আইন-আদালত
এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া ডাক্তার নয়: হাইকোর্ট

এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ আজ বুধবার (১২ মার্চ) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথিকা হোসেনের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার নিয়ে করা রিটটিও খারিজ করা হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, ‘আজ থেকে কোনো মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাক্তার প্রিফিক্স ব্যবহার করতে পারবেন না। তাদের ক্ষেত্রে কোন প্রিফিক্স প্রযোজ্য হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’
২০১৩ সালে ডিএমএফ ডিগ্রিধারী সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের (স্যাকমো) কয়েকজন বিএমডিসি আইনকে চ্যালেঞ্জ করে করে নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করার জন্য আদালতে একটি রিট দায়ের করেন। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল এই রিটের প্রথম শুনানি হয়, তারপর থেকে রিটটি আদালতে ৬৭ বার কজ লিস্টে আসে। তবে ব্যাখ্যাহীন কারণে এর ওপর শুনানি হয়নি।
সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত ২৭৩০/২০১৩ এবং ডাক্তার পদবি সংক্রান্ত ‘বিএমডিসি অ্যাক্ট ২০১০ এর ধারা ২৯’কে চ্যালেঞ্জ করে ১৩০৪৬/২০২৪—এই দুটি রিটের শুনানি হয়। ওই দিন রিটটির ৯১তম শুনানি ছিল। আদালত উভয় রিটের রায় ঘোষণার জন্য আজ বুধবার (১২ মার্চ) দিন ধার্য করেন।

আইন-আদালত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা ছাড়া) বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এছাড়া হত্যাসহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগের মামলার প্রসিকিউশনের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও গতিশীল করতে কাজ করবে বিশেষ কমিটি।
সোমবার (২০ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে হত্যার অভিযোগে মোট ৮৩৭টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি মামলার বিচারকার্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন ফৌজদারি আদালতে পুলিশ এরই মধ্যে ১৯টি হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে। এসব হত্যা মামলা ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০০’ এর ১০ ধারার বিধান অনুযায়ী বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি হত্যাসহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রসিকিউশনের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও গতিশীল করতে আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
এ কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে দেশব্যাপী চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাসহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার পূর্ণাঙ্গ তালিকা সংগ্রহ করবে (মামলার বর্তমান পর্যায় উল্লেখসহ)।
এমন মামলার মধ্যে যেসব মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছে, সেসব মামলায় (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা ছাড়া) প্রসিকিউশনের কার্যক্রম পরিচালনায় বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করবে (যদি থাকে) এবং ওই সমস্যা নিরসনে কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠাবে। কমিটি তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে ভূক্তভোগী পরিবার ও দেশবাসীকে সময়ে সময়ে জানাবে বলেও আইন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আইন-আদালত
হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চাইলেন চিফ প্রসিকিউটর

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘অপরাধের প্রাণভোমরা’ উল্লেখ করে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তার সর্বোচ্চ শাস্তি (চরম দণ্ড) চাইলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
প্রসিকিউশন পক্ষে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের শেষ পর্যায়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এই আবেদন জানান। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালকে বলেন, সব অপরাধের প্রাণভোমরা শেখ হাসিনা। সে অনুশোচনাহীন এক হৃদয়হীন অপরাধী। তার সর্বোচ্চ শাস্তি (চরম দণ্ড) হওয়া উচিত। চরম দণ্ড থেকে তার কোনো অনুকম্পা পাওয়ার সুযোগ নেই। ১৪০০ মানুষ হত্যার জন্য তার ১৪শ বারই ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা যেহেতু সম্ভব নয়, তাই তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা উচিত, যেন ভবিষ্যতে কেউ তার নিজ দেশের নাগরিকদের এভাবে হত্যা করতে না পারে।
সেই সঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান দমনে অপরাধের ‘গ্যাং অব ফোর’ এর একজন উল্লেখ করে কোনো অনুকম্পা না দেখিয়ে তারও সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেন।
আর এই মামলায় রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন যেহেতু আইন অনুযায়ী তথ্য দিয়ে আদালতকে সহযোগিতা করেছেন, সত্য উদঘাটনে সহায়তা করেছেন, তাই তার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালই যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর। এছাড়াও জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের অপরাধীদের সম্পদ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর।
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানিতে পঞ্চম দিনে এসে প্রসিকিউশন পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী সোমবার (২০ অক্টোবর) দিন ঠিক করা হয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর রাষ্ট্র তথা প্রসিকিউশন পক্ষ আবার তাদের (রিপ্লাই) জবাব দেবেন। যদিও পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
এই মামলায় মোট তিনজন আসামি। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বাইরেও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রয়েছেন। মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী হিসেবে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এরপরে সংবাদ সম্মেলনে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে অপরাধ সংঘটনের পর পালিয়ে গেলেও ভারত থেকে ক্রমাগত আন্দোলনকারীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যারা বিচার চেয়ে মামলা করেছেন তাদেরও নির্মূলের কথা বলেছেন। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, এত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরও তার মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। তিনি একজন হার্ডনট ক্রিমিনালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সুতরাং এই ট্রাইব্যুনালের মামলায় তিনি যেহেতু সব অপরাধীদের প্রাণভোমরা ছিলেন, তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড দেওয়া শ্রেয়। তাকে যদি চরম দণ্ড না দেওয়া হয় এটা অবিচার করা হবে।
আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গ্যাং অব ফোরের সদস্য ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তার বাসায় বসে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ড্রোন ওড়ানোসহ হেলিকপ্টার থেকে মারণাস্ত্র ছোড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি নিজে গ্রাউন্ডে গিয়ে গিয়ে দেখেছেন সঠিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে কি না। তাকে ভিডিও দেখানো হয়েছে। তিনি কমান্ড স্ট্রাকচারে দ্বিতীয় পজিশনে ছিলেন। এ কারণে তার ব্যাপারেও চরম দণ্ড চেয়েছি ট্রাইব্যুনালে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন যেহেতু আইন অনুযায়ী আদালতকে তথ্য দিয়ে বা সত্য উদঘাটনের সাহায্য করেছেন তার ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। এছাড়া যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তারা হয়তো পরিবারের আলোর প্রদীপ ছিলেন। ভবিষ্যতে পরিবারের দায়িত্ব নিতেন তারা। সুতরাং এসব পরিবারের ক্ষতিপূরণের জন্য আসামিদের সম্পদ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বলে আদালতের কাছে আমরা আদেশ চেয়েছি।
এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া ঐতিহাসিক উইটনেস হিসেবে সাক্ষী দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন সাক্ষী।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানি করছেন। সেই সঙ্গে অন্য প্রসিকিউটররাও শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
আইন-আদালত
হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আজ

জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে আজ।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল ১- এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হবে।
গতকাল শুরুতেই যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। সেই সাথে বিচারকাজ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এদিন শুরুতেই আওয়ামী লীগের ৭২’র দুঃশাসনকাল তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। বলেন, ‘সেখান থেকেই শুরু হয় ফ্যাসিবাদের উত্থান। বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে রক্ষীবাহিনী দিয়ে ৩০ হাজার মানুষকে যে প্রক্রিয়ায় হত্যা করা হয় একই পদ্ধতির টানা ১৭ বছর প্রয়োগ করেন হাসিনা।’
আরও উঠে আসে বিচারবিভাগ ধ্বংস, পিলখানা হত্যাকান্ড ঘটিয়ে সসামরিক বাহিনীর মনোবল ধ্বংস, গুম ও ক্রসফায়ারের ইতিহাস। আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায় প্রসিকিউশন।
গুমের মামলায় সেনাসদস্যদের গ্রেফতারের অগ্রগতির বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। শুনানিতে বিচারকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে সুনির্দিষ্ট বিধান থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে, ট্রাইব্যুনাল ২-এ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার ১০ম দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ আজ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, গত বুধবার মামলার ৫৪তম ও শেষ সাক্ষী তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা সম্পন্ন হয়। মামলার অপর দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আইন-আদালত
ট্রাইব্যুনালে লাইভ চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বলেন, সাইবার হামলার পর ফেসবুক পেজটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে, শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিজেদের যুক্তি তুলে ধরার কথা রয়েছে। সবশেষে প্রসিকিউশন যুক্তি খণ্ডন করবে। আগামী কয়েক কার্যদিবস এই যুক্তিতর্ক চলবে। এরপর মামলাটি রায়ের পর্যায়ে যাবে।
আইন-আদালত
হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ, হবে সরাসরি সম্প্রচার

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ।
আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, প্রথমে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে প্রসিকিউশন। এরপর নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। শেষ পর্যায়ে যুক্তি খণ্ডন করবে প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষ। এ ধাপ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হবে। তবে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
গত ৮ অক্টোবর মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে তৃতীয় দিনের মতো জেরা শেষ করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপর যুক্তিতর্কের জন্য দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল।
সবমিলিয়ে মোট ২৮ কার্যদিবসে এ মামলায় ৫৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার কার্যক্রম শেষ হয়। ৭ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা শেষ করেন আমির হোসেন। ৬ অক্টোবর এ জেরা শুরু হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। তিনি এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম বা সর্বশেষ সাক্ষী। জবানবন্দিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে গত বছরের জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যকাণ্ড ও ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিনের মতো জবানবন্দি দেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। সেদিনও বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি নিজের জব্দ করা জুলাই আন্দোলনের নৃশংসতা নিয়ে যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রদর্শন করা হয় ট্রাইব্যুনালে। এছাড়া গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। এমনকি জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর তিন লাখ পাঁচ হাজার গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন তিনি।
২৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীরের জবানবন্দি শুরু হয়। ওই দিন তার জব্দ করা ১৭টি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত হয়। এসব ভিডিওতে জুলাই-আগস্টের নির্মমতা ফুটে ওঠে। ২৪ সেপ্টেম্বর এ মামলার ২২তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন সাক্ষ্য দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। পরে তাকে জেরা করেন আমির হোসেন।
মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। নিজের দায় স্বীকার করে আগেই হয়েছেন রাজসাক্ষী। এছাড়া সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।