আন্তর্জাতিক
অস্থায়ী ভিসার ৮২ পেশার তালিকা তৈরি করেছে যুক্তরাজ্য
শ্রমিক ঘাটতি মোকাবিলার লক্ষ্যে একটি নতুন অভিবাসন প্রকল্পের অধীনে অস্থায়ী কাজের ভিসার জন্য নতুন উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এ লক্ষ্যে অস্থায়ী কর্ম ভিসার জন্য মধ্য-দক্ষতার ৮২টি পেশার তালিকা প্রকাশ করেছে দেশটি।
ইংলিশ চ্যানেলে অনিয়মিত পথে নৌকায় অভিবাসী আগমন নিয়ে দেশটির ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। মতামত জরিপে পপুলিস্ট দল রিফর্ম ইউকের চেয়ে লেবার পার্টির পিছিয়ে থাকার কারণে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও চাপে পড়েছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত ভোটারদের মন জয়ের লক্ষ্যেই অভিবাসনের বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন স্টারমার।
পাশাপাশি মন্থর অর্থনীতি এবং কিছু খাতে কর্মী ঘাটতি সংকটও দেশটিতে তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে।
ব্রিটেনে যেসব কাজে অস্থায়ী ঘাটতি রয়েছে, সেই তালিকার ৮২টি পেশার সুপারিশ করেছে অভিবাসন বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি (এমএসি)। প্রতিবেদনে প্রয়োজনীয় যোগ্যতায় ছাড় দিয়ে এসব চাকরিতে বিদেশি কর্মীদের যুক্তরাজ্যে সীমিত প্রবেশাধিকার প্রদান করার সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটি বলেছে, ‘এমএসি যেসব পেশার সুপারিশ করবে, সেগুলোতে অভিবাসী শ্রমের প্রয়োজনীয়তা কমানো এবং স্থানীয় কর্মীদের সর্বাধিক ব্যবহারে গৃহীত পরিকল্পনাও উপস্থাপন করতে হবে।’
প্রস্তাবিত পেশার তালিকায় ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনিশিয়ান, ওয়েল্ডার, ফটোগ্রাফার, অনুবাদক এবং লজিস্টিক ম্যানেজারও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, যোগ্য অভিবাসী কর্মীদের তিন থেকে পাঁচ বছরের ভিসা দেওয়া যেতে পারে। তবে সরকার নীতি পরিবর্তন না করলে তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি না দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আবেদনকারীদের ইংরেজি ভাষায় ন্যূনতম দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে এবং নিয়োগকর্তাদের স্থানীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং নিয়োগের পরিকল্পনা জমা দিতে হবে।
২০২৬ সালের জুলাই মাসে পর্যালোচনার দ্বিতীয় ধাপে এই পেশার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
ক্যানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় একই ধরনের পরিকল্পনা বিদ্যমান রয়েছে। এসব দেশে স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশল ও দক্ষ বাণিজ্যে শ্রমঘাটতি পূরণের জন্য ভিসা প্রকল্প কার্যকর রয়েছে।
দুই দিনের ভারত সফরে স্টারমার ভারত সরকারের সঙ্গে ভিসা চুক্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এর আগে এই ইস্যুটির কারণে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক
ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপজুড়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে এই সপ্তাহে কমপক্ষে ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) উদ্ধার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও প্রতিবেশী মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডেও টানা ভারি বৃষ্টিতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
উত্তর সুমাত্রা প্রদেশে এখন পর্যন্ত ৬২ জন নিহত এবং ৯৫ জন আহত হয়েছেন—যার মধ্যে গুরুতর ও সামান্য আহত দু’ধরনের মানুষই রয়েছেন।
স্থানীয় পুলিশ মুখপাত্র ফেরি ওয়ালিনতুকান বলেন, অন্তত ৬৫ জন এখনও নিখোঁজ, যাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
পাশের পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশে কমপক্ষে ২২ জন মারা গেছেন এবং ১২ জন নিখোঁজ বলে জানিয়েছে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
ওয়ালিনতুকান বলেন, উত্তর সুমাত্রায় লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়াই এখন কর্তৃপক্ষের প্রধান কাজ। তবে কিছু এলাকায় যাতায়াত ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্ধারকার্যে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আবহাওয়া ভালো হলে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সিবোলগা শহরে একাই ৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম প্রান্তের আচেহ প্রদেশেও ভারি বর্ষণে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে হয়েছে এবং কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ কোম্পানি জানিয়েছে, আকস্মিক বন্যায় একটি ট্রান্সমিশন টাওয়ার ধসে পড়ার পর থেকে তারা ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ পরিষেবা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে।
ইন্দোনেশিয়ায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে বর্ষাকাল, আর এ সময় ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা ও পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।
কয়েক দিনের মধ্যে সৃষ্ট একটি শক্তিশালী মৌসুমি ঝড় এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়ের ধরণ ও শক্তি বদলে যাচ্ছে—বর্ষাকাল দীর্ঘ হচ্ছে, বৃষ্টিপাত বাড়ছে এবং আকস্মিক বন্যা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
এর আগে এই মাসেই মধ্য জাভায় ভারি বৃষ্টিজনিত ভূমিধসে কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত এবং ১৩ জন নিখোঁজ হন।
আন্তর্জাতিক
হংকংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত বেড়ে ১২৮
হংকংয়ের কয়েকটি বহুতল আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৮ জনে দাড়িয়েছে। আগুনে পুড়ে গুরতর আহত হয়েছে আরও ৭৬ জন। এ ঘটনায় এখনো ২০০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) তাই পো জেলায় অবস্থিত আটটি ভবনের মধ্যে সাতটিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হংকংয়ের প্রশাসনিক প্রধান জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা বলেন, আমাদের সবকিছুই ছিল এই অ্যাপার্টমেন্টে। এখন সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে—আর কী রইলো আমাদের?
সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, এসব ভবনে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দা থাকতেন। তবে অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবনগুলোতে ঠিক কতজন ছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আগুন কীভাবে শুরু হয়েছিল তা নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে— ভবনের বাইরের অংশে ব্যবহৃত অগ্নি-প্রতিরোধী নয় এমন সামগ্রী আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ হতে পারে।
ঘটনার পর তিনজন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাকে অবহেলাজনিত হত্যার সন্দেহে আটক করেছে পুলিশ।
আন্তর্জাতিক
১৯ দেশের গ্রিন কার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্র
১৯ দেশের গ্রিন কার্ডধারীদের নথি পুনরায় পরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলির ঘটনায় ‘উদ্বেগজনক’ দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউএসসিআইএস পরিচালক জো এডলো বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানান, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে উদ্বেগজনক প্রতিটি দেশের প্রত্যেক বিদেশির গ্রিন কার্ডের ব্যাপক ও কঠোর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেছি।
তালিকায় যে ১৯ দেশ
ইউএসসিআইএস সিএনএনকে জানায়, জুন মাসে প্রকাশিত প্রেসিডেন্টের ঘোষণায় তালিকাভুক্ত ১৯টি দেশই পুনর্মূল্যায়নের আওতায় পড়বে। দেশগুলো হলো— আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন, বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।
হোয়াইট হাউস চলতি বছরের জুন মাসে একটি তালিকা প্রকাশ করে। এ সময় বলা হয়, নিরাপত্তা উদ্বেগ, ভিসা ওভারস্টে রেট এবং বিদেশি নাগরিকদের ‘সন্ত্রাসবাদ ও জননিরাপত্তা ঝুঁকি’ এ তালিকার প্রধান কারণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার যে ব্যক্তি দুই গার্ড সদস্যকে গুলি করে, তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম রহমানুল্লাহ লাখানওয়াল। তিনি আফগান নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। এ ঘটনার পরই ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর তৎপরতা শুরু করে।
লাখানওয়াল ২০২১ সালে ‘অপারেশন অ্যালাইজ ওয়েলকাম’ কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের, এমনকি সিআইএ-এর সঙ্গেও কাজ করেছিলেন। তিনি ২০২৪ সালে আশ্রয় আবেদন করেন এবং ট্রাম্প প্রশাসন ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে তা অনুমোদন করে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ঘটনার পর আফগান নাগরিকদের সব অভিবাসন আবেদন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের সময়ে অনুমোদিত সব আশ্রয় মামলাও পুনরায় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯০,হাজারের বেশি আফগান যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসিত হয়েছেন।
এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, আমাদের দেশে এমন বিপদ বর্তমান—আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হুমকি। তিনি দাবি করেন, বাইডেন প্রশাসন ২০ মিলিয়ন অজানা ও যাচাইবিহীন বিদেশিকে দেশে প্রবেশ করতে দিয়েছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, বাইডেনের অধীনে আফগানিস্তান থেকে আসা প্রত্যেক বিদেশিকে পুনরায় পরীক্ষা করতে হবে এবং যে কেউ আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর, তাকে অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গ্রিন কার্ড একজন বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি আশ্রয় বা শরণার্থী প্রোগ্রাম থেকে আলাদা, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে এক বছর থাকা শরণার্থীদের পরে গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হয়।
আন্তর্জাতিক
তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হবে: ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ‘তৃতীয় বিশ্বের দেশ’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থগিত করার পরিকল্পনা করছেন। তবে তিনি তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে কাদের বুঝিয়েছেন, সেটি পরিষ্কার করেননি।
ওয়াশিংটনে একজন আফগান নাগরিক দুজন ন্যাশনাল গার্ড সেনাকে গুলি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার এক দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প এ ঘোষণা দিলেন।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা পুরোপুরি স্থিতিশীল করার সুযোগ করে দিতে আমি তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিত করব।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়ে আরও লিখেছেন, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের আমলে দেওয়া ‘লাখ লাখ’ অভিবাসনের অনুমোদন বাতিল করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রকৃত সম্পদ নন, এমন যে কাউকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, ১৯টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা নাগরিকদের গ্রিনকার্ড পর্যালোচনা করে দেখা দেখা হবে।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা বিভাগের (ইউএসসিআইএস) প্রধান জোসেফ এডলো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ঝুঁকিপূর্ণ বা উদ্বেগের তালিকায় থাকা ১৯টি দেশ থেকে আসা প্রত্যেক নাগরিকের গ্রিনকার্ড কঠোরভাবে পর্যালোচনা করতে তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
হংকংয়ে বহুতল ভবনে আগুনে নিহত বেড়ে ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯
হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকায় পাশাপাশি অবস্থিত কয়েকটি বহুতল আবাসিক ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ৪৫ জন। এছাড়া এখনও নিখোঁজ আছেন ২৭৯ জন। আগুনের সুনির্দিষ্ট কারণও জানা যায়নি এখন পর্যন্ত।
এদিকে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ‘হত্যার’ অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শক।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) নিজেদের সবশেষ আপডেটে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো তদন্তাধীন হলেও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে সংস্কার কাজ চলছিল ও জানালাগুলোতে পলিস্টাইরিন বোর্ড লাগানো ছিল। এগুলোই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলেন, আগুন অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের ভবনগুলোতেও পৌঁছে যায়, যার একটি কারণ বাঁশের স্ক্যাফোল্ডিং (অস্থায়ী কাঠামো যা শ্রমিক ও উপকরণকে উঁচু স্থানে কাজ করতে সহায়তা করে।) তদন্তে পুলিশ ভবনের বাইরে জাল ও সুরক্ষা সামগ্রী পেয়েছে, যেগুলো আগুন নিরোধক বলে মনে হয়নি। এছাড়া জানালাগুলোতে স্টাইরোফোমও পাওয়া গেছে।
ঘটনার পরের দিন সকালেও টাওয়ার ব্লকগুলোর কিছু অংশ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। আটটি ভবনের মধ্যে চারটির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, পুরো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পুরো দিন লেগে যাবে।
এরই মধ্যে শত শত বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়ে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। যারা পুনর্বাসনের প্রয়োজন, তাদের জন্য জরুরি আবাসন বরাদ্দ করা হচ্ছে।
হংকং ফায়ার ডিপার্টমেন্ট আগুনটিকে লেভেল-ফাইভ অ্যালার্ম হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, যা সর্বোচ্চ সতর্কতার স্তর। হংকংয়ে সর্বশেষ এমন শ্রেণির অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল ১৭ বছর আগে। ১৯৯৬ সালে হংকংয়ের কোউলুন এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লেগে ৪১ জন নিহত হন। গতকালের ঘটনার আগে এটিই ছিল শহরটির সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।
স্থানীয় পুলিশের মুখপাত্র জানান, আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা চরম অবহেলা করেছেন। তাদের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে ও আগুন নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে।
এমকে



