রাজনীতি
জামায়াতের কাছে ৩৪৮ আসন চায় শরিকরা
৮ দলের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হতে পারে দু-একদিনের মধ্যে। তবে শরিকদের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কটি আসনে ছাড় দেবে তা এখনো নিশ্চিত করে কেউ না বললেও ২২০ আসনের দাবিকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না দলটি। ৮ দলের সঙ্গে আসন সমঝোতায় আরও ২-৩টি দলের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারাও বেশকিছু আসন দাবি করছে। এসব মিলিয়ে ৩৪৮ আসন দাবি করছে জামায়াতের শরিকরা। জামায়াতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জামায়াতের নেতৃত্বাধীন সমমনা ৮টি ইসলামি দলের মধ্যে আসন সমঝোতা এখনো সম্পন্ন হয়নি। দলগুলোর নেতারা বলছেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শাহাদতের কারণে অনেক কিছুই রুটিনমাফিক করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের লন্ডন সফর এবং লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদের ওমরাহ পালন করতে যাওয়ায় আসন সমঝোতার বিষয়ে বৈঠকগুলো সময়মতো করা সম্ভব হয়নি। অন্যথায় গত সপ্তাহেই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যেত বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
প্রায় এক বছর আগে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে ভোটের মাঠে কাজ শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী। পরে ৫ দফার আন্দোলন কেন্দ্র করে সমমনা আরও সাতটি ইসলামি দল জামায়াতের সঙ্গে এক ছাতার এক মঞ্চে আসে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলো একক প্রার্থী দিতে একমতও হয়। তবে আসন সমঝোতার বিষয়ে দলগুলো মাঠ জরিপের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায়। এজন্যই কোন আসনে কার কী জনপ্রিয়তা তার একটি মূল্যায়ন রিপোর্ট তৈরি করতে প্রত্যেক দলকেই বলা হয়। ইতোমধ্যে মাঠ জরিপের রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
মাঠ জরিপের ভিত্তিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১২০টি আসন দাবি করে। অন্য ৬ শরিক দল খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি-বিডিপি মিলে দাবি করে আরও ১০০টি আসন। সব মিলিয়ে জামায়াতের শরিক ৭ দল ২২০ আসন দাবি করে। তবে এ বিষয়ে জামায়াত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমাদের আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনের উদ্যোগের সঙ্গে একমত হয়ে আরও ২-৩টি সমমনা ইসলামি দল আমাদের সঙ্গে আসতে চাচ্ছে। তাদেরও বেশকিছু আসনের দাবি আছে। তিনি বলেন, আগের ৭ দল আর নতুন তিন দল মিলিয়ে তাদের যে আসনের ডিমান্ড তার সংখ্যা সর্বসাকুল্যে ৩৪৮টি। অথচ পার্লামেন্টে মোট আসন সংখ্যাই ৩০০। আবার আমাদেরও তো প্রার্থী আছে। সব মিলিয়ে শরিকরা যত আসন দাবি করেছেন তা তাদের মতো করে চাওয়ার জন্য চেয়েছেন। আসন সমঝোতার বিষয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত আছে। আমরা সবাই উদার মন নিয়ে কাজ করছি। আশা করি দু-একদিনের মধ্যেই আমরা সমঝোতায় পৌঁছতে সক্ষম হবো।
দলের অপর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব যোবায়ের জানান, কে কত আসন চেয়েছে সেটা বড় কথা নয়। আমরা ৮ দলকে বিজয়ী করতে চাই। এজন্য যাকে যেখানে দিলে পাশ করার সম্ভাবনা তাকে সেখানে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে একমত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যুসহ কয়েকটি কারণে আমাদের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হয়নি। এজন্য আসন সমঝোতা দেরি হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, দু-একদিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারব। তবে আসন সংখ্যার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি এই নেতা। তিনি বলেন, আমরা ৮ দল একত্র হয়ে কাজ করছি। যাকে যেখানে দিলে ভালো করবে তাকে সেখানে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আমরা নীতিগতভাবে একমত।
তবে নির্ভরযোগ্য অপর একটি সূত্র বলছে, শরিকদের ২২০ আসনের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না জামায়াত। আবার নতুন শরিকদের ব্যাপারটাও একই। তবে সবাইকে একসঙ্গে রাখতে জামায়াত সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। যদিও সেই সর্বোচ্চ ছাড় কতটি আসন তা এখনো স্পষ্ট নয়। দলটির নেতাদের মতে, শুধু চাওয়ার জন্য বা চাওয়া-পাওয়া নিয়ে রাজনীতি হয় না। একত্রে থাকতে হলে উদার মন থাকতে হবে। জামায়াতের এক নেতা বলেন, সংখ্যার ভিত্তিতে সমঝোতার পরিবর্তে সমঝোতা হতে হবে সম্ভাবনার ভিত্তিতে। সেক্ষেত্রে ৮ দলের শীর্ষ নেতাদের পাশ করিয়ে আনার বিষয়টি বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে হবে। জামায়াত এ বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিতে চায়।
এমকে
রাজনীতি
গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাসভবনে তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এভারকেয়ার হাসপাতালে অসুস্থ মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবনে পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি হাসপাতাল থেকে বের হন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশান অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন।
এর আগে বিকেল ৫টা ৫২ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল এলাকায় আসেন তারেক রহমান। পরে ৫টা ৫৪ মিনিটের দিকে তিনি হাসপাতালে প্রবেশ করেন। জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ফিট) গণসংবর্ধানাস্থল থেকে তিনি এভারকেয়ারে আসেন। হাসপাতালে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন তারেক রহমান। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে গুলশানের উদ্দেশে রওনা দেন।
দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন তারেক রহমান। ফিরে এভারকেয়ার হাসপাতালে অসুস্থ মায়ের কাছে ছুটে যান। যেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তারেক রহমান আইসিইউ কেবিনে অবস্থান করে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আইসিইউ কেবিনের বাইরে অপেক্ষমাণ অবস্থায় দেখা যায় বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে। তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করেন।
এদিকে তারেক রহমানের আগমন ঘিরে সকাল থেকেই হাসপাতালের গেটে অবস্থান নেন বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা। নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে তারেক রহমানকে বহন করা গাড়ি হাসপাতাল চত্বরে ঢোকার সময় কর্মী-সমর্থকদের বাধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা যায়। এসময় দলীয় পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল এলাকায় স্লোগান দিতে নিষেধ করা হয়েছিল।
এর আগে তারেক রহমানকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রথমে ফুল দিয়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে একে একে আলিঙ্গন করেন। এ ছাড়া উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি।
পরে তারেক রহমানকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন তার শাশুড়ি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান এবং দেশে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যরা।
এমকে
রাজনীতি
তারেক রহমানের দেশে ফেরা গণতান্ত্রিক লড়াইয়েরই ইতিবাচক প্রতিফলন: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানাই। তার ফেরার এই অধিকারটি পুনরুদ্ধার হওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়েরই একটি ইতিবাচক প্রতিফলন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার এই অধিকারটি পুনরুদ্ধার হওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়েরই একটি ইতিবাচক প্রতিফলন।
‘তারেক রহমান এবং তার পরিবার রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং তাকে দীর্ঘ সময় নির্বাসিত থাকতে হয়েছে। হাজারো শহীদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের ফলে এমন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে যেখানে তিনি ও তার পরিবার দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন।’
তিনি আরও লেখেন, আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ রাষ্ট্র চাই, যেখানে ভবিষ্যতে ভিন্নমতের কারণে কোনো রাজনৈতিক নেতাদের রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।
বিগত দেড় দশকের অবরুদ্ধ রাজনৈতিক পরিবেশ ভেঙে আমরা আজ যে মুক্ত বাংলাদেশের পথে হাঁটছি, সেখানে প্রতিটি নাগরিকের আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও সুসংহত করবে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানাই। দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তার এই অংশগ্রহণ ফলপ্রসূ হোক।
এমকে
রাজনীতি
মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এভারকেয়ার ছাড়লেন তারেক রহমান
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে প্রথম দিনেই অসুস্থ মা খালেদা জিয়ার পাশে সময় কাটাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সময় কাটানো শেষে গুলশানের বাসার উদ্দেশ্যে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ৩৪ মিনিটে গুলশানে নিজ বাসভবনের উদ্দেশ্যে এভারকেয়ার হাসপাতাল ত্যাগ করেন তারেক রহমান।
এর আগে সন্ধ্যা ৫টা ৫২ মিনিটের দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান তারেক রহমান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা। তারেক রহমান হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণ আগে সেখানে পৌঁছান তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।
তারেক রহমানকে বহনকারী বাসটি এভারকেয়ার হাসপাতাল গেটের সামনে পৌঁছালে তিনি বাস থেকে নেমে যান। এরপর সেখান থেকে হেঁটে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করেন।
এর আগে, গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, প্রিয় ভাই-বোনেরা, সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পড়ে আছে, সেই হাসপাতালের ঘরে। কিন্তু সেই মানুষটি যাদের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন— অর্থাৎ আপনারা, এই মানুষগুলোকে আমি কোনোভাবেই ফেলে যেতে পারি না। সেজন্যই আজ হাসপাতালে যাওয়ার আগে আপনাদের প্রতি এবং টেলিভিশনগুলোর মাধ্যমে যারা সমগ্র বাংলাদেশে আমাকে দেখছেন—আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আজ আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।
এমকে
রাজনীতি
তারেক রহমান দেশে ফেরায় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দূর হলো: আখতার
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরায় দেশের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এমনটিই জানিয়েছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিবিসি বাংলাকে তিনি এ তথ্য জানান।
আখতার হোসেন বলেন, ‘দেশে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেও নির্বাচন হবে কি না, এ নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা ছিল। এমন প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান দেশে ফেরায় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দূর হলো।’
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব মনে করেন, তারেক রহমান দলীয় রাজনীতির বাইরে জাতীয় রাজনীতিতে কী ভূমিকা রাখেন, সেদিকে সবার নজর থাকবে।
বিবিসিকে আদিব বলেন, ‘তারেক রহমান নির্বাসনে থেকে তার দল বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে তিনি কীভাবে ভূমিকা রাখেন, সেটি একটি বড় বিষয়।’
এদিকে তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের ইতিবাচক প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৫৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত পোস্ট দিয়েছেন তিনি। তার পোস্টটি নিচে হুবহু দেওয়া হলো।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার এই অধিকারটি পুনরুদ্ধার হওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়েরই একটি ইতিবাচক প্রতিফলন।
তারেক রহমান এবং তার পরিবার রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং তাকে দীর্ঘ সময় নির্বাসিত থাকতে হয়েছে। হাজারো শহীদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের ফলে এমন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। যেখানে তিনি ও তার পরিবার দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন।
আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ রাষ্ট্র চাই, যেখানে ভবিষ্যতে ভিন্নমতের কারণে কোনো রাজনৈতিক নেতাদের রাষ্ট্রীয় দমনপীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।
বিগত দেড় দশকের অবরুদ্ধ রাজনৈতিক পরিবেশ ভেঙে আমরা আজ যে মুক্ত বাংলাদেশের পথে হাঁটছি, সেখানে প্রতিটি নাগরিকের আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও সুসংহত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানাই। দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তার এই অংশগ্রহণ ফলপ্রসূ হোক।
এমকে
রাজনীতি
আগামী দিনে মহানবী (সা.)-এর দেখানো পথে দেশ পরিচালনা করব: তারেক রহমান
আগামী দিনে মহানবী (সা.)-এর দেখানো পথে দেশ পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলের ‘৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট সড়ক) সংলগ্ন বিশাল গণঅভ্যর্থনার মঞ্চে উপস্থিত বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী, সমর্থক ও জনতার উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, আল্লাহর দয়া ও মানুষ পাশে থাকলে প্রত্যাশিত দেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। আগামী দিনে মহানবী (সা.)-এর দেখানো পথে দেশ পরিচালনা করব।
তিনি বলেন, আজ আমাদের সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার। এখানে পাহাড়ে যেমন মানুষ রয়েছে, তেমনি সমতলে রয়েছে। এখানে হিন্দু-বৌদ্ধ সকল ধর্মের মানুষ রয়েছে। তরুণ নারী-পুরুষ-কৃষক প্রত্যাশা রয়েছে রাষ্ট্রের কাছে, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে সকলের আশা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের শহীদেরা যে রকম দেশ গড়ার জন্য চেয়েছিলেন। গত ১৫ বছর মা-বোনেরা, তরুণপ্রজন্ম নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। ওসমান হাদিসহ যারা শহীদ হয়েছে তাদের প্রত্যাশিত দেশ গড়া সম্ভব। ধৈর্য ধরতে হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে এসে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, রাব্বুল আলামিনের দরবারে শুকরিয়া, আপনাদের দোয়ায় প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছি। ১৯৭১ সালে লাখো মানুষের জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর আধিপাত্যবাদ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়, ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র ফিরে আসে। আর ২০২৪ সালে ছাত্রজনতা, গৃহবধূ, মাদ্রাসা ছাত্রসহ সকলে মিলে সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে। মানুষের কথা বলার অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার, ফিরে পেতে চাই।
এমকে




