পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজার গতিশীল রাখতে ভালো আইপিওর বিকল্প নেই: ডিবিএ প্রেসিডেন্ট

পুঁজিবাজারের গতিশীলতা ধরে রাখতে ভালো আইপিওর বিকল্প নেই উল্লেখ করে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেছেন, গত ১৪ বছরে পুঁজিবাজারে কোন ভালো আইপিও আসেনি, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশার বিষয়। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার ছাড়ছেন।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রস্তাবিত বাজেটের উপর ডিবিএর প্রতিক্রিয়া বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্র মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার। আমরা ভেবেছিলাম এবারের জাতীয় বাজেট প্রস্তাবে সে সংক্রান্ত একটি দিক নির্দেশনা থাকবে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। তবে বাজেট প্রস্তাবনায় সে সংক্রান্ত কোন দিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি। সংশোধিত বাজেটে কিছু সুবিধা রাখা বাধ্যতামুলক নয়তো কোম্পানিগুলো বাজারে আসতে আগ্রহী হবে না।
তিনি বলেন, গত এক দশকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে খুব বেশী অগ্রগতি হয়নি। আমরা পুঁজিবাজারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোকে তালিকাভুক্ত করার জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করার অনুরোধ করছি। উক্ত বিষয়ে একটি পরিস্কার রোডম্যাপ দেয়া হলে বাজার মানসম্পন্ন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজে প্রতিযোগীতামূলক ভাল ব্যবসা তৈরীতে উৎসাহিত হবে।
পরে সংশোধিত বাজেটে ডিবিএর ৭ প্রস্তাব সাংবাদিকদের সামনে তুলে দরেন ডিবিএ প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।
এসময় মূলধনী আয়কে করমুক্তকরণ প্রসঙ্গে ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধন আয়ের ৫০ লাখ টাকার অধিক আয়ের উপর স্তরভিত্তিক করারোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, কোন সিকিউরিটিজ বিনিয়োগের সময়কাল ৫ বছর অতিক্রম করলে উক্ত বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদানের প্রস্তাব করা হয়। গত কয়েকবছর ধরে মন্দা বাজার পরিস্থিতি এবং আর্থিক সংকটে থাকা বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিবেচনা করে মূলধন আয়ের উপর থেকে করারোপের প্রস্তাব রহিতকরণের জন্য আমরা জোর সুপারিশ করছি।
ব্রোকারেজের জন্য করহার যৌক্তিককরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজগুলো দুটি স্তরে কর প্রদান করে। প্রথমত সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয়ের উপর দশমিক ০৫ শতাংশ, দ্বিতীয়ত কর্পোরেট আয়কর হিসেবে, যেটি বেশী হয় তা চুড়ান্ত কর হিসেবে গন্য করা হয়। এ দ্বিস্তরের ব্যবস্থার ফলে মন্দা বাজার পরিস্থিতিতে ব্রোকারদের ক্ষতি করে। কিছু ক্ষেত্রে এই করের হার ৪০ শতাংশ বা তার বেশী ছাড়িয়ে যায়।
তিনি বলেন, ব্রোকাররা বাজারের অন্যতম অংশীজন। বাজারে বিনিয়োগকারী এনে বাজারকে বিনিয়োগ সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তারা করে থাকে। ব্রোকারদের আর্থিক সংকট ও অক্ষমতা বাজারের উন্নয়নকে চরমভাবে ব্যহত করে। তাই পুঁজিবাজারকে টিকিয়ে রাখতে এবং এর উন্নয়নে ব্রোকারদের সক্রিয় ও সচল রাখা অত্যাবশ্যক।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, রাজস্ব করহার দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে দশমিক ০২৫ শতাংশ হ্রাসকরণ এবং কর্পোরেট আয়করকে ব্রোকারেজের জন্য চুড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনাকরণ করতে হবে। মূলধন ক্ষতির উপর বিদ্যমান আইনের ব্যাখ্যা স্পষ্টীকরণ: প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধন লাভের উপর করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ মূলধনী লোকসানের উপর ৬ বছর পর্যন্ত মূলধনী ক্ষতির জের বহন কিংবা সমন্বয় করার বিধান বিদ্যমান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বিনিয়োগকারীর মূলধন ক্ষতির বিষয়ে থাকা বিদ্যমান আইনের সুস্পষ্ট ও কার্যকর ব্যাখ্যা দেওয়াসহ এটিকে ৭ বছর পর্যন্ত প্রদেয় আয়করের বিপরীতে বহন বা সমন্বয় করার সুপারিশ করছি।
ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, গত কয়েকবছর ধরে বাজারে মন্দা বিরাজ করায় অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লোকসানের কবলে পড়ে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধন ৫০ লাখের অধিক মুলধন লাভের উপর করারোপের সাথে বিদ্যমান মূলধনী লোকসানের জের বহন কিংবা সমন্বয় করার অনুমতি দিলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ধরে রাখতে এবং বাজারের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন লাভবান হবে। এর ফলে বিনিয়োগকারী আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে বাজারকে সমৃদ্ধশালী করতে সক্ষম হবে এবং এর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ তালিকাভুক্তির রোডম্যাপ প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ তালিকাভুক্তির নির্দেশনা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ তালিকাভুক্তির বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আশু বাস্তবায়নে সরকার ও বাজার সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। আমরা বিশ্বাস করি, পুঁজিবাজারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ তালিকাভুক্তির ফলে বাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাজার প্রসার হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
অতালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর জন্য কর্পোরেট করের হার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত করের হারের বাহিরে বৃদ্ধিকরণ প্রসঙ্গে ডিবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত করের হার ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু, অতালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট করের হার ব্যক্তিশ্রেনীর করের হারের নীচে। অন্যদিকে কর্পোরেটের ক্ষেত্রে তালিকাভূক্ত এবং অতালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে করের পার্থক্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ এ নামিয়ে আনা হয়েছে। তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান, পুঁজিবাজারে প্রচার বিবেচনা করে ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট করের হারের মধ্যে পার্থক্য বিবেচনায় আমাদের প্রস্তাব হলো ব্যক্তিশ্রেণীর সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশের উর্ধে অতালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট করহার নির্ধারন করা। নিয়মিত এবং সম্পূর্ন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের শর্তে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের করহার কমানোর সুপারিশ করছি।
তিনি বলেন, নতুন বিও আইডিগুলোকে ৩ বছরের জন্য করমুক্ত রেখে পরিচালনা করার অনুমতি প্রদান করলে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী সৃষ্টি হবে তথা বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে বাজারের মূলধন বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ কর্মকান্ডে নিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রয়োজন। দু:খজনকভাবে আমাদের বাজারে এখন পর্যন্ত মোট জনসংখ্যা মাত্র ১ শতাংশ সক্রিয় বিও একাউন্ট আছে, যেখানে ব্যাংকিং এবং এমএফএস কার্যক্রমে যথাক্রমে ২৮ শতাংশ এবং ৬৭ শতাংশ রয়েছে। যদি ব্যাংকিং এবং এমএফএস একাউন্টগুলিকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগে নিয়ে আসা যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের জন্য মূলধনী লাভ, সুদ এবং লভ্যাংশ আয় তৈরী হবে । এর ফলে সরকারের যথেষ্ট পরিমান কর জেনারেট করা সম্ভব হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমরা বাজারের সম্প্রসারনের জন্য আমরা চাই সকল নতুন বিও একাউন্টগুলিকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের সীমা সাপেক্ষে ৩ বছর পর্যন্ত সময়কালের জন্য কর বহির্ভূত রেখে পরিচালনা করার অনুমতি প্রদান করা হোক। এবং শিক্ষার্থী, সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং প্রবীণ নাগরিকদের মাধ্যমে পরিচালিত বিও হিসাবধারীদেরকে লাভের জন্য শূণ্য হারে কর সুবিধার অনুমতি প্রদান করা হোক।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বিআইসিএমের সেমিনার

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) এ নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (১৯ এপ্রিল ২০২৫) ইন্সটিটিউটের মাল্টিপারপাস হলে এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘Accelerating Women’s Financial Independence: Investing in the Capital Market’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়ে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্সটিটিউটের নারী বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্ত ক্রমবিকাশ কমিটির আহ্বায়ক ও সহকারী অধ্যাপক কাশফীয়া শারমিন।
ইন্সটিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুছ সালেহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ফারজানা লালারুখ এবং বিশেষ অতিথি ও প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাজেদা খাতুন। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন ইন্সটিটিউটের প্রভাষক এবং নারী বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্ত ক্রমবিকাশ কমিটির সদস্য ফাইমা আক্তার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারজানা লালারুখ বলেন, পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জায়গা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আপনারেদকে প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে যে এটি একদিনের বিনিয়োগ ক্ষেত্র নয়। আপনাকে প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে আপনি যাকে পুঁজি দিয়েছেন উনি দীর্ঘমেয়াদের জন্য পুঁজি নিয়েছেন। তাকেও মুনাফা করতে সময় দিতে হবে, আপনারও মুনাফা গ্রহণের সময় আসতে হবে। তাহলেই আপনি লাভবান হবেন।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই আজকে ক্ষতি হলো, আমার অবস্থা খারাপ, তাই আমি মার্কেট থেকে চলে যাই। এই ধরনের সিদ্ধান্ত যেমন নেয়া যাবে না, তেমনি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে খুব তাড়াতাড়ি বড়লোক হয়ে যাব সেটাও কিন্তু চিন্তা করা যাবে না। তিনি বলেন, পুঁজিবাজার বড়লোক হওয়ার যায়গা না। একটি শেয়ার কিনে মূলত আপনি একটি কোম্পানির মালিক। সুতরাং আপনাকে ওই কোম্পানিকে ধারণ করতে হবে। লাভ-লোকসান দুটোই মেনে নিতে হবে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুজবে কান না দেয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে নাজমুছ সালেহীন বলেন, বিআইসিএম নারী বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করতে এবং পুঁজিবাজারে তাদের বিনিয়োগ বাড়াতে অব্যহতভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। উক্ত প্রশিক্ষণ থেকে জ্ঞান আহরণ করে নারী বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে নিজেরা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, নারীদের এধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ দেশের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্যানেল আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক এবং নারী বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্ত ক্রমবিকাশ কমিটির সদস্য এস. এম. কালবীন ছালিমার সঞ্চালনায় এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাজেদা খাতুন এবং বিআইসিএম এর সহযোগী অধ্যাপক (চলতি দায়িত্ব) ফয়সাল আহমেদ খান।
অতিথিগণ সেমিনারে অংশগ্রহণকারী নারী বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন। এ সময় মাজেদা খাতুন বলেন, পুঁজিবাজরে বিভিন্ন বিনিয়োগ পণ্যের বৈচিত্রতা আনতে হবে। এতে নারী বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ হবেন। ফলে সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারের নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে।
সেমিনারে নারী বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিআইসিএমের সকল অনুষদ সদস্য ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
অফার মূল্যের নিচে বেস্ট হোল্ডিংসের শেয়ারদর, ক্ষতির মুখে বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির এক বছরের মধ্যে অফার মূল্যের নিচে নেমেছে বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের শেয়ার। লেনদেন শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৩৯ শতাংশ। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তালিকাভুক্তির আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের কারসাজির অভিযোগ রয়েছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, নানান নাটকিয়তার পরে কোম্পানিটি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্ত করার পায়তারা করে প্রথম ধাপে ব্যর্থ হলেও ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তালিকাভুক্ত হয়। সেসময় কোম্পানিটি ২৪ টাকা দরে প্রথম শেয়ার লেনদেন শুরু করে। এরপর কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বোচ্চ ৪৩ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়। তবে গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শেয়ার দর নেমে এসেছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা যা শতকরা হিসেবে ৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট কোম্পানিটির মালিকপক্ষ ২৪ টাকা দরে শেয়ার বিক্রি করলেও বর্তমানে মালিকপক্ষ চাইলেই ৬ টাকা কমে শেয়ার কিনতে পারে। এছাড়াও সরকারি ব্যাংকগুলোকে ৬৫টাকা দরে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ধরিয়ে দেয় কোম্পানিটি। সে হিসেবে সরকারি ব্যাংকগুলো শেয়ার প্রতি লোকসানে রয়েছে ৪৮ টাকা। বাজার সংশ্লিষ্টদের দাবি, সরকারি ব্যাংকগুলো এতো উচ্চ মূল্যে কেন এবং কার স্বার্থে দুর্বল কোম্পানিটির প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নিয়েছে তা তদন্ত করে বের করা উচিৎ।
কারসাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ অর্থসংবাদকে বলেন, আমি বাহিরে আছি। এ বিষয়ে আগামীকাল কথা বলব।
এর আগে, রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকসহ পাঁচ ব্যাংকের ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকার ক্ষতিসাধনের অভিযোগে বেস্ট হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক বলছে, সোনালী ব্যাংক পিএলসি, জনতা ব্যাংক পিএলসি, রূপালী ব্যাংক পিএলসি, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি ও এনসিসি ব্যাংক পিএলসি থেকে মোট ১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করেছে। তার মধ্যে ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা ক্ষতিসাধনের অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকিং বিধিবিধান লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় এসব ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া, কোম্পানিটি ২০২০ সালে আইন লঙ্ঘন করে সরকারি কোম্পানির তকমা দিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির চেষ্টা করে। সে সময় প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে। ব্যাংকগুলো প্রাইভেট প্লেসমেন্টে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ৬৫ টাকায় ক্রয় করে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের শেয়ারের কারণে সরকারি কোম্পানি হিসাবে ফাঁকফোকর দিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির চেষ্টা করে। কিন্তু গণমাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখির কারণে সেই উদ্যোগে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি।
সূত্র জানায়, আগেরবার সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর আইপিও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাজারে আসার উদ্যোগ নিয়েছিলো বেস্ট হোল্ডিংস কর্তৃপক্ষ। প্রাইভেট প্লেসমেন্টে কোম্পানিটির শেয়ার কিনেছেন বা মালিকানায় শরিক হয়েছেন শতাধিক রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিকভাবে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানিটিতে ওই সব ব্যক্তি ও রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যাংকের বিনিয়োগ আটকে আছে। তাই কোম্পানিটিকে দ্রুত বাজারে এনে ওই সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ ফেরত দিতে পুনরায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজটি যাতে নির্বিঘ্নে হতে পারে, সে জন্য আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে যেসব আইনি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলোয় ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসা কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য নির্ধারিত হয়েছিলো ৩৫ টাকা। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুসারে, আট-অফ মূল্য থেকে ৩০ শতাংশ কম দামে তথা ২৪ টাকা দরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব করা হয়। এই কোম্পানিটির বাজারে আনতে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ও শান্তা ইক্যুইটি লিমিটেড। বাজার সংশ্লিষ্টদের দাবি, বুক বিল্ডিং পদ্ধিতিতে কাট অফ প্রাইস বেশি রাখার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন উপায় শেয়ারদর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো। যা বেস্ট হোল্ডিংসের ক্ষেত্রেও অনৈতিক উপায়ে ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান কাট অফ প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শান্তা ইক্যুইটি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রুবায়েত-ই-ফেরদৌসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অর্থসংবাদকে জানান, হাসপাতালে আছি, পরে কথা বলব। ফলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা চলছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও অস্থিরতা কাটেনি। বাজারে এক দিন উত্থান হলে দুই দিন পতন হয়। এ ছাড়া এতগুলো কোম্পানিটির শেয়ারদর অফার মূল্যের নিচে থাকার কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিগত সরকারের আমলে দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে নানা সংস্কারে হাত দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এরপরও পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষ আস্থা পাচ্ছে না। এতে ক্রমাগতভাবে দরপতনের ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা আয় (ইপিএস) হয়েছে। গত বছর একই সময়ে ৩৬ পয়সা আয় হয়েছিল। হিসাববছরের প্রথম দুই প্রান্তিক মিলিয়ে তথা ৬ মাসে (জুলাই, ২৪-ডিসেম্বর, ২৪) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি ১১ পয়সা আয় হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ৭৭ পয়সা আয় হয়েছিল। গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৫৩ টাকা ৩৬ পয়সা।
অর্থসংবাদ/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ১.৫৪ শতাংশ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ৯ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও ০ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে।
এর আগের সপ্তাহের (৬ থেকে ১০ এপ্রিল) শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.৭৪ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ৯.৭৩ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও ০.০১ পয়েন্ট বা ০.১০ শতাংশ কমেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে বিডি ফাইন্যান্স

বিদায়ী সপ্তাহে (১৩ এপ্রিল-১৭ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র মতে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির দর কমেছে ১৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ১০ দশমিক ০০ টাকা। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনিয়ন ক্যাপিটালের শেয়ার দর কমেছে ১৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৪ দশমিক ৯০ টাকা।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা সোনারগাঁও টেক্সটাইলের শেয়ার দর কমেছে ১৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৩২ দশমিক ৯০ টাকা।
তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রাইম ব্যাংকের ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ, এস আলমের ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ, সাইনপুকুর সিরামিকসের ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ, ফার্স্ট জনতা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ, এস এস স্টীলের ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ দর কমেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির শীর্ষে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক শেয়ার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৩১.৬০ টাকা। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ১৭.৭০ টাকা।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে রেইনউইন যজ্ঞেশরের শেয়ারদর বেড়েছে ১৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৭৩০.৫০ টাকা।
তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে শাহজিবাজার পাওয়ারের ১৩.৯৯ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ১১.৭৬ শতাংশ, প্রিমিয়ার সিমেন্টের ৮.৭০ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ৭.৭২ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিকের ৭.৫৩ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের ৬.৮৩ শতাংশ এবং এনআরবি ব্যাংকের ৬.৩৫ শতাংশ দর বেড়েছে।
কাফি