ব্যাংক
ব্যাংক থেকে সোনা গায়েব, ‘অভিযোগ মিথ্যা’ দাবি ম্যানেজারের
ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী ও তাঁর কন্যা নাসিয়া মারজুকা যৌথ নামের একটি লকার থেকে গ্রাহকের ১৪৯ ভরি সোনা গায়েবের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকের অভিযোগ- ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই সরিয়ে ফেলেছেন এসব সোনা। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবি- গ্রাহকের অভিযোগ মিথ্যা। ব্যাংকের লকার থেকে সোনা চুরির কোনো সুযোগ নেই। তবুও গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। চুক্তিপত্র অনুযায়ী ইন্স্যুরেন্স পাবেন গ্রাহক।
রবিবার (২ জুন) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন শাখাটির ম্যানেজার শফিকুল মওলা।
তিনি বলেন, আমাদের এক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন- গত ২৯ মে তিনি তার লকার চেক করতে গিয়ে দেখেন, তিনি যে মালামাল রেখেছেন তা ঠিকমত পাননি। পরবর্তীতে তিনি লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার মিসিং মর্মে আমাদের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। এরপর আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহককে বলেছি এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। তিনি কি রেখেছেন তিনি জানেন। আমাদের মনে হচ্ছে তিনি মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। এছাড়া অন্য কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তিনি জানেন। আমরা লকার সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সব সার্কুলার মেনেই আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল মওলা বলেন, আমরা মৌখিকভাবে অভিযোগ হিসেবে নিয়েছি এটি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি। ইতোমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছি। অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রাহককে জানানোর আশ্বাস দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে শুধুমাত্র ডিক্লারেশন নেই যে— দাহ্য পদার্থ কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র রাখা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী বাকি কোনো পণ্যের ডিক্লারেশন নেয়ার নিয়ম নেই। আমাদের জানারও সুযোগ নেই কি পণ্য এবং কি পরিমাণ রাখা হয়েছে। ঐ গ্রাহক সবশেষ গত ৮ এপ্রিল লকারটি যাচাই করেছেন।
ব্যাংক ম্যানেজার বলেন, লকারের পর্যাপ্ত সিকিউরিটি আমরা নিয়ে থাকি। যেন চুরি, ছিনতাই বা ডাকাতির মতো ঘটনা না ঘটে। আমাদের মনে হচ্ছে এখানে চুরি কিংবা ডাকাতির কোনো সুযোগ নেই। আমাদের দীর্ঘদিনের গ্রাহক যেহেতু অভিযোগ করেছেন আমরা বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নিয়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি আসলে কি ঘটেছে।
লকারে কি পরিমাণ মালামাল থাকে, তা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জানার সুযোগ আছে কিনা কিংবা মালামাল গায়েব হলে নিয়মানুযায়ী কিভাবে গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কি পরিমাণ স্বর্ণ গ্রাহকের লকারে ছিল এটি প্রমাণের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু চুক্তিপত্র অনুযায়ী গ্রাহক ছোট, মাঝারি এবং বড় লকারের ক্ষেত্রে যথাক্রমে এক লক্ষ, দুই লক্ষ বা তিন লক্ষ টাকা কর্পোরেট ইন্স্যুরেন্স পাবেন। যে গ্রাহক স্বর্ণ চুরির অভিযোগ করেছেন তার লকারটি মাঝারি আকার ছিল।
লকারের মালামাল চেক করার পদ্ধতি কি— এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল মওলা বলেন, মূলত আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার সমস্ত দালিলিক কার্যক্রম সম্পাদন করেন। সমস্ত চেম্বারের একটা মাস্টার কি থাকে, সেটি হোলে (চাবি প্রবেশের স্থান) দিলেই আমাদের দিক থেকে লকার আনলক হয়। এরপর গ্রাহক তার চাবি দিয়ে লকার খোলেন। আমাদের অফিসারও সেখানে থাকেন না। গ্রাহকের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে তার লকারটি তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে বন্ধ করে বেরিয়ে যান। ওই চাবির কোনো ডুপ্লিকেট নেই। এরপর আমাদের অফিসারকে ইনফর্ম করলে অফিসার গিয়ে বাইরের দরজা বন্ধ করেন।
জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের শাখাটির একটি লকারে ১৪৯ ভরি সোনা রেখেছিলেন নগরের চট্টেশ্বরী সড়কের বেভারলি হিল এলাকার বাসিন্দা রোকেয়া বারী। বুধবার (২৯ মে) লকার ইনচার্জের সঙ্গে লকার রুমে প্রবেশ করে তিনি দেখতে পান- তার লকারটি খোলা এবং সেখানে ১৪৯ ভরি সোনা নেই। পরে তিনি চকবাজার থানায় জিডি করতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে এ ঘটনায় জিডি না নিয়ে ভুক্তভোগীকে মামলা করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। সোমবার (৩ জুন) আদালতে মামলা করার কথা রয়েছে।
রোকেয়া বারীর ছেলে রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ২০০৭ সাল থেকে আমার মা এই শাখায় তার স্বর্ণের গহনা রাখার জন্য লকার ব্যবহার করে আসছেন। গত ২৯ মে দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে লকার রুমের ইনচার্জকে তার লকার দেখার অনুরোধ করেন। মায়ের কাছে লকারের মূল চাবি আছে এবং আরেকটি ডুপ্লিকেট চাবি ইনচার্জের কাছে থাকে। লকার রুমে প্রবেশ করলে ইনচার্জ প্রথমে দেখেন যে মায়ের লকারটি খোলা। আমার মা লকারটি পরীক্ষা করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।
রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, লকার খোলা থাকায় বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে চকবাজার থানার ওসিকে জানাই। তিনি ব্যাংকে এসে লকার রুম দেখেছিলেন। এরপর আমরা একটি জিডিও করতে চেয়েছি। কিন্তু ওসি আমাদের আদালতে মামলা করতে বলেছেন। আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। আগামীকাল আদালতে মামলা করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে সাতদিনের সময় চেয়েছিল। আমরা তাদের আজ (রবিবার) পর্যন্ত সময় দিয়েছি। ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসে আজ এ বিষয়ে তদন্ত করার কথা। যাহোক, আমরা আগামীকাল মামলা করবো।
এ বিষয়ে চকবাজার থানার ওসি ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লকার রুমে কোনো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা নেই। ঘটনাটির গুরুত্বের কারণে ভুক্তভোগীকে ফৌজদারি মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
সম্প্রতি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখা থেকে গ্রাহকের এক কোটি ২০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হন ক্যাশিয়ার সুজন রহমান ও তার পরিবার। ঘটনাটির রেশ না কাটতেই চট্টগ্রামে একই ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকার থেকে সোনা গায়েবের অভিযোগ উঠেছে।
বগুড়ার ঐ ঘটনায় বুধবার (২৮ মে) মামলা করেছেন চাঁপাপুর ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখার স্বত্বাধিকারী নুরুল ইসলাম। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ব্যাংকের ক্যাশিয়ার গোবিন্দপুর গ্রামের সুজন রহমান, তার বাবা এনামুল হক ও মা রুবিয়া খাতুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ডলার
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ ছয় কোটি ১০ লাখ বেড়ে এক হাজার ৮৪৯ কোটি কোটি ৪০ লাখ ডলারে দাঁড়াল। বর্তমানে বিভিন্ন তহবিলসহ গঠিত মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৪২৭ কোটি ডলার।
আগের সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দুই মাসের বিল পরিশোধের পর নভেম্বরের মাঝামাঝি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।
আকু হলো আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। এর সদস্যদেশ হলো বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
আকুর বিল পরিশোধ ছাড়াও রিজার্ভ থেকে দৈনন্দিন ভিত্তিতে বিদেশি ঋণ ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। সরকারের জরুরি আমদানি ব্যয় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিও করতে হয়।
অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ, অনুদান, প্রবাসী আয়ের নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ হিসেবে জমা হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের নতুন ডিএমডি আবু জাফর
এস এম আবু জাফর আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তরা মডেল টাউন শাখায় দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে যোগদানের পূর্বে তিনি এক্সিম ব্যাংক এবং ইউসিবিএল ব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন।
আজ (মঙ্গলবার) ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবু জাফর এক্সিম ব্যাংকে ২০০০ সালে ম্যানেজমেন্ট ট্র্রেইনি হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার ব্যাংকিং কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে শাখা পর্যায়ে বৈদেশিক বাণিজ্য প্রধান, অপারেশন ম্যানেজার এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট ও এডি শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সফলতার সাথে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি তিনবার “চেয়ারম্যানস্ গোল্ড মেডেল” অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। এ ছাড়াও ২০১৭ সালে তিনি শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বহু প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং দেশে ও বিদেশে অনুষ্ঠিত ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রথিতযশা এ ব্যাংকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুর্বল তিন ব্যাংককে আরও ২৬৫ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা
তারল্য ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোকে সচল করতে কাজ করছে সরকার। তাতে সবল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সপ্তাহে বড় অঙ্কের তারল্য সহায়তার পর এবার দুর্বল তিন ব্যাংককে আরও ২৬৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল চার ব্যাংক।
সহায়তা দেওয়া ব্যাংকগুলো হলো- ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সহায়তার পাশাপাশি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কৌশল থাকা উচিত। কারণ গ্যারান্টি সহায়তা দিয়ে যে কোনো ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। ঋণ আদায়ে তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে হবে। যদিও কিছু ব্যাংক ঋণ আদায়ে খুব ভালো করছে। তাদের মতো অন্যদেরও উদ্যোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার আশাই সব ঠিক হবে না।
এর আগে গত সপ্তাহে তারল্য ঘাটতি মেটাতে দুর্বল সাত ব্যাংকে ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে সবল ১০ ব্যাংক। ওই সময় এসব ব্যাংক থেকে চাওয়া হয়েছিল ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক। সাতটি থেকে ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক পেয়েছিল ২ হাজার ৯৫ কোটি টাকা।
সহায়তা পাওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে ছিল- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ছয় ব্যাংক থেকে পেয়েছে ১ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ছয় ব্যাংক থেকে ১ হাজার কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯২০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৭০০ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ৪০০ কোটি এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ২৯৫ কোটি টাকা। আর যেসব ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক।
এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে সভা করেন। সভায় দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করেন গভর্নর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব
এস আলম গ্রুপ ও তার সহযোগীদের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বরাবর অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ইয়াছির আরাফাত সই করা তলবি চিঠিতে তাদেরকে আগামী ২০ ও ২১ নভেম্বর দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে কর্মকর্তাদের হাজির হওয়ার পাশাপাশি তাদের পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এছাড়া চিঠিতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ, জুবিলি রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস নামীয় ঋণ পরিদর্শন ও মনিটরিং সংক্রান্ত কর্মকর্তা ভূমিকার বিষয়ের বিস্তারিত তথ্যসহ হাজির হতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে ২০ নভেম্বর যাদের তলব করা হয়েছে- বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্মপরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া, অনিক তালুকদার, অতিরিক্ত পরিচালক শংকর কান্তি ঘোষ, ছলিমা বেগম, উপপরিচালক মো. জুবাইর হোসেন ও রুবেল চৌধুরী।
২১ নভেম্বর যাদের তলব করা হয়েছে- বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সৈয়দ মু. আরিফ-উন-নবী, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মো. শোয়েব চৌধুরী, মো. মঞ্জুর হোসেন খান ও মো. আব্দুর রউফ, উপ-পরিচালক লেনিন আজাদ পলাশ এবং পরিচালক মো. সরোয়ার হোসাইন।
একই ঘটনায় এর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল সংস্থাটি।
অভিযোগ রয়েছে, মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম সারওয়ার চৌধুরী, জুবিলি রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসসহ অন্যান্যরা ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ইসলামী ব্যাংকে থেকে আত্মসাৎ করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকা
গত তিন মাসে (জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৭৩ হাজার কোটি টাকা। আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি। সেই হিসাবে খেলাপি মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। শুধু তাই নয় গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যের প্রতিবেদন থেকে এ বিষয়টি জানা গেছে।
তথ্য বলছে, গত বছরের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এতদিন যা স্বার্থান্বেষী মহলগুলোর কারসাজিতে চাপা পড়েছিল।
এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। সেদিন গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। মূলত তার পদত্যাগের পর ব্যাংক খাতের প্রকৃত তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০০৮ সালের নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে তখন ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। এরপর থেকে আওয়ামী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও কেলেঙ্কারি বাড়তে থাকে। ফলে খেলাপি ঋণও ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। এদিকে সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কারণ তারা ধারণা করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ঋণ মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাফি