Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

ক্যাম্পাসে শুরু, কর্পোরেটে সাফল্য- চার বছরের যাত্রায় ভবিষ্যতের পথচলা

Published

on

কে

ইউনিভার্সিটির চার বছরের জীবন কি ক্যারিয়ার নির্ধারণ করতে পারে? প্রশ্নটা শুনতে যতটা সাধারণ মনে হয়, উত্তরটা কিন্তু ততটা সহজ নয়। অনেকেই মনে করেন, ক্যারিয়ার নির্ভর করে ভাগ্য, পারিবারিক প্রেক্ষাপট বা প্রথম চাকরির সুযোগের ওপর। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, একজন তরুণ-তরুণীর কর্মজীবনের ভিত্তি গড়ে ওঠে ঠিক সেই সময়টাতেই;যখন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে নিজেদের খুঁজে ফেরে, স্বপ্ন বুনে, আর পরিপক্ক হয়ে ওঠে বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুধু বইয়ের পড়াশোনায় সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি হচ্ছে জীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ পর্ব। এখানে একজন শিক্ষার্থী শেখে কিভাবে নিজের সময়, দক্ষতা ও সম্পর্ককে ব্যবস্থাপনা করতে হয়। ক্লাসরুমে শেখানো তত্ত্ব যেমন জ্ঞান দেয়, তেমনি ক্লাব, ডিবেটিং সোসাইটি, স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম কিংবা উদ্যোক্তা উদ্যোগগুলো বাস্তব জগতের প্রস্তুতি গড়ে তোলে। এই চার বছরের অভিজ্ঞতাই অনেক সময় ঠিক করে দেয় একজন শিক্ষার্থীর পেশাগত পরিচয় কেমন হবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

একাডেমিক জ্ঞান: প্রাথমিক ভিত্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ একজন শিক্ষার্থীকে দেয় মূল জ্ঞানের ভিত। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর গভীর ধারণা তৈরি হয় এখান থেকেই। অর্থনীতি, প্রকৌশল, ব্যবসা, সাহিত্য বা আইন;যে ক্ষেত্রেই পড়াশোনা হোক না কেন, পাঠ্যজ্ঞানই ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের প্রথম দরজা খুলে দেয়। তবে, কেবল বইয়ের জ্ঞানই যথেষ্ট নয়। বাস্তব দুনিয়ার সমস্যাগুলো সমাধান করতে হলে সেই তত্ত্বকে প্রয়োগ করার দক্ষতা থাকা জরুরি; যা অর্জিত হয় অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সহশিক্ষা কার্যক্রম: নেতৃত্ব ও দলগত কাজের অনুশীলন
বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের সবচেয়ে বড় উপহারগুলোর একটি হলো সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ। ক্লাব কার্যক্রম, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কালচারাল প্রোগ্রাম, উদ্যোক্তা প্রতিযোগিতা বা স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন; এসব কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের শুধু আনন্দ দেয় না, বরং তৈরি করে বাস্তব জীবনের প্রস্তুতি।

কোনো ইভেন্ট পরিচালনা করতে গিয়ে শেখা হয় পরিকল্পনা করা, কাজ ভাগ করে দেওয়া, দল পরিচালনা করা, সমস্যা সমাধান ও সময় ব্যবস্থাপনা। এসব অভিজ্ঞতা কর্পোরেট জগতে নেতৃত্ব, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, কিংবা ক্লায়েন্ট হ্যান্ডলিংয়ে সরাসরি কাজে লাগে। তাই বলা যায়, সহশিক্ষা কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের অদৃশ্য পাঠ্যসূচির অংশ, যা পেশাগত জীবনের জন্য শিক্ষার্থীকে প্রস্তুত করে।

নেটওয়ার্কিং: ভবিষ্যতের দরজা খোলার চাবি
ক্যারিয়ার গঠনে ‘নেটওয়ার্ক’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তৈরি হয় অসংখ্য সম্পর্ক;সহপাঠী, শিক্ষক, সিনিয়র-জুনিয়র, প্রাক্তন শিক্ষার্থী কিংবা অতিথি বক্তা;যারা পরবর্তীতে কর্মক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হতে পারেন। একজন সিনিয়রের রেফারেন্সে প্রথম ইন্টার্নশিপ, কোনো শিক্ষকের পরামর্শে ক্যারিয়ার দিকনির্দেশনা, বা সহপাঠীর উদ্যোগে স্টার্টআপ;সবই সম্ভব হয় সেই সম্পর্কের ভিত্তিতে। কর্পোরেট জগতে আজ “network is net worth” কথাটি সত্য প্রমাণিত হচ্ছে প্রতিদিন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকেই সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং সেগুলো বজায় রাখা পেশাগত বিকাশের অন্যতম চাবিকাঠি।

কর্পোরেট রিয়েলিটি বোঝা: ইন্টার্নশিপ ও এক্সপোজারের গুরুত্ব
বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে চাকরির বাজার এখন অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। শুধু ভালো সিজিপিএ বা ডিগ্রি দিয়ে সুযোগ পাওয়া কঠিন। এই জায়গায় ইন্টার্নশিপ, সেমিনার, কর্পোরেট ভিজিট, কিংবা গেস্ট লেকচারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের বাস্তব দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত করে, শেখায় কিভাবে থিওরি প্রয়োগ করা যায়, কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়, কিংবা কিভাবে পেশাদার আচরণ গড়ে তুলতে হয়।

যেসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই এসব সুযোগ গ্রহণ করে, তাদের কর্পোরেট ট্রানজিশন তুলনামূলকভাবে মসৃণ হয়। তারা দ্রুত বুঝে ফেলে; ‘কাজের জায়গায় কেমন আচরণ করতে হয়’, ‘কীভাবে সময়সীমা রক্ষা করতে হয়’, কিংবা ‘কীভাবে নিজের পারফরম্যান্স উপস্থাপন করতে হয়।’

আত্ম-আবিষ্কার ও আত্মবিশ্বাস গঠনের সময়
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কেবল পেশাগত নয়, মানসিক ও আত্মিক পরিপক্কতার সময়ও বটে। এখানেই একজন তরুণ শেখে সে আসলে কী চায়, কোন কাজে তার আগ্রহ বেশি, এবং কোন পথে হাঁটলে সে সবচেয়ে বেশি পরিপূর্ণতা অনুভব করবে। কেউ হয়তো বুঝতে পারে সে গবেষণা বা একাডেমিক জীবনে সফল হবে, কেউ উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে, আবার কেউ দেখে তার গন্তব্য কর্পোরেট নেতৃত্বে। এই আত্ম-অন্বেষণই পরবর্তীতে একজন মানুষকে করে তোলে আত্মবিশ্বাসী, সিদ্ধান্তপ্রবণ ও লক্ষ্যভেদী।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেশাগত জীবনে রূপান্তর: প্রস্তুতির বাস্তব চিত্র
আজকের অনেক সফল পেশাজীবী তাদের ক্যারিয়ারের শুরুর গল্প বলতে গিয়ে একটি বিষয়েই একমত; ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবন তাদের চিন্তাধারাকে গড়ে দিয়েছে।’

একজন শিক্ষার্থী যদি ক্লাসরুমের পড়ার পাশাপাশি নিজের আগ্রহের ক্ষেত্রে কাজ করে, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে, এবং চারপাশের মানুষের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করে;তবে তার ক্যারিয়ার শুরু হয় অনেক দৃঢ় ভিত্তির ওপর। কর্পোরেট দুনিয়ার যে তিনটি মূল দক্ষতা;যোগাযোগ (communication), বিশ্লেষণক্ষমতা (analytical ability), ও পেশাগত আচরণ (professionalism);এসবের অনুশীলনের জায়গা তৈরি হয় এই চার বছরের মধ্যেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছর হয়তো কারও ক্যারিয়ারের শেষ শব্দ নয়, কিন্তু এটি নিঃসন্দেহে প্রথম অধ্যায়। এই সময়টি কেবল পরীক্ষার ফলাফলের জন্য নয়; এটি হলো নিজেকে তৈরি করার, নিজের সীমা ভাঙার, এবং ভবিষ্যতের জন্য মজবুত ভিত্তি গড়ার সুযোগ। যে শিক্ষার্থী এই সময়টিকে কেবল ডিগ্রির জন্য নয়, শেখার ও বেড়ে ওঠার জন্য ব্যবহার করে;তার ক্যারিয়ারের পথ অনেকটা আগেই উন্মুক্ত হয়ে যায়।

তাই বলা যায়, ইউনিভার্সিটির চার বছরের জীবনই পারে ক্যারিয়ারের পথ নির্দেশ করতে; প্রশ্ন শুধু একটাই, আপনি কি প্রস্তুত নিজের সেই চার বছরটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে?

মো. আশিকুর রহমান, লীড- ব্র্যান্ড, কমিউনিকেশন এন্ড মার্কেটিং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স পিএলসি। 

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

সিরাজুদ্দৌলার মৃত্যুতে বাংলা হারিয়েছিলাম, হাদির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ফিরে পেতে চাই বাংলাদেশ

Published

on

কে

আমি হয় জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা করব, নয় শহীদ হব। এটাই কি একজন নেতার পরিচয়? নবাব সিরাজুদ্দৌলার মৃত্যুর পর অসম্পূর্ণ বাংলা কি সত্যিই এমন একজন নেতার সন্ধান করছে? যদি করে থাকে, তাহলে আমরা হাদিকে পেয়েও কেন তাকে ধরে রাখতে পারলাম না? হাদি কি ভুল জগতে এসেছিল, নাকি অন্ধদের জগতে আয়না নিয়ে এসেছিল? আজ বাংলার আংশিক ভূখণ্ড বাংলাদেশ কি তার জবাব দিতে পারবে?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশ কি মনে করছে হাদি হেরেছে? বাংলাদেশ কি একটুও হারেনি? আঠারো কোটি মানুষের দেশে প্রতিদিন কত মানুষের জীবন শেষ হয়। পরিবার ভেঙে পড়ে, কান্নায় চোখ ভিজে যায়। কিন্তু এবার একজন হাদির মৃত্যুতে খোদার আরশ কেঁদেছে। কারণ এ মৃত্যু সাধারণ নয়। এটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজীবন মানুষের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

হাদি আজ সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। পুরো বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমি নিজেও সেই সকাল থেকে নীরবতা পালন করছি। কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ হৃদয়ের গভীরে এক তীব্র উপলব্ধি নেমে এলো। ঠিক তখনই লিখতে বসেছি, হাদির স্মরণে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

নবাব সিরাজুদ্দৌলার মৃত্যুর পর বাংলার ইতিহাসে এক গভীর অন্ধকার নেমে আসে। তাঁর পতনের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলার রাজনৈতিক আত্মমর্যাদা ভেঙে পড়ে এবং স্বাধীন শাসনের শেষ স্তম্ভটি ধসে যায়। এই মৃত্যু ছিল কেবল একজন শাসকের অবসান নয়, বরং তৎকালীন বাংলার সার্বভৌমত্ব হারানোর সূচনাক্ষণ। এখানে বাংলা বলতে বোঝানো হয় সেই সময়ের সুবা বাংলা, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল বর্তমান বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং উড়িষ্যার বিস্তৃত অঞ্চল। ক্ষমতার শূন্যতায় বিশ্বাসঘাতকতা ও লোভের দরজা খুলে যায়, আর সেই ফাঁক দিয়েই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে এই সমগ্র ভূঅঞ্চলের কর্তৃত্ব দখল করে নেয়। ফলশ্রুতিতে বাংলা হাতছাড়া হয়ে পড়ে এবং দীর্ঘদিনের জন্য ব্রিটিশ শাসনের অধীন এক পরাধীন ভূখণ্ডে পরিণত হয়।

আমি সাত সাগর দেখেছি, আমি সাত আশ্চর্য দেখেছি, আমি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। আমি শেখ পরিবারের পতন দেখেছি। আমি ওলফ পালমের মৃত্যু দেখেছি। আমি ২০১৯ সালের করোনা মহামারিতে লাখো মানুষের মৃত্যু দেখেছি। আমি ২০২৪ সালের গণহত্যার করুণ পরিণতি দেখেছি। আমি হাদিকে শহীদ হতে দেখলাম। কিন্তু আমি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হতে দেখিনি।

কারণ জানেন, আমরা পথভ্রষ্ট একটি জাতি। দুর্নীতি আর অকৃতজ্ঞতায় ডুবে থাকা এই সমাজ কি সত্যিই স্বাধীনতার সাধ গ্রহণ করার যোগ্য? এই প্রশ্ন আজও আমার বিবেককে জাগিয়ে রাখে। সেই জাগরণের মধ্যেই জন্ম নেয় আরেকটি প্রশ্ন। নবাব সিরাজুদ্দৌলার মৃত্যুর পর বাংলার সেই দেশের ভবিষ্যৎ কি হবে?

আমার মনে আজ আরেকটি প্রশ্ন জাগে। সেই ১৯৪৭ সালে বাংলার একটি ভূখণ্ড, পূর্ব পাকিস্তান, কি ভারতের দয়ায় ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়েছিল? সেইজন্যই কি আজও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার মর্যাদা পাইনি? কারণ বাংলাদেশ কেবল একটি মানচিত্র নয়। বাংলাদেশ একটি বিস্তৃত মানবভূমি, যেখানে ভুপেন হাজারিকার কণ্ঠে ধ্বনিত হয় মানুষের অভিন্ন আত্মার গান।

একই আশা, একই ভালোবাসা
কান্না হাসির একই ভাষা
দুঃখ সুখের বুকের মাঝে একই যন্ত্রণা
ও আমার দুই চোখে দুই জলের ধারা
মেঘনা, যমুনা
গঙ্গা আমার মা, পদ্মা আমার মা…

এই গান শুধু সুর নয়। এটি আমাদের অস্তিত্বের আর্তনাদ। আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমরা সবাই একই যন্ত্রণার সন্তান। অথচ সেই সত্যকে ভুলে গিয়ে আমরা যখন বিভক্ত হই, তখনই হাদির মতো মানুষ একা হয়ে আলো জ্বালাতে আসে।

হাদি হারেনি। হেরেছি আমরা। হাদির মৃত্যু কোনো পরাজয় নয়। এটি আমাদের বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ইতিহাস একদিন প্রশ্ন করবে, আমরা কি এমন একজন মানুষকে চিনতে পারিনি, না কি চিনেও বাঁচাতে চাইনি।

হাদি আজ নেই, কিন্তু তার স্মৃতি আমাদের সামনে আয়নার মতো ধরে রেখেছে। সেই আয়নায় যদি আমরা নিজেদের বিকৃত মুখ দেখি, দায় নয় আয়নার, দায় আমাদের। হাদির স্মৃতির সামনে দাঁড়িয়ে আজ সবচেয়ে বড় প্রশ্ন একটাই। আমরা কি সত্যিকারের স্বাধীন হতে চাই, নাকি শহীদের রক্ত দেখেও চুপ করে থাকার অভ্যাসটাই আমাদের নিয়তি হয়ে গেছে? ইতিহাস আমাদের শেখায়, একটি মৃত্যুর পরই কখনো কখনো একটি জাতি তার ভবিষ্যৎ হারিয়ে ফেলে। নবাব সিরাজুদ্দৌলার মৃত্যুর পর আমরা বাংলা হারিয়েছিলাম। সেই হারানোর ক্ষত আজও শুকায়নি।

হাদির মৃত্যুর পর আর হারাতে চাই না। আর কোনো ভূমি নয়, আর কোনো আত্মা নয়, আর কোনো নেমকহারামি নয়, আর কোনো প্রাণ হানি নয়। এই মৃত্যুর মধ্য দিয়েই আমি বাংলাদেশকে ফিরে পেতে চাই।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

নৈতিক ব্যবসা থেকে মানবকল্যাণভিত্তিক অর্থনীতি: বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের রূপরেখা

Published

on

কে

বিশ্ব অর্থনীতি আজ এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে নৈতিকতা এবং মানব কল্যাণ কোনো নৈতিক বিলাসিতা নয় বরং টেকসই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পূর্বশর্ত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বাস্তবতা আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেশটি সাম্প্রতিক দশকে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করলেও সেই অগ্রগতি দুর্নীতি, বৈষম্য, প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর দখলের কারণে দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকির মুখে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

গ্লোবাল অর্থনীতির প্রবাহ আজ নৈতিক বিনিয়োগ, স্বচ্ছতা, ডিজিটাল জবাবদিহি এবং মানবকেন্দ্রিক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। উন্নত বিশ্বের কর্পোরেট কাঠামো ইতিমধ্যে বুঝে ফেলেছে যে মানব কল্যাণ, ন্যায্যতা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং কর্মীর প্রতি সম্মান শুধু দায়িত্ব নয় বরং অর্থনৈতিক সাফল্যের শক্তিশালী ভিত্তি। বাংলাদেশের পথচলা তাই স্পষ্ট। নৈতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠা এবং মানবকল্যাণকে জাতীয় উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান দিতে পারলেই দেশ একটি স্থিতিশীল, সম্মানজনক এবং সমৃদ্ধ অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই লিখাটি সেই পথনকশা তুলে ধরে। এখানে গ্লোবাল বিজনেস পাসপেক্টিভকে ভিত্তি করে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা, ব্যবসা পরিবেশ, দুর্নীতি কাঠামো, সিন্ডিকেট অর্থনীতি এবং মানব উন্নয়নের সব দিক সমন্বিতভাবে আলোচিত হয়েছে। লক্ষ্য একটি ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা যেখানে অর্থনীতি মানুষের জন্য কাজ করবে এবং ব্যবসা হবে নৈতিকতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বিশ্ব অর্থনীতি দ্রুত এমন এক রূপান্তর পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে যেখানে ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে প্রযুক্তি, মানবিক মূল্যবোধ এবং টেকসই উন্নয়ন। ডিজিটাল অর্থনীতির দ্রুত সম্প্রসারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপ্লব, পরিবেশগত ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতার নিয়ম এখন ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছে।

বিশ্বের প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী অধিকার, পরিবেশ সুরক্ষা, লিঙ্গ সমতা, কর্পোরেট জবাবদিহি এবং পরিচ্ছন্ন সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। একটি কোম্পানি কোথায়, কীভাবে এবং কোন নৈতিক প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন করে তা এখন বাজার নির্ধারণের অন্যতম উপাদান। ফলে নৈতিকতার অভাব সরাসরি বিনিয়োগ, ব্র্যান্ড ইমেজ এবং বাজার প্রতিযোগিতা কমিয়ে দিচ্ছে।

সংক্ষেপে বলা যায়, যারা নৈতিকতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয় তারা শুধু মানুষের আস্থা অর্জন করে না বরং বৈশ্বিক বাজারে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার শক্তি অর্জন করে। বাংলাদেশের জন্য এই শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নৈতিক ব্যবসা বলতে শুধু সৎ প্রশাসন বোঝায় না। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো যা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক স্তরে নৈতিকতা, স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করে। বিশ্বে স্বীকৃত নৈতিক ব্যবসার মানদণ্ডগুলো হলো-
দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন
স্বচ্ছ বিনিয়োগ ব্যবস্থা
ন্যায়সংগত বাজার প্রতিযোগিতা
শ্রমিক অধিকার ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ
পরিবেশ সুরক্ষা এবং টেকসই উৎপাদন
সামাজিক দায়বদ্ধতার অনুভূতি
উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহির চর্চা
লাভের সুষম বন্টন এবং কর্মীদের প্রতি ন্যায্যতা

যে প্রতিষ্ঠানগুলো এ মানদণ্ড অনুসরণ করে তারা স্থানীয় বাজারে এবং বৈশ্বিক বাজারে সবচেয়ে স্থিতিশীল হয়। নৈতিকতা সেখানে শুধু শোভাকর নয় বরং ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের শক্তিশালী অস্ত্র।

বাংলাদেশে আজ অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি এক কঠিন বাস্তবতা বিদ্যমান। জনসংখ্যা কাঠামো, যুব সম্ভাবনা এবং ডিজিটাল অগ্রগতির মতো বড় সুবিধা থাকলেও দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসনিক অনিয়ম এবং অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

দেশের বাজার ব্যবস্থা প্রায় সব খাতেই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। কৃষিপণ্য থেকে বন্দর পরিচালনা, জ্বালানি থেকে আমদানি ব্যবসা, এমনকি শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য খাতেও এই অনিয়মের প্রভাব রয়েছে। ফলে ন্যায্যমূল্য, উৎপাদন ব্যয় এবং বাজার প্রবাহ সবই বিকৃত হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের শিক্ষা কাঠামো বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। মুখস্থনির্ভর শিক্ষা, দক্ষতার অভাব, নৈতিকতা শিক্ষা অনুপস্থিতি এবং প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞান ঘাটতি আগামী প্রজন্মকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতার বাইরে ঠেলে দিচ্ছে।

তবে সুযোগ এখনও বিশাল। বাংলাদেশের জনগণের শক্তি, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং তরুণ উদ্যোক্তা শ্রেণি একটি বৃহৎ সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। প্রয়োজন শুধু সঠিক দিকনির্দেশনা এবং নৈতিক অর্থনৈতিক কাঠামো।

একটি দেশের ভবিষ্যৎ তার শিক্ষাব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা কাঠামোতে কয়েকটি মূল সীমাবদ্ধতা রয়েছে যা দেশের উন্নয়নকে ধীর করে দিচ্ছে।
পাঠ্যবই এবং জ্ঞান কাঠামো বিশ্বমানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
মুখস্থ নির্ভর মূল্যায়ন ব্যবস্থা শিক্ষার্থীর চিন্তাশক্তি সীমাবদ্ধ করে।
নৈতিকতা চরিত্র গঠন রাজনীতি অর্থনীতি এবং গ্লোবাল ব্যবসা সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দুর্বল।
শিক্ষকের মান উন্নয়ন যথেষ্ট নয়।
ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা পিছিয়ে।
উচ্চশিক্ষায় গবেষণা এবং উদ্ভাবনের পরিবেশ দুর্বল।

এই কাঠামো দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিতে হলে তাদের নৈতিকতা, সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং মানবকেন্দ্রিক নেতৃত্বের মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি যদি নৈতিক ব্যবসা এবং মানবকল্যাণ ভিত্তিক উন্নয়ন মডেলে রূপান্তরিত হতে চায় তবে শিক্ষাব্যবস্থা হবে সেই ভিত্তি। শিক্ষা এবং অর্থনীতি একে অপরের সম্পূরক। তাই পাঠ্যক্রমে নৈতিক ব্যবসা, গ্লোবাল অর্থনীতি, ডিজিটাল দক্ষতা এবং মানবিক মূল্যবোধের বিস্তৃত অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।

বাংলাদেশে সিন্ডিকেট অর্থনীতি নতুন নয়। এটি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা, দলীয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠী, প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির মাধ্যমে শক্তিশালী হয়েছে। এর প্রভাব ভয়ংকর।

কৃষি বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হওয়ায় উৎপাদক ন্যায্যমূল্য পায় না।
জ্বালানি বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্য বাড়ানো হয়।
আমদানি খাতে গোষ্ঠীভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত।
বন্দর ব্যবস্থাপনায় গোপন সমঝোতা ব্যবসার ব্যয় বাড়ায়।
সিন্ডিকেট স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করে।

এই পরিস্থিতি শুধু বাজার ব্যাহত করে না বরং নৈতিক উদ্যোক্তা সংস্কৃতি ধ্বংস করে। নতুন উদ্যোক্তা বাজারে টিকতে পারে না, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারায়, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ে এবং পুরো অর্থনীতি একটি অদৃশ্য শক্তির কবলে পড়ে।

নৈতিক ব্যবসার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে এই সিন্ডিকেট এবং দুর্নীতির কাঠামো। তাই মানবকল্যাণ ভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রথম কাজ হচ্ছে এই অনৈতিক শক্তির শিকড় উপড়ে ফেলা, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করা এবং রাষ্ট্র, ব্যবসা এবং নাগরিক সমাজের শক্তসমন্বিত ভূমিকা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশে ব্যবসা পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে হলে শুধু নীতি থাকা যথেষ্ট নয়। কার্যকর Institutional Framework এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি সরকারি খাত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সংস্থা মিলিতভাবে দায়িত্ব নিলে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের প্রভাব হ্রাস পাবে।

ডিজিটাল অডিটিং, স্বচ্ছ তথ্যপ্রকাশ, ব্যাংকিং ও ফিনটেক প্ল্যাটফর্মে লেনদেন, এবং স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ কাঠামোর মূল ভিত্তি। এই ব্যবস্থা প্রতিটি ব্যবসা লেনদেনকে ট্র্যাকযোগ্য করে তোলে এবং জনসাধারণ, সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে।

সাথে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নৈতিক ও সাসটেইনেবল প্র্যাকটিসে উদ্বুদ্ধ করতে কর সুবিধা, প্রশিক্ষণ এবং বিনিয়োগ সহজলভ্য করা অত্যন্ত জরুরি। এটি কেবল ব্যবসায়িক পরিবেশকে শক্তিশালী করবে না, বরং জাতির অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও দৃঢ় করবে।

বাংলাদেশে দুর্নীতি, সিন্ডিকেট এবং প্রশাসনিক অনিয়মের মূল উৎস হলো ক্যাশ ভিত্তিক লেনদেন। ক্যাশের মাধ্যমে অডিট ট্রেইল নেই, লেনদেন সহজে লুকানো যায়। তাই ক্যাশের পরিবর্তে কার্ড সিস্টেম এবং ডিজিটাল পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা অপরিহার্য।

ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে প্রতিটি অর্থপ্রদানের রেকর্ড রাখা যায়। এটি ট্যাক্স ফাঁকি, অবৈধ কমিশন এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে আনে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, হাটবাজার, কৃষি এবং সরকারি প্রকল্পে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রবর্তন করলে জবাবদিহিতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

ডিজিটাল অর্থনীতি কেবল দুর্নীতি কমায় না, বরং বিদেশি বিনিয়োগ, নৈতিক ব্যবসা সংস্কৃতি, স্বচ্ছ বাজার এবং সামাজিক আস্থা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এটি একটি ন্যাশনাল ইকোনমিক সিকিউরিটি ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে কাজ করবে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে AI, অটোমেশন, ডেটা গভর্ন্যান্স এবং ডিজিটাল কমপ্লায়েন্সের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রযুক্তিগত রূপান্তরকে গ্রহণ করা জরুরি।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরবরাহ চেইন স্বচ্ছ করা, প্রতিটি লেনদেন মনিটর করা, উৎপাদন ও বিতরণ দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মী দক্ষতা উন্নয়ন করা সম্ভব। এছাড়া, ডিজিটাল উদ্ভাবন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে, সৃজনশীল ব্যবসা প্রবাহ বাড়ায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় করে।

বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। নৈতিক ব্যবসার মধ্যে পরিবেশগত দায়িত্ব সংযুক্ত করা ছাড়া কোনো টেকসই অর্থনীতি সম্ভব নয়।

সবুজ উৎপাদন, কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবহার এবং পরিবেশ বান্ধব শিল্পপ্রক্রিয়া গ্রহণ করলে দেশের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ইমেজ শক্তিশালী হবে।

টেকসই কৃষি ও পুনঃনবীকরণযোগ্য শক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং দূরবর্তী অঞ্চলের জনগণও সমৃদ্ধিতে অংশ নেবে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি হলো এসএমই খাত এবং কৃষি। নৈতিক ব্যবসা ও স্বচ্ছ বাজার নিশ্চিত করলে এসএমই দ্রুত সম্প্রসারণ পাবে।

কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবে, গ্রামীণ উদ্যোক্তা স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে, নারী উদ্যোক্তা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী অর্থনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারবে।

এসব ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্ট এবং টেকসই সরবরাহ চেইন কার্যকর হলে স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।

নৈতিক ব্যবসার একটি প্রধান সুফল হলো সামাজিক ন্যায়বিচার। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন এবং শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করা।

সকল স্তরে নৈতিকতার প্রভাব সমাজকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবিক করে তোলে। রাষ্ট্র ও ব্যবসা একযোগে কাজ করলে সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত হবে।

বাংলাদেশের জন্য টেকসই ও নৈতিক অর্থনীতির রোডম্যাপ:
১. শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকীকরণ: নৈতিকতা, প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন
২. ডিজিটাল পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা
৩. Institutional Framework শক্তিশালী: অডিটিং, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি
৪. টেকসই উৎপাদন এবং সবুজ অর্থনীতি সম্প্রসারণ
৫. এসএমই ও কৃষি খাতকে শক্তিশালী করা
৬. মানবকল্যাণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা
৭. আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তি গ্রহণ
৮. সিন্ডিকেট, ভেজাল ও দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলা

এই রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ কেবল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে না, বরং নৈতিক, মানবিক এবং টেকসই রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক মানের উদাহরণ হবে।

রহমান মৃধা, প্রাক্তন পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

ওসমান হাদির মাথায় গুলি: গণতন্ত্রের মর্যাদা ও নাগরিক নিরাপত্তার পরীক্ষা

Published

on

কে

১২ ডিসেম্বর ২০২৫ দুপুর আনুমানিক ২টা ২৫ মিনিটে ঢাকা শহরের পল্টন ও বিজয়নগর এলাকার বক্স কালভার্ট রোডে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তিনি ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ব্যাটারিচালিত রিকশায় চলাচলের সময় মোটরসাইকেলে থাকা দুই থেকে তিনজন সশস্ত্র হামলাকারী তাকে লক্ষ্য করে বারবার গুলি ছোড়ে। একটি গুলি তার মাথায় প্রবেশ করে বের হয়ে যায়, যার ফলে মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত লাগে। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে আছেন।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

• ওসমান হাদি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং একজন স্বতন্ত্র রাজনৈতিক প্রার্থী।
• হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে এসে পরিকল্পিত ও লক্ষ্যভিত্তিকভাবে গুলি চালায়।
• ঘটনার সময় আশপাশে সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
• ঘটনার পর পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত ইউনিট এলাকাটি ঘিরে ফেলে।
• আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে এবং হামলাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে।
• চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে গুলিটি বাম কানের ওপর দিয়ে মাথায় প্রবেশ করে ডান পাশে বের হয়ে গেছে।
• এর ফলে মস্তিষ্কের উভয় পাশে গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।
• তাকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে রাখা হয়েছে।
• জরুরি ব্রেইন সার্জারি সম্পন্ন করা হয়েছে।
• তার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই হামলার ঘটনা দ্রুতই একটি জাতীয় উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে এবং দেশজুড়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
• বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা একে গণতন্ত্র ও নির্বাচনী নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আক্রমণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
• সাধারণ নাগরিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে।
• নির্বাচনের একদিন পর এমন হামলা হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
• এই ঘটনার ফলে জনগণের মধ্যে ভয়, অনিশ্চয়তা ও আস্থাহীনতা আরও বেড়েছে।

মূল প্রশ্নটি এখন অত্যন্ত স্পষ্ট
গণতন্ত্র কি সকলের জন্য সমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে?
• নির্বাচনের সময় সাধারণ নাগরিক ও রাজনৈতিক প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব।
• বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা থেকেই এমন লক্ষ্যভিত্তিক হামলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
• এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর আস্থার সংকট দেখা দিচ্ছে।
• এই ঘটনা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে।

এটি স্পষ্ট যে গণতন্ত্রের আওতায় প্রত্যেক নাগরিক, প্রতিটি প্রার্থী ও সমর্থকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব। আইন কিংবা রাজনীতির ঊর্ধ্বে মানুষের জীবন। নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই গণতন্ত্রের মেরুদণ্ড।

• ওসমান হাদি একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হামলার শিকার হয়েছেন।
• এটি কেবল একজন ব্যক্তির ওপর হামলা নয়। এটি জনজীবনের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য একটি গভীর সতর্ক সংকেত।
• সরকার, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো পর্যায়েই জনগণের ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই।
• নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সামান্য ত্রুটিও জনআস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের কাছে আজ জাতির প্রশ্ন একটাই, আপনি কি সত্যিই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে এসেছেন, নাকি পুরনো বৈষম্যের ওপর কেবল নতুন মুখ বসাতে।

গণতন্ত্রের প্রকৃত অর্থ যদি হয় সকল নাগরিকের জন্য সমান নিরাপত্তা, সমান সুযোগ এবং সমান রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা, তাহলে রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বণ্টন গণতন্ত্র নয়। এটি ক্ষমতার পক্ষপাত।

ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে হত্যাচেষ্টার মতো ঘটনা যদি বারবার ঘটে, যদি হুমকির কথা জানানোর পরও রাষ্ট্র নীরব থাকে, আর একই সময়ে নির্দিষ্ট একজন নেতার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়, তাহলে জনগণ যুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রশ্ন তুলবে- এই সরকার আর আগের সরকারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কোথায়। ইতিহাস আপনাকে বিচার করবে এই প্রশ্নে নয় যে আপনি কী বলেছিলেন, বরং এই প্রশ্নে যে আপনি কার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন আর কাকে অনিশ্চয়তার মুখে ছেড়ে দিয়েছিলেন। রাষ্ট্র যদি নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে সেই রাষ্ট্রের নৈতিক ভিত্তি ভেঙে পড়ে।

আজও সময় আছে। পক্ষপাত নয়, ন্যায়। ভীতি নয়, আস্থা। বিশেষ নিরাপত্তা নয়, সমান নিরাপত্তা।

এই পথেই কেবল একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং একটি নিরাপদ বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব। আর একটি কথা স্পষ্টভাবে বলা জরুরি। বাংলাদেশে এবং বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি গণতান্ত্রিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যদি সত্যিই আপনার প্রশাসন উপহার দিতে চায়, তবে শুধু কথা বললেই হবে না। Walk as you talk। আপনি যেমন বলেন, ঠিক তেমন করেই এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিন এবং প্রমাণ করে দেখান।

অন্যথায়, শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব আপনাকে ক্ষমা করবে না। এটি কোনো হুমকি বা হুঁশিয়ারি নয়। এটি গণতন্ত্রের পক্ষে সত্য ও ন্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর হৃদয়ের কথা। এই বক্তব্যের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়। উদ্দেশ্য একটাই ভুল পথে গেলে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করা যাতে রাষ্ট্র সঠিক পথে চলতে পারে নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকে এবং সবার স্বার্থেই গণতন্ত্র টিকে থাকে।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

সাসপেকশন: একটি জাতির অদৃশ্য মহামারি

Published

on

কে

সন্দেহ কী? কেন সন্দেহ জন্মায়? আর এই সন্দেহের পরিণতি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? ব্যক্তি থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র থেকে ভূরাজনীতি, সন্দেহ একসময় সবার ওপর ছায়া ফেলে। রাজনৈতিক দল, তাদের নেতা কর্মী এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও এই সন্দেহ এমনভাবে ঢুকে যায় যে, তা একসময় একটি অদৃশ্য অস্ত্র হয়ে ওঠে। মনে হয় যেন পুরো জাতি এক অদৃশ্য মহামারির মধ্যে ডুবে যাচ্ছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আজকের পৃথিবীতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল শক্তি তথ্য নয়, বরং সন্দেহের ব্যবস্থাপনা। কূটনৈতিক নীতি, বিশেষ করে ভারতের র (রিসার্চ এন্ড অ্যানালাইসিস উইং) তাদের নীতি নির্ধারণ করে মূলত কাকে সন্দেহ করা হবে এবং কীভাবে সেই সন্দেহকে সামাজিক মননে স্থায়ী আকার দেওয়া যাবে তার উপর ভিত্তি করে। ফলে এই অঞ্চলে সন্দেহ কেবল অনুভূতি নয়, বরং এক ধরণের স্ট্র্যাটেজি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই সন্দেহ এক অদৃশ্য ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ব্যক্তিগত সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে
সামাজিক বিশ্বাস ভেঙে যাচ্ছে
রাজনৈতিক কাঠামো দুর্বল হচ্ছে
রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়ছে
এবং সবচেয়ে ভয়াবহ, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তৈরির মতো পরিবেশ তৈরি হচ্ছে

একটি জাতি যখন বিশ্বাস হারায় তখন যে অস্থিরতা তৈরি হয়, তার পরিণতি কেবল রাজনৈতিক নয়, রাষ্ট্রীয় অস্তিত্বের সংকট তৈরিরও ঝুঁকি তৈরি করে।

সদ্য আলোচিত ঘটনার প্রেক্ষিতে সন্দেহের বিস্তার
সম্প্রতি BMA (বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি) ৮৯তম লং কোর্সের ২০২৫ সালের প্রেসিডেন্টস প্যারেড এবং পাশিং আউট অনুষ্ঠানে সোর্ড অফ অনার প্রাপ্ত একজন ক্যাডেটকে কেন্দ্র করে আলোচনার উত্তাপ বেড়ে গেছে। এই প্যারেড ও পাশিং আউট অনুষ্ঠান বাস্তব; ভিডিও, সামাজিক মিডিয়া পোস্ট এবং BMA সম্পর্কিত পেজগুলোর রেকর্ডে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

তবে উল্লেখযোগ্য যে, BMA বা সংশ্লিষ্ট অফিসিয়াল খবরে (সরকারি পৃষ্ঠা বা প্রধান সংবাদমাধ্যমের বিশ্বস্ত প্রতিবেদন) এখনও ওই ক্যাডেটকে ডিজিএফআই প্রধান (হামিদ) এর সন্তান হিসেবে পরিকল্পিতভাবে সোর্ড অফ অনার দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের তথ্য সরাসরি নিশ্চিত করা যায়নি। সমাজে বিষয়টি নিয়ে যে আলোচনা ও অভিযোগ রয়েছে, তা অনিরীক্ষিত সন্দেহ বা ছড়ানো গুজব হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।

যদিও তার প্রতি দেয়া এই সর্বোচ্চ সম্মানকে অনেকেই দেখছেন বাবার রাজনৈতিক শক্তি, ব্যক্তিগত প্রভাব বা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ পক্ষপাতের ফল হিসেবে। যে কারণে সারা দেশের মানুষ প্রশ্ন তুলছে, যার বাবা অভিযুক্ত, যার পরিবারের ওপর জনমনে সন্দেহের চাপ, সে কীভাবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান পেল?

এই প্রশ্নগুলো একদিনে তৈরি হয়নি। গুম খুন, পালিয়ে যাওয়া, বিদেশে আশ্রয় নেওয়া এই সব ইস্যু জনগণের মনে এমনিতেই সন্দেহ তৈরি করে রেখেছে। তাই নতুন করে এমন কোনও ঘটনা ঘটলে তা সন্দেহের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়।

অতীতে তেমনই দেখা গেছে আরেকটি অন্ধকার অধ্যায়
স্বৈরাচারী শাসনামলেও দেখা গেছে, কেউ রাজাকার বংশধর, কেউ ইসলামপন্থী পরিবার থেকে এসেছে, কেউ রাজনৈতিকভাবে বিরোধী মতাদর্শে বিশ্বাসী, এই যুক্তিতে বহু তরুণকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, বহু যোগ্য মানুষকে আয়নাঘরে পাঠানো হয়েছে। এতে পুরো একটি প্রজন্মের মধ্যে প্রতিশোধের আগুন জ্বালানো হয়েছে।

ফলে আজ যখন দেখা যাচ্ছে যে পূর্বের বিতর্কিত জেনারেলদের সন্তানরা আবারো সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আসছে বা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান পাচ্ছে, তখন সমাজে স্বাভাবিকভাবেই একটি ধারণা তৈরি হচ্ছে, অতীতে যেমন প্রতিহিংসা হয়েছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মেও একই প্রতিহিংসা ফিরে আসবে।

এই ভয়টাই মানুষকে প্রশ্ন করতে বাধ্য করছে। কারণ দেশের তরুণেরা যদি একদিন নেতৃত্বের জায়গায় আসে, তারা কি এই ইতিহাস ভুলে যাবে? নাকি সেই পুরোনো অন্যায়ের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতা আবারো রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করবে?

তাহলে করণীয় কী?
প্রথমত সন্দেহকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রয়োজন তিনটি জিনিস
১. স্বচ্ছতা
২. জবাবদিহিতা
৩. প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা

দ্বিতীয়ত রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে
মেধা এবং যোগ্যতার মূল্যায়ন যেন ব্যক্তির পরিবার, বংশ, ইতিহাস বা রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে গিয়ে হয়।
তৃতীয়ত প্রয়োজন জনবিশ্বাস পুনঃস্থাপন।

বিশ্বাস ভেঙে গেলে ক্ষমতা বা শক্তি দিয়ে তা পুনর্গঠন সম্ভব নয়।
শুধুমাত্র সত্য, বিচার এবং ন্যায় দিয়ে জাতিকে শান্ত করা যায়।

সারমর্ম
এক কথায় বলতে গেলে;
সন্দেহ আমাদের সময়ের নীরব মহামারি।
এটি ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সব জায়গায়
ঢুকে পড়েছে।
গোয়েন্দা নীতি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং অতীতের প্রতিহিংসার কারণে এই সন্দেহ আরও তীব্র হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সোর্ড অফ অনারের ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে যে আমাদের সমাজ এখনও ন্যায় এবং যোগ্যতার চেয়ে সন্দেহ এবং ক্ষমতার প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে কেবল সেনাবাহিনী নয়, পুরো জাতি একটি অবিশ্বাসের গহ্বরে পড়ে যাবে।
তাই আজ সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো সত্য উন্মোচন করা এবং রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলোকে একেবারে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করা।
সন্দেহকে থামানোর একমাত্র উপায় সত্য আর ন্যায়ের শক্তি।
অন্যথায় এই মহামারি ভেঙে দেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে, ভেঙে দেবে আমাদের রাষ্ট্রকে, ভেঙে দেবে আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তি।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, প্রাক্তন পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া তৈরি হয়নি আমরা তৈরি করেছি

Published

on

কে

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষাগুলোর একটি হলো রাষ্ট্র এবং নেতৃত্ব কখনো শূন্যস্থান সহ্য করে না। যে সমাজ যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করতে ব্যর্থ হয় সেই সমাজকে একসময় পরিবারতন্ত্র, কৃত্রিম জনপ্রিয়তা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি গ্রাস করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক যাত্রাও তার ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতার পর যে রাজনৈতিক আদর্শ, ত্যাগ এবং নৈতিকতার ভিত্তিতে দেশটি দাঁড়িয়েছিল তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতার লোভ, দলীয় স্বার্থ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের কারণে ক্রমশ ক্ষয় হতে থাকে। ফলে নেতৃত্বের অভাব পূরণ করতে গিয়েই আমরা এমন দুই নারীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি যারা জন্মসূত্রে নেতৃত্বের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। আর এখান থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র, প্রতিহিংসা এবং দলীয় কাঠামোর ভাঙনের দীর্ঘ পর্ব যা আজ পুরো জাতিকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের ভূখণ্ডে দুই মহীয়সী নারী নেত্রী রাজনীতিতে এসেছিলেন। একজন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা আর অন্যজন ছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তারা জন্মসূত্রে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যুক্ত হলেও নিজেরা ছিলেন মূলত রাজনৈতিক বা সামরিক ব্যক্তিত্বের পরিবারের প্রতিনিধি এবং তাদের দুজনকেই দলীয় স্বার্থে সামনে ঠেলে এনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠাকে ধরে রেখেছিল। একই উপমহাদেশে ইন্দিরা গান্ধি বা বেনজির ভুট্টো বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছিলেন ঠিকই কিন্তু তারা রাজনীতির বাস্তবতায় সক্রিয়ভাবে শামিল হয়েই নেতৃত্বে উঠে এসেছিলেন। পার্থক্য ছিল এখানেই। শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সেই সরাসরি রাজনৈতিক প্রস্তুতি ছিল না কারণ তৎকালীন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বঙ্গবন্ধু এবং জিয়ার জনপ্রিয়তার উত্তরাধিকার ধরে রাখতে পরিবারতন্ত্রকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। আর সেই লালসাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসা পরায়ণতার বীজ বপন করে এবং পরবর্তী সময়ে পুরো দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার জন্য যোগ্য উত্তরসূরি তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সত্য হলো শেখ মুজিব এবং জিয়ার রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘ সময় ছিল না। হয়তো যুদ্ধোত্তর সংকট বা সামরিক বাস্তবতা তাদেরকে সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার সুযোগ দেয়নি অথবা এক নায়কতন্ত্র তাদেরকে গ্রাস করেছিল যেখানে তাদের চারপাশে এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন এবং নেতৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়। অথচ তখনই দেশে শত শত যোগ্য আইনজীবী রাজনৈতিক বিজ্ঞানী অর্থনীতিবিদ এবং তরুণ নেতৃত্ব ছিল। তবুও দলীয় সংগঠন যে ভুল রাজনীতির চর্চা বেছে নিয়েছিল তা ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এক ভয়াবহ বিপর্যয় এবং সেই আগুনে দগ্ধ হয়েছে পুরো জাতি এবং দগ্ধ হয়েছেন এই দুই নেত্রীও।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবু শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার মধ্যে যেমন মিল রয়েছে তেমনি রয়েছে বিস্তর অমিল। যদি তখন দলীয় নেতারা বাবার বা স্বামীর প্রভাবকে ব্যবহার করে শুধু ক্ষমতা দখলের পরিবর্তে রাজনীতির ধারাকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতেন তাহলে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি পরিবারতন্ত্রের আবরণে আবদ্ধ হতে পারত না। যদি দলীয় নেতৃত্ব সাহস করে একজন দক্ষ সৎ এবং শিক্ষিত নেতৃত্বকে সামনে আনত তাহলে তাদের দল আরও শক্তিশালী হত সংগঠিত হত এবং ভবিষ্যতের জন্য টেকসই ভিত্তি পেত। নেতৃত্ব ঘর থেকে নয় বরং জনগণের ভিতর থেকে উঠে আসা উচিত ছিল এবং নির্বাসন বা দূরত্ব থেকে নয় সরাসরি রাজনৈতিক মাঠ থেকে উঠে আসাই হতো শেখ মুজিব এবং জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক স্পিরিট এবং ডিসকোর্সের প্রকৃত ধারাবাহিকতা। কিন্তু সেই ভুলের মাশুল আমরা আজও দিচ্ছি।

আজ আমরা অনেকেই শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বলছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাকে স্বৈরাচার বানিয়েছে কে? একইভাবে যদি হাওয়া ভবন আরও কয়েক বছর রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেত তবে কি খালেদা জিয়া স্বৈরাচারী হতেন না? ইতিহাস বলে ক্ষমতার কাঠামো ব্যক্তিকে পাল্টে দেয়। তাই দুই দলই দায়ী দুই দলই এই অনুশোচনার বোঝা বহন করে।

তবু এখনও দেরি হয়নি। প্রয়োজন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির আলাদা করে অনুশোচনা করা জনগণের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া এবং ভুলের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি করা। আজও এই দুই দল নতুন করে দাঁড়াতে পারে যদি তারা আত্মসমালোচনার পথ বেছে নেয় যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে জনগণের সঙ্গে নতুন আস্থার বন্ধন গড়ে তোলে এবং নেতৃত্ব নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবে সাহস যোগ্যতা নৈতিকতা এবং সততাকে সামনে আনে। তাহলেই শেখ হাসিনা স্বৈরাচারের খেতাব থেকে একদিন মুক্তি পেতে পারেন। তাহলেই বেগম জিয়ার ত্যাগের মর্যাদা রক্ষা পাবে এবং জিয়াউর রহমানের আদর্শের একজন প্রকৃত ধারক বাহক তৈরি হবে।

আমি মনে করি তাদের ব্যক্তিগত দুঃখ কেবল তাদের একার নয়। এটা রাষ্ট্রীয় নির্যাতন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সমগ্র জাতির দীর্ঘ সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। যদি এই ইতিহাস নতুন নেতৃত্বকে অনুপ্রাণিত করে তাহলে তাদের জীবনসংগ্রামই ভবিষ্যতের নতুন আলোর পথ তৈরি করবে বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া। কারণ তিনি এখনও আমাদের মাঝে আছেন এবং তাঁর উপস্থিতি স্বয়ং এক দৃঢ়তার উৎস। আজকের তরুণেরা দেখছে এই দেশে একজন নারী আছেন যিনি প্রতিহিংসাপূর্ণ রাজনীতিকে নীরব শক্তি দিয়ে পরাজিত করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর জীবন নক্ষত্রের মতো দীপ্ত এবং যতদিন তিনি থাকবেন ততদিন সেই দীপ্তি প্রজন্মকে পথ দেখাবে। একদিন তাঁর প্রস্থান আসবে সেটি হবে একটি যুগের অবসান কিন্তু আজ তিনি জীবনের সঙ্গে লড়াই করা এক অদম্য শক্তির প্রতীক।

একই সাথে আমি এটাও বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা যে ভুল করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। কিন্তু তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলে আমরা কী ফিরে পাবো? কিছুই না। রাষ্ট্রীয় ক্ষতি পূরণ হবে না। বরং যদি শেখ পরিবারের মধ্যে ন্যূনতম মানবিকতা অবশিষ্ট থাকে তাহলে তাদের উচিত জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া। কারণ ক্ষমা করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের।

বাংলাদেশ একটি নদীবেষ্টিত দেশ যেখানে প্রতিদিন নদী বদলায়, ভাঙে, গড়ে। এই ভাঙন এবং নতুন সৃষ্টির সাথে তাল মিলিয়ে যে দেশে টিকে থাকা যায় সেখানে নেতৃত্বও হতে হয় পরিবর্তনের সক্ষম ধারক। কিন্তু পরিবারতন্ত্র সেই পরিবর্তনকে আটকে দিয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার ভূগোল দেখলে দেখা যায় যে এই অঞ্চলে নেতৃত্ব যত বেশি গণমুখী হয়েছে দেশ তত বেশি স্থিতিশীল হয়েছে। বাংলাদেশও সেই বাস্তবতা থেকে আলাদা নয়। আজকের বিশ্বব্যবস্থা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশল, নতুন আঞ্চলিক জোট, বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক করিডোর এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য রুট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে নতুন মাত্রায় এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করছে। এমন এক সময়ে পরিবার কেন্দ্রিক রাজনীতি, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং প্রতিহিংসার চর্চা কেবল দেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয় না বরং আমাদের ভূরাজনৈতিক সুবিধাগুলোকেও বিপন্ন করে। বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তার মানুষ। নেতৃত্ব যদি এই জনশক্তিকে সৎভাবে কাজে লাগাতে পারে এবং রাজনীতিকে নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পুনর্গঠন করতে পারে তবে এই দেশ দক্ষিণ এশিয়ার নতুন শক্তির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। তাই নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা, জনগণের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া শুধু রাজনৈতিক প্রয়োজন নয় বরং বাংলাদেশের ভৌগোলিক বাস্তবতা এবং বৈশ্বিক ভবিষ্যতের জন্য একটি অপরিহার্য জাতীয় দায়িত্ব।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

কে কে
পুঁজিবাজার7 hours ago

কে অ্যান্ড কিউর পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর প্রস্তাবে বিএসইসির অসম্মতি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান কে অ্যান্ড কিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের পর্ষদ তাদের পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে ৬ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের ঘোষণা করেছিল। গত...

কে কে
পুঁজিবাজার8 hours ago

একমির এজিএমে ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ৪৯ বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় ডিজিটাল...

কে কে
পুঁজিবাজার9 hours ago

পরিচালন লোকসানেও পরিচালক-চেয়ারম্যানের ভাতা বাড়ালো ডিএসই

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গত ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল ব্যবসায় বড় লোকসান করেছে। লেনদেন খরায়...

কে কে
পুঁজিবাজার10 hours ago

শ্যামপুর সুগারের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শেষে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড।...

কে কে
পুঁজিবাজার11 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে মুন্নু এগ্রো

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে মুন্নু এগ্রো অ্যান্ড মেশিনারি লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে...

কে কে
পুঁজিবাজার11 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শেষে লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। ডিএসই...

কে কে
পুঁজিবাজার12 hours ago

তিন শতাধিক শেয়ারের দরবৃদ্ধি, বেড়েছে সূচক-লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষে হয়েছে। সেই সঙ্গে টাকার অংকে...

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
কে
জাতীয়2 hours ago

বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসাকেন্দ্র কখন চালু হবে, জানালেন প্রণয় ভার্মা

কে
জাতীয়3 hours ago

আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় ও বাধা থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা

কে
আইন-আদালত3 hours ago

দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

কে
রাজনীতি3 hours ago

শরীয়তপুরে ছাত্রদল-এনসিপি সংঘর্ষ, হাতবোমা বিস্ফোরণ

কে
জাতীয়4 hours ago

পুলিশ সদরদপ্তরের ৬ ডিআইজি নতুন দায়িত্বে

কে
জাতীয়4 hours ago

শিলিগুড়ি-আগরতলায় বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ

কে
কর্পোরেট সংবাদ4 hours ago

ভিসা ক্যাম্পেইনে বিজয়ী হলেন আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহক

কে
অর্থনীতি5 hours ago

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার সর্বোচ্চ দাম

কে
জাতীয়5 hours ago

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

কে
জাতীয়5 hours ago

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যা বলল রাশিয়া

কে
জাতীয়2 hours ago

বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসাকেন্দ্র কখন চালু হবে, জানালেন প্রণয় ভার্মা

কে
জাতীয়3 hours ago

আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় ও বাধা থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা

কে
আইন-আদালত3 hours ago

দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

কে
রাজনীতি3 hours ago

শরীয়তপুরে ছাত্রদল-এনসিপি সংঘর্ষ, হাতবোমা বিস্ফোরণ

কে
জাতীয়4 hours ago

পুলিশ সদরদপ্তরের ৬ ডিআইজি নতুন দায়িত্বে

কে
জাতীয়4 hours ago

শিলিগুড়ি-আগরতলায় বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ

কে
কর্পোরেট সংবাদ4 hours ago

ভিসা ক্যাম্পেইনে বিজয়ী হলেন আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহক

কে
অর্থনীতি5 hours ago

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার সর্বোচ্চ দাম

কে
জাতীয়5 hours ago

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

কে
জাতীয়5 hours ago

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যা বলল রাশিয়া

কে
জাতীয়2 hours ago

বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসাকেন্দ্র কখন চালু হবে, জানালেন প্রণয় ভার্মা

কে
জাতীয়3 hours ago

আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেখানে ভয় ও বাধা থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা

কে
আইন-আদালত3 hours ago

দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

কে
রাজনীতি3 hours ago

শরীয়তপুরে ছাত্রদল-এনসিপি সংঘর্ষ, হাতবোমা বিস্ফোরণ

কে
জাতীয়4 hours ago

পুলিশ সদরদপ্তরের ৬ ডিআইজি নতুন দায়িত্বে

কে
জাতীয়4 hours ago

শিলিগুড়ি-আগরতলায় বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ

কে
কর্পোরেট সংবাদ4 hours ago

ভিসা ক্যাম্পেইনে বিজয়ী হলেন আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহক

কে
অর্থনীতি5 hours ago

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার সর্বোচ্চ দাম

কে
জাতীয়5 hours ago

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

কে
জাতীয়5 hours ago

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যা বলল রাশিয়া