অর্থনীতি
এস আলমের সাত ভাইসহ ১৩ জনের ব্যাংক হিসাব তলব

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সাত ভাইসহ ১৩ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ব্যাংক দখল করে নামে-বেনামে বিপুল অংকের ঋণ নিয়ে পাচার করায় ১৩ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তলব করেছে বিএফআইইউ।
সোমবার (২৬ আগস্ট) এ সংক্রান্ত চিঠি সব ব্যাংকে পাঠানো হয়। সেখানে প্রত্যেকের পিতা-মাতার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেকের ব্যবসায়ীক ব্যক্তিগতসহ সব ধরনের হিসাবের লেনদেনসহ যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এস আলমের বাবার নাম মোজাহেরুল আনোয়ার ও মা চেমন আরা বেগম। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর- ৫৯৬২৪৬৭৯৪৯। আর জন্ম ১৯৬০ সালের ১২ জানুয়ারি। তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন (জাতীয় পরিচয়পত্র ৪১৬১৮৮৪৫১৭), দুই ছেলে- আহসানুল আলম (৪৬১০৪৩৯৩৭৬) ও আশরাফুল আলম (২৪১৫৪৫২৬৫২) রয়েছে তালিকায়।
এস আলমের ভাইরা হলেন- মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান (৫০৬২৪৭০০০৯), ওসমান গনি (৯৫৫৬২৩৪৩৯২), আবদুস সামাদ (১৫৯৫৭০৮৫৭০৫৭২), রাশেদুল আলম (৬৮৬২৪৬২৭৪১), সহিদুল আলম (৬৮৬২৯০২২০৯) ও মোরশেদুল আলম (৫০৬২৪৭৪১৩৪)।
এছাড়া হামিদুর রহমানের ছেলে মিসকাত আহমেদ (৫০৬৩৩১২৭৩৯), আবুল কাশেমের মেয়ে ফারজানা বেগম (৪৬১১৮৮০৩৪৪) ও ফৈরদৌসুল কবিরের মেয়ে শাহানা ফৈরদৌস রয়েছে তালিকায়। এরাও এস আলম পরিবার সংশ্লিষ্ট হলেও কার সাথে কি সম্পর্ক তা জানা যায়নি।
এসএম

অর্থনীতি
দুই প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশের জন্য ৬৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার এবং বায়ুমান উন্নয়নে এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (১৮ জুন) বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ এই অর্থায়নের অনুমোদন দেয়।
সংস্থাটির অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ুমান উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প দুটি।
জানা গেছে, অনুমোদনকৃত বিশাল এ অর্থ সহায়তার মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হচ্ছে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে। ‘এনার্জি সেক্টর সিকিউরিটি এনহান্সমেন্ট’ এর আওতায় এ সহায়তার মাধ্যমে পেট্রোবাংলার জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করা হবে। ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটি একটি আইডিএ গ্যারান্টির মাধ্যমে সাত বছরে ২.১ বিলিয়ন ডলার বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহে সহায়তা করবে, যা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য ব্যবহৃত হবে।
বর্তমানে দেশের মোট গ্যাস ব্যবহারের এক-চতুর্থাংশ এলএনজি আমদানি নির্ভর, যার ৪২ শতাংশই ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ খাতে। তাই গ্যাস সংকট হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়, যা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি আমদানিতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও কার্যকর পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ওলায়িনকা এডেবিরি বলেন, এই উদ্যোগ শিল্প ও সাধারণ জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। এটি অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া দ্বিতীয় প্রকল্প ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট’ এর আওতায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতায় বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করবে এবং আধুনিক মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করবে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি অকাল মৃত্যু এবং ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন কর্মদিবস হারিয়েছে, যা দেশের মোট জিডিপির ৮ দশমিক ৩ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতির কারণ।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০০টি পুরোনো ডিজেলচালিত বাস সরিয়ে নতুন শূন্য-নিষ্কাশন (ইলেকট্রিক) বাস চালু করা হবে। পাশাপাশি পাঁচটি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ, দুটি অকার্যকর কেন্দ্র আধুনিকীকরণ এবং ২০টি মোবাইল ভেহিকেল এমিশন ইউনিট স্থাপন করা হবে। এর ফলে বছরে আনুমানিক ২ হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন পিএম ২ দশমিক ৫ নির্গমন হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের লিড এনভায়রনমেন্ট স্পেশালিস্ট আনা লুইসা গোমেস লিমা বলেন, এটি বায়ুমান উন্নয়নের প্রথম বড় উদ্যোগ। যেহেতু বায়ু এক দেশের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, তাই এ প্রকল্প আঞ্চলিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি।
কাফি
অর্থনীতি
অনুমোদন ছাড়াই বিদেশে পাঠানো যাবে সরকারি প্রকল্প সেবার ফি

সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া বিভিন্ন সেবার ফি এখন অনুমোদন ছাড়াই পাঠানো যাবে। এ বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (১৮ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে সরকারি প্রকল্পে পরামর্শ, ব্যবস্থাপনা বা অন্যান্য চলতি সেবার জন্য নির্ধারিত ফি আগাম অনুমোদন ছাড়াই বৈধভাবে বিদেশে পাঠানো যাবে। এতদিন এসব লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
তবে এ সুবিধা নিতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন— প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদিত হতে হবে এবং তাতে অর্থ ছাড়ের অনুমোদন থাকতে হবে। সেবা প্রদানকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিও থাকতে হবে। অর্থ ছাড়ের সময় প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে ইনভয়েস ও সেবা নেওয়ার প্রমাণস্বরূপ একটি সনদপত্র জমা দিতে হবে। পাশাপাশি উৎসে কর, মূল্য সংযোজন করসহ অন্যান্য প্রযোজ্য কর পরিশোধের বিষয়েও নিশ্চিত হতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, রয়্যালটি, প্রযুক্তিগত জ্ঞান বা সহায়তা এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন নির্দেশনার ফলে এখন আর আগাম অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম আরও দ্রুত ও সহজ হবে।
অর্থনীতি
শ্রীলংকায় ওষুধ খাতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ওষুধ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বুধবার (১৮ জুন) শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্প্রসারণে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন’ শীর্ষক বিজনেস প্লেনারি সেশনে শ্রীলংকা-বাংলাদেশ বিজনেস কো-অপারেশন কাউন্সিলের সভাপতি আন্দ্রে ফার্নান্দো এ আহ্বান জানান।
শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ প্লেনারি সেশন হয়। দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের সার্বিক সহযোগিতায় এর আয়োজন করে ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অব শ্রীলঙ্কা।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অব শ্রীলঙ্কার সভাপতি আনূরা ওয়ারনাকুলাসুরিয়া বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস জরুরি। দুদেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে এ ধরনের সমন্বয় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
এসময় ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বিগত কয়েক দশকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশ স্থিতিশীল ছিল। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য, ইলেকট্রনিক্স ও হালকা প্রকৌশল এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রভৃতি খাত এ অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি জানান, শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তারা এরই মধ্যে বাংলাদেশে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, জ্বালানি, অবকাঠামো প্রভৃতি খাতে ৪৩৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তিনি বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অধিকতর উন্নয়নে প্রায় তিন দশক আগে সই হওয়া ‘ডাবল ট্যাক্সেশন এভয়ডেন্স এগ্রিমেন্ট’ যুগোপযোগী করার ওপর জোর দেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান মানগালা ওয়াইজেসিঙ্গহি জানান, শ্রীলঙ্কার জিডিপিতে রপ্তানি খাতের অবদান ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৪ সালে মোট রপ্তানি ছিল ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। শ্রীলঙ্কার তার রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ ও পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর অধিক হারে প্রধান্য দিচ্ছে।
তিনি জানান, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, তৈরি পোশাক, ফেব্রিক্স এবং কেমিক্যাল প্রভৃতি পণ্য আমদানি করেছে। এছাড়াও সুতা ও টেক্সটাইল, ফেব্রিক্স, মসলা, পশু খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, বাদাম ও কৃষিপণ্য প্রভৃতি খাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। শ্রীলঙ্কার ওষুধ, প্যাকেজিং, লজিস্টিক ও রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট অফ শ্রীলঙ্কার রেনুকা এম ওয়াইরাকুনে বলেন, দুদেশের মধ্যকার এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনেকাংশে বৃদ্ধির পাশাপাশি শুল্ক বিষয়ক প্রতিবন্ধকতাও নিরসন হবে। শ্রীলঙ্কায় ওষুধ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং ফেব্রিক্স খাতে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন। একই সঙ্গে অবকাঠামো, পর্যটন, তথ্য-প্রযুক্তি এবং শিক্ষা প্রভৃতি খাত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ বোর্ড উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে সব সেবা সম্বলিত ১৫টি রপ্তানি প্রক্রিয়া অঞ্চল পরিচালনা করছে। যেখানে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপালা বীরাক্কোদি বক্তব্য দেন।
আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অতিদ্রুত এফটিএ স্বাক্ষর জরুরি।
এসময় ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে এফটিএ স্বাক্ষরে দুদেশের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও উভয় দেশের সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে একযোগে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দুদেশের শুল্ক-বিষয়ক প্রতিবন্ধকতা নিরসনের পাশাপাশি নীতির যুগোপযোগী সংস্কারের ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ৭০টি শ্রীলঙ্কান ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির ১৫০টি বিটুবি ম্যাচ-মেকিং অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দুদেশের উদ্যোক্তারা নিজেদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ বিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ পান। যা ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মান ও প্রতিনিধিদলের সদস্যরা যোগ দেন।
অর্থনীতি
ভিসিপিয়াব’র বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্টার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং অর্থ-উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। সরকার আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নের জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করায় ভিসিপিয়াব সরকারকে সাধুবাদ জানাই। এই পদক্ষেপ নারীদের জন্য ব্যবসায়িক পরিবেশকে শক্তিশালী করবে এবং বাংলাদেশে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোক্তা বাস্তুতন্ত্র গড়ে তুলবে।
তবে, ই-কমার্স ব্যাবসার উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভিসিপিয়াব উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এই বৃদ্ধি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য পরিচালনা ব্যয় বাড়িয়ে দিবে, যার ফলে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধি পাবে এবং এই খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে (এসএমই’স) ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বাজেট প্রস্তাবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডে বিনিয়োগকে ট্যাক্স রিবেট ও ক্রেডিট সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে, যা স্টক মার্কেটের বিনিয়োগের অনুরূপ। একটি সমৃদ্ধ, উদ্ভাবন-ভিত্তিক অর্থনীতি তৈরিতে সহায়তা করার জন্য ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ষষ্ঠ তফসিলের ৪৪ ধারা, অংশ বি-এর অধীনে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্দ (এআইএফ)-এ বিনিয়োগকে যোগ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
ভিসিপিয়াব’র সভাপতি শওকত হোসেন বলেন, আমরা নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের সাধুবাদ জানাই এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডে বিনিয়োগকে ট্যাক্স রিবেটের জন্য অনুমোদিত বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
অর্থনীতি
আগামী দুই শনিবার এনবিআরের সব অফিস খোলা

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর আগামী ২১ ও ২৮ জুন, পরপর দুই শনিবার খোলা থাকবে। সাধারণত সপ্তাহের এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন হলেও বাজেট পরবর্তী কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে এনবিআর ব্যতিক্রমী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ এক প্রেস বিবৃতিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (বোর্ড প্রশাসন-১) উম্মে আয়মান কাশেমী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ ইতোমধ্যে জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কার্যক্রম চলমান থাকায় আগামী ২১ ও ২৮ জুন (শনিবার) এনবিআর এবং এর অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর দপ্তরসহ রাজস্ব আদায় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব দপ্তর খোলা থাকবে। এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাজেট ঘোষণার পর রাজস্ব প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে করদাতা, ভ্যাটদাতা ও আমদানি-রপ্তানিকারকদের অনেক পরামর্শ, দাখিলপত্র ও কর সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এই সময়ে করসেবা নিশ্চিত করা এবং দ্রুত বাজেট বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য অতিরিক্ত কর্মদিবস রাখা জরুরি হয়ে পড়ে। তাই ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সরকার গত ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করে। সেই বাজেটের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও পরিপত্র জারির কাজ এরই মধ্যে শুরু করেছে এনবিআর।