অন্যান্য
জমি ক্রয়সহ নতুন কোনো ব্যবসা করতে পারবে না খেলাপিরা

আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমাতে ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এসব খেলাপিদের বিভিন্নি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। তারা নতুন করে জমি বাড়ি গাড়ি কিনতে পারবেন না, এমনকি নতুন ব্যবসাও খুলতে পারবেন না।
বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ডেপুটি গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সার্বিক ৮ শতাংশের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ১১ দফা রোডম্যাপ করা হয়েছে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করবে। এই খেলাপিদের সমাজে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে। আগামীতে খেলাপিরা জমি কিনতে গেলে রেজিস্ট্রশন করতে পারবে না। নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানি চালু কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠি দেবে যেন তাদের কোনো সহযোগিতা না করে। গাড়ি-বাড়ি কিনতে পারবেন না। এমন অবস্থায় পড়তে কোনো ব্যবসায়ী চাইবে না। তাই তারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করবে।
বেনামে ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, বেনামে ঋণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই কত আছে এর সঠিক তথ্য নেই। পত্র-পত্রিকায় বেনামে ঋণের তথ্য আসছে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে যেহেতু লিখা হচ্ছে কিছু না কিছু আছে, এটি চিহ্নিত করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং আইন বজায় রেখে ও গত তিন বছরের শ্রেণিকৃত ঋণের তথ্য পর্যালোচনা করে ১১ দফার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পরলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলধন খেলাপি ঋণসহ চারটি সূচকের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হবে। সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। গত ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে যারা দুর্বল তারা আগে থেকে প্রস্তুতি নেবে কার সঙ্গে একীভূত হবে। যদি কেউ এ ধরনের প্রস্তুতি না নেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত করে দেবে বলে জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে শীর্ষ খেলাপির তালিকায় এমন অনেক গ্রাহক আছে, ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, পুরো তথ্যটা নেই তবে ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ ২ লাখ কোটি টাকার উপরে আছে। একজন পরিচালক ব্যবসায়ী হিসাবে ঋণ নিতেই পারেন যদি তিনি অন্য কোনো যোগাযোগের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি না করে।
অপর প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর জানান, ঋণের ২ শতাংশ দিয়ে বিশেষ সুবিধার আওতায় খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন ৭৯০ কোটি টাকার ডাউনপেমেন্ট আদায় হয়। ওই সময় তারল্য সমস্যা ছিল। যদি এ সুবিধা দেওয়া না হতো তাহলে এই টাকাও পেত না ব্যাংকগুলো।
>> রোডম্যাপে যা আছে
ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে নতুন রোড ম্যাপ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি খেলাপি ঋণ কমানো আরেকটি কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করা।
>> খেলাপি ঋণ কমাতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে
তফসিলি ব্যাংকের কোনো ঋণ দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত থাকলে তা অবলোপন (রাইট অব) করা যাবে। তবে সেসব ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। বর্তমানে ৩ বছর মন্দ বা ক্ষতিজনিত মানে শ্রেণিকৃত থাকলে ঋণ অবলোপন করার সুযোগ রয়েছে। এর ফলে খেলাপির পরিমাণ ৪৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবলোপন করা ঋণ আদায়ের জন্য দেশের প্রত্যেকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করা হবে।
মন্দ ঋণ এবং রাইট অব করা সম্পদ বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়ন করা হবে। এই আইনটি খসড়া করা হয়েছে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই আইনের ফলে ব্যাংকগুলো তাদের ব্যালেন্স শিট পরিষ্কার করতে পারবে এবং প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকের আয় খাতে দেখাতে পারবে।
মন্দ, অবলোপন, পুনর্গঠন করা ঋণ বা স্টিজ অ্যাসেটের বিপরীতে আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় না করে আয়খাতে দেখানো যাবে না। স্টিজ অ্যাসেট আদায় বা নিয়মিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যালেন্স শিটে দেখাতে পারবে না। কারণ এই অ্যাসেট ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণে পরিণত হতে পারে।
মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ঋণ পরিশোধের জন্য দেওয়া বিভিন্ন বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না।
মেয়াদি ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সংজ্ঞা, এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট গাইডলাইন ও পরিপত্র সংশোধন অথবা হালনাগাদ করার মাধ্যমে আর্থিক খাত সংস্কারের শর্ত পূরণ হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বর্তমানে অর্থ ঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যেখানে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান লিগ্যাল টিম বা আইন বিভাগকে শক্তিশালী করা হলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
ব্যাংকের অনাদায়ী অর্থ দ্রুত আদায়ের লক্ষ্যে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ( এডিআর) পদ্ধতিতে আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া।
ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের লাগাম টানতে ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইনে সংজ্ঞায়িত ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য যেসব কর্মকর্তা কাজ করবে তাদের বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিজস্ব মূল্যায়নের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করবে।
>> কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ৬টি পদক্ষেপ
যোগ্য পরিচালক নির্বাচিত হলে ব্যাংকের কপোরেট সুশাসন নিশ্চিত হবে। যা ব্যাংকের সামগ্রিক ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করবে। তাই ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নিয়োগে বর্তমান ফিট অ্যান্ড প্রোপার টেস্ট প্রক্রিয়া এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা সংশোধন ও হালনাগাদ করা। ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, সম্মানী নির্ধারণ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে যা আগামীতে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তাদের নিয়োগে কর্ম মূল্যায়নে পারফরমেন্স ইনডিকেটর যুক্ত করা।
কর্পোরেট সুশাসনের মান উন্নত এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে একক গ্রাহক ঋণসীমা (সিঙ্গেল ব্রোয়ার এক্সপোজার লিমিট) কোনোক্রমেই অতিক্রম না করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দূর করতে, পরিচালনা পর্ষদ শক্তিশালী করতে এবং প্রশাসনিক ব্যয় কমাতে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে। তবে শর্ত থাকবে একীভূত করার পরবর্তী তিন বছর কোনো কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
ব্যাংকগুলোতে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মৌলিক প্রশিক্ষণ এবং ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা পাস বাধ্যতামূলক করা হবে।
ব্যাংকিং সেক্টরে দক্ষ কর্মকর্তার অভাব পূরণ হবে এবং সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।

অন্যান্য
দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬১ শতাংশ

বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত এবং বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, এ প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে যে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে ক্রমেই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং দেশের বাজারে তাদের আস্থা বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত মুনাফাবান বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের আয়ের একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা নিচ্ছে না, বরং ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখে নতুন করে বিনিয়োগ করছে।
বিশ্বজুড়ে নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) বিনিয়োগ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রেকর্ড হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলো তাদের বাংলাদেশভিত্তিক স্থানীয় ইউনিটগুলোকে আরও বেশি অর্থায়ন করছে। এর ফলে ইন্টার-কম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা—বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিক—এর মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারের বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
অন্যান্য
দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: ব্যারিস্টার আনিস

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সহ সরকারের উপদেষ্টারা বারবার বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে। এছাড়া আগামী নির্বাচন স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু হবে বলে বারবার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলেছেন-প্রশাসনের সব পদ বিএনপি-জামায়াত ভাগাভাগি করে নিয়েছে। তাহলে এ ধরনের প্রহসনের প্রশাসন দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে তা একজন শিশুও বিশ্বাস করে না।
ব্যারিস্টার আনিস বলেন, আমি অনেক জায়গায় বৈঠকে যাই, সেখানে রাজনীতিবিদসহ সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা থাকেন। তারা আমাকে প্রশ্ন করেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা?
উত্তরে আমি বলি, আপনাদের প্রশ্নের মধ্যেই উত্তর রয়েছে। এই প্রশ্নের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় আপনি নিজে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। শুধু তারা নয়, দেশের সাধারণ মানুষও সর্বত্র একে অন্যকে প্রশ্ন করেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা? তার মানে, দেশের সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
সভায় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আজকে গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলছেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তনের কথা কল্পনা করবেন না। কারণ আগামী ১০ বছর পর আরেকটা বিপ্লবের মাধ্যমে বলা হবে, যারা সংবিধান পরিবর্তন করেছিলো তারা অপরাধী। তাদের বিচার হবে।
জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ফখরুল আহসান শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সরদার শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান জামাল রানা, অ্যাডভোকেট সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, আনোয়ার হোসেন তোতা, নাসির উদ্দিন সরকার, মিজানুর রহমান দুলাল, আনোয়ার হাওলাদার, কেন্দ্রীয় সম্পাদক তাসলিমা আকবর রুনা, মিজানুর রহমান, জিয়াউর রহমান বিপুল, ইন্ঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী, ফজলে এলাহী মিঞা, আব্দুস সাত্তার, মাসুম, এস এম হাসেম, আলমগীর হোসেন, সাইফুল ইসলাম শোভন, জাতীয় যুব সংহতির নেতাদের মধ্যে রওশন মাহানামা, স্বপন হাওলাদার, মিজানুর রহমান দুলাল, প্রীতি বিশ্বাস, আওলাদ হোসেন, মাহবুবুর রহমান কামাল প্রমুখ।
অন্যান্য
ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভা

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান।
সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. আলতাফ হুসাইন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কো¤পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্য
শরীয়তপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ব্যবসায়ী আহত

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে বাজারের ব্যবসায়ী হাসান পাঠানকে কুপিয়ে আহত করে তার বেকারি থেকে নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, চেয়ারম্যান বাজারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। রাতের বেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলও নেই বললেই চলে। তারা বাজার কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দ্রুত কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
বাজার কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান বাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা এখন সময়ের দাবি। ব্যবসায়ীদের জীবন-সম্পদ রক্ষায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও রাত্রীকালীন প্রহরী নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি।
অন্যান্য
জাকসুর ভোট গণনা শেষ হতে পারে বিকেল ৪টায়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা বিকেল ৪টায় শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য ড. লুৎফুল এলাহী।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ তথ্য জানান।
লুৎফুল এলাহী জানান, এখন পর্যন্ত তিনটি হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। সারারাত ভোট গণনা চলেছে। দ্রুত গণনা সম্পন্ন করতে সকালে অভিজ্ঞ লোকবল আনার চিন্তা করছে কমিশন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। তবে নির্ধারিত সময়ের বাইরে, শেষ মুহূর্তে ভোটারদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও তাজউদ্দীন আহমদ হলে ভোট শেষ হতে দেরি হয়। পরে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ভোট গণনা শুরু হয়। আর সেই দৃশ্য এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি দেখানো হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন। বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে রয়েছেন একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা ও ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা।