সারাদেশ
ভেদরগঞ্জের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মাঝির সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন
শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মরহুম আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মাঝির সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) উত্তর তারাবুনিয়া চেয়ারম্যান বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে এ উপলক্ষে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণ সভায় বক্তারা মরহুম আনোয়ার হোসেন মাঝির কর্মময় জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান কিরণ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মরহুমের সুযোগ্য সন্তান সাংবাদিক জাকির হোসেন ও আল-আমিন সুমন মাঝি, সখিপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মাজহারুল ইসলাম সরদার, মানু সরকার যুগ্ম আহ্বায়ক সখিপুর থানা বিএনপি, উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আব্দুল মান্নান মাঝি, থানা যুবদল সভাপতি মাসুম বালা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান রাজীব সরদার, প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন আসামী, যুগ্ম আহ্বায়ক, সখিপুর থানা বিএনপি আজমল হক নান্টু মালত,বৃহত্তর তারাবুনিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান।
জয়নাল আবেদীন মাঝি, সাবেক সহ-সভাপতি, শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদল মিলন মাঝি, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি তোফায়েল আহমেদ সরদার, মনির খাঁন৷ ছাত্রদল সভাপতি নিহাদ মাহমুদ সরদার, জিয়াউর রহমান টিপু মাঝিসহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শত বছরে একবার আনোয়ার মাঝিরা জন্ম নেন শফিকুর রহমান কিরণ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, আনোয়ার মাঝির মতো মানুষ যুগে যুগে জন্মায় না, শত বছরেও একবার এমন মানুষ দেখা যায়। তিনি ছিলেন অসহায় মানুষের বন্ধু, গরিবের আশ্রয়। অসহায় কেউ সাহায্য চাইলে পকেটে যা থাকতো, তা-ই দিতেন।
তিনি স্মৃতিচারণ করে আরও বলেন, আমি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দেখছি তিনি গরিব-অসহায়দের পাশে ছিলেন সবসময়। আজ যারা তার পাশে ছিল, তারা শত কোটি টাকার মালিক কিন্তু আনোয়ার মাঝি নিজের জন্য কিছুই করেননি, করেছেন কেবল জনগণের জন্য।
তিনি আহ্বান জানান, আমরা যেন তার পরিবারের প্রতি কেউ অন্যায় না করি। আল্লাহ যদি আমাকে সংসদে নেওয়ার তৌফিক দেন, আমি আমার সামর্থ্য ও অর্থ দিয়ে হলেও তার পরিবারের খেয়াল রাখবো ইনশাআল্লাহ। তার প্রতিষ্ঠিত স্কুল-মাদ্রাসা-মসজিদগুলোর এক ইঞ্চি জমিও আমি নষ্ট হতে দেব না।
শেষে তিনি বলেন, যে মানুষ সারাজীবন জনগণের জন্য কাজ করেছে, তার জন্য যদি আমরা নামাজের পর দোয়া না করি, তাহলে আমরা অকৃতজ্ঞ। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন—আমিন। আল-আমিন সুমন মাঝির আবেগঘন বক্তব্য আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মাঝির সুযোগ্য সন্তান আল-আমিন সুমন মাঝি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগে ভেঙে পড়েন।
তিনি বলেন, আমার বাবা ৪৪ বছর ইউনিয়ন ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, কিন্তু ৪৪ বছরে ব্যাংকে ৪৪ টাকাও রেখে যাননি। বাবার চিকিৎসা হয়েছিল শফিকুর রহমান কিরণ সাহেব, বিভিন্ন শিল্পপতি, প্রবাসী ভাই ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অর্থায়নে। যেখানে তিনি এখন শুয়ে আছেন, সেই জায়গাটিও অন্যের, কারণ নিজের নামে এক খণ্ড জমিও রেখে জাননি তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাবা নিজের জন্য কিছুই করেননি—সব করেছেন জনগণের জন্য। আজকাল অনেক চেয়ারম্যানের বাড়িতে যেতে পাকা রাস্তা লাগে, কিন্তু আনোয়ার মাঝি সাহেবের বাড়িতে এখনো কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। তার বাড়ির আঙিনায় আজও কুকুর চলাফেরা করে।
আল-আমিন সুমন মাঝি বলেন, যদি ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে কোনো ভোট রিজার্ভ থাকতো, তবে সেটা ছিল আনোয়ার মাঝি সাহেবের। এর প্রমাণ সাত বছর পর আমার মা ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন। কেউ হিংসা করেও আমার বাবার মতো সম্মান অর্জন করতে পারবে না কারন সম্মান দেওয়ার মালিক এক মাত্র মহান আল্লাহ তায়ালা। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি যেন আমার বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন আমিন। শিক্ষা ও সমাজসেবায় অনন্য ভূমিকা শিক্ষাক্ষেত্রে আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মাঝির অবদান অনস্বীকার্য।
তিনি আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের আমৃত্যু সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রাখেন। তার নেতৃত্বে এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় ও উন্নত হয় বহু শিক্ষা ও জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান, যেমন ৮৭নং আব্বাস আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়, হাসান সিদ্দিকীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা, শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসা ও সড়ক-ঘাট উন্নয়ন প্রকল্প পরিবার ও সর্বস্তরের মানুষের দোয়া কামনা
তার পরিবার ও অনুরাগীরা বলেন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মাঝি ছিলেন এক আদর্শবান, সৎ ও মানবিক নেতা, যিনি আজও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন তার কর্মে ও স্মৃতিতে।
শেষে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে দোয়া চাওয়া হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন মরহুম আনোয়ার হোসেন মাঝির সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মর্যাদা দান করেন।
সারাদেশ
নোয়াখালীতে চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ৫
নোয়াখালীর হাতিয়ায় চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলার চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিয়ার কোষ্টগার্ডের মিডিয়া লে. কমান্ডার আবুল কাশেম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বানিহীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে অপর পক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ ৪জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, একটি মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এমকে
সারাদেশ
সাংবাদিকসহ পাঁচ জুলাই যোদ্ধাকে হত্যার হুমকি
মৌলভীবাজারে একজন সাংবাদিকসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচজন জুলাই যোদ্ধাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করে আসছি।
এর জেরেই ফ্যাসিবাদী ও অপরাধচক্রের সদস্যরা আমাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। এর আগেও আমাকে সড়কে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে এবং মাদকবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে আমার পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। নতুন করে হত্যার হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
হুমকির শিকারদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক, ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আহ্বায়ক মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় রশিদ, ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আহ্বায়ক নাঈম হাসান, এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য হায়দার আলী ও নাঈম।
ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মো. মুজাহিদুল ইসলাম।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১টা ২৯ মিনিটে ‘নো ক্যাপশন’ নামের একটি ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জার থেকে মো. মুজাহিদুল ইসলামের ফেসবুক আইডিতে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। বার্তায় তাকে হত্যা ও লাশ গুম করার হুমকিসহ অশালীন ও ভয়ংকর ভাষা ব্যবহার করা হয়। একই বার্তায় আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদেরও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
জুলাই যোদ্ধা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাকে এবং আমার সহযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ফেসবুক আইডি, মেসেঞ্জার ও কমেন্টে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, একটি সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।
আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রাপ্ত তথ্য ও স্ক্রিনশট যাচাই করে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাদেশ
৯ ঘণ্টা যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না আজ
ট্রান্সফরমারের জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণ কাজের জন্য সিলেট নগরীতে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) টানা ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মোট ৯ ঘণ্টা ১১ কেভি ফিডারের আওতাধীনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
সিলেটের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না: ১১ কেভি সেনপাড়া ফিডারের আওতাধীন সেনপাড়া, শিবগঞ্জ, ভাটাটিকর, সাদিপুর, টিলাগড়, গোপালটিলা, এমসি কলেজ ও আশপাশের এলাকা; ১১ কেভি শিবগঞ্জ ফিডারের আওতাধীন শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, বোরহানবাগ, হাতিমবাগ, লামাপাড়া, রাজপাড়া ও আশপাশের এলাকা; ১১ রায়নগর ফিডারের আওতাধীন সোনারপাড়া, মজুমদারপাড়া, দর্জিপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার, খারপাড়া ও আশপাশের এলাকা; ১১ কেভি কুমারপাড়া ফিডারের আওতাধীন যতরপুর, মিরাবাজার, উদ্দীপন, আগপাড়া, মৌসুমি আগপাড়া, ঝেরঝেরিপাড়া ও আশপাশের এলাকা এবং ১১ কেভি উপশহর ফিডারের আওতাধীন উপশহর ব্লক এ, বি, সি, ডি, এবিসি পয়েন্ট, তেররতন, সৈয়দানীবাগ, সাদারপাড়া এবং আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না।
তবে নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে বলেও জানান তিনি। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-২ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
সারাদেশ
শোকের দিনে ক্রীড়া অনুষ্ঠান: প্রশ্ন করায় ফের বিতর্কে চাঁদপুরের ডিসি
রাষ্ট্রীয় শোকের দিনে যখন সারাদেশে আনন্দ-উৎসবসহ সব ধরনের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা স্থগিত ছিল, তখন চাঁদপুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) শহীদ শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে সরকার ঘোষিত শোক দিবস চলাকালেই চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় মাদকবিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। অথচ এদিন ঢাকায় শহীদ শরীফ ওসমান হাদির জানাজা ও দাফন চলছিল। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার মতো চাঁদপুরেও চলছিল গায়েবানা জানাজা ও শোক মিছিল সহ নানাবিধ কার্যক্রম। এনিয়ে প্রশ্ন করায় বিরূপ মন্তব্য করে ফের বিতর্কে জড়িয়েছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। এ ঘটনাকে ঘিরে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে যখন সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করছিল, তখন চাঁদপুরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাতিল করা হয়। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ফ্যামিলি ডে-সহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্থগিত থাকলেও ব্যতিক্রম হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
স্থানীয়দের দাবি, শোকের দিনে খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখলেও প্রশাসনের কোনো সম্মানহানি হতো না। বরং অনুষ্ঠানটি পরবর্তীতে আয়োজন করা হলে বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে আয়োজনটি আরও সফল হতে পারত। যেহেতু এটি একটি মাদকবিরোধী প্রচারণামূলক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, তাই অন্য যেকোনো সময় ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করলে দর্শকদের উপস্থিতি আয়োজনকে সার্থক করে তুলত। বিভিন্ন মহলের দাবি; শহীদের মৃত্যুতে যখন রাষ্ট্র নিজেই গুরুত্ব দিয়ে শোক পালন করছে, তখন একজন জেলা প্রশাসকের এমন সিদ্ধান্ত জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে।
বিষয়টি অনুষ্ঠানস্থলে জেলা প্রশাসককে ব্যক্তিগতভাবে অবহিত করেন এক সাংবাদিক। তিনি জেলা প্রশাসককে জানান, শোকাবহ এই দিনে খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান কতটা প্রয়োজনীয় ছিল-এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
এর জবাবে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, আপনার এই প্রশ্নটা করা ঠিক হয়নি। এ সময় ওই সাংবাদিক তাকে জানান, এটি তার ব্যক্তিগত প্রশ্ন নয়, বরং জনমনের প্রশ্ন হিসেবেই তিনি বিষয়টি অবগত করেছেন।
পরে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি কোথায় কী করেন, এগুলো বের করতে আমার সময় লাগবে না। এক সপ্তাহের মধ্যেই সব বের করে আনব।
এ ধরনের বক্তব্যকে সাংবাদিকের প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না-সে প্রশ্নও উঠেছে।
একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর সামনে জেলা প্রশাসক দাবি করেন, তাকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন এবং কে কোথায় কী করেন-সবই তিনি জানেন।
একপর্যায়ে তিনি ওই সাংবাদিককে উদ্দেশ করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন- আপনি একজন সাংবাদিক, আপনার কি মিছিলে যাওয়া ঠিক হয়েছে?
এছাড়া আগের দিন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ‘জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও’ শব্দচয়ন নিয়েও আপত্তি তুলে তিনি বলেন, ৭০/৮০ জন মানুষ হলে কি সেটাকে ঘেরাও বলা যায়?
উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে চাঁদপুরে ছাত্র-জনতার একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শহরের বাইতুল আমীন চত্বর থেকে শহর প্রদক্ষিণ শেষে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করে। পরে সেখান থেকে জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়ে মিছিলটি জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সে সময় জেলা প্রশাসক নিজে বাইরে এসে আন্দোলনকারীদের দাবি শোনেন এবং তা পূরণের আশ্বাস দেন।
এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই জেলা প্রশাসকের মন্তব্য ও আচরণ নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
এদিকে, খেলার বিষয়টি প্রশাসনকে আগেই অবহিত করার জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) এবং জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালককে (ডিডি) অবহিত করা হয়।
পরে জেলা প্রশাসক অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে জানাতে চাইলে তিনি প্রকাশ্যে জানাতে বলেন। এরপরই গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তার বক্তব্যগুলো উঠে আসে।
এসময় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মাদকবিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন এবং খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তবে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন থেকেই যায়-রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে এমন আয়োজন কি প্রশাসনিক সংবেদনশীলতার অভাবেরই বহিঃপ্রকাশ নয়?
এর আগে গত বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসকের দেওয়া কয়েকটি বক্তব্য নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা ও সমালোচনা হয়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরে যোগদানের আগে মো. নাজমুল ইসলাম সরকার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সারাদেশ
শীতের দাপট আরও তীব্র, কাঁপছে তেঁতুলিয়া
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর শনিবার কিছুটা তাপমাত্রা বেড়েছিল। তবে রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ফের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্দ্রতা বৃদ্ধি ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের দাপট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পুরো এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। কুয়াশার কারণে সড়ক, মাঠ ও ঘাটে দৃষ্টিসীমা কমে যায়। এ সময় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। চাকলাহাট এলাকার দিনমজুর করিম মিয়া জানান, গত দুই দিন ধরে সকালে প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। কাজে বের হলে শীতের তীব্রতায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে, ফলে স্বাভাবিকভাবে কাজ করাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
একই কথা জানান স্থানীয় ভ্যানচালক তরিকুল। তিনি বলেন, ভোরবেলা ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই স্পষ্ট দেখা যায় না। কুয়াশার জন্য ধীরে ভ্যান চালাতে হয়, যাত্রীও কমে গেছে।
এদিকে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কে চলাচলকারী ট্রাকচালক রুবেল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়েও সামনে ঠিকভাবে দেখা যায় না। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়, তাই অত্যন্ত সতর্ক হয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
এর আগের দিন শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। কুয়াশা না থাকলেও সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি হলেও ঠান্ডার অনুভূতি কমেনি। শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর, যেদিন পারদ নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে-যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রোববার ফের কমেছে। আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের অনুভূতি তীব্র হচ্ছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।




