অর্থনীতি
বেড়েছে স্বর্ণের দাম, আজ থেকে কার্যকর
দেশের বাজারে আবার বেড়েছে সোনার দাম। এবার ভরিতে দাম বেড়েছে ১ হাজার ৬৮০ টাকা। যা আজ রবিবার (২ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হবে। নতুন দামে ২২ ক্যারেট সোনার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা।
শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সোনার দামে এই সমন্বয় করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী—
২২ ক্যারেট: প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেট: প্রতি ভরি ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট: প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮১ টাকা, সনাতন পদ্ধতি: প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৮০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে ৫ শতাংশ সরকার নির্ধারিত ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ৬ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি যোগ করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরি ভিন্ন হতে পারে।
অর্থনীতি
রেজল্যুশনের আওতায় সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বন্ধ হচ্ছে বিপর্যস্ত ৯টি
শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা ও খেলাপি ঋণের জটিলতায় বিপর্যস্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) খাত পুনর্গঠনে অবশেষে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের সব ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত রবিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে। ইতিমধ্যে বিপর্যস্ত ৯টি এনবিএফআইকে চিহ্নিত করে সেগুলোর অবসায়ন বা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানান, এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি আমানতকারী ব্যক্তিরা পুরো টাকা ফেরত পাবেন। বর্তমানে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং এনবিএফআই কর্তৃক পরিচালিত ব্যবসা ও কার্যক্রমে জনসাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণে সব এনবিএফআইয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ প্রযোজ্য হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সর্বশেষ সভায় ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো এফএএস ফিন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফিন্যান্স, জিএসপি ফিন্যান্স, প্রাইম ফিন্যান্স, আভিভা ফিন্যান্স, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫২ শতাংশই এ ৯টি প্রতিষ্ঠানের। গত বছরের শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক দুই ধরনের আমানতকারী মিলিয়ে ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ১৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার আমানত আটকে আছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা একক গ্রাহকের এবং ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা ব্যাংক ও করপোরেট আমানতকারীর।
একক আমানতকারীদের আমানত আটকে থাকার দিক থেকে শীর্ষে আছে পিপলস লিজিং। প্রতিষ্ঠানটিতে আটকে আছে ১ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আভিভা ফিন্যান্সে ৮০৯ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ৬৪৫ কোটি টাকা, প্রাইম ফিন্যান্সে ৩২৮ কোটি টাকা ও এফএএস ফিন্যান্সে ১০৫ কোটি টাকা আটকে আছে।
অর্থনীতি
রেলপথ উন্নয়নে ৬৮.৮ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি
চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিবর্তনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার রেলপথের আধুনিকায়ন ও নতুন নির্মাণে ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবি বাংলাদেশকে ৬৮.৮ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২.১৭ টাকা ধরে)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এডিবি জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি একটি ২.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাইপাস নির্মাণ করা হবে। এর ফলে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারগামী ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম স্টেশনে না থেমেই যাতায়াত করতে পারবে, যা ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং বলেন, এ প্রকল্প ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেল পরিষেবার সক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে। এটি বিশেষ করে পর্যটন এবং মৎস্য শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ট্রান্সপোর্ট ও ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে গড়ে তুলতে এই বিনিয়োগ সহায়ক হবে। ট্রান্স-এশিয়া রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে করিডোরটি বর্তমানে দেশের ৩২ শতাংশ যাত্রী এবং ৫৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন পরিচালনা করে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫ কিলোমিটার রেলপথের ট্র্যাক উঁচুকরণ, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং আধুনিক সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। সেইসঙ্গে ৩০টি জ্বালানি সাশ্রয়ী লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ক্রয় করা হবে, যা কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করবে এবং তিনটি স্টেশনকে আধুনিক ও ব্যবহারবান্ধব করা হবে, যেখানে বেসরকারি বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সুযোগ থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
অর্থনীতি
নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে
সবশেষ ১২ মাসের গড় হিসাবে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বিগত জুন ২০২৩ এর পর সর্বপ্রথম এই বছরের নভেম্বরে ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং বাজেট ব্যয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মার্চ ২০২৩-এ মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ পেরিয়ে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ হয়। তবে সার্বিক মূল্যস্ফীতি (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট) এরইমধ্যে চলতি বছরের জুনে ৯ শতাংশের নিচে চলে আসে এবং নভেম্বরে এটি আরও কমে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ হয়।
সরকারের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং কৃচ্ছ্রসাধনের ফলে জুন-২০২৬ এ মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশাবাদ জানানো হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বৈঠকের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান।
অন্যান্য যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়
মজুরি প্রবৃদ্ধি: বিগত কয়েক বছরে মূল্যস্ফীতি ও মজুরী প্রবৃদ্ধির হারের মধ্যে পার্থক্য ছিল অনেক বেশি। যার ফলে দেশের মানুষের প্রকৃত আয় কমে আসছিল। তবে, চলতি অর্থবছরের সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি ও মজুরি প্রবৃদ্ধির হারের মধ্যে পার্থক্য অনেকটাই কমে এসেছে। সর্বশেষ নভেম্বর ২০২৫-এ মূল্যস্ফীতি ও মজুরি প্রবৃদ্ধি (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট) যথাক্রমে ৮ দশমিক ২৯ ও ৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২ ও ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ফলে, বিগত বছরগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে প্রকৃত আয়ের পরিমাণ অনেক কমলেও বর্তমান অর্থবছরে এ অবস্থা থেকে ক্রমান্বয়ে উত্তরণ সাধিত হবে।
কৃষি উৎপাদনঃ কৃষিখাতে যথাযথ প্রণোদনা ও ব্যবস্থাপনার ফলে বিগত অর্থবছরে বোরো মৌসুমে ধানের ভালো ফলন হয়েছে এবং বর্তমান সময় পর্যন্ত কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটায় আমন ধানেরও ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে চলতি অর্থবছরে সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করা যায়।
চলতি বছরের ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত আমন ধানের উৎপাদন ১৬০ দশমিক ৯৫ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। অবশিষ্ট ফসলকর্তন সম্পন্ন হলে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে আশা করা যায়। পাশাপাশি, আউশ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কিছুটা কম হলেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় মোট উৎপাদন ৭ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে।
দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন চলকের ভারসাম্যহীনতা এরইমধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে চলে এসেছে।
আর্থিক ও বৈদেশিক খাত: চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আগস্ট ২০২৪-এ ছিল মাত্র ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়ে আসা, প্রবাসী আয়ের গতি বৃদ্ধি এবং দেশের আর্থিক খাতে সম্প্রতি সুদের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগামীতে ক্রমান্বয়ে আরও বাড়বে।
চলতি হিসাব (Current Account): ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চলতি হিসাব ঋণাত্নক ছিল এবং২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে- ১৮ দশমিক ৭, ১১ দশমিক ৬ ও ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে আর্থিক খাতে সুব্যবস্থাপনা ও অর্থপাচার রোধের ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে এটি হয়েছে মাত্র ১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে এটি হয়েছে ৭৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রবাসী আয়: চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৫ লাখ কর্মীর বৈদেশিক নিয়োগ নিশ্চিত হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার জন এবং একই সময়ে ১৩ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় হয়েছে যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
আমদানি: দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও উৎপাদনশীল করতে আমদানির ক্ষেত্রে আরোপিত বিধিনিষেধ অপসারণ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে আমদানি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ২ শতাংশ (ঋণাত্মক) যা বর্তমান অর্থবছরের (২০২৫-২৬) একই সময়ে বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
ঋণপত্র: মূলধনী যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ (ঋণাত্মক), যা বর্তমান অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে হয়েছে ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া, শিল্পজাত কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক ৯৮ শতাংশে। আর্থিক অব্যবস্থাপনার ফলে দেশের ইমেজের নিম্নগতি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে, যার উদাহরণ ঋণপত্র খোলার হার এবং ট্রেড ফিন্যান্সিং সহজতর হওয়া।
অর্থনীতি
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার সর্বোচ্চ দাম
দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সোনার দাম প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৯৬৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে ভালো মানের সোনার দাম বেড়ে দুই লাখ ২২ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সোনার দাম।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন দাম মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে। সংগঠনটি জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম (পিওর গোল্ড) বাড়ায় বৈশ্বিক বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে।
তবে মূল কারণ হচ্ছে, বৈশ্বিক বাজারে সোনার দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছাড়িয়েছে ৪ হাজার ৪০০ ডলার।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ১১ হাজার ৯৯৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৮১ হাজার ৭২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৫১ হাজার ৩৯৯ টাকা।
সোনার দামের সঙ্গে রুপার দামও বাড়ানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৯৫৭ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ৪ হাজার ৭২৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৪ হাজার ৮২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা।
এমকে
অর্থনীতি
কৃষি ও সিএমএসএমই ঋণ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ছাড়
কৃষি এবং কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) ঋণ বাড়াতে আরও ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণের হার আরও কমানো হয়েছে। অর্থাৎ আগের চেয়ে আরও কম নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ফলে ব্যাংকগুলো এই দুটি খাতে ঋণ দিতে আগ্রহী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়। ফলে এই ছাড় ব্যাংকগুলোর মুনাফা বাড়াতে সহায়তা করবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে স্ট্যান্ডার্ড ও স্পেশাল মেনশন হিসেবে (এসএমএ) থাকা বকেয়া ঋণের বিপরীতে যথাক্রমে ১ শতাংশ ও ৫ শতাংশ হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএমএসএমই খাতের আওতায় সব অশ্রেণিকৃত (স্ট্যান্ডার্ড ও এসএমএ) স্বল্পমেয়াদি কৃষিঋণ এবং সিএমএসএমই শিল্প উদ্যোগের ঋণের বিপরীতে ১ শতাংশের পরিবর্তে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারবে। অর্থাৎ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের হার কমিয়ে অর্ধেকে নামানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলোকে স্বল্পমেয়াদি কৃষিঋণ বিতরণ এবং সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করতে নতুন সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলোর ঋণ কমে এসেছে। আবার এ দুটি খাতেও ঋণ দিতে ব্যাংকগুলো আগ্রহী হচ্ছে না। এ জন্য এই ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) এ দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায়ও দাবিটি তোলা হয়। এরপরই বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিল।
চলতি বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের অন্তত ২৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে বিতরণে সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জুন পর্যন্ত হিসাবে সামগ্রিকভাবে সিএমএসএমই খাতে রয়েছে মোট ঋণের ১৭ শতাংশ, যা আগের দুই বছরের চেয়ে কম। জাতীয় এসএমই নীতির আলোকে ২০২৯ সালের মধ্যে মোট ঋণের ২৭ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। চলতি ২০২৫ সালের মধ্যে এই হার ২৫ শতাংশ করার লক্ষ্য দেওয়া হয়। অধিকহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এ খাতে ঋণ বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।




