রাজনীতি
ফখরুলের আছে ৪ কোটি টাকার সম্পদ, বার্ষিক আয় ১১ লাখ
স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও বার্ষিক আয় মিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মোট সম্পদ চার কোটি ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৭১৫ টাকা ৭৩ পয়সা। তবে হলফনামায় একটি প্রাইভেটকার ও ৩০ ভরি সোনার মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। তার বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৩ টাকা।
আইনি তথ্যের অংশে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মোট ৫০টি মামলা হয়েছিল। তবে এসব মামলার বেশিরভাগই আদালতের আদেশে স্থগিত, প্রত্যাহার অথবা চূড়ান্ত প্রতিবেদন (এফআরটি) গ্রহণের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে এসব মামলার কোনোটি তার সংসদ সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত বাধা নয় বলে হলফনামায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়া হলফনামায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।
হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, মির্জা ফখরুলের নামে মোট পাঁচ একর কৃষি জমি রয়েছে। যার অর্জনকালীন মূল্য ৬০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৭০ শতাংশ ও ২.১৪ একর জমি। যার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৫১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। পৈতৃক সূত্রে দোতলা বাড়ির অংশে মূল্য ১০ লাখ টাকা।
ঠাকুরগাঁওয়ে স্বামী-স্ত্রীর নামে রয়েছে ১২ শতাংশ অকৃষি জমি, যার মূল্য মূল্য ৩৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা। ঢাকার পূর্বাচলে নিজ মালিকানায় রয়েছে পাঁচ কাঠা জমি, যার মূল্য আনুমানিক ৮৫ লাখ ৪ হাজার টাকা।
ভবন ও আবাসিক সম্পদের তালিকায় ঢাকায় অবস্থিত ১৯৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, যার মূল্য ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং চার শতাংশ জমি যার মূল্য পাঁচ লাখ টাকা।
মির্জা ফখরুলের নামে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে একাধিক হিসাব রয়েছে। উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের ঠাকুরগাঁও শাখায় পাঁচ হাজার ২ টাকা, পূবালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখায় এক লাখ ৯ হাজার ৮০৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ঢাকা শাখায় দুই লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৭ টাকা ৪৭ পয়সা।
পূবালী ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় মির্জা ফখরুল ও তার স্ত্রীর নামে জমা রয়েছে প্রায় দুই লাখ ২৪ হাজার ১৩২ টাকা। এর পাশাপাশি এক্সিম ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৭ টাকা এবং সিটি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবে তিন হাজার ৪৮৫ টাকা রয়েছে। মোট ১১ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৩ টাকা।
হাতে নগদ অর্থ রয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ১১৬ টাকা ৭৭ পয়সা। আর স্ত্রীর আছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৯৩০ টাকা।
বিনিয়োগ ও সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে তিনি ‘দি মির্জাস প্রাইভেট লিমিটেড’র এক হাজার ৪২৮টি শেয়ারের মালিক, যার মূল্য এক লাখ ৪২ হাজার ৮০০ টাকা। পাশাপাশি তার স্ত্রী নামে বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র মেয়াদি আমানতে রয়েছে ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৭৫০ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের তালিকায় রয়েছে দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি। এছাড়া ১০ ভরি সোনা, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী (টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার), যার মূল্য দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র দুই লাখ ৪০ হাজার টাকার।
বার্ষিক কৃষিখাতে থেকে আয় এক লাখ ৮০০ হাজার, ব্যবসায় (হুরমত আলী মার্কেটের শেয়ার থেকে আয়) এক লাখ ৯৭ হাজার ২৩২ টাকা, ইজাব গ্রুপের পরামর্শক হিসেবে সম্মানী ভাতা ছয় লাখ, চাকরি (দি মির্জাস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে সম্মানী ভাতা) এক লাখ ৯৮ হাজার, অন্যান্য যেকোনো উৎস ও ব্যাংক মুনাফা সাত হাজার ৯০১ টাকা। মোট বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৩ টাকা।
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার হত্যার দায় থেকে হাসিনা কখনই মুক্তি পাবেন না: নজরুল ইসলাম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে খালেদা জিয়ার জানাজার আগে তার জীবন ও কর্ম তুলে ধরে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে আবদ্ধ ছিলেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন দেশনেত্রী। সমগ্র দেশবাসী সাক্ষী যে, হেঁটে তিনি কারাগারে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু নির্জন কারাগার থেকে তিনি বের হলেন চরম অসুস্থতা নিয়ে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের মতে পরে গৃহবন্দি থাকা চার বছরে তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা না দেওয়ায় তার অসুস্থতা ক্রমে বেড়েছে। ফলে এভাবে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো এ অপরাজেয় নেত্রীর। তাই এ মৃত্যুর দায় থেকে ফ্যাসিবাদী হাসিনা কখনো মুক্তি পাবেন না।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের কল্যাণে একের পর এক গ্রহণ করেছেন যুগান্তকারী সব কর্মসূচি। তার পরিকল্পনায় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনের পর বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিত পেয়েছিল ইমার্জিং টাইগার হিসেবে।
বক্তব্যে খালেদা জিয়ার জন্ম, পারিবারিক পরিস্থিতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর সংকটময় পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে উঠে আসা, পরবর্তীতে জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
রাজনীতি
মায়ের জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান
বিএনপির সদ্যপ্রয়াত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তাঁর বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ বুধবার বেলা ৩টার পর খালেদা জিয়ার জানাজা শুরুর আগে সবার কাছে মায়ের জন্য দোয়া চান তারেক রহমান।
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে খালেদা জিয়ার জানাজা হয়। জানাজায় অংশ নিতে আসা বিপুল মানুষের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা যাতে উনাকে (খালেদা জিয়া) বেহেশত দান করেন।’
তারেক রহমান বলেন, খালেদা জিয়া জীবিত থাকাকালে যদি কারও কাছ থেকে কোনো ঋণ নিয়ে থাকেন, দয়া করে তাঁরা যেন তাঁর (তারেক রহমান) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তা পরিশোধের ব্যবস্থা করবেন।
তারেক রহমান আরও বলেন, খালেদা জিয়া জীবিত থাকাকালে তাঁর কোনো ব্যবহারে, কোনো কথায় যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে মরহুমার পক্ষ থেকে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
বেলা ৩টা ৩ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা ৫ মিনিটে। জানাজা পড়ান বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
এর আগে বেলা পৌনে ৩টার দিকে জানাজা কার্যক্রম সঞ্চালনা শুরু করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি খালেদা জিয়ার জীবন, রাজনৈতিক সংগ্রাম, সাফল্য, নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দলমত-নির্বিশেষে সবার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান নিয়ে খালেদা জিয়া বিদায় নিলেন। তিনি রেখে গেলেন অনন্য উদাহরণ।
খালেদা জিয়াকে দাফন করা হবে তাঁর স্বামী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে।
রাজনীতি
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার মরদেহ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ বহনকারী গাড়ি মানিক মিয়া এভিনিউতে পৌঁছেছে।
এর আগে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ গুলশানে তারেক রহমানের বাসভবনে নেওয়া হয়। সেখানে পরিবারের সদস্য, স্বজন ও দলীয় নেতা-কর্মীরা বেগম খালেদা জিয়াকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানান।
আজ বুধবার বাদ জোহর দুপুর ২টার দিকে মানিক মিয়া এভিনিউতে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেলে শেরেবাংলা নগরে স্বামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
রাজনীতি
রুমিন ফারহানাসহ বিএনপির ৯ নেতা বহিষ্কার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে ৯ নেতাকে বহিষ্কার করেছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোটেক রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ শাহ আলম, হাসান মামুন, আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দে, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বাঞ্চারামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ।
এই নেতাদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই নেতাদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনটি শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। এ আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তবে মনোনয়ন না পেলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের শোক
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘ গভীর শোক প্রকাশ করছে।’
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ‘এই দুঃখজনক মুহূর্তে জাতিসংঘ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে তার সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছে।’
এদিকে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ‘খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া।




