জাতীয়
জেলেদের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি: মৎস্য উপদেষ্টা
মৎস্যজীবীদের জীবন-জীবিকা, পরিচয় ও তাদের শ্রমের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিকেও মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্যকরেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, জলজ জীববৈচিত্র্যে বাংলাদেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধ, তাই পরিবেশ মূল্যায়নে শুধু ইকোলজিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করাই যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি প্রাকৃতিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও জেলেদের সামাজিক সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে।
আজ (শনিবার) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ৭ম সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রাণীজ প্রোটিনের বড় অংশ আসে মাছ, ডিম ও অন্যান্য প্রাণীজাত পণ্য থেকে, যা মূলত ক্ষুদ্র খামারিরা উৎপাদন করছেন এবং তাদের বেশিরভাগই নারী। কিন্তু তাদের এই অবদান নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এখনো যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে না।
উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক জলসীমা রয়েছে এবং জলজ জীববৈচিত্র্যে আমরা অত্যন্ত সমৃদ্ধ হলেও আমাদের সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ এখনো যথাযথভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এর পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সড়ক নির্মাণে পর্যাপ্ত কালভার্ট না থাকায়, বহু স্থানে জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে— যা মাছের বিচরণ ও প্রাকৃতিক উৎপাদন ব্যবস্থাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।
ফরিদা আখতার আরো বলেন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া ঘোষণার মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণের উদ্যোগও চলমান আছে। তবে এসব উদ্যোগ অধিকতর সমন্বিত ও সুসংগঠিতভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক ও সামুদ্রিক মাছের বৈচিত্র্যে অত্যন্ত সমৃদ্ধ হলেও দূষণ-বিশেষ করে প্লাস্টিক ও শিল্পবর্জ্যের কারণে মাছের জীবন ও খাদ্যনিরাপত্তা ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে। সূত্র: বাসস।
জাতীয়
গানম্যান ও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাচ্ছেন শহীদ ওসমান হাদীর বোন
ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনে শহীদ ওসমান হাদির পরিবারকে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে হাদির এক বোনকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও তার নিরাপত্তার জন্য একজন গানম্যান নিয়োগ করা হবে। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্যও সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি, তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। তবে পুলিশ বাহিনীর জনবল সীমিত হওয়ায় সবাইকে গানম্যান দেওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও গণপরিবহন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে।
এদিকে জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা, সমন্বয়ক, রাজনৈতিক নেতা ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গানম্যান দেওয়া হয়েছে এবং কারও কারও ক্ষেত্রে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে কোথাও গানম্যান, কোথাও নজরদারি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। যাদের ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের আবেদন রয়েছে, সেগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
সরকারি সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে জুলাই যোদ্ধা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত বেশ কয়েকজন নেতা হুমকির মুখে রয়েছেন। ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পর এ বিষয়টি আরও গুরুত্ব পেয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এমকে
জাতীয়
৯০ দিনের মধ্যে হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন হবে: আইন উপদেষ্টা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি এ তথ্য জানান।
আসিফ নজরুল লিখেছেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।
তিনি আরও লিখেছেন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০২২ এর ১০ ধারা অনুযায়ী পুলিশ রিপোর্ট আসার পর সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করা হবে।
গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। এরপর পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পরে ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় ওসমান হাদিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
এরপর শুক্রবার তার মরদেহ ঢাকায় আনা হয় ও শনিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে তাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়।
এমকে
জাতীয়
হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। মূলহোতা বৈধ পথে দেশ ছাড়েনি বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বৈঠক শেষে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এবং এ ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১০ জনকে যৌথবাহিনী (পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি) কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ফয়সাল করিমের স্ত্রী শাহেদা পারভীন সামিয়া, মা ও বাবা, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু এবং মোটরসাইকেল মালিক আব্দুল হান্নান।
তাছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ৪১ রাউন্ড গোলাবারুদ ও একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তবে আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করছি- এ বিষয়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে এবং তাকে (মূলহোতাকে) খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দালাল চক্র ফিলিপের সহযোগী পাঁচজনকে (স্ত্রী ও শ্বশুরসহ) আটক করে বিজিবি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। গতকাল (রোববার) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি যৌথ এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে মিডিয়াকে বিস্তারিত অবহিত করেছে।
হাদির হত্যাকারী কোথায় আছে- জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কোথায় আছে সেটা জানলে তো আমরা ধরেই ফেলতাম।
মূলহোতা কি দেশে আছে নাকি বিদেশে আছে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সে কোথায় আছে… দেশে থাকতে পারে, বাইরেও থাকতে পারে। প্রকৃত অবস্থান যদি জানতে পারতাম তবে তো ধরেই ফেলতাম। সে বৈধ পথে যায়নি, অবৈধ পথে গেছে কি-না, এটা তো আমি বলতে পারব না।
এমকে
জাতীয়
হাদি হত্যার বিচারে ‘দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের দাবি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং জুলাই আন্দোলনের সম্মুখ যোদ্ধা শহীদ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।
তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য একটি দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পেশাদার তদন্ত সংস্থার সহায়তা নিতে হবে। কোনো তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নয়—আমরা চাই প্রকাশ্য বিচার।
আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাকে আড়াল করা যাবে না। তার হত্যার বিচার করতেই হবে।
তিনি বলেন, শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে—বাংলাদেশের জনগণ এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, গতকাল (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে শহীদ ওসমান হাদির নাম বা তার হত্যার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান আমরা পাইনি। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এই ঘটনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা মনে করেছে, এই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়া যাবে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—বাংলাদেশের জনগণ চুপ করে থাকার জাতি নয়।
ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব জাবের আরও বলেন, গতকালের বিবৃতিতেই স্পষ্ট—এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আপনাদের (সরকার) কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কখনো বলেন খুনি ভারতে পালিয়েছে, আবার কখনো বলেন খুনি দেশে রয়েছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে—বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাজ কী? জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তারা কি শুধু সুবিধা ভোগের জন্য বসে আছে?
আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তার হত্যাকে যদি এভাবে অবহেলা করা হয়, তাহলে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—আমাদের দেওয়া দুই দফা দাবির একটিরও বাস্তবায়ন হয়নি। এখনো খুনির অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি, এমনকি খুনির ড্রাইভারকেও গ্রেফতার করা হয়নি। কখনো খুনির পরিবার, কখনো সহযোগীদের ধরে এনে বলা হচ্ছে তারা পর্যাপ্ত তথ্য দিতে পারেনি। তাহলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সক্ষমতা কোথায়?
বাস্তবতা হলো ইনকিলাব মঞ্চ বারবার তথ্য দিয়ে আপনাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা না থাকলে আপনারা আজ পর্যন্ত খুনিকে শনাক্তই করতে পারতেন না। তাহলে প্রশ্ন আসে—এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রাখার প্রয়োজন কী? সব কাজ যদি ইনকিলাব মঞ্চকেই করতে হয়, তাহলে দায়িত্ব আমাদের হাতেই দিয়ে দিন।
তিনি বলেন, আমরা দ্বিতীয় যে দাবি জানিয়েছিলাম, সিভিল ও মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা—সে বিষয়ে আপনারা একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। কোটি কোটি মানুষের দাবিকে এভাবে উপেক্ষা করা চরম দায়িত্বহীনতা।
জাবের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব নেয়নি। এই সরকার যদি বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।
আইন উপদেষ্টার প্রতি আমরা প্রশ্ন রাখি, দায় এড়িয়ে যাওয়াই কি আপনার একমাত্র দায়িত্ব? জনগণ আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে দায়িত্ব পালনের জন্য, দায় অস্বীকার করার জন্য নয়। কে বাধা দিচ্ছে, কারা এই তদন্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে—সবকিছু স্পষ্ট করে জাতির সামনে বলুন, তারপর পদত্যাগ করুন। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসকেও আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। জানাজার মাঠে আপনি শহীদ ওসমান হাদির প্রতি সম্মান জানিয়েছেন, কিন্তু একবারের জন্যও বলেননি, এই হত্যার বিচার কীভাবে হবে। আপনার এই নীরবতা আমাদের গভীরভাবে হতাশ করেছে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—নির্বাচনের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, আমরা আর রক্ত দিতে চাই না। কিন্তু যদি বিচারহীনতা চলতে থাকে, তাহলে পরিস্থিতির দায় সরকারকেই নিতে হবে। অতিদ্রুত ওসমান হাদি হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। যদি তারা বিদেশে থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।
জাতীয়
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ছাড়ালো ৫ লাখ ৭৫ হাজার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দেশ থেকে ভোট দেওয়ার জন্য “পোস্টাল ভোট বিডি” অ্যাপে প্রবাসী নিবন্ধন করেছেন ৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৮ জন ও নারী ৩৬ হাজার ৪৫৯ জন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ইসির পোস্টাল ব্যালটের ওয়েব সাইট (https://portal.ocv.gov.bd/report/by-country) থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
এবারই প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে প্রবাসী, আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি, ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা এ ব্যবস্থায় ভোট দিতে পারবেন। এজন্য অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। গত ১৯ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে, যা চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যে সব দেশে নিবন্ধন চলছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, হংকং, ব্রাজিল, উগান্ডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, বতসোয়ানা, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, ঘানা, গিনি, মরক্কো, দক্ষিণ সুদান, চিলি, সিয়েরা লিওন, ইকুয়েডর, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, পেরু, জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ইত্যাদি।
ইসি জানিয়েছে, অ্যাপে নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভোটার ভোট দিয়ে ফিরতি খামে তা আবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ৫০ লাখ প্রবাসী ভোট টানার টার্গেট নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে সংস্থাটি।




