে বিএনপির শীর্ষ নেতার আগমনের খবরে রাজনৈতিক মহলে এখন নতুন সমীকরণ শুরু হয়েছে।
তারেক রহমান ও তার মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়াও এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। শনিবার রাতে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইং তাদের পরিচয়পত্র প্রস্তুতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ বিকেলের মধ্যে কমিশন সভায় অনুমোদনের পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে গুলশান এলাকার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হবেন। নিয়ম অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় নাম ওঠার পর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য তারা মাত্র একদিন সময় পাবেন।
বগুড়ার পর ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়নপত্র তোলায় দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের এই দ্বিমুখী শক্ত অবস্থান নির্বাচনী লড়াইয়ে বিএনপিকে এক বিশেষ সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যাবে। এখন সবার নজর নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের দিকে, যা সম্পন্ন হলেই চূড়ান্ত হবে তার সরাসরি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরবর্তী ধাপ।
এদিকে বিএনপির অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭ আসনের পরিবর্তে ভোলা-১ আসন থেকে জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
এমকে
রাজনীতি
মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন তারেক রহমান
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল ও সংকটময়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এই কঠিন সময়ে মায়ের দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে বিশেষ দোয়া চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দলটির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বেগম জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় তাকে প্রথমে সিসিইউ এবং পরে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার অবস্থা বর্তমানে এমন পর্যায়ে যে তার উন্নতি হয়েছে-এমনটি বলার অবকাশ নেই। তবে মহান আল্লাহর রহমতে এই সংকটময় মুহূর্ত কাটিয়ে উঠতে পারলে ভালো কিছুর আশা করা যেতে পারে।
এদিকে দীর্ঘ ১৭ বছর পর লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর থেকেই তারেক রহমান মায়ের চিকিৎসার বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারকি করছেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনভর নানা কর্মসূচি শেষে তিনি পুনরায় হাসপাতালে গিয়ে দীর্ঘ সময় মায়ের পাশে অবস্থান করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ডা. জুবাইদা রহমান। তারা দীর্ঘক্ষণ মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট গ্রহণ করেন। রাত ১২টার দিকে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
তারেক রহমান হাসপাতালের অন্য রোগীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অত্যন্ত সচেতন যে কোনোভাবেই যেন সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত না হয়। এ কারণে তিনি নেতাকর্মীদের অতিউৎসাহী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ ও অনুরোধ জানিয়েছেন।
বর্তমানে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বেগম জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার অবস্থা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। তারেক রহমান ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি প্রান্তে থাকা মানুষের কাছে দেশনেত্রীর জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আকুল আবেদন জানানো হয়েছে।
এমকে




