টেলিকম ও প্রযুক্তি
কলড্রপ নিয়ে ১ জুলাই থেকে অ্যাকশন: প্রতিমন্ত্রী পলক

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, কলড্রপ এখন নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে অ্যাকশনে যাব।
রবিবার (৩০ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক সেবার মান বিশেষ করে কলড্রপ সংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদসহ মোবাইল ফোন অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পলক বলেন, মোবাইল ফোন এখন জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, আমাদের গ্রাহকেরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। আজকের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান নিশ্চিত করা, তারা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে সেই সেবা পাচ্ছে কিনা এবং সুলভ মূল্যে উচ্চ গতির ইন্টারনেট দেওয়ার যে উদ্দেশ্য সেটা গ্রাহক পাচ্ছে কিনা। আমরা যে সুবিধাগুলো দিচ্ছি সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার মোবাইল অপারেটরগুলো করছে কিনা।
‘কলড্রপ একটা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মোবাইল গ্রাহকেরা যেমন এ বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট। বিটিআরসি যে পরীক্ষাগুলো করেছে সে রিপোর্ট অনুসারে কোয়ালিটি অব সার্ভিস খুব একটা সন্তোষজনক নয়। ’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কলড্রপ নিয়ে অপারেটরগুলো থেকে যে তথ্য দিক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না গ্রাহক এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে একটা উল্লেখযোগ্য চিত্র না পাব বা রিক্যাকশন না পাব ততক্ষণ পর্যন্ত শুধুমাত্র কাগজে-কলমে বা ডিজিটাল উপস্থাপনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট হব না। এটা আপনারা গ্রহণ করেন বা না করেন আমি আপনাদের পরিষ্কার বার্তাটি দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কারণ প্রথম ছয় মাস, আমরা জানুয়ারিতে শপথ নিয়েছি। আমরা একটা স্মার্ট টেলিকম ইকোসিস্টেম বাংলাদেশকে উপহার দিতে চাই।
‘ইন্টারনেটের যে গতি, আপনারা যতই ব্যাখ্যা দেন যে ওকলার এটা ঠিক না বা স্পিড টেস্টিং মেকানিজম অনেক সময় বায়াস হয়। আমার কথা পরিষ্কার, যেভাবেই হোক আমরা গ্লোবাল বেঞ্চমার্কে উন্নীত হতে চাই। কারণ এটা আমাদের দেশের ব্র্যান্ডিংয়ের একটা বড় প্রভাব ফেলে। ’
পলক আরও বলেন, কলড্রপের জন্য গ্রাহকের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা আমরা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে যাব। যেহেতু আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাবে, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা যেন করা হয়। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণটাই আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব, যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো একটা চাপে থাকে যে, তারা যদি সেবা না দেয় তাহলে তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করব। বেঞ্চমার্ক যাই থাকুক, কলড্রপ রেট কাগজে-কলমে যাই থাকুক, আমাদের গ্রাহকের সন্তুষ্টির ওপর জোর দেব।
কল ড্রপ নিয়ে ঢাকার কয়েকটি এলাকার ড্রাইভ টেস্টের ফলাফল পর্যালোচনা করে পলক বলেন, আমরা জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে অ্যাকশনে যাব। শহর বা গ্রাম যেখানেই হোক আমরা মিডিয়ার যে রিপোর্ট, সেগুলো আমলে নেব এবং সেখানে আমরা ড্রাইভ দেব।
ফাইন্যান্সিয়াল অডিট এবং টেকনিক্যাল অডিটের ওপর জোর দেওয়া হবে জানিয়ে পলক বলেন, আসলে অপারেটররা যা বলছে তা সত্যি কিনা। আমরা সাংবাদিক বন্ধুদের রিপোর্টগুলো নিয়মিত আমলে নেব যে, কল ড্রপ কেন হচ্ছে। ইন্টারনেটের গতি কেন কম হচ্ছে, গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া কী সেগুলো আমলে নিয়ে ড্রাইভ দেব। আমরা কারিগরি পরিদর্শন দল গঠন করেছি, তারা সেগুলো টেস্ট করছে।
এক্ষেত্রে অপারটেরদের সহায়তাও দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা অপারেটরদের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে সাঁতার শেখাব না, আমরা সাঁতার শিখিয়ে সক্ষমতা দিয়ে দেক যাতে নদীটা পার হন। আমরা বলব, সাঁতরিয়ে নদীটা পার হন।
‘কলড্রপ যাতে বিশ্বের অন্যতম একটা ভালো বেঞ্চমার্কে পৌঁছাতে পারি। সেটা আমাদের মূল লক্ষ্য। কলড্রপে সময় নষ্ট হয়, এনার্জি নষ্ট হয়, সে বিরক্ত হয়। পাশাপাশি আপনাদেরও কিন্তু টেকনিক্যাল এবং ফাইন্যান্সিয়াল লস হয়। এসব বিষয় খেয়াল করে সমাধোনে যেতে হবে। সমস্যা যত কঠিনই হোক না কেন সমাধান করতে হবে। ’
পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল সেবা নিয়ে পলক বলেন, ফাইভজি রোল আউটেরও একটা নির্দিষ্ট টার্গেট বিটিআরসি এবং চারটি মোবাইল অপারেটরকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এয়ারপোর্ট, সি পোর্ট এবং কিছু বিজনেস ডিস্ট্রিক্টস, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক-শিল্পাঞ্চলে ফাইভজি রোল আউট করা। তারপর গ্রাজুয়েলি রোল আউট করা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

টেলিকম ও প্রযুক্তি
স্টার্টআপ বাংলাদেশের এমডি সামির অপসারণ ও দুর্নীতির বিচার দাবি

স্টার্টআপ বাংলাদেশের এমডি সামি আহমেদের দ্রুত অপসারণ ও সব দুর্নীতির বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে বাংলাদেশ আইটি উদ্যোক্তা কাউন্সিল।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে
বাংলাদেশ আইটি উদ্দ্যোক্তা কাউন্সিলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ বিন সফির উপস্থাপনায় শুরুতে বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলের সদস্য সচিব খাবিরুল জাহান সাজিদ। বক্তব্য রাখেন অন্যতম আইটি উদ্দ্যেক্তা মেহেদী হাসান, মো. মনিরুজ্জামান, সিনিয়র আইটি উদ্দ্যেক্তা আহসান হাবীব, ফাউজিয়া নিগার সুলতানা, কাউন্সিলের যুগ্ম আহবায়ক ইমরুল কায়েস পরাগ।
উদ্যোক্তারা সামি আহমেদের বিভিন্ন দুর্নীতি এবং যে সকল ক্ষেত্রে তারা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন সেসব বিষয় তুলে ধরেন এবং তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে আইটিখাতের দস্যু, স্টার্টআপ বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজ এমডি সামি আহমেদের দ্রুত অপসারণ এবং বিচার দাবি করেন।
আইটি উদ্যোক্তারা জানান, ফ্যাসিবাদের রানী পালিয়ে যাওয়ার পরও তার দোসররা স্বপদে বহাল থাকা মানে হচ্ছে শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি।
সভাপতির বক্তব্যে বিআইইউতি’র আহবায়ক তালহা ইবনে আলাউদ্দিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে স্টার্টআপ বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজ এমডি সামি আহমেদে কে অপসারণ এবং বিচারের মুখোমুখি করা না হলে আইটি উদ্যোক্তারা আবার রাজপথে নামবে। সবশেষে তিনি সকল আইটি উদ্যোক্তা এবং সচেতন জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রোগ্রামের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের কাছে বেশকিছু অভিযোগ ও প্রস্তাবনা জানানো হয়েছে।
অভিযোগগুলো হচ্ছে —
১. সামি সরকারি বিনিয়োগকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছেন এবং স্বচ্ছতা ছাড়াই ১৫টি স্টার্টআপে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বিতরণ করেছেন। যার অধিকাংশই সাফল্য দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
২. প্রতিযোগিতামূলক ও দক্ষ উদ্যোগগুলো (যেমন- টেন মিনিট স্কুল) বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে কেবল রাজনৈতিক সমীকরণ বা ব্যক্তিগত অনাগ্রহের কারণে।
৩. মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি একটি রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের অংশ, যার মাধ্যমে সরকারি অর্থ ও প্রকল্পের অপব্যবহার হয়েছে।
৪. এ নিয়ে ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা সরব প্রতিবাদ করেছেন।
৫. সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তার অবস্থান ও কার্যকলাপ সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি, সরকারি অর্থব্যবস্থা ও বিনিয়োগ নীতিমালার পরিপন্থি।
প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে—
ক. সামি আহমেদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তার সব কার্যক্রমের নিরীক্ষা করতে হবে।
খ. তদন্তকালীন সময়ে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
গ. স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্রকল্পের বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নতুন স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হব। আমরা বিশ্বাস করি, একটি উদ্যোক্তাবান্ধব এবং দুর্নীতিমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ আইটি উদ্দ্যেক্তা কাউন্সিলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ বিন সফি, সদস্য সচিব খাবিরুল জাহান সাজিদ, আইটি উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান, মো. মনিরুজ্জামান, সিনিয়র আইটি উদ্যোক্তা আহসান হাবীব, ফাউজিয়া নিগার সুলতানা, উদ্যোক্তা কাউন্সিলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরুল কায়েস পরাগ এবং আহ্বায়ক তালহা ইবনে আলাউদ্দিন বক্তব্য দেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাংলাদেশে স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু আজ

বাংলাদেশে আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে মহাকাশভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের সেবা। এদিন রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে’ অংশগ্রহণকারীরা ব্যবহার করতে পারবেন এ সেবা। সেখান থেকে স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহার করে সম্মেলনের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
এর আগে, গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে বিনিয়োগ নিবন্ধন দেয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এর ফলে, প্রতিষ্ঠানটি ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। তবে, বাণিজ্যিকভাবে ইন্টারনেট সেবা চালু করতে হলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছ থেকে এনজিএসও লাইসেন্স নিতে হবে। ইতোমধ্যে লাইসেন্স সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, আমরা তাদের ৯০ দিনের মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছি। স্টারলিংকের প্রযুক্তি ইতিবাচকভাবে যাচাই করা হয়েছে।
মূলত, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো স্টারলিংকের প্রযুক্তি পরীক্ষা চালানো হয়। এরপর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পাওয়ার পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কলে মার্কিন উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদ ইলন মাস্কের সঙ্গে স্টারলিংক প্রসঙ্গে আলোচনা করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এতে স্টারলিংকের পরিসেবা চালুর কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়। এরপর গত মাসেও ঢাকায় বেশ কয়েকবার পরীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন বাংলাদেশে তাদের পরীক্ষামূলক যাত্রার মাধ্যমে এক নতুন যুগের সূচনা হবে। কারণ, স্পেসএক্সের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক ইতোমধ্যে বিশ্বের বহু দেশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে।
সে অনুযায়ী, এটি চালু হলে বাংলাদেশ প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সহজলভ্য হবে এবং কমবে শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য। একইসঙ্গে দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরি যোগাযোগ স্থাপনেও স্টারলিংকের কার্যকারিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন তারা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে ভুটানে স্টারলিংকের সেবা চালু হয়েছে। এবার বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে পরীক্ষামূলক সংযোগ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
টেলিগ্রামকে ৮০ হাজার ডলার জরিমানা করলো রাশিয়া

সরকারবিরোধী কনটেন্ট না সরানোর কারণে মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামকে জরিমানা করেছে রাশিয়ার একটি আদালত।
মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, সন্ত্রাসী হামলা ও রাশিয়ান সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে বিক্ষোভে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর মতো কনটেন্ট সরাতে অস্বীকৃতি জানানোয় টেলিগ্রামকে ৭০ লাখ রুবল বা ৮০ হাজার ডলার জরিমানা করেছে মস্কোর এক আদালত।
আদালতের নথির বরাত দিয়ে তাস বলেছে, বিপুল সংখ্যাক তথ্য সম্পদের মালিক হওয়ার পরও চরমপন্থী কার্যকলাপের আহ্বান সংশ্লিষ্ট তথ্য বা বিভিন্ন চ্যানেল সরাতে ব্যর্থ হয়েছে টেলিগ্রাম।
বার্তা সংস্থাটি আরও বলেছে, রাশিয়ার সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সহায়তার লক্ষ্যে দেশটির রেল পরিবহনে সন্ত্রাসী হামলার আহ্বান জানিয়েছে আদালতের নথিতে তালিকাভুক্ত কয়েকটি টেলিগ্রাম চ্যানেল।
এবিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রাম।
রাশিয়ান বংশোদ্ভূত পাভেল দুরভের প্রতিষ্ঠিত টেলিগ্রামের প্রায় একশ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। রাশিয়া, ইউক্রেইন ও অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় প্লাটফর্মটি।
২০২৪ সালের অগাস্টে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে জালিয়াতি, অর্থ পাচার ও শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি শেয়ারের অভিযোগে ফ্রান্সে গ্রেফতার হন পাভেল দুরভ।
মামলার তদন্তের পর ফ্রান্সে বেশ কয়েক মাস আটক ছিলেন তিনি। এরপর এ বছরের মার্চ মাসে আদালতের অনুমতি মিললে দুবাইতে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন দুরভ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
টিকটককে আরো ৭৫ দিন সময় দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ওপর ঝুলে থাকা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময়সীমা আবারও ৭৫ দিনের জন্য পিছিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এ সম্পর্কিত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে দেশটিতে টিকটককে দ্বিতীয়বারের মতো লাইফলাইন প্রদান করলেন তিনি।
অন্যথায় আজই (৫ এপ্রিল) দেশটিতে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতো চীনের বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি। খবর বিবিসির।
গতকাল শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “আমরা চাই না টিকটক অন্ধকারে চলে যাক। টিকটক এবং চীনকে নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছি।”
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু এর চীনভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে, এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। যদিও বাইটড্যান্স ও চীন এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার প্রণীত আইনে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে টিকটক। জো বাইডেন সরকারের আইন অনুযায়ী, বাইটড্যান্সকে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণমূলক মালিকানা চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে কোনো মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে। অন্যথায় দেশটিতে টিকটককে নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে, জানুয়ারিতে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে টিকটকের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ৭৫ দিন পিছিয়ে দেন। ফলে সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সক্ষম হয় টিকটক। ৭৫ দিনের সেই সময়সীমা আজ (৫ এপ্রিল) শেষ হওয়ার কথা ছিল।
গতকাল শুক্রবার ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের ফলে আরো ৭৫ দিন সময় পেল টিকটক। সে হিসেবে এবার ১৯ জুনের মধ্যে বাইটড্যান্সকে টিকটিক ইস্যুতে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে বাইটড্যান্স জানিয়েছে, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো কোনো চুক্তি সম্পন্ন হয়নি।
কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেছেন, “কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো নিষ্পত্তি করা বাকি এবং যেকোনো চুক্তি চীনা আইনের অধীনে অনুমোদন নিতে হবে।”
বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, গত বুধবার টিকটক কেনার একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে একই দিনে ট্রাম্প চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর চুক্তিটি ভেঙে যায়।
চুক্তির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, বাইটড্যান্সের প্রতিনিধিরা হোয়াইট হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে, শুল্কের বিষয়ে আলোচনা না হলে চুক্তিটির অনুমোদন দেবে না চীন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বাজার অর্থনীতির মৌলিক নীতি লঙ্ঘনকারী অনুশীলনের বিরোধিতা করে।
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫৪ শতাংশ মোট শুল্কের সম্মুখীন হয়েছে চীন এবং ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। টিকটক বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হলে শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বিক্রি হয়ে গেল ইলন মাস্কের ‘এক্স’

নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি এক্সএআই-এর কাছে ৩৩ বিলিয়ন ডলারে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) বিক্রি করে দিয়েছেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মাস্ক ঘোষণা করেছেন, তার কোম্পানি এক্স এখন তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি এক্সএআই-এর অধীনে চলে যাবে।
২০২২ সালে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনেছিলেন ইলন মাস্ক। বর্তমানে এক্স-এর ৬০০ মিলিয়ন (৬০ কোটি) গ্রাহক রয়েছে। এক্সএআই-এর বর্তমান বাজারমূল্য ৮০ বিলিয়ন ডলার, এবং এক্স-এর বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটির ঋণের পরিমাণ ১২ বিলিয়ন ডলার। তবে, এটি এক্সএআই বহন করবে। মাস্ক তার এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, এই চুক্তির ফলে এক্স-এর মূল্যায়ন ৩৩ বিলিয়ন ডলার হবে।
মাস্ক এক্স-পোস্টে বলেছেন, এক্সএআই এবং এক্স-এর ভবিষ্যৎ একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আজ আমরা ডেটা, মডেল, গণনা এবং প্রতিভাকে একত্রিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই সমন্বয় এক্সএআই-এর উন্নত এআই ক্ষমতা এবং দক্ষতাকে এক্স-এর বিশাল ব্যবহারকারীর সংখ্যার সঙ্গে মিশিয়ে অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।
তবে, মাস্ক এখন পর্যন্ত এক্স প্ল্যাটফর্মে কোন বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দেননি। যদিও এক্সএআই-এর Grok চ্যাটবট ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে।
মাস্কের ভাষ্যমতে, সম্মিলিত এই প্ল্যাটফর্মটি আরও স্মার্ট এবং অর্থপূর্ণ অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। সম্মিলিত কোম্পানির মূল্য দাঁড়াবে ৮০ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে, ২০২২ সালে টুইটার কেনার পর থেকে মাস্ক কিছু বড় পরিবর্তন এনেছেন, যার ফলে কিছু বিজ্ঞাপনদাতা সরে গেছে। অধিগ্রহণের কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি কোম্পানির ৮০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করেছিলেন এবং প্ল্যাটফর্মের মূলনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটান।