ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবির ছাত্রী হেনস্তার অভিযোগ, তুচ্ছ ঘটনায় আহত ৭ জন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একাধিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী মেস কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কয়েকজন যুবকের কথা কাটাকাটি, হাতাহাতি ও বিবাদে জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির দুইজন পুলিশ এসে মেসের কর্তৃপক্ষ, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও স্থানীয় প্রতিনিধির সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
সোমবার (১৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পকেট গেইট সংলগ্ন শেখপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির দুজন পুলিশ এসে মেসের কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। এতে ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আহতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের আবু হানিফ পিয়াস, সমাজ কল্যাণ বিভাগের সাকিব আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের হৃদয় আবির এবং আইসিটি বিভাগের নাঈম রেজা। এছাড়াও মো. আশিক খান নামে স্থানীয় একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী নূর জাহান ছাত্রীনিবাসের এক শিক্ষার্থীর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল। পরে বিদ্যুৎ বিল নিতে ম্যানেজার ছাত্রীর অনুমতি না নিয়েই তার কক্ষে প্রবেশ করে। এতে ওই মেয়ে রাগান্বিত হয়ে ম্যানেজারকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। পরে মেসের ম্যানেজারকে বিল দিতে গেলে বিলের পরিমাণ নিয়ে ঝামেলা হলে সে তার বন্ধুদের জানায়। তার বন্ধুরা মেসে যেয়ে অনুমতি না নিয়ে রুমে প্রবেশ করে, বিভিন্ন সময় বাজে ইঙ্গিত দেওয়া, হাত ধরার চেষ্টা করার ব্যাপারে ম্যানেজারকে জেরা করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুদের উপরে চড়াও হয়। মারামারির একপর্যায়ে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকসহ কয়েক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দুই যুবক আহত হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী ফারিয়া খাতুন বলেন, মেস ম্যানেজার (বিবেক বিশ্বাস) বিদ্যুৎ বিলের নাম করে শিউলী খালাকে আমার রুমে পাঠাতো। ম্যানেজারও রুমে মাঝে মধ্যে এসে খোঁজ খবর নিতো। ম্যানেজার আমার সাথে কেমন টাইপ কথা বলার চেষ্টা করতেন। বিদ্যুৎ বিল নিতে সে মেয়েদের হাত স্পর্শ করার চেষ্টা করত। বিদ্যুৎ বিল হয়েছিল ৪১৫ টাকা। আমি বিদ্যুৎ বিল দিতে গেলে টাকা টেবিলে রাখি। এতে ম্যানেজার ক্ষুব্ধ হন। এছাড়া থাপ্পড় দিয়ে মেস থেকে বের করে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। ম্যানেজার আমাকে হুমকি দেয়ায় ভীত হয়ে বন্ধুদের ডেকেছি। প্রথমে তারা ম্যানেজারের সাথে ভাল ভাবেই কথা বলে। আমার বন্ধুদের সামনেও ম্যানেজার আমাকে থাপ্পড় মারার কথা বলে। এতে বন্ধুদের সাথে ম্যানেজারের তর্কাতর্কি হয়। পরে খালু (ইসলাম জোয়াদ্দার) এসে তাদের বের করে দেয়। আমার বন্ধুদের ডাকা ভুল হয়েছে। এজন্য আমি অনুতপ্ত।
নূর জাহান মেসের ম্যানেজার বিবেক বিশ্বাস বলেন, আমার ব্যাপারে সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি সেই মেয়েকে থাপ্পড় দিবো এমন কিছু বলিনি। আমি বিদ্যুৎ বিল চাইলে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। সে আমাকে বলে এটা আপনার বাপের বিল্ডিং নাকি! এখনই আপনার ১২টা বাজাচ্ছি বলে তার বন্ধুদের ডাকে। তার বন্ধুরা আমার উপর চড়াও হয়। আমাকে বের করে মারধরের হুমকি দেয়।
মেসের কর্মরত শিউলী বলেন, এই মেয়ে দেরী করে রুমে আসে। অনেক সময় রাত ১২ টায় মেসে আসে। সেই মেয়ে আমাদের সাথেও অনেক খারাপ ব্যবহার করে। এছাড়া ইসলাম ভাইরে তার বন্ধুরা মেরেছে।
মেসের কেয়ারটেকার ইসলাম জোয়াদ্দার বলেন, ওই ছেলে আগেও একবার এসে হম্বিতম্বি করে গেছে। আমি তাকে অফিসে বসে ঠান্ডা ভাবে কথা বলতে বললে ওই ছেলে বলে তুমি মুরুব্বী, মুরুব্বীর মতো থাকো নইলে মাইর খাবানে। পরে আমি তাকে জোর করে মেস থেকে বের করে দেই। আছরের নামাজের পরে এই ঘটনা ঘটে, পরে সন্ধ্যার দিকে লোকজন নিয়ে এসে মারামারি করেছে।
ফারিয়ার বন্ধু আবু হানিফ পিয়াশ বলেন, আমাদের বান্ধবীর সাথে বেশ কয়েকদিন ধরেই মেস ম্যানেজার বাজে ব্যবহার করে আসছিল। বিভিন্ন সময় মেস ম্যানেজার তার রুমে প্রবেশ করার চেষ্টা করে এবং তাকে বাজে ইঙ্গিত প্রদান করে। ফলে এ বিষয়ে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মিটমাট করতে গেলে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পারলে তারা আমাদের উপর আক্রমণ করে। লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাদের আঘাত করে। তারপর আমরা আহত অবস্থায় কোনোরকমে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করি। এসময় আমি সহ আমার আরো ৩ বন্ধু আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নেই।
এ বিষয়ে স্থানীয় মাতব্বর রেজাউল করিম খান বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে এলাকার মাঝে মধ্যে সমস্যা হয়। সেই মেয়ের সমস্যা হলে মেস মালিককে বিষয়টি জানাতো। কিন্তু সে এটা না করে তার বন্ধুদের ডেকে এনেছে। শিক্ষার্থীদের কারণে অনেক সময় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। তার বন্ধুরা এখানে মাস্তানি দেখাতে এসেছে। ভিডিও ফোটেজ দেখে আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।
এসময় রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি মিটমাট করেছি। এখানে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো আমরা সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছি। যদি কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয় আমি লোকাল থানায় ইনফর্ম করে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে পুলিশ স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বিষয়টি আপাতত মিটমাট করেছে। তবে এখানে আমাদের ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনা আমি শুনেছি, সার্বিক বিষয়ে আমরা আগামীকাল সকাল ১১ টায় মেস মালিক এবং প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে মিটিং এ বসবো।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

তীব্র আন্দোলনের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই হলে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা বহাল থাকবে। এই নীতিমালার অধীনে স্ব স্ব হল প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটি নিয়ে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, গত বছরের ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী গুপ্ত ও প্রকাশ্য হল রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
এর আগে, মধ্যরাত থেকেই আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল ও রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে সমাবেশ শেষ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। রাজনীতিবিরোধী নানা স্লোগান দেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্তসহ ৬ দফা দাবি জানান। এক পর্যায়ে ভিসি ও প্রক্টর বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের কথা শোনেন।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ঢাবির ১৮ হলে ছাত্রদলের নতুন কমিটি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখাসমূহের বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্ত করে ১৮টি হল শাখায় নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটিগুলো অনুমোদনের কথা জানানো হয়।
নতুন আহ্বায়ক কমিটি পাওয়া হলগুলোর মধ্যে রয়েছে—মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, কবি জসীমউদ্দীন হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হল, বিজয় একাত্তর হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, স্যার এ এফ রহমান হল, জগন্নাথ হল, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল, রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল এবং কবি সুফিয়া কামাল হল।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন হচ্ছে না: শিবির সভাপতি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহা. মাহমুদুল হাসান বলেছেন, ‘আগামীতে শিক্ষার্থীরা যেন ডিজিটাল মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে সেজন্য আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে না। সদিচ্ছা থাকলে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করা সম্ভব। শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব করতে প্রশাসন কাজ করবে বলে আশা করছি।’
গুচ্ছভুক্ত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থাকৃত হেল্পডেস্ক পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘নতুন শিক্ষাবর্ষে যারা ভর্তি হতে আসছে তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমরা ভর্তি সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। বিগত দিনগুলোতে দেখেছি ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ২দিন লেগে যেত। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নিতে, টাকা জমা দিতে বিভিন্ন ভবন চিনতে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের এই ভর্তি সহায়তা কেন্দ্রগুলো কাজ করছে।’
ভর্তি সম্পন্নকারী নবাগত শিক্ষার্থীরা জানান, ‘এই ভর্তি প্রক্রিয়া একটু জটিল। প্রথম এসে বুঝতে পারছিলাম না কোথায় যাবো। সবকিছু একদম নতুন। তারপর ভাইদের সহযোগিতায় কোন কাগজে কত, কোথায় কী লেখা, কোথায় যাওয়া লাগবে ইত্যাদি ভর্তি প্রক্রিয়ার সম্পর্কে জানতে পারি। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এই ভর্তি প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ বা অনলাইনে করলে আমাদের জন্য সুবিধা হতো।’
ভর্তিসম্পন্নকারী নবাগত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘ভর্তি প্রক্রিয়া দেখে জটিল মনে হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন হেল্প ডেস্ক সহযোগিতা আমার খুবই ভালো লেগেছে। কারণ, এখানকার ভবন অজানা, ভর্তি প্রক্রিয়াটাও অজানা, কোথায় কী আছে জানি না।’
সরেজমিনে দেখা যায়, গুচ্ছ-ভর্তি উপলক্ষে ৩ আগস্ট থেকে এই কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলছে। এর পূর্বে প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়ায়ও তারা সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে।
অর্থসংবাদ/কাফি/সাকিব
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ইবি’র সনাতনী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম’র বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সনাতনী ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ফেসবুক পোস্টের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা। তবে বিষয়টি ‘তুলনামূলক বিশ্লেষণধর্মী লেখা’ বলে দাবি করেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থী।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে মানববন্ধন শেষে তারা প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত ধর্ম অবমাননার শিকার হই। আমাদেরও অনুভূতি আছে। আমরা এ ঘটনার যোগ্য বিচার চাইতে আজকে এখানে হাজির হয়েছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেয়া হোক এবং যে এই কাজ করেছে আমরা তার বহিষ্কার চাই। যেন দ্বিতীয়বার কেউ এমনটি করতে সাহস না করে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম সনাতনী ধর্মালম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ও আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে যেটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমগ্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং শান্তিপূর্ণ সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সহনশীল পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ধর্মীয় সহাবস্থান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি। এই ধরনের অশোভন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।’
পত্রে আরও লিখেন, ‘অতএব উক্ত ঘটনার দায়ী ব্যক্তি। ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মুহাইমিন বলেন, ‘ এটা ছিল তুলনামূলক বিশ্লেষণধর্মী লেখা। সেখানে রেফারেন্স দিয়ে লেখায় ইনটেনশনালি কোনো ধর্মের অবমাননা করা হয়নি। পোস্ট দেওয়ার পর কারো দৃষ্টিকটু মনে হলে আমাকে বলতে পারত। আক্রমণাত্মক কমেন্ট দেখে অনিরাপত্তায় ভুগছি। পরে ডিলিট দিয়েছি। এর পরেও কেউ কষ্ট পেলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমরা অভিযোগ পত্র হাতে পেয়েছি। উভয়ের পত্র নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি সার্বিক বিষয় দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
অর্থসংবাদ/কাফি/সাকিব
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জাবির ৬৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, সনদ বাতিল ৭৩ জনের

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় জড়িত ৬৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার এবং ৭৩ সাবেক শিক্ষার্থীর সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন।
সিন্ডিকেট সভা শেষে সোমবার (৪ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় মোট অভিযুক্ত ২২৯ জনের মধ্যে ১৩০ জন বর্তমান এবং ৯৯ জন সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ জনকে আজীবন বহিষ্কার, ৩৭ জনকে ২ বছর, ৮ জনকে ১ বছর এবং একজনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
অপরদিকে, ২০ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সাবেক ৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৩ জনের সনদ বাতিল, ৬ জনের সনদ ২ বছরের জন্য স্থগিত এবং ২০ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২৮৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। যাদের ছাত্রত্ব শেষ, তাদের সনদ স্থগিত এবং পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফল স্থগিত করা হয়। এছাড়া অধিকতর তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একইসঙ্গে ৯ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত এবং তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম ও রেজিস্ট্রার আবু হাসানের পেনশন সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।