Connect with us

চিত্র-বিচিত্র

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যেসব সুবিধা পান

Published

on

কে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ার পর শপথ গ্রহণ করেছেন সংসদ সদস্যরা। ইতোমধ্যে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন ২৫ জন এবং প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন ১১ জন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন।

অনেকের জানার আগ্রহ থাকে একজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী কী কী সুবিধা পেয়ে থাকেন। গাড়ি, বাড়ি, চিকিৎসা খরচসহ অন্তত ১৩ ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন তারা। ‘দ্য মিনিস্টার্স, মিনিস্টার্স অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার্স (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অ্যাক্ট’-এ নির্ধারণ করা আছে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীরা কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

বেতন ও বাড়িভাড়া

একজন সংসদ সদস্য যদি মন্ত্রী পদ পান তাহলে তার বেতন হয় ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। প্রতিমন্ত্রীর বেতন ৯২ হাজার ও উপমন্ত্রীর বেতন হয় ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা। দায়িত্ব পাওয়ার পর বিনা ভাড়ায় একজন মন্ত্রী সরকারি ব্যয়ে একটি সুসজ্জিত বাসভবন পান। প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীও একই সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে, মন্ত্রী যদি সরকারি বাড়িতে না থেকে নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে তিনি মাসিক ৮০ হাজার টাকা করে ভাড়া পাবেন। আর প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী পাবেন ৭০ হাজার টাকা করে। এ ছাড়া নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করলে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে তিন মাসের বাড়ি ভাড়ার সমপরিমাণ অর্থ পাবেন তারা।

গাড়ি সুবিধা

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী সরকারি খরচে একটি করে গাড়ি সুবিধা পাবেন। এই গাড়ি পরিবহন পুল সরবরাহ করবে। এ ছাড়া সরকারি প্রয়োজনে বিশেষ করে নির্বাচনী এলাকায় ভ্রমণের সময় তারা মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে কোনো সংস্থা বা দপ্তর থেকে একটি জিপ গাড়ি পাবেন। জ্বালানি বাবদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দৈনিক ১৮ লিটার জ্বালানি তেলের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন।

চিকিৎসা খরচ

মন্ত্রিসভার সদস্যদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পুরো চিকিৎসা খরচ বহন করে সরকার। এ ক্ষেত্রে বলা আছে, চিকিৎসা খরচ সীমাহীন। অর্থাৎ তার পুরো খরচ সরকার দেবে। তবে, খরচের ভাউচার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে।

আপ্যায়ন ভাতা

দায়িত্ব পাওয়ার পর মন্ত্রিসভার সদস্যরা মাসিক ১০ হাজার টাকা করে আপ্যায়ন ভাতা পান। মন্ত্রী হওয়ার পর তার দপ্তরে দেশি-বিদেশি অনেকে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন। নির্বাচনী এলাকার মানুষও দেখা করতে আসেন মন্ত্রীর সঙ্গে। তাদের আপ্যায়নের জন্য এই টাকা পান তারা। এ খাতে প্রতিমন্ত্রী সাড়ে ৭ হাজার টাকা আর উপমন্ত্রী ৫ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী বছরে বিমানসুবিধা পাবেন ১০ লাখ টাকা।

প্রতিবছর বাড়ি সাজসজ্জায় পাবেন ৫ লাখ টাকা

একজন মন্ত্রী প্রতিবছর পাঁচ লাখ টাকা পাবেন সরকারি বাড়ি সাজসজ্জা করতে। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পাবেন চার লাখ টাকা করে। এ ছাড়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বাসভবনে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন ব্যয় যা আসবে, তার পুরোটাই বহন সরকার বহন করবে।

একজন মন্ত্রী ১০ সহায়ক পাবেন

মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তার নিজের পছন্দ অনুযায়ী উপসচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব (পিএস) পাবেন। যদিও গত নির্বাচনের পর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের পিএস নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সেখানে তাদের পছন্দ ছিল না। এ ছাড়া একজন সহকারী একান্ত সচিব এবং সরকারি কর্মকর্তার বাইরে নিজের পছন্দের একজন সহকারী একান্ত সচিব পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া দুজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন জমাদার, একজন আরদালি, দুজন অফিস সহায়ক ও একজন পাচক পেয়ে থাকেন। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী একজন একান্ত সচিব, একজন ব্যক্তিগত সহকারী, একজন জমাদার, একজন আরদালি ও একজন অফিস সহায়ক পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা একটি করে মুঠোফোন পাবেন।

এলাকার উন্নয়নে বরাদ্দ টাকা নিরীক্ষামুক্ত

একজন মন্ত্রীকে নিজ এলাকার মসজিদ, মন্দির উন্নয়নসহ এলাকার মানুষের দাতব্য কাজে ব্যয়ের জন্য বছরে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এ খাতে প্রতিমন্ত্রী পাবেন সাড়ে ৭ লাখ ও উপমন্ত্রী পাবেন ৫ লাখ টাকা করে। এ টাকার মধ্যে মন্ত্রী চাইলে একজন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দিতে পারেন। প্রতিমন্ত্রী দিতে পারেন ৩৫ হাজার আর উপমন্ত্রী ২৫ হাজার টাকা। এলাকার উন্নয়নে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের এই টাকার কোনো নিরীক্ষা হয় না।

মন্ত্রী পদমর্যাদায় চিফ হুইপ ও বিরোধীদলীয় নেতা

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী, চিফ হুইপ ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পদটি একজন পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদার। এতে বিরোধীদলীয় নেতা একজন পূর্ণ মন্ত্রীর সমান সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। তিনি একান্ত সচিব (পিএস), একজন সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস), দুজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন বাহক, দুজন অফিস সহায়ক ও একজন পাচক পান। এ ছাড়া আটজন পুলিশ সদস্য, দুজন গানম্যান সুবিধা দেওয়া হয় তাঁকে। গাড়ির সুবিধাও পেয়ে থাকেন বিরোধীদলীয় নেতা। মন্ত্রীদের মতো বিরোধীদলীয় নেতা সরকারি বাসা পেয়ে থাকেন। সেই বাসার যাবতীয় খরচ সরকার থেকে। এ ছাড়া হুইপ একজন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার।

এ ছাড়া আটজন পুলিশ সদস্য, দুজন গানম্যান সুবিধা দেওয়া হয় তাকে। গাড়ির সুবিধাও পেয়ে থাকেন বিরোধীদলীয় নেতা। মন্ত্রীদের মতো বিরোধীদলীয় নেতা সরকারি বাসা পেয়ে থাকেন। সেই বাসার যাবতীয় খরচ দিয়ে থাকে সরকার। এ ছাড়া হুইপ একজন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চিত্র-বিচিত্র

মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস পেলেন ১৫ সাংবাদিক

Published

on

কে

বারো ক্যাটাগরিতে ১৮তম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস পেলেন ১৫ সাংবাদিক। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের এ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী পুরস্কার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শিশুদের প্রয়োজনগুলো সবার সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শিশু সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে তাদের অন্তর্দৃষ্টিমূলক বিশ্লেষণ, সমাজ ও নীতিনির্ধারক উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। যার ফলে শিশু অধিকারগুলো নিশ্চিতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়।

তিনি বলেন, পুরস্কারবিজয়ী ও পুরস্কারের জন্য মনোনীত সাংবাদিকেরা যে গল্প তুলে ধরেছেন, তাতে শিশু ও তাদের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী নানা জরুরি বিষয় উঠে এসেছে। যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর পরিস্থিতি; পিরিয়ডকালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার ক্ষেত্রে কন্যাশিশুদের চ্যালেঞ্জসমূহ; পথশিশুদের অবস্থা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের গল্প।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, আমরা শিশুদের কথাগুলো শোনা, তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেওয়া এবং তাদের অধিকারগুলোর নিশ্চিত করার যে অঙ্গীকার রয়েছে তা পুনর্ব্যক্ত করছি।

ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩ বিজয়ীরা (১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব) প্রিন্ট সাংবাদিকতা- শিক্ষা ও শিশু ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন প্রথম আলোর আহমাদুল হাসান, ঢাকা পোস্টের মো. রাকিবুল হাসান তামিম, মো. জসীম উদ্দীন, মুছা মল্লিক, নজরুল ইসলাম, ঢাকা নোটের রবিউল আলম, দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ এর সাধন কুমার সরকার, সিভয়েস ২৪ ডটকমের শারমিন রিমা, ট্রিবিউনের উদিসা ইসলাম।

ফটো সাংবাদিকতায় প্রথম আলোর মো. সাজিদ হোসেন এবং ভিডিও সাংবাদিকতায় যমুনা টেলিভিশনের মো. বনি আমিন ও ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের মো. সবুজ মাহমুদ পুরস্কার পেয়েছেন।

১৮ বছরের নিচে ইউনিসেফ চিলড্রেনস মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩ বিজয়ীরা হলেন- আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় দৈনিক আজকের সুন্দরবনের মো. সাফায়েত হোসেন শান্ত, ভিডিও সাংবাদিকতায় এটিএন বাংলার মো. মুজাহিদ ইসলাম, প্রিন্ট সাংবাদিকতায় ইকোনোমিক নিউজ২৪ ডটকমের মো. নাঈম ইসলাম।

বিচারক প্যানেলের একজন সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন বলেন, মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস প্রতি বছর আমাদের শিশুদের অধিকার রক্ষার গুরু দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, সম্ভাবনাময় শিশু সাংবাদিকসহ আমাদের সাংবাদিক কমিউনিটি, বাংলাদেশে শিশুদের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে তাদের এই লেখা চালিয়ে যাবেন।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম; বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম; শিক্ষাবিদ, ঔপন্যাসিক ও শিশুদের গল্প লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল; ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পাঠশালা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক শামীম আখতার। এ ছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল অ্যাম্বাসেডর বিদ্যা সিনহা মীম ইউনিসেফের চাইল্ড অ্যাডভোকেটস এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

চিত্র-বিচিত্র

কেএনএফ এত শক্তিধর হয়ে উঠলো যেভাবে

Published

on

কে

বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানে চলতি মাসের শুরুতে ষোল ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় ডাকাতির ঘটনার পর কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ-এর বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। এ ঘটনার দু বছর আগেই সামাজিক মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছিলো সরকারের দৃষ্টিতে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ’। তবে এক পর্যায়ে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়ার অভিযোগে র‍্যাবের বড় ধরনের অভিযানের মুখে পড়ে তারা।

এরপর নানা ঘটনা প্রবাহের পর বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় চলতি মাসের শুরুতে রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণ ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর এ প্রশ্নও উঠছে যে হুট করে এ শক্তি কোথায় পেলো কেএনএফ।

সংগঠনটি তাদের আনভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, প্রতিবেশী একটি দেশে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদের সদস্যরা। যদিও এটি আদৌ তাদের বক্তব্য কি-না তা নিরপেক্ষ কোন সূত্র থেকে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন অর্থ সংকটে পড়েই দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই হামলা করেছে কেএনএফ। শান্তি আলোচনা চলাকালে বান্দরবানে ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শিথিলতা’ আসাটাও তাদের হামলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।

যদিও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে আঞ্চলিক কিছু গোষ্ঠীর সহায়তা পেয়ে শক্তি সঞ্চয় করাটাও কেএনএফ-এর জন্য অস্বাভাবিক নয় বলেও তারা কেউ কেউ মনে করেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের চিন প্রদেশের কুকি চিনদের দিকেই ইঙ্গিত করেন বিশ্লেষকরা।

২০২২ সালের অক্টোবর থেকে কেএনএফ ও জঙ্গি বিরোধী যে ব্যাপক অভিযান র‍্যাব পরিচালনা করেছিলো তাতে সংগঠনটি দুর্বল হয়ে পড়েছিলো বলেই মনে করা হচ্ছিলো। র‍্যাব তখন সংগঠনটির বিরুদ্ধে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয়ার অভিযোগ এনেছিলো। যদিও কেএনএফ তাদের আনভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

কিন্তু এতো বড় অভিযানের পর শান্তি আলোচনার মধ্যে এভাবে দিনে দুপুরে হামলার শক্তি কেএনএফ কীভাবে পেতে পারে– এমন এক প্রশ্নের জবাবে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলছেন, “পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে। তারা কীভাবে করলো বা কেউ তাদের সহায়তা করেছে কি-না সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে”।

এর আগে ঘটনার পরে গত সাতই এপ্রিল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন ‘শান্তি আলোচনা শুরুর পর তাদের (কেএনএফ) বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু তারা যেহেতু বিশ্বাসভঙ্গ করেছে, সুতরাং আর ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই’।

কেএনএফের হুট করে আক্রমণ যেভাবে

গত নভেম্বর থেকে সরাসরি শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছিলো কেএনএফ। এর মধ্যেই হুট করে ব্যাংকে হামলা করে ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণ ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় বিস্মিত করেছে অনেককেই। তবে বিশ্লেষকরা কেউ কেউ মনে করেন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো অনেক সময় আলোচনার টেবিলে নিজেদের গুরুত্ব বোঝাতে এমন ঘটনা ঘটান, যার নজির এই অঞ্চলের দেশগুলোতে আছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শামীম কামাল বলছেন অনেক জায়গা থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের পর অনেকদিন ধরেই সেখানে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি, এমনকি এপিবিএন যাওয়ার কথা থাকলেও সেটিও হয়নি। তাদের প্রায় চারশো লোকের ভরণ পোষণসহ নানা খরচের জন্য টাকার জন্যই তারা ডেসপারেট হয়ে ব্যাংকে হামলা করেছে বলে আমি মনে করি। সেনাবাহিনী থাকলে হয়তো এত সহজে এটি করতে পারতো না তারা।

আবার শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে আলোচনার পর সেখানে নিরাপত্তায় কোন ঘাটতি থাকলে তারও সুযোগ নেয়ার চিন্তা থেকে হামলাটি হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু তাদের শক্তিটা এলো কোথা থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা তো স্থানীয় মানুষ। কোথায় কোথায় নিরাপত্তা বাহিনী আছে সব তাদের জানা। কোথায় পুলিশ বা আনসার কাজ করছে, কতজন আছে সব তারা দেখছে। হামলার ভিডিওতে তো দেখা গেছে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে তারা। স্বয়ংক্রিয় কোন অস্ত্র নেই। তার মানে শক্তির চেয়ে সময় ও কৌশল এখানে বেশি ভূমিকা রেখেছে”।

এদিকে কেএনএফের প্রধান সমন্বয়ক রোয়ান লিন বম ও চেওসিম বমকে গত সাতই এপ্রিলই আটকের খবর দিয়েছে র‍্যাব। এর আগে ও পরে আরও অনেককে আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও কেএনএফ তাদের আনভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় আটককৃতদের সাধারণ বম জনগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে দাবি করেছে। শামীম কামাল বলছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বৈশিষ্ট্যই হলো সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকা।

আরেকজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. বায়েজিদ সারোয়ার বলছেন যে অভিযানের সঙ্গে জড়িতদের এ কারণেই খুব সতর্ক থাকা দরকার যাতে মানুষের মধ্যে মিশে থাকা অপরাধীকে সঠিকভাবে যাচাই করে আটক করা সম্ভব হয়। তার মতে হুট করে কেএনএফ যে শক্তি প্রদর্শন করতে চেয়েছে তার কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। এগুলো হলো আলোচনার টেবিলে নিজেদের শক্তি বোঝানোর চেষ্টা, আঞ্চলিক শক্তির প্রভাব কিংবা নিরাপত্তায় শিথিলতা।

“তারা হয়তো এসেস করে দেখেছে যে শান্তি আলোচনা চলছে তা নিরাপত্তা কিছুটা শিথিল। আবার এটিও কিছুটা সত্য যে ভিন্ন ধরনের ভূ প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে ওই অঞ্চলে বিদ্রোহী বা গেরিলারা ইচ্ছে করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে,” বলছিলেন মি. সারোয়ার।

তিনি বলেন, “শো অফ করার জন্যও হতে পারে। আবার অনেক সময় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো আলোচনার টেবিলে শক্তি দেখানোর জন্য এ ধরনের কাজ করে থাকে। এমন নজির আছে। অবশ্য আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে যখন এ ধরনের আলোচনা হতো তখন বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হতো”।

তবে গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে কেএনএফ ফেসবুকে তাদের তৎপরতার বিবরণ দিয়ে আসছে। সেখানে তারা দাবি করেছে তারা কীভাবে কোথা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সশস্ত্র দল তৈরি করেছে।

মিয়ানমারের চীন প্রদেশের তৃতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী হলো কুকিরা। অর্থ ও রসদ সরবরাহ না থাকলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন পরিচালনা কঠিন। সে কারণেই কেএনএফ এর হুট করে শক্তি সঞ্চয়ের পেছনে অনেকে আঞ্চলিক সহায়তার কথাও বলে থাকেন। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠনের নামে থাকা আনভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় অবশ্য দাবি করা হয়েছে যে কেএনএফ শুরুতে সরকারের নিবন্ধিত একটি সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও ২০১৭ সালে ‘সশস্ত্র শাখায়’ রূপ নেয়।

তারা আরও দাবি করেছে যে, “পরবর্তীতে মনিপুর রাজ্যের এবং মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সাথে সম্পর্কোন্নয়ন হয়। অতঃপর একই বছরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনের কয়েক শত সদস্যকে মনিপুর রাজ্যে সামরিক প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে শতাধিক সক্রিয় সদস্য কাচিন, কারেন প্রদেশ এবং মনিপুর রাজ্যে আবার প্রশিক্ষণে পাঠায়”।

তবে বিবিসি কোন নিরপেক্ষ সূত্র থেকে গত আটই এপ্রিল কেএনএফ এর ফেসবুক পাতায় দেয়া এই বিবৃতির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

শক্তি প্রদর্শন নাকি দুর্বলতা প্রকাশ

শামীম কামাল বলছেন তিনি মনে করেন হুট করে হামলার মাধ্যমে শক্তির চেয়ে নিজেদের দুর্বলতার বেশী বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে কেএনএফ। তিনি বলেন, দেখুন হামলাকারীরা বেথেলপাড়া পাড় হয়ে রুমা পাহাড়ে চলে গেলে তাদের খুঁজে পাওয়া কঠিন হতো। ভিডিওতে দেখুন কারও হাতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নেই। সব দেশী অস্ত্র। আবার এত বড় ঘটনার পর লুকালো বান্দরবান শহরে। এসব কিছু বিশ্লেষণ করলে মনে হয় তাদের প্রকট সাংগঠনিক দুর্বলতাই ফুটে উঠেছে এবারের হামলায়।

এছাড়া বারই এপ্রিল বিজু বা বৈসাবি উৎসব শুরুর আগে ব্যাংকে হামলার ঘটনা পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও কেএনএফকে কিছুটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে বলে মনে করেন অনেকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় নদী-হ্রদের পানিতে ফুল ভাসিয়ে বা ‘ফুল বিজু’ উদযাপনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার তিন দিনের এ বিজু উৎসব শুরু হয়েছে।

রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খুমিদের সাংক্রাই, ত্রিপুরাদের বৈসু, চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই, ম্রোদের চানক্রান, খিয়াংদের সাংগ্রান ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষুর আদ্যাক্ষর নিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘বৈসাবি’। তাই এই উৎসবকে সম্মিলিতভাবে ‘বৈসাবি’ বলে অনেকেই।

বায়েজিদ সারোয়ার বলছেন বৈসাবি উৎসব ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য খুবই আবেগের ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেএনএফ -এর হামলার জের ধরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির কারণে মানুষ এবার এই উৎসব ঠিক মতো করতে পারছে না।

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

চিত্র-বিচিত্র

ক্যালেন্ডারের পাতা মাটিতে পুঁতলেই গাছ!

Published

on

কে

ক্যালেন্ডারের পাতা মাটিতে পুঁতে দিলে গাছ জন্মাবে এমন কথা হয়তো আগে কেউ শুনেনি। তবে কল্পিত এই ভাবনাকে বাস্তবে ফেসবুক ও অনলাইনে দেশি গয়নাসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্যের বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ‘হরপ্পা’।

জানা যায়, ‘বনকাগজ’ নামের ভিন্ন এক কাগজে বাংলা বর্ষপঞ্জিকা তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। হাতে তৈরি রিসাইকেল করা বিশেষ ধরনের এ কাগজের ভেতর থাকে গাছের বীজ। ফলে মাস শেষ হওয়া ক্যালেন্ডারের পাতা কেউ ছিঁড়ে ফেলে দিলে এই পাতা থেকে গাছ জন্ম নিবে।

বনকাগজ উৎপাদনের খরচ বেশি, তাই ক্যালেন্ডারের দামও কিছুটা বেশি। কিন্তু, প্রকৃতি-পরিবেশের কথা চিন্তা করে এমন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে এ অনলাইন প্রতিষ্ঠান।

বনকাগজ কী

বনকাগজ হলো পুরোনো কাগজ রিসাইকেল করে উৎপাদিত এক কাগজ। যেখানে গাছের বীজ থাকে। ব্যতিক্রমী পদ্ধতিতে বনকাগজ বানাতে হয়। বনকাগজ থেকে বানানো হয় বিশেষ ক্যালেন্ডার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বনকাগজ তৈরিতে পরিত্যক্ত কাগজ টুকরো করে পানিতে ভিজিয়ে পুরোপুরি গলিয়ে মণ্ড তৈরি করতে হয়। পরে মণ্ড থেকে কাগজ তৈরির সময় বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে এর ভেতরে বীজ দেওয়া হয়। এভাবে তৈরি হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে কাগজ মাটিতে পুঁতে দিলে গাছ জন্মায়।

এ ধরনের কাগজেই ক্যালেন্ডার ছাপানো ভালো, কারণ ক্যালেন্ডারের ব্যবহার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। তেরো পাতার একটি ক্যালেন্ডারের প্রতিটির পাতার আয়ু এক মাস। মাস শেষে অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাওয়া পাতাটি থেকে গাছের জন্ম হতে পারে।

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

চিত্র-বিচিত্র

সোমালিয়ার জেলেরা যেভাবে জলদস্যু হয়ে উঠল

Published

on

কে

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কুখ্যাতি বিশ্বব্যাপী শ্রুত। কিন্তু দরিদ্র এ দেশটির অনেকের দস্যুবৃত্তিকে প্রায় পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে এমভি আবদুল্লাহ নামক একটি বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালি জলদস্যুরা। চট্টগ্রামের কবির (কেএসআরএম) গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন এ জাহাজে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক রয়েছেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র নাবিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে কবে তাদের উদ্ধার করা যাবে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।

২০১০ সালেও একই শিপিং কোম্পানির মালিকানাধীন এমভি জাহান মনি সোমালি জলদস্যুদের ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছিল। ওইসময় জাহাজে ২৫ ক্রু এবং ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ মোট ২৬ ব্যক্তি ছিলেন। ১০৫ কোটি টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ১০০ দিন পর ওই ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনা হয়।

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কুখ্যাতি বিশ্বব্যাপী শ্রুত। কিন্তু দরিদ্র এ দেশটির অনেকের দস্যুবৃত্তিকে প্রায় পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

জীর্ণ পোশাক, ভারী অস্ত্র, জিপিএস ফোন তাদের এ বেশভূষা দেখে মনে করার উপায় নেই তারা কেবল মরিয়া হয়ে দস্যুবৃত্তির পথে নেমেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সোমালিয়ায়, বিশেষ করে সোমালি উপকূলে যথাযথ আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি না থাকারই সুযোগ নেয় এ জলদস্যুরা।

তবে টাইম ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, সোমালিয়ায় করুণ পরিস্থিতির সুযোগ কিন্তু কেবল এ জলদস্যুরাই নেয়নি। বরং বাকি বিশ্বের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতাও এ দস্যুবৃত্তি উত্থানের একটি অন্যতম কারণ।

১৯৯১ সালে গৃহযুদ্ধের ফলে সোমালিয়ায় সর্বশেষ কার্যকর সরকারটিরও পতন ঘটে। আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় উপকূলের মালিক সোমালিয়া। সরকারি বিধিনিষেধ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় তিন হাজার ৩৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ উপকূলীয় অঞ্চলের সমুদ্রে বিদেশি নৌযানের লুটাপাটের বিপুল নজির রয়েছে।

সেই ২০০৬ সালেই জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সোমালিয়ায় কোনো সক্রিয় কোস্টগার্ড না থাকায় দেশটির জলসীমায় এসে বিদেশি নৌযান মাছ ও সিফুড আহরণ করে নিয়ে যায়। আর প্রতি বছর সোমালিয়ার সমুদ্র থেকে কেবল ৩০০ মিলিয়ন ডলারেরই সিফুড লুট করে বিদেশি গোষ্ঠীগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছিলেন উপকূলীয় এলাকায় বাস করা সোমালি জনগণ। নিজেদের সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তাদেরকে সারাক্ষণ সতর্ক থাকতে হতো বহিঃশত্রুর আক্রমণের বিরুদ্ধে। এভাবে বিদেশি ট্রলারের হামলা থেকে রক্ষা পেতে ১৯৯০-এর দশকে সোমালিয়ায় প্রথম জলদস্যুদলের বিস্তার ঘটে।

কোনো একসময়ে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, স্পেনের মতো দেশের মাছ ধরার ট্রলারও সোমালিয়ার জলসীমায় এসে মাছ ধরে নিয়ে যেত। বলা বাহুল্য, এসব ট্রলারের সোমালি উপকূলে মাছ ধরার কোনো বৈধতা বা লাইসেন্স থাকত না। প্রায় দুই দশকের মতো সময় সোমালিয়ার সমুদ্র এলাকায় এভাবে শোষণ চালিয়েছে এসব বিদেশিরা।

এ ধরনের অবৈধ ট্রলার সোমালিদের জলদস্যু হওয়ার পেছনে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। অতীতে এসব ট্রলার আটক করার পর দ্রুতই মুক্তিপণের অর্থ পেয়ে যেত দস্যুরা। কারণ বিদেশি এসব গোষ্ঠীগুলোও চাইত না তারা যে আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘন করেছে তা প্রকাশ্যে আসুক।

এভাবেই ছোট ছোট ট্রলার জিম্মি করার মাধ্যমে নিজেদের কৌশলগত নেটওয়ার্ক বাড়িয়ে তোলে দস্যুরা। একসময় মাছ ধরার ট্রলারের পাশাপাশি পণ্যবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের দিকে নজর পড়ে তাদের।

এছাড়া দারিদ্র্য, অরাজকতা, আইনের শাসনের অভাবের পাশাপাশি গৃহযুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা, সহিংসতাও এ ধরনের অপরাধের পেছনে বড় কারণ হিসেবে কাজ করছে।

শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী না থাকায় এ জলদস্যুরা দেশটির অনেক প্রতিষ্ঠানের ওপরই ছড়ি ঘোরাতে পারে। মুক্তিপণের টাকা বিনিয়োগ করে নিজেদের অপরাধের পরিসরও বাড়ায় তারা। বেকার সোমালি তরুণদের বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে নিজেদের দলে ভেড়ায় এ জলদস্যুরা।

তবে গত ১৫ বছর ধরে সোমালি উপকূলে দস্যুবৃত্তি কমানোর চেষ্টাও কম হয়নি। ছয়টি আন্তর্জাতিক শিপিং প্রতিষ্ঠান মিলে ২০১২ সালে ঘোষণা দেওয়া হয়, সোমালি উপকূলে জলদস্যু সমস্যা বৈশ্বিক শিপিংয়ের জন্য আর কোনো ঝুঁকি নয়।

২০২৩ সালেও সংস্থাটি জানায়, ভারত মহাসাগরেও দস্যুবৃত্তির আর বড় ঝুঁকি নেই। কারণ ২০১৮ সালে সোমালি জলদস্যুরা এ মহাসাগরে আর কোনো আক্রমণ চালায়নি। কিন্তু এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ের পর আফ্রিকার এ সমুদ্রপথটি দিয়ে বাণিজ্য আবার ঝুঁকির মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হলো।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

চিত্র-বিচিত্র

পাঁচ মিনিটে ২ হাজার টাকা আয়, ফোনকলে নতুন প্রতারণা!

Published

on

কে

অনলাইনে নানান প্রলোভন আর প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে টাকা খোয়াচ্ছেন দেশের নানান শ্রেণির মানুষ। একইসাথে প্রতারকের নানান চক্র চতুর্মুখীভাবে সক্রিয় হয়ে উঠছে। দেশে নতুন করে আলোচনায় আসছে ‘ফোনকল’ প্রতারক চক্র। স্বল্প সময়ে মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ চক্রটি।

নতুন চক্রের শুরুটাও ভিন্নভাবে। স্থানীয় নম্বর থেকে ফোন কল দিয়ে শুরু হয়। কোন পরিচয় কিংবা অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই আসে কাজের কথায়। ওপার থেকে বিদেশি কণ্ঠে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘বাসায় বসে হাজার ডলার উপার্জন করতে আগ্রহী কিনা?’ আগ্রহী না হলে সেখানেই কলের সমাপ্তি। কিন্তু মোটা অঙ্কের উপার্জনের লোভ সামলাতে না পেরে যারা আগ্রহ দেখান তারাই পড়েন ফাঁদে।

আগ্রহী ব্যক্তিকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করা হয়। সেখানেও উপার্জনের লোভ দেখালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় টেলিগ্রাম চ্যানেলে। সেখানে থাকে ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করার মতো বিভিন্ন কাজ। প্রতি চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করার বিনিময়ে ফাঁদে পড়ার ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে জমা হয় ১০০ টাকা করে। তারপর নতুন চুক্তি আঁকে প্রতারক চক্র। নির্ধারিত অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের নামে থাকে দ্বিগুণ ফেরতের লোভনীয় অফার।

তিনি যদি এই সুযোগ না গ্রহণ করেন, তাহলে তাকে ভিডিও সাবস্ক্রাইব করার জন্য কোন অর্থ প্রদান করা হবে না। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ প্রতারকদের জালে পা দিয়ে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

বিনিয়োগে আগ্রহ দেখালে একটি বিকাশ মার্চেন্ট নম্বর দেওয়া হয়। সেখানে বিনিয়োগ করে প্রতারণার প্রাথমিক ধাপে পা দেয় আগ্রহী ব্যক্তিরা। পর্যায়ক্রমে নানান বাহানায় প্রতারক চক্র আরও টাকা আদায় করে। একটা সময় বিনিয়োগের নামে স্বর্বস্বান্ত হওয়া লোকটা বুঝতে পারেন তিনি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কলের মাধ্যমে প্রতারক চক্র ফিশিং স্ক্যামের জন্য একজন ব্যক্তির পুরো নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ এবং ফোন নম্বরসহ নানান তথ্য নিয়ে থাকে। এতে তারা বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে ফাঁদে জড়িয়ে ক্ষতি করে।

এছাড়া, ব্যক্তির ফোন কলগুলো রেকর্ড করে অন্যান্য মানুষের কাছে (আত্মীয়) একই কণ্ঠস্বরকে নকল করে উপস্থাপন করা হয়। এতে অনেকেই তাদের প্রতারণা ফাঁদে পড়ে অর্থ খুঁইয়েছে।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন
কে
পুঁজিবাজার11 mins ago

কে অ্যান্ড কিউয়ের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

কে
আন্তর্জাতিক14 mins ago

ব্রাজিলে ভয়াবহ বন্যায় নিহত বেড়ে ৯০

কে
পুঁজিবাজার22 mins ago

ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা

কে
পুঁজিবাজার37 mins ago

ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভার নতুন তারিখ নির্ধারণ 

কে
আন্তর্জাতিক41 mins ago

যুক্তরাষ্ট্রে ওজন কমানোর ওষুধের চাহিদা বাড়লো ৫ গুণ

কে
পুঁজিবাজার43 mins ago

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের এজিএমের তারিখ পরিবর্তন

কে
পুঁজিবাজার58 mins ago

আইএফআইসি ব্যাংকের আয় কমেছে

কে
জাতীয়60 mins ago

আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস

কে
পুঁজিবাজার1 hour ago

ব্র্যাক ব্যাংকের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ

কে
রাজধানী1 hour ago

রাজধানীতে যেসব মার্কেট বন্ধ থাকবে বুধবার

কে
আবহাওয়া1 hour ago

দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস

কে
টেলিকম ও প্রযুক্তি1 hour ago

থ্রিজি সেবা বন্ধ করলো বাংলালিংক

কে
জাতীয়1 hour ago

চতুর্থ মেয়াদে পিআইবির ডিজি হলেন জাফর ওয়াজেদ

কে
জাতীয়2 hours ago

দেশের ১৩৯ উপজেলায় চলছে ভোটগ্রহণ

কে
জাতীয়11 hours ago

পোশাক শিল্পের হাত ধরেই দেশ উন্নত হবে: পাটমন্ত্রী

কে
জাতীয়11 hours ago

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে আইওএম

কে
লাইফস্টাইল11 hours ago

প্রতিদিন দই খাওয়ার উপকারিতা

কে
পুঁজিবাজার11 hours ago

মুনাফায় এনআরবি ব্যাংক

কে
জাতীয়12 hours ago

হজযাত্রীর ভিসা ১১ মের মধ্যে না করলে দায় এজেন্সির: মন্ত্রণালয়

কে
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার12 hours ago

চাকরির সুযোগ দিচ্ছে সিটি ব্যাংক

কে
অর্থনীতি12 hours ago

অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি আরব আমিরাতের

কে
জাতীয়12 hours ago

বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেক

কে
জাতীয়13 hours ago

সুখবর পাচ্ছেন মাদরাসা শিক্ষকরা

কে
জাতীয়13 hours ago

উপজেলা নির্বাচন: শৃঙ্খলা রক্ষায় ৪৮৫ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

কে
জাতীয়13 hours ago

সবার মধ্যে এসডিজিবিষয়ক সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে: স্পিকার

Advertisement

ফেসবুকে অর্থসংবাদ

২০১৮ সাল থেকে ২০২৩

অর্থসংবাদ আর্কাইভ

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১