জাতীয়
বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হবে বাংলাদেশসহ কয়েক দেশ: বিশ্বব্যাংক
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হবে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলো। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানকে এর ভয়াবহ প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঝুঁকি থেকে স্থিতিস্থাপকতা: দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের অভিযোজনে সহায়তা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। সেখানেই উঠে এসেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ চরম জলবায়ু ঝুঁকির মুখে পড়বে। উচ্চ তাপমাত্রা, ভয়াবহ বন্যা, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি-সব মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামীণ অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন ও কর্মসংস্থান। পারিবারিক পর্যায়েও ঝুঁকি বাড়বে বহুগুণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় শক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও তথ্য সংগ্রহ সবই ব্যয়বহুল। জলবায়ু অভিযোজন মোকাবিলায় বাংলাদেশের অনেক পলিসি রয়েছে, তা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে পাইলট প্রকল্প চলমান রয়েছে। তবে, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের সমন্বয়ে বাংলাদেশ বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে।
জাতীয়
তাজরীন ট্র্যাজেডির ১৩ বছর আজ
ঢাকার আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ ১৩ বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই ভয়াবহ রাতের শারীরিক ও মানসিক ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন হাজারো শ্রমিক। উন্নত চিকিৎসা ও পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়ায় তাদের অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি- বরং অনেকে মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনস কারখানার নিচতলার গুদাম থেকে সৃষ্ট ভয়াবহ আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। আগুন লাগার সময় নিচতলার ফটকটি তালাবদ্ধ থাকায় বহু শ্রমিক বের হতে না পেরে আগুনে পুড়ে মারা যান। সরকারি হিসাবে ওই ঘটনায় ১১৪ জন প্রাণ হারান।
এ ঘটনায় আহত হন এক হাজারের বেশি শ্রমিক, যাদের মধ্যে ১৭২ জন স্থায়ী পঙ্গুত্ববরণ করেন। যারা উপরের তলা থেকে লাফিয়ে বাঁচতে পেরেছিলেন—তাদের বহুজনের হাত-পা, বক্ষপাঁজর, কোমরসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ হাড় ভেঙে যায়। আগুন থেকে রক্ষা পেলেও সেই দিনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা আজও তাড়া করে ফেরে তাদের।
১৩ বছর পরও অধিকাংশ আহত শ্রমিক পাননি উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ বা পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুযোগ। শারীরিক জটিলতা ও কাজ করতে অক্ষমতার কারণে অনেকেই এখন দারিদ্র্য ও মানসিক চাপে দিন কাটাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলছেন।
হতাহতদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে শ্রমিক নেতারা নতুন করে ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও দায়ীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। এ ছাড়া এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।
১৩ বছর পরও তাজরীন ট্র্যাজেডি রয়ে গেছে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতার এক বেদনাদায়ক প্রতীক হয়ে।
জাতীয়
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর চায় বাংলাদেশ, বড় বাধা ভারত
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিকল্পনা করছে ঢাকা। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সম্প্রতি আদালত তার বিরুদ্ধে এই রায় দিয়েছে।
কিন্তু এই রায় কার্যকরের পথে সবচেয়ে বড় বাধা এখন ভারত। গত শনিবার (২২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একসময় শেখ হাসিনা ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি একজন বিপ্লবী নেতার কন্যা। ১৯৭০-এর দশকে বাবার নৃশংস হত্যাকাণ্ডই তার রাজনৈতিক উত্থানের পথ খুলে দিয়েছিল।
কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে শীর্ষে ওঠা শেখ হাসিনার সেই উত্থানের পর এসেছে নাটকীয় পতন। আর তা ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুতি এবং শেষ পর্যন্ত পালিয়ে ভারতে আত্মগোপন। এখন তার অনুপস্থিতিতে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে— যদি ভারত তাকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত তার সরকারের পতন ঘটায়। এরপর ১৫ বছরের ক্রমবর্ধমান স্বৈরশাসনের পর গত বছরের আগস্টে তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং একসময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশের রাজধানীতে আশ্রয় নেন।
এখন তিনি দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়নের কেন্দ্রে রয়েছেন। কারণ তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি বারবার করে চলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুবাশ্বর হাসান বলেন, “তিনি জনরোষ এড়াতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ভারতে লুকিয়ে আছেন, আর মৃত্যুদণ্ড পেলেন। ঘটনাটা সত্যিই ব্যতিক্রমী।”
রক্তাক্ত অতীত
হাসিনার রাজনৈতিক যাত্রা শেক্সপিয়রের ট্র্যাজেডির মতোই— মর্মান্তিক ঘটনা, নির্বাসন ও ক্ষমতার লড়াই। আর এর সবই বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িত। শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে হিসেবে স্বাধীনতার সংগ্রাম তিনি কাছ থেকে দেখেছেন।
কিন্তু তার জীবনের পথ বদলে দেয় ১৯৭৫ সালের আগস্টের এক রক্তাক্ত রাত।
সেসময় সামরিক অভ্যুত্থানে সেনা কর্মকর্তারা ঢাকায় তার বাবা, মা ও তিন ভাইকে হত্যা করেন। হাসিনা ও তার বোন তখন পশ্চিম জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান। সেসময় বিশৃঙ্খল নানা ঘটনাবলীর পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন, যিনি ছিলেন পরবর্তীতে হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া খালেদা জিয়ার স্বামী।
পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের পর রাতারাতি নির্বাসিত হন হাসিনা। ছয় বছর ভারতেই কাটান এবং এটিই ভবিষ্যৎ জীবনে ভারতের প্রতি তার আস্থাকে দৃঢ় করে। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর তিনি দেখেন ‘জনগণ নতুন আশা নিয়ে তার দিকে’ তাকিয়ে আছে। অন্যদিকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন আরেক ট্র্যাজিক চরিত্র— খালেদা জিয়া।
দেশে ফিরেই হাসিনা বলেন, “বিমানবন্দরে নেমে আপনজন কাউকে পাইনি, কিন্তু পেয়েছি লাখো মানুষের ভালোবাসা— এটা ছিল আমার শক্তি”। এরপর শুরু হয় “দুই বেগমের লড়াই”।
ক্ষমতার লড়াই
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে হাসিনা বহু বছর সংগ্রামের পথ পাড়ি দেন। গৃহবন্দী, দমন-পীড়ন আর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে দিয়েই এই পদ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে তার দল নির্বাচন জিতলে তিনি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন। দায়িত্ব পেয়েই তিনি ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু করেন।
তবে ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম হাসিনা এক মেয়াদ শেষেই ক্ষমতা হারান। ২০০৮ সালে আবার ক্ষমতায় ফিরে তাকে ভিন্ন রূপে অর্থাৎ আরও দৃঢ়, কম আস্থাশীল, স্থায়ীভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার সংকল্পে দেখা যায় তাকে।
পরবর্তী ১৫ বছর তিনি কঠোর হাতে দেশ শাসন করেন। একদিকে ‘দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন, মিডিয়া ও বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন বাড়তে থাকে। ভারতের নিকট প্রতিবেশ হিসেবে তিনি দিল্লিকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা দেন, যা পাকিস্তান ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী থাকা অঞ্চলে ভারতের জন্য বড় সুবিধা ছিল।
কিন্তু দেশের অভ্যন্তরে বাড়তে থাকে দমননীতি। সমালোচকরা সেসময় প্রায়ই অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ একদলীয় শাসনের দিকে এগোচ্ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, বাড়তে থাকা চাপের মধ্যে হাসিনা কেবল “ভারতের নিঃশর্ত সমর্থনের ওপরই ভরসা রাখতে পারতেন।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন
যদিও বহু আন্দোলন ও হত্যাচেষ্টার মধ্যেও হাসিনার ক্ষমতা টলেনি, কিন্তু গত বছরের শিক্ষার্থী আন্দোলন ছিল অন্যরকম। সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে আন্দোলন দ্রুত দেশজুড়ে বিক্ষোভে রূপ নেয়। সরকারের কঠোর দমন-পীড়নে জাতিসংঘের হিসাব মতে ১৪০০ মানুষ নিহত হয়।
কিন্তু এ সহিংসতা আন্দোলন থামায়নি। বরং আন্দোলনকে আরও উসকে দেয় এবং শেষ পর্যন্ত হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। মুবাশ্বর হাসান বলেন, “তিনি দেশ ছাড়লেন— এটিই তার অপরাধের স্বীকারোক্তি। তিনি অনেক বেশি সীমা লঙ্ঘন করেছিলেন।”
মৃত্যুদণ্ডের রায়
ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় তার জীবনের আরেকটি চক্র সম্পূর্ণ করে। অর্থাৎ প্রায় অর্ধশতাব্দী পর আবারও দেশটিতে নির্বাসনে যান তিনি। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার অনুপস্থিতিতেই বিচার করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল: বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে উসকানি দেওয়া, বিক্ষোভকারীদের ফাঁসির আদেশ দেওয়া এবং ড্রোন, অস্ত্র, হেলিকপ্টার দিয়ে আন্দোলনে দমন-পীড়নের নির্দেশ। আদালত বলেছে, শিক্ষার্থীদের হত্যার আদেশ তিনি দিয়েছেন এবং এটি একেবারে স্পষ্ট।
রায় ঘোষণা হলে আদালতে কান্না ও করতালিতে ভরে ওঠে। নিহত এক আন্দোলনকারীর বাবা আবদুর রব বলেন, এতে একটু শান্তি পেলাম। পুরো শান্তি পাব যখন তাকে ফাঁসির দড়িতে দেখব।
ভারত এই রায়কে স্বীকৃতি দিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ভারত সবসময় ভালো বন্ধু। তারা আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে।
ভারতের সাবেক কূটনীতিক অনিল ত্রিগুনায়েত বলেন, “ভারত তাকে ফেরত পাঠাবে কিনা তাতে আমি খুবই সন্দিহান”। ভারতের আইন ও বাংলাদেশ-ভারত প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ‘রাজনৈতিক অপরাধে’ কাউকে ফেরত না পাঠানো যায়। আর ভারত সম্ভবত সেই যুক্তিই ধরতে পারে।
তিনি বলেন, ভারত হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগকে রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করবে। ত্রিগুনায়েত আরও বলেন, হাসিনা এখনো সব আইনি পথ শেষ করেননি, তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারেন, এমনকি হেগেও যেতে পারেন। তাই ভারত তাড়াহুড়ো করবে না।
এদিকে রায়ের পরদিন বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে দ্রুত ফিরিয়ে দিতে ভারতের কাছে আবারও চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া ভারতের দায়িত্ব।’
পরবর্তী রাজনীতির গতিপথ কী
আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে হাসিনার এই মৃত্যুদণ্ড দেশের রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ এখন নিষিদ্ধ, নেতৃত্বেরও ঠিক-ঠিকানা নেই। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গভীর রাজনৈতিক বিভাজন দূর করার কঠিন কাজে নেমেছে।
এর সুযোগ নিতে পারে বিএনপি ও আরও বহু রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ হয়তো আবার ফিরে আসতে চাইবে— তবে তা হাসিনার নেতৃত্বে নয়। এখন প্রশ্ন— হাসিনার পতন কি বিষাক্ত যুগের সমাপ্তি, নাকি নতুন অনিশ্চয়তার শুরু?
জাতীয়
ঢাকার বাতাস আজ খুবই অস্বাস্থ্যকর
ভারতের দিল্লি আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে, রাজধানী ঢাকা রয়েছে দ্বিতীয় নম্বরে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৪ মিনিটে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
তালিকার শীর্ষে অবস্থান করা দিল্লির বায়ুর মানের স্কোর ৪৪১। এর অর্থ দাঁড়ায় এখানকার বায়ুর মান বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ঢাকার দূষণ স্কোর ২২০ এর অর্থ দাঁড়ায় এখানকার বায়ুর মান খুবই অস্বাস্থ্যকর। এরপরে রয়েছে কলকাতা।
চতুর্থ নম্বরে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর।
স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। অন্যদিকে, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা বিপজ্জনক বা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
জাতীয়
ঢাকা ছাড়লেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ঢাকা ছেড়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।
এর আগে, শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বাগত জানান। এ ছাড়া তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা, গার্ড অব অনার এবং তোপধ্বনি দেওয়া হয়।
এরপর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। এ সময় শুক্রবারের (২১ নভেম্বর) ভূমিকম্পে বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়ে খোঁজখবর নেন তোবগে।
পরে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আলাদাভাবে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শনিবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করেন, বিশেষ গুরুত্ব দেন বাণিজ্য, সংযোগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী তোবগের সঙ্গে এই সফরে ছিলেন ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি এন ধুঙ্গিয়েল, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়নপো নামগিয়াল দরজি এবং ভুটানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জাতীয়
সৌদিতে বাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের প্রস্তাব
বাংলাদেশি ডাক্তার, নার্স, কেয়ারগিভার, টেকনিশিয়ান ও সংশ্লিষ্ট কর্মী সৌদি আরবে নিয়োগের জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক জি-টু-জি (সরকারি পর্যায়ে) ফ্রেমওয়ার্ক প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি রিয়াদে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া এবং সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্র্যাক্টিং ও বিদেশি অফিসবিষয়ক মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ বিন হাসান আল-দুগাইসারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ প্রস্তাব আলোচনা হয়।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।
সরকারি এক নথির তথ্যানুযায়ী জানানো হয়, নিয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়ার সাম্প্রতিক সরকারি সফরকালে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ২০২৪-২৫ সালে এক হাজার ২০০ জন বাংলাদেশি গ্র্যাজুয়েট নার্স নিয়োগের বিষয়টি প্রশংসিত হয়। বাংলাদেশ তাদের কর্মদক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও সেবার মান নিয়ে সৌদি পক্ষের মতামত চায় এবং প্রশিক্ষণ, ভাষাজ্ঞান ও সামগ্রিক প্রস্তুতি উন্নয়নে পরামর্শ কামনা করে।
যোগ্য নার্সদের বেসরকারি খাতে নিয়োগ সহজ করতে বাংলাদেশ নার্সদের জন্য প্রোমেট্রিক পরীক্ষার ছাড় চায় এবং সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি হাসপাতাল নিয়োগ মডেলের অনুরূপ একটি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করে।
সৌদি কমিশন ফর হেলথ স্পেশালটিজের (এসসিএফএইচএস) সঙ্গে বাংলাদেশ সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে যাতে মূল্যায়ন ও লাইসেন্সিং সহজ হয়। এ জন্য সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ বা প্রযুক্তিগত কমিটি গঠন এবং পাঠ্যক্রম সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
প্রতিক্রিয়ায় সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, স্বাস্থ্য খাতের পরিবর্তনের আগে উভয় পক্ষ একটি খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত করেছিল, যা পরিবর্তন নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংশোধন করা যেতে পারে।
বৈঠকে জানানো হয়, সৌদি আরবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার নার্সের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং বাংলাদেশি নার্সরা সাধারণ ওয়ার্ডে টেকনিক্যাল নার্স হিসেবে স্বাধীন নার্সের তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করছে না, বর্তমানে হেলথ হোল্ডিং কোম্পানি (এইচএইচসি) সৌদি আরবে স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের দায়িত্ব পালন করছে।
নার্স নিয়োগে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই প্রোমেট্রিক পরীক্ষা, পেশাগত অভিজ্ঞতা, সৌদি হেলথ কাউন্সিল কর্তৃক পেশাগত যোগ্যতার স্বীকৃতি, নার্স হিসেবে সৌদি লাইসেন্স এবং চিকিৎসাগত ত্রুটি কাভার করার জন্য বীমা বাধ্যতামূলক শর্ত।



