ধর্ম ও জীবন
মদের বোতলে রাখা পানি পানের ইসলামিক বিধান কী?
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে মদ সম্পূর্ণ হারাম বা নিষিদ্ধ। কোরআনে যেসব বিষয়কে স্পষ্টভাবে হারাম বলা হয়েছে তার মধ্যে মদ অন্যতম। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ বলেছেন, হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা ও লটারির তীর তো কেবল ঘৃণার বস্তু, শয়তানের কাজ। কাজেই তোমরা সেগুলো বর্জন কর-যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদা-৯০)
কোরআনের পাশাপাশি রাসুল (স.) এর অনেক হাদিসেও মদ পান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেক নেশাদ্রব্যই মদ, আর যাবতীয় মদই হারাম। (মুসলিম ও মেশকাত, হাদিস : ৩৬৩৮); আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, মদ পানকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৩৭৬)
এখন প্রশ্ন হলো, মদ যেহেতু হারাম, তাহলে যে বোতলে মদ রাখা হয়—সেসব বোতলে পানি পান করা কি বৈধ? বিভিন্ন সময় দেখা যায়, বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট বা অতিথিশালায় মদের বোতলে রাখা পানি পান করতে দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় করণীয় কী আমাদের?
এ প্রশ্নের সহজ জবাব হলো, যদি ভালোভাবে মদের বোতল পরিষ্কার করা হয়, এর মধ্যে মদের কোনো চিহ্ন না থাকে, তাহলে এমন পাত্র বা বোতলে রাখা পানি পান করা বৈধ।
ইসলামের প্রথম যুগে মদের ব্যাপারে কোনও বিধান ছিল না। সাহাবীদের অনেকেই মদ পান করতেন। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে মদ হারাম করে ইসলাম। সে সময় মদের পাত্রে রাখা পানি পান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। মূলত তিনটি কারণে মদের পাত্রে রাখা পানি পান করতে নিষেধ করা হয়েছিল।
১। সেসব পাত্রে মদের চিহ্ন অবশিষ্ট ছিল।
২। সে সময় সবেমাত্র মদ হারাম করা হয়েছিল। তাই মদের পাত্রে পানি পান করলে মদের কথা স্মরণ হয়ে যেতে পারত। তাই সতর্কতামূলক এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
৩। মদের প্রতি যেন পরিপূর্ণ ঘৃণা সৃষ্টি হয়, সেজন্য তখন মদের পাত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে যখন মদ হারাম হওয়ার বিষয়টি সবার জানা হয়ে যায়, এবং সাহাবিদের মধ্যে মদের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা জন্মে যায়, তখন ওই সব পাত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করে তাতে রাখা পানি পান ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। (তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম : ৩/৩৫১)
এ প্রসঙ্গে রাসুল (স.) এর একটি হাদিস পাওয়া যায়। হজরত বুরাইদা (রা.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের কিছু পাত্রের ব্যাপারে (মদ রাখার পাত্র) নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলাম। আসলে পাত্র কোনো কিছুকে হালাল বা হারাম করতে পারে না। তবে প্রতিটি মাদকদ্রব্য হারাম। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর : ৫৩২৬, তিরমিজি, হাদিস নম্বর : ১৮৬৯)
এই হাদিস থেকে জানা যায়, মদের বোতল বা পাত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করে তাতে পানি রাখলে সে পানি পান করা বৈধ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের নতুন তারিখ ঘোষণা
বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম পর্বের ইজতেমা টঙ্গী ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি।
দ্বিতীয় পর্ব শেষে ১৮ ফেব্রুয়ারি মাগরিবের ওয়াক্তের মধ্যে ময়দান প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবে।
সিনিয়র সচিব ও শুরায়ী নিজামের মুরব্বিদের উপস্থিতিতে ইজতেমা অনুষ্ঠানের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা দুইভাগে আয়োজিত হবে। শুরায়ী নিজামী তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের অনুসারীরা দুইভাগে ইজতেমা অনুষ্ঠানের পর ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার মাগরিবের ওয়াক্তের মধ্যে ময়দান প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে করার ঘোষণা দিয়েছেন শুরায়ী নেজাম বা মাওলানা জুবায়েরপন্থীরা। গণমাধ্যমকে এ খবর দিয়েছেন জুবায়েরপন্থীদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।
এর আগে জুবায়েরপন্থীদের শুধুমাত্র এক পর্বের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। অন্যদিকে মাওলানা সাদপন্থীদের ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের বিশেষ পাঁচ বৈশিষ্ট্য
মুসলমানদের জন্য জুমার দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ এ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তাই যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করতে আসবে সে যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। মিসওয়াক করাও তোমাদের কর্তব্য। (সুনানে ইবনে মাজা: ৮৩)
জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদার অন্যতম কারণ হলো, এ দিন সৃষ্টিকুলের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে ও ঘটবে। এভাবেও বলা যায় যে জুমার দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে আল্লাহ জুমার দিনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন এবং আরও কিছু কাজের জন্য এ দিনটিকে নির্ধারণ করে রেখেছেন। একটি হাদিসে জুমার দিন ঘটিত ও ঘটিতব্য পাঁচটি বিশেষ ঘটনার কথা উল্লেখ করে নবিজি (সা.) বলেন, জুমার দিন দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। জুমার দিন আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে মহান দিন। এ দিন আল্লাহ তাআলার কাছে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান। জুমার দিনের বিশেষ পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ দিন আল্লাহ তাআলা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। এ দিনই তাকে জান্নাত থেকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এ দিনই আল্লাহ তাকে মৃত্যু দিয়েছেন। জুমার দিন একটা সময় আছে, যে সময় বান্দা আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা-ই দান করবেন, যদি না সে হারাম কোনো কিছু প্রার্থনা করে। কেয়ামতও সংঘটিত হবে জুমার দিন। জুমার দিন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতারা কেয়ামতের আশঙ্কায় ভীত-সন্ত্রস্ত থাকেন। উদ্বিগ্ন থাকে পৃথিবী, আকাশ, বাতাস, পাহাড়, পর্বত, সাগর সবকিছু। (মুসনাদে আহমাদ: ১৫৫৪৮, সুনানে ইবনে মাজা: ১০৮৪১)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এ দিন আল্লাহ তাআলা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। তাকে দুনিয়াতে নামানো হয়েছে এ দিন। তার মৃত্যুও হয়েছে এ দিন। তার তাওবা কবুল হয়েছে এ দিন। এ দিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষ ও জিন ছাড়া এমন কোনো প্রাণী নেই, যা কেয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত চিৎকার করতে থাকে না। জুমার দিন একটা সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সে সময় নামায আদায় করে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১০৪৬, সুনানে নাসাঈ: ১৪৩০)
অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ এ দিনটিকে মুসলমানদের বিশেষ দিন হিসেবে নির্ধারণ করে আল্লাহ মুসলমানদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমরা সর্বশেষ উম্মাত কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা হব অগ্রগামী। যদিও সব উম্মতকে কিতাব দেয়া হয়েছে আমাদের আগে, আর আমাদের কিতাব দেয়া হয়েছে সকল উম্মাতের শেষে। যে দিনটি আল্লাহ আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, সে দিন সম্পর্কে তিনি আমাদের হিদায়াতও দান করেছেন। সে দিনের ব্যাপারে অন্যান্যরা আমাদের পিছনে রয়েছে, (যেমন) ইহুদিরা (আমাদের) পরের দিন (শনিবার) এবং খৃষ্টানরা তাদেরও পরেন দিন। (রবিবার) (সহিহ মুসলিম: ১৮৬৩)
আরেকটি হাদিসে এসেছে, পূর্ববর্তী আহলে কিতাবরা মতানৈক্যের কারণে এ শ্রেষ্ঠ দিন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাদের বিশেষ দিন হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে শনিবার ও রবিবার। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমাদের আগমন সবার শেষে। কিন্তু আমরা কিয়ামতের দিবসে থাকব সবার প্রথমে। আমরা জান্নাতে প্রবেশকারীদের মধ্যে অগ্রগামী থাকব। তবে তাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে এবং আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের পর। তারা মতবিরোধ করেছে, আর আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই সত্যের হিদায়াত দিয়েছেন যা নিয়ে তারা মতভেদ করেছে। এটাই সেই দিন— যে সম্পর্কে তারা মতবিরোধ করেছে এবং আল্লাহ আমাদেরকে এ ব্যাপারে হেদায়াত করেছেন। আমাদের বিশেষ দিন জুমার দিন। ইহুদিদের পরের দিন, খৃষ্টানদের তার পরের দিন। (সহিহ মুসলিম: ১৮৫৩)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
পথহারা ব্যক্তিকে পথের সন্ধান দেওয়ার সওয়াব
পথ হরিয়ে ফেলা ব্যক্তিকে পথের সন্ধান দেওয়া মানুষের জন্য উপকারী ও মহৎ কাজ। নবিজি (সা.) এ কাজটিকে সদকা বলেছেন। এ ছাড়াও মানুষের উপকারে আসে এ রকম অনেক কাজকেই সদকা গণ্য করেছেন। আবু জর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমার ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে দেখা করা সদক, নেক কাজের নির্দেশ ও খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করা সদকা, পথহারা প্রান্তরে কোনো মানুষকে পথ বলে দেওয়া, কোনো অন্ধ বা দুর্বল দৃষ্টিশক্তির মানুষকে সাহায্য করা সদকা, পথের কাঁটা বা হাড় সরিয়ে দেয়া, নিজের বালতি থেকে অন্য কোন ভাইয়ের বালতিতে পানি দিয়ে ভরে দেয়াও সদকা। (সুনানে তিরমিজি)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, শরীরের প্রতিটি জোড়ার ওপর প্রতিদিন একটি করে সাদকা রয়েছে। কোনো ব্যক্তিকে তার সওয়ারির ওপর উঠতে সাহায্য করা, অথবা তার মাল-সরঞ্জাম তুলে দেওয়া সাদকা। উত্তম কথা বলা ও নামাজের উদ্দেশ্যে প্রতিটি পদক্ষেপ সদকা। পথিককে রাস্তা বলে দেওয়াও সদকা। (সহিহ বুখারি)
এ কাজগুলো করতে অনেক বেশি পরিশ্রম হয় না। অর্থকড়িও ব্যয় হয় না। শুধু সদিচ্ছা থাকলেই এভাবে মানুষের উপকার করে সদকার সওয়াব অর্জন করা যায়। যারা ভাবেন অর্থনৈতিক সামর্থ্যের অভাবে বেশি সদকা করতে পারছেন না, সম্পদশালীদের চেয়ে সওয়াবে পিছিয়ে থাকছেন, তারা এভাবে সদকার সওয়াব অর্জন করতে পারেন। আবু জর (রা.) বলেন, আমি একদিন আল্লাহর রাসুলকে (সা.) বললাম, সম্পদশালীরা তো সওয়াবের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে এবং হজ পালন করে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, তোমরাও তো নামাজ পড়ো, রোজা রাখো এবং হজ পালন করো। আমি বললাম, তারা দান-সদকা করে, কিন্তু আমরা দান করতে পারি না।
নবিজি (সা.) বললেন, তোমার জন্যও সদকার ব্যবস্থা আছে। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো সদকা, পথহারা ব্যক্তিকে পথ দেখানো সদকা, দুর্বল ব্যক্তিকে তোমার শক্তি দিয়ে সাহায্য করা সদকা এবং বোবা বা বাকশক্তিহীন ব্যক্তির কথা অন্যদের কাছে স্পষ্ট করে বোঝানোও সদকা। (মুসনাদে আহমদ)
পথহারাকে পথ দেখানোসহ যে কোনো ভাবে যে ব্যক্তি অন্যকে সাহায্য করে, আল্লাহ তাআলা তাকে সাহায্য করেন। অন্যের বিপদে সাহায্য করলে আল্লাহ তাআলা বিপদ দূর করে দেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো ঈমানদারের দুনিয়া থেকে কোন বিপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ তা’আলা বিচার দিবসে তার কোনো বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোন দুঃস্থ লোকের অভাব দূর করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দুরবস্থা দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবে আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাই এর সহযোগিতায় আত্মনিয়োগ করে আল্লাহ ততক্ষণ তার সহযোগিতা করতে থাকেন। (সহিহ মুসলিম)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে নবিজি (সা.) বিপদে-আপদে কারো পাশে দাঁড়ানো, কোনো অভাবগ্রস্তের প্রয়োজন পূরণ করাকে মসজিদে নববিতে এক মাস ইতিকাফের করার চেয়েও উত্তম বলেছেন। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই ব্যক্তি যে মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়তম আমল হলো, একজন মুসলমানের হৃদয় আনন্দে পরিপূর্ণ করা অথবা তার কোনো কষ্ট দূর করে দেওয়া। তার পক্ষ থেকে তার ঋণ আদায় করে দেওয়া অথবা তার ক্ষুধা দূর করে দেওয়া। এই মসজিদে এক মাস ইতিকাফ করার চাইতে কোনো মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করা আমার কাছে বেশি পছন্দের। (তাবরানি)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের যেসব আমলে গুনাহ মাফ হয়
জুমার দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গোসল করে মসজিদে গিয়ে উত্তমরূপে জুমার নামাজ আদায় অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। এ আমলে সওয়াব লাভ হওয়ায় পাশাপাশি পূর্ববর্তী জুমা পর্যন্ত গুনাহও মাফ হয়ে যায়। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيبٍ ثُمَّ رَاحَ فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ، فَصَلَّى مَا كُتِبَ لَهُ ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الإِمَامُ أَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى
যে ব্যাক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৯১০)
এ হাদিসে জুমা আদায়ের এই অপরিসীম ফজিলত লাভের শর্ত হিসেবে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ৬টি করণীয় ও ২টি বর্জনীয় কাজের কথাও বলেছেন। করণীয় কাজগুলো হলো,
১. জুমার নামাজের প্রস্তুতি হিসেবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে ভালোভাবে গোসল করুন।
২. দাঁত ব্রাশ/ মিসওয়াক করুন, সম্ভব হলে সুগন্ধী ব্যবহার করুন এবং উত্তম পোশাক পরিধান করুন।
৩. জুমার নামাজের জন্য দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করুন। ইমাম খুতবা শুরু করার আগে অবশ্যই মসজিদে উপস্থিত হোন।
৪. ইমাম খুতবা শুরু করার আগে মসজিদে পৌঁছতে পারলে তাহিয়াতুল মসজিদ বা দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করুন।
৫. খুতবা শুরু হলে মনযোগ দিয়ে খুতবা শুনুন।
৬. উত্তমরূপে জুমার নামাজ আদায় করুন।
বর্জনীয় ২টি কাজ হলো
১. মসজিদে গিয়ে অন্যদের কষ্ট দিয়ে কাতার ডিঙ্গিয়ে সামনে যাবেন না। জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার আগ্রহ ও চেষ্টা থাকা উচিত। কিন্তু সেজন্য আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হতে হবে। মসজিদে পরে উপস্থিত হয়ে অন্য মুসল্লিদের ডিঙিয়ে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করা যাবে না।
২. খুতবার সময় কথা বলবেন না। মনযোগ দিয়ে খুতবা শুনুন। অন্য কাউকে চুপ থাকতে বলার প্রয়োজন হলেও ইশারায় বলুন, আওয়াজ করে নয়।
এই সহজ নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে মনে রেখে পালন করলে আশা করা যায় আমরা জুমা আদায়ের অপরিসীম ফজিলত লাভ করবো। আল্লাহর আমাদের সওয়াব দান করবেন এবং পূর্ববর্তী সপ্তাহের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
রোজা ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
চলতি বছরের পবিত্র রমজান মাস ও ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটি। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী ১ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আরব আমিরাতের অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইব্রাহিম আল জারওয়ান বলেন, আর মাত্র সাত সপ্তাহের অপেক্ষার পরই শুরু হবে ইবাদতের মাস রমজান।
আরবি ১২ মাসের মধ্যে নবমতম মাস হলো রমজান। এই মাসটিতে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজা রাখেন বিশ্বের সব মুসলিম। এছাড়া এই মাসটি অন্যান্য ইবাদত ও দান সদকা দেওয়ার মাধ্যমে কাটান তাঁরা।
এবারের রমজান মাসটি যদি ২৯ দিনের হয়। তাহলে আগামী ৩০ মার্চ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় ঈদুল ফিতর পালিত হবে। অপরদিকে ৩০ দিনের হলে ৩১ মার্চ হবে ঈদ।
কাফি