ব্যাংক
ঋণ, ওভারড্রাফট ও গ্যারান্টির জন্য মাস্টার সার্কুলার জারি

ঋণ, ওভারড্রাফট ও গ্যারান্টি সংক্রান্ত সব বিধান এক কাঠামোয় আনতে নতুন মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) জারি করা এ সার্কুলারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের নীতিমালা সহজ, সুসংহত ও আরও স্বচ্ছ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্য অনুযায়ী, এতদিন বিভিন্ন গাইডলাইন ও সার্কুলারে ছড়িয়ে থাকা নির্দেশনাগুলো প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে নতুন সার্কুলারে একত্রিত করা হয়েছে। এতে ঋণ, ওভারড্রাফট এবং গ্যারান্টি সংক্রান্ত বিধানসমূহকে একক কাঠামোর আওতায় আনা হয়েছে, যা জারির তারিখ থেকে এক বছরের জন্য কার্যকর থাকবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, এতে বাণিজ্যিক ঋণ, বিদেশে প্রদত্ত গ্যারান্টি বা জামানতের বিপরীতে ঋণ, দেশীয় ও বিদেশি উভয়পক্ষের জন্য বিভিন্ন ধরনের গ্যারান্টি, রিপেমেন্ট গ্যারান্টি এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক ঋণ প্রদানের বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ব্যাংকগুলোকে গ্যারান্টি, স্ট্যান্ডবাই লেটার অব ক্রেডিট (এসবিএলসি) ও অন্যান্য পেমেন্ট প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়ম যেমন URDG, UCP, ISP ইত্যাদি অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তা দেশের আইন ও বিধিবিধানের সঙ্গে অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
নতুন সার্কুলারে আরও উল্লেখ রয়েছে- বিশেষায়িত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ সুবিধা, বৈদেশিক ও স্থানীয় মুদ্রায় বিভিন্ন ধরনের ঋণ গ্রহণের সুযোগ, Usance বিল ডিসকাউন্টিং, চলতি মূলধন সুবিধা, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের বিধান সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণ ও গ্যারান্টি সংক্রান্ত নির্দেশনা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একীভূত এই মাস্টার সার্কুলারের মাধ্যমে ঋণ, ওভারড্রাফট ও গ্যারান্টি সংক্রান্ত বৈদেশিক লেনদেন আরও সহজ, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী হবে। বিশেষ করে বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি সহায়ক হবে বলে তারা মনে করছেন।
এই উদ্যোগকে বৈদেশিক মুদ্রানীতি সরলীকরণ এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের আধুনিকায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ব্যাংক
আগামীকাল খোলা থাকবে ব্যাংক

হজ কার্যক্রমের সুবিধার্থে ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখা শনিবার (১৮ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী জারি করা এ নির্দেশনায় বলা হয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৬ সালের হজ নিবন্ধনের অর্থ জমা দেওয়ার সুবিধার্থে হজের অর্থ গ্রহণকারী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো ১৮ অক্টোবর খোলা রাখতে হবে। যতক্ষণ হজের নিবন্ধনের অর্থ জমা দেওয়ার জন্য গ্রাহক থাকবেন, ততক্ষণ অর্থ গ্রহণের প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
ব্যাংক
শনিবার ব্যাংক খোলা রাখা নিয়ে নতুন নির্দেশনা

হজ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা বা উপশাখা শনিবার (১৮ অক্টোবর) খোলা রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হজ নিবন্ধনের অর্থ জমা দেওয়ার জন্য আমানতকারীরা যতক্ষণ পর্যন্ত উপস্থিত থাকবেন, ততক্ষণ ব্যাংকগুলোকে ওই অর্থ গ্রহণ অব্যাহত রাখতে হবে।
এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক কম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারধারী পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যানের পদত্যাগ

শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল হক পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। রোববার (১২ অক্টোবর) তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। একই সাথে, জানা গেছে যে ব্যাংকটির বর্তমান পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা শিগগিরই বাতিল করা হতে পারে।
রেজাউল হক তার পদত্যাগপত্রে বর্তমান পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি লিখেছেন যে স্বতন্ত্র পরিচালকদের নিয়ে গঠিত এই পর্ষদ ব্যাংক পরিচালনায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তার দাবি, স্বতন্ত্র পরিচালকরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শুধু দৈনিক অফিসে আসা এবং বেতন নেওয়া ছাড়া কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।
তিনি মনে করেন, ব্যাংকের প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব হতো। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের শুনানিতে এই স্বতন্ত্র পরিচালকরা তার অনুপস্থিতিতে অংশগ্রহণ করেছেন, যা তাদের এখতিয়ারের বাইরে ছিল।
রেজাউল হক পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন যে তিনি ২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি দাবি করেন, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ‘অস্ত্রের মুখে’ তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।
তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন যে এস আলম গ্রুপের দখলের পর গত সাত বছরে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকটি ধ্বংসের মুখে পড়েছে। বর্তমান সরকারের পতনের পর তিনি আশা করেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটিকে প্রকৃত শেয়ারধারীদের হাতে ফিরিয়ে দেবে, কিন্তু তার বদলে ‘অকার্যকর স্বতন্ত্র পর্ষদ’ গঠন করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকে রেজাউল হক নিশ্চিত করেন, স্বতন্ত্র পরিচালকরা ব্যাংক পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের কারণে এখন কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় পর্ষদের সভাও করা সম্ভব হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ এসআইবিএলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করেছিল। এতে রেজাউল হক এবং চারজন স্বতন্ত্র পরিচালককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান হন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার এসআইবিএলসহ পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ধর্ম ও জীবন
বাংলাদেশ ব্যাংকে সীরাত মাহফিল, প্রধান আলোচক আহমাদুল্লাহ

আগামী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেবেন আস্ সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী।
রোববার (১২ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আনিচুর রহমান এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন।
আয়োজকের পক্ষ থেকে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আগ্রহীদের অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ব্যাংক
ব্যাংক বন্ধ হলে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ

উপদেষ্টা পরিষদ ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে। এর মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানতের গ্যারান্টি এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়িত হলে প্রত্যেক আমানতকারী সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “আগে ব্যাংকে আমানতে এক লাখ টাকার গ্যারান্টি ছিল। এখন সেটাকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে। ১৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ব্যাংকে আমানত রেখেছেন। নতুন অধ্যাদেশের ফলে প্রায় ৯৩ শতাংশ গ্রাহক সুরক্ষা পাবেন।”
অধ্যাদেশে ছয়টি অধ্যায় এবং ৩৩টি ধারা রয়েছে। এতে আমানত সুরক্ষা তহবিল (ব্যাংক কোম্পানি) ও আমানত সুরক্ষা তহবিল (ফাইন্যান্স কোম্পানি) নামে দুটি স্বতন্ত্র তহবিলের বিধান রাখা হয়েছে। তহবিল দুটি পরস্পর বিনিময়যোগ্য নয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য তহবিল থেকে স্বতন্ত্র থাকবে।
তহবিল পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাংগঠনিক কাঠামোর অধীনে ‘আমানত সুরক্ষা বিভাগ’ নামে স্বতন্ত্র বিভাগ গঠন করা যাবে। আগের আইন অনুযায়ী অন্তর্ভুক্ত তফসিলি ব্যাংক স্বয়ংক্রিয়ভাবে তহবিলের সদস্য হিসেবে গণ্য হবে। নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্ত তফসিলি ব্যাংকও সদস্য হিসেবে গণ্য হবে এবং লাইসেন্স পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে প্রারম্ভিক প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে।
প্রারম্ভিক প্রিমিয়াম কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ০.৫০ শতাংশ বা ট্রাস্টি বোর্ড নির্ধারিত পরিমাণ হবে। তহবিল থেকে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানির রেজল্যুশনের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগ, বৈচিত্র্য ও তহবিলের তারল্য সংরক্ষণকে প্রাধান্য দিতে হবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, আমানতের গ্যারান্টির সর্বোচ্চ সীমা প্রতি তিন বছরে কমপক্ষে একবার ট্রাস্টি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংকের আমানতকারীদের সুরক্ষা দেয়ার প্রথম উদ্যোগ ১৯৮৪ সালে নেওয়া হয়েছিল, পরে ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করা হয়।