শিল্প-বাণিজ্য
ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৭.৭২ শতাংশ

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রপ্তানি আয় ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই মাসে ছিল ৩ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪) রপ্তানি আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং উক্ত সময় আয় হয়েছে ২৪ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার যা আগের বছর ছিল ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
ডিসেম্বর মাসে পোশাক খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ছিল ৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আয় হয়েছে ১৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি আয়ের চিত্র
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে হিমায়িত এবং জীবন্ত মাছ থেকে রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক ০১ শতাংশ বেড়ে ২৬৪ মিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা গত বছর ছিল ২১৭ মিলিয়ন।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪) চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ৫৭৭ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা গত বছর ছিল ৫২৩ মিলিয়ন ডলার।
কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৯৬ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি।
পাট ও পাটজাত পণ্যে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং আয় হয়েছে ৪১৭ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ছিল ৪৫৪ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করে ১৫৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা গত বছরের ১২২ মিলিয়নের তুলনায় ২৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১২ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে ১১৪ দশমিক ৪২ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে।
চামড়ার জুতা রপ্তানি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে এবং ৩৫৩২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২৭০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু চামড়াজাত পণ্যে ১১ দশমিক ১০ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের ১৮২ মিলিয়ন ডলারের বিপরীতে এ খাত আয় করেছে ১৬২ মিলিয়ন ডলার।
কৃত্রিম চামড়ার পাদুকা থেকে রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে, যা ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ। এই উদীয়মান খাত আয় করেছে ২৭৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৯৭ মিলিয়ন ডলার।
হোম টেক্সটাইল খাতে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে ৪১১ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৮১ মিলিয়ন ডলার।
যা বলছেন রপ্তানিকারকরা
স্নোটেক্সট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ বলেন, মূলত বিশ্বব্যাপী পোশাক ক্রেতারা চীন থেকে তাদের ক্রয় স্থানান্তর করার চেষ্টা করছে। এবং তারা সোর্সিং হাব হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেয়। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রপ্তানি আয় বেড়েছে। অন্যদিকে, ক্রেতারাও তাদের কাজের আদেশ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে স্থানান্তরিত করছে, এটি বৃদ্ধির আরেকটি কারণ
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, কাজের আদেশ প্রবাহ ভালো হওয়ায় আগামী মাসে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো নতুন মজুরি জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে। যদি মজুরি বৃদ্ধি নির্মাতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং ব্যবসা করার খরচ বাড়ায় তবে এটি প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে।
বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, বৈশ্বিক বাজারে ক্রিসমাস ডে, ব্ল্যাক ফ্রাইডে, নিউ ইয়ারে পোশাকপণ্যের চাহিদা বাড়ে। ফলে এ সময়ে বেশি পণ্যের জাহাজীকরণ হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে রপ্তানি বাড়ে। তবে আশার কথা হলো এবছর কাজের আদেশ বেশি আছে। আমাদের এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যার জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিল্প-বাণিজ্য
শিল্প উন্নয়নে ন্যায্য জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের আহ্বান ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের

বাংলাদেশ এনার্জি️ রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নতুন ঘোষিত গ্যাসের দাম বৈষম্যমূলক, অন্যায় এবং বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ব্যবসায়ী সংগঠন ইউরোচ্যাম বাংলাদেশ। সেই সাথে দেশের শিল্প উন্নয়ন ও বিনিয়োগ পরিবেশ সুরক্ষায় ন্যায্য জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের চেয়ারপারসন নুরিয়া লোপেজের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যতের জন্য সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করার সঙ্গে সঙ্গে মনে করে যে এই বৈষম্যমূলক মূল্য নির্ধারণ মডেলটি বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং নতুন এবং সম্প্রসারণশীল শিল্পগুলোর ওপর উচ্চ মূল্য আরোপের মাধ্যমে বিনিয়োগের পথে বাঁধা সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ যখন বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে এমন সময়ে এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি একই খাতের মধ্যেই জ্বালানি ব্যয়ের ভিন্নতা সৃষ্টি করে এবং একইসঙ্গে দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করে।
ইউরোচ্যাম বাংলাদেশের চেয়ারপারসন নুরিয়া লোপেজ বলেন, “বিনিয়োগকারীদের আস্থা নিশ্চিত এবং শিল্প সম্প্রসারণে সহায়তা করার জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ️ জ্বালানি শুল্ক কাঠামো বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। প্রস্তাবিত এই কাঠামো ব্যবসার ধারাবাহিকতাকে বিঘ্নিত করার হুমকি তৈরি করছে এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বর্তা পাঠাচ্ছে।”
বাংলাদেশে অনেকে প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ️দিন ধরে গ্যাস ব্যবহার করে আসছে। এধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানকে নতুন গ্যাস বিক্রয় চুক্তির অধীনে পুনঃশ্রেণীবিভাগ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে বিইআরসি। এ ধরনের সুযোগ বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য হুমকী। এর ফলে ভবিষ্যতে সরকার চাইলে যে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ‘নতুন গ্রাহক’ শ্রেনীতে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম আদায় করতে পারবে। বিইআরসিকে এ বিষয়টি পুনঃবিবেচনার দাবী জানিয়েছে ইউরোচ্যাম।
সাম্প্রতিক গণশুনানিতে শিল্প নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত জ্বালানি সংস্কার কৌশলের আহ্বান জানিয়েছিল। ইউরোচ্যামও সরকার এবং বিইআরসিকে তাৎপর্য️পূর্ণ️ভাবে অংশীজনদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর এবং এমন একটি ট্যারিফ কাঠামো প্রণয়নের আহ্বান জানায় যা শিল্পের স্থিতিশীলতা, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং টেকসই অর্থ️নৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করবে।
অন্তর্ভুক্তিমূল প্রবৃদ্ধি এবং একটি প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তোলার নীতিমালা প্রণয়নে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত ইউরোচ্যাম।
অর্থসংবাদ/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ হচ্ছে বুধবার

পহেলা বৈশাখের দিনেও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। এদিন ২০১টি ট্রাকে ৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। তবে দেশের হাওর অঞ্চলে নতুন ধান উঠতে শুরু করায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) থেকে এই চাল আমদানির দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভারতীয় ১৪৭ ট্রাকে ১৬১ মেট্রিক টন, রোববার ১৪৪ ট্রাকে ১৬০ মেট্রিক টন ও সোমবার ২০১টি ট্রাকে ১৮৪ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ৮৪ ট্রাকে ৩৬১৭ মেট্রিক টন চাল আমদানির কথা রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আমদানির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ালেও আগামীকাল শেষ হচ্ছে চাল আমদানির দ্বিতীয় মেয়াদ। এ কারণেই শেষদিকে আমদানি বেড়েছে। ভারতের অভ্যন্তরে এখনও চালবোঝাই শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায়।
হিলি বাজারের চাল ব্যবসায়ী কুলো প্রধান জানান, দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে চাল আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। এতে করে চলতি এক সপ্তাহের মধ্যে দাম বাড়েনি।
তিনি বলেন, আগামীকাল (বুধবার) ভারত থেকে চাল আমদানির দ্বিতীয় মেয়াদের সময় শেষ হওয়ায় আমদানি বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় নতুন ধান উঠতে শুরু করবে, ফলে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ সহকারী পরিচালক ইউসুফ আলী জানান, ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সেইসঙ্গে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় চালের আমদানি শুল্ক। এরপর গত ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে চাল আমদানি। ১৬ এপ্রিল চাল আমদানি বন্ধ হবে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দর ও কাস্টমসের তথ্যমতে, গেলো বছরের ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চালের আমদানি শুরু হয়। সোমবার (১৪ এপ্রিল) পর্যন্ত ভারতীয় ৬ হাজার ৪০০ ট্রাকে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। হিলি দিয়ে ভারত থেকে বাসমতী ও নন বাসমতী দুই ধরনের চাল আমদানি হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
যুক্তরাষ্ট্রে দুই মাসে ১৫০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি

চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমেরিকান বাজারে এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ১৫০ কোটি ডলারের পোশাক। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ১১৮ কোটি ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য পরিসংখ্যান সংস্থা ওটেক্সার তথ্যের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, এই দুই মাসে দেশটি বিশ্বজুড়ে মোট ১৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালে এই দুই মাসে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশ ছিল উল্লেখযোগ্য।
বিশ্বের অন্যান্য প্রধান পোশাক রফতানিকারক দেশের মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ, পাকিস্তানের ২৩ দশমিক ০৫ শতাংশ, ভিয়েতনামের ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং চীনের ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
পরিমাণের দিক থেকে (পিস হিসাবে) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ২৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি পোশাক (পিস) আমদানি করেছে। অন্যদিকে, ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৯০ শতাংশ, পাকিস্তান থেকে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং চীন থেকে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
পিসপ্রতি গড় দামে (ইউনিট প্রাইস) বাংলাদেশের পোশাকের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ভিয়েতনামের বেড়েছে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, চীনের ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। তবে ভারতের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী ইউনিট প্রাইস বেড়েছে ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে, তবে আসন্ন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকাও জরুরি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশি পোশাক খাতের মান ও সক্ষমতার প্রতিফলন। তবে এই ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ধরে রাখা জরুরি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলো ভারত

ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। মঙ্গলবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিল করেছে।
এর আগে, ভারতের রপ্তানিকারকরা-বিশেষ করে পোশাক খাতের-প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই সুবিধার ফলে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। ভারত ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রপ্তানির এই সুবিধা দিয়েছিল।
৮ এপ্রিল জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ২৯ জুনের জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এমন এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধা বাতিল করল, যার কয়েক দিন আগে ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আগের বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যাওয়ার পথে দেশটির স্থল শুল্ক স্টেশন (এলসিএসএস) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে রপ্তানি কার্গো ট্রান্সশিপমেন্টের অনুমতি দেওয়া হতো। ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সরকারের এই সিদ্ধান্ত পোশাক, পাদুকা, রত্ন এবং গহনার মতো কয়েকটি ভারতীয় রপ্তানি খাতের জন্য সহায়ক হবে।
বিশ্ব বাণিজ্যে পোশাক খাতে ভারতের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমাদের কার্গো পরিব্হনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।
এর আগে, ভারতের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন এইপিসি বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধার আদেশ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিল। ওই সুবিধার ফলে দিল্লি এয়ার কার্গো ভবনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্গো তৃতীয় দেশে ট্রান্স-শিপমেন্টের অনুমতি পেতো।
এপিসির চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেছেন, প্রত্যেক দিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লিতে আসে। যা কার্গোর চলাচল ধীর করে দেয় এবং এয়ারলাইন্সগুলো এই ধীরগতির কারণে অযৌক্তিক সুবিধা নিচ্ছে।
ভারতীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, এই সুবিধা প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পূর্ববর্তী প্রক্রিয়ায় ট্রানজিটের সময় এবং ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে ভারতের ভেতর দিয়ে একটি বাধাহীন রুটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এখন এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন। এছাড়া নেপাল এবং ভুটান—উভয় দেশই স্থলবেষ্টিত। বাংলাদেশের সুবিধা বাতিল করায় এই দুটি দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ করে এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে।
অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর এবং সেসব দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্যের অবাধ পরিবহনের অনুমতি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সংস্থাটির সকল সদস্যের। এর অর্থ এই জাতীয় ট্রানজিট অবশ্যই বাধাহীন হতে হবে এবং এসব পণ্য অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ও ট্রানজিট শুল্ক মুক্তও থাকবে।
ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ই জেনেভা-ভিত্তিক সংস্থাটির সদস্য।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপালে গেলো আরও ২৫২ টন আলু

পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে গেল আরও ২৫২ মেট্রিক টন এস্টারিক্স আলু। বুধবার (২৬ মার্চ) উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকার একদিন পর বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ১২টি ট্রাকে আলুগুলো নেপালে পাঠানো হয়।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারিনটিন ইন্সপেক্টর উজ্জল হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেন ।
জানা গেছে, থিংকস টু সাপ্লাই, ফাস্ট ডেলিভারি, হোসেন এন্টার প্রাইজ ও প্রসেস অ্যাগ্রো নামে চারটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আলুগুলো সংগ্রহ করে নেপালে রপ্তানি করে। এ নিয়ে বন্দরটি দিয়ে এ বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি মার্চ মাসের বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) পর্যন্ত কয়েক ধাপে বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ৩৩১ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি করা হয়েছে নেপালে।
উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারিনটিন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেনর বলেন, রপ্তানি করা আলুগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পাঠানোর ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বন্দরটি দিয়ে নেপালে ২৩১ মেট্রিক টন আলু পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত নতুন করে পাঠানো আলুসহ গত তিন মাসে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ২ হাজার ৩৩১ মেট্রিক টন আলু নেপালে রপ্তানি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি ছুটিসহ আগামী শনিবার (২৯ মার্চ) থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বন্দরে ছুটি থাকায় আগামী ৬ এপ্রিল থেকে পুনরায় বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে এবং রপ্তানিকারকদের মাধ্যমে আবারও আলু নেপালে পাঠানো হবে।