শিল্প-বাণিজ্য
পোশাক-চামড়াসহ ৪৩ খাতে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমলো
তৈরি পোশাক, কৃষি, চামড়াসহ ৪৩টি খাতে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমালো সরকার। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে খাত ভেদে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত সহায়তা কম পাবেন রপ্তানিকারকরা। এ নির্দেশনা চলতি জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে সরকার চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৪৩টি খাতে রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দিচ্ছে। যা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুসারে বিষয়টি রপ্তানি নির্ভর সাবসিডি হিসেবে বিবেচিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে রপ্তানিতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়া যাবে না। আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। তবে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা সম্পূর্ণভাবে একত্রে প্রত্যাহার করা হলে এ খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তার হার অল্প অল্প করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
নতুন নির্দেশনা মতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জাহাজি করা পণ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪৩টি খাতে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। এখন দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে এ নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারক। এর আগে যেটা ছিল ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
পোশাক খাতে ১ শতাংশের পরিবর্তে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রপ্তানিকারকদের নগদ সহায়তা ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যে ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে এতদিন ভর্তুকি ১০ শতাংশ থাকলেও এখন থেকে পাবেন ৮ শতাংশ। অন্যান্য খাতেও রপ্তানিতে ভর্তুকি কমিয়েছে সরকার।
দেশীয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৩ শতাংশ করা হয়েছে। আগে যেটা ছিল ৪ শতাংশ। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের প্রণোদনার হার ৩ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। তবে, রপ্তানিকারকদের জন্য নীট, ওভেন ও সোয়েটারসহ তৈরি পোশাকখাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অতিরিক্ত ৪ শতাংশ বহাল আছে। আর নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে রপ্তানিতে ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তৈরি পোশাকখাতে রপ্তানিতে বিশেষ নগদ সহায়তা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন এ নির্দেশনার ফলে এসব খাতে নির্ধারিত পাঁচটি এইচএস কোডের রপ্তানির বিপরীতে কোনো নগদ সহায়তা মিলবে না।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্প উদ্যোক্তারা জানান, রপ্তানি সহায়তা কমানো হয়েছে। আবার কয়েকটি ক্যাটাগরির রপ্তানিতে পণ্য সহায়তা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে টি-শার্টসহ পোশাক রপ্তানির বড় পণ্যে সুবিধা থাকছে না। নতুন বাজারে সহায়তা কমানো হয়েছে। এতে আরও চাপ তৈরি করবে, বাধাগ্রস্ত হতে পারে দেশের অর্থনীতি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ আগামীকাল
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগামীকাল বুধবার (৮ মে) পণ্য আমদানি রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় এ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দু’দেশের মাঝে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বুধবার (৮ মে) ৬ষ্ঠ পর্যায়ের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে সরকারিভাবে উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে কাস্টমসের সকল বিভাগ বন্ধ থাকবে। এতে করে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত বাংলাদেশের মাঝে পণ্য আমদানি রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় দু’দেশের মাঝে পণ্য আমদানি রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সকল কার্যক্রম চালু হবে। এক পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি ভারতীয় রফতানিকারকসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানো হয়েছে।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আশরাফুল বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামীকাল বুধবার বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি বন্ধ থাকলেও হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দু’দেশের মাঝে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে। সকাল ৯টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত পাসপোর্টধারী যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে। অঞ্চলটির বিভিন্ন দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি আমদানি বাড়ার পেছনে মূল প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এলএসইজি।
প্রতিবেদনে এলএসইজি জানায়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। গত বছরের একই সময় থেকে দৈনিক আমদানির এই পরিমাণ ৩ লাখ ব্যরেল বেশি।
তবে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়লেও গত এপ্রিলে আগের মাসের তুলনায় অঞ্চলটিতে জ্বালানি তেল আমদানি কমেছে। এ অঞ্চলের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীনে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও অন্যান্য দেশে কমেছে।
এলএসইজির অয়েল রিসার্চের সংকলিত তথ্য অনুসারে, গত মার্চে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক ২ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। এপ্রিলে তা কমে দিনপ্রতি ২ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল হয়েছে। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানির পরিমাণ ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল ছিল বলেও জানিয়েছিল তারা।
এদিকে পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক জ্বালানি তেলের বাজারবিষয়ক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা আগের বছর থেকে চলতি বছর দিনপ্রতি ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি পাবে। আর এ চাহিদার ১২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলই আসবে অর্থনৈতিক সহায়তা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) বহির্ভূত দেশগুলো থেকে।
প্রতিবেদনে ওপেক আরো জানায়, চলতি বছর বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানিকারক দেশ চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে দিনপ্রতি ৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের অফিশিয়াল কাস্টমস ডেটা এবং এলএসইজির অনুমান অনুয়ায়ী, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে চীন, যা গত বছরের একই সময় থেকে ২ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল বেশি।
চীন ছাড়াও এশিয়ার অন্যান্য দেশেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে বলে এক পূর্বাভাসে জানিয়েছিল ওপেক। তবে এপ্রিলে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে আমদানি কমানোয় এ সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে ওপেকসহ অন্য বিশ্লেষকরা পূর্বাভাসে জানিয়েছে, এশিয়ার উত্তর অংশে গ্রীষ্মের মাসগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে এবং চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তা আরো প্রসারিত হতে পারে। চীনের অর্থনীতি বৃদ্ধির গতি পুনরুদ্ধারসহ মুদ্রাস্ফীতি থেকে বিভিন্ন দেশের উত্তরণের কারণে চাহিদা বৃদ্ধির এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাগুলো।
গত এপ্রিলের এক প্রতিবেদনে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইএস) জানিয়েছে, চলতি বছর বিশ্বব্যাপী দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে। আর শুধু এশিয়ার দেশ চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির এ পরিমাণ হবে দৈনিক ৫ লাখ ব্যারেল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বিশ্ববাজারে টানা দুই বছর কমবে পণ্যের দাম
বিশ্ববাজারে এ বছর পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকবে, একই ধারাবাহিকতায় আগামী বছরও দাম কমবে। তবে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে বা যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে দাম বেড়ে যেতে পারে। পণ্যবাজার নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এক পূর্বাভাসে এমন দাবি করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমবে ৩ শতাংশ, ২০২৫ সালে কমবে ৪ শতাংশ।
তবে এ দাম এখনো ২০১৫ এবং করোনা-পূর্ববর্তী ২০২০ সালের গড় দামের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। যদিও ২০২৪ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে ২ শতাংশ এবং সোনা ও তামার দাম বাড়বে যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ৫ শতাংশ। পূর্বাভাসে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২২ সালের মধ্যভাগ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যভাগ পর্যন্ত বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমেছে ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস ও গম। এর ফলে ওই সময়ে বিশ্ববাজারে মূল্যস্ফীতি কমেছিল ২ শতাংশীয় পয়েন্ট।
পূর্বাভাসে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় আবশ্যকীয় পণ্যের বাজারে উচ্চমুখী চাপ তৈরি করেছে। বিশেষত তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ছে। এর পাশাপাশি তামার দাম বেড়েও দুই বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে। এতে সরবরাহ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এদিকে বিশ্ববাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের জন্য এই সুখবর খুব বেশি স্বস্তির বার্তা বয়ে আনতে পারবে না। কারণ জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, তুলার মতো বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান আমদানি পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়বে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে দেশে আগামী দু-এক বছর মূল্যস্ফীতি কতটা কমবে তা নিয়ে সংশয় আছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, ওই ১০টি পণ্যের মধ্যে ছয়টি পণ্যের দাম কমবে, আর বাকি চারটির দাম বাড়বে।
দাম কমতে পারে এমন ছয়টি পণ্য হলো ইউরিয়া সার, কয়লা, এলএনজি, চিনি, গম ও ভুট্টা। আর দাম বাড়তে পারে জ্বালানি তেল, পামতেল, সয়াবিন তেল ও তুলার। দেশের প্রধান আমদানি পণ্য তালিকায় এই ১০টি পণ্য বিশাল জায়গা দখল করে আছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২৩ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি সাড়ে ৮২ ডলার। চলতি বছরে তা বেড়ে ৮৪ ডলার হতে পারে। তবে আগামী বছর তা কমে ৭৯ ডলার হতে পারে। জ্বালানি তেল আমদানিতেই সরকার সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হিসাবে ৪৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, এ বছর এই খরচ আরো বাড়তে পারে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ আমদানিপণ্য হলো তুলা। এটি বস্ত্র খাতের মূল কাঁচামাল। বিশ্বব্যাংক বলছে, আগামী দুই বছর তুলার দাম বাড়বে। এ বছর প্রতি কেজি তুলার দাম উঠতে পারে ২.১৫ ডলারে। আগামী বছর তা আরো পাঁচ সেন্ট বাড়তে পারে। গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের তুলা আমদানি হয়েছে।
পামতেল ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বছরে প্রতি টন পামতেলের দাম ২০-২১ ডলার বাড়তে পারে। প্রতি টন তেলের গড় দাম হতে পারে ৯০৫ ডলার। অন্যদিকে সয়াবিন তেলের দামও বাড়ার কথা বলছে বিশ্বব্যাংক। বর্তমানের টনপ্রতি এক হাজার ১১৯ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ১৩০ ডলার হতে পারে সয়াবিন তেলের দাম। দেশে প্রতিবছর গড়ে ৩০-৩৫ লাখ টন পামতেল ও সয়াবিন তেল আমদানি হয়। গত অর্থবছরে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার পামতেল ও সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে কোন পণ্যের কত দাম কমছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরিয়া সারের দাম টনপ্রতি ৩৫৮ ডলার থেকে কমে ৩৫০ ডলার হতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার সার আমদানি হয়েছে। এবার একটু কম খরচ হতে পারে। একইভাবে এলএনজি এবং কয়লার দামও কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, কয়লার দাম ব্যাপক কমতে পারে। ২০২৩ সালে প্রতি টন কয়লার গড় দাম ছিল প্রায় ১৭৩ ডলার। চলতি অর্থবছরে এর গড় দাম হতে পারে ১২৫ ডলার। অন্যদিকে প্রতি বিএমএমটিইউ এলএনজির দাম ১৪ ডলার থেকে কমে সাড়ে ১২ ডলার হতে পারে।
চিনি হলো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপণ্য। দেশে চিনির চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করে মেটাতে হয়। বিশ্বব্যাংক বলছে, চিনিতে সুখবর আছে। প্রতি কেজি ০.৫২ থেকে কমে ০.৫০ ডলার হতে পারে। একইভাবে প্রতি টন গমের দামও ৩৪০ থেকে কমে ২৯০ ডলার হতে পারে। পোলট্রি ফিডের জন্য বিপুল পরিমাণ ভুট্টা আমদানি করা হয় বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দামও কমতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩ বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বান
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক পলিসি ডায়ালগের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশে সরকারের আইন প্রণেতাগণ, অর্থনিতীবিদ, শিক্ষাবিদ এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের নেতৃবৃন্দসহ সকলেই তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, এই কর অব্যাহতি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বন্ধ হয়ে গেলে এই খাতে লভ্যাংশের হার আশঙ্কাজনক ভাবে হ্রাস পাবে এবং আইটি/আইটিইএস কোম্পানিসমূহের পুনঃবিনিয়োগ ক্ষমতাও কমে যাবে। ফলে এই শিল্পের উন্নতির গতি মন্থর হয়ে যাবে এবং রপ্তানিও হ্রাস পাবে।
রবিবার (৫ মে) হোটেল শেরাটন, ঢাকায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ভিসিপিয়াবের প্রেসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান তার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, আমাদের দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশের মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ১.০৯ শতাংশ। বিপরীতে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবদান ৭.৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ৩.৪০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ৪.২৩ শতাংশ, এস্টোনিয়ার ৭.০০ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) এর ক্রমবিকাশ প্রাত্যহিক জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তি আরও বেশি করে যুক্ত হওয়ার প্রতিফলন স্বরূপ, যা সরকার এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। ডিজিটাল পাবলিক ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত শক্তিশালী ‘ডাটা ও ডিজিটাল ক্যাপিটাল’ গড়ে তুলে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের ‘এআই ইউজ কেস’ রাজধানীতে রূপান্তরের লক্ষ্য স্থির করতে পারি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির বিষয় তুলে ধরবো। আমাদের আইটি/আইটিইএস খাতে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার না করে বরং অতিরিক্ত প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
বিশেষ অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, আমি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প উদ্যোক্তাদের কর অব্যাহতির যুক্তিসংগত দাবিকে সমর্থন করি। তাই, আগামী কয়েক বছরের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বর্তমান কর অব্যাহতি বজায় রাখার বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করার জন্য আমি বিনীতভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সালমান এফ রহমানকে অনুরোধ করছি ।
বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মতো ক্রমবর্ধমান শিল্পের জন্য কর সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে, আমাদের অবশ্যই জ্ঞান-ভিত্তিক ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যান্য দেশের সাথে ব্যবধান কমানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু পর্যায়ে দ্রুত গতিতে নিজেদের এগিয়ে নেয়া অপরিহার্য; অন্যথায়, আমাদের ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকতে হবে।
অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে জাতীয় সংসদ সদস্য ও ভিসিপিয়াব উপদেষ্টা জারা জাবীন মাহবুব বলেন, সত্যিকার একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারীদের অগ্রণী ভূমিকাকে উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। তাদের অন্তর্ভুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা শুধু নারীর স্বাস্থ্যের উন্নতিই না, বরং কার্যকরভাবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে পারি।
জাতীয় সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, দেশে মাল্টিবিলিয়ন ডলারের মিডিয়া, বিনোদন ও প্রযুক্তি শিল্প রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আমাদের এই শিল্পকে ডিজিটালাইজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানটির পার্টনার হিসেবে ছিল এডিএন টেলিকম লিমিটেডের স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম (প্রা.) লিমিটেড, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) প্রা. লিমিটেডে, ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসি, আইটি কনসালট্যান্টস পিএলসি, বিডিজবস লিমিটেড এবং ইজেনারেশন পিএলসি।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, সিসিসিআই সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বিডিজবস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন; পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ; ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের (ইআরজি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এম. রোকনুজ্জামান; এডিএন টেলিকমের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ; স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফোরকান বিন কাসেম; কনস্টেলেশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এর প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা তানভীর আলী; স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ব্রেন স্টেশন ২৩-এর সিইও রাইসুল কবির এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) পলিসি অ্যাডভাইজার ইমরান আহমেদ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
২০৩০ সালে রপ্তানি ১০০ বিলিয়নে পৌঁছাবে
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা ১০০ বিলিয়ন রপ্তানি করতে পারব বলে আশা করছি। আর এ জন্য ২০২৬ সালের যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা মোকাবেলায় সরকারের নীতি সহায়তা কামনা করছি বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম মান্নান কচি।
গতকাল শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় নবনির্বাচিত কমিটির বোর্ড নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মান্নান কচি বলেন, এ মুহূর্তে সারা বিশ্বে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে অবশ্যই সরকারের নীতি সহায়তা প্রয়োজন।
পরে তিনি পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসএম
You must be logged in to post a comment Login