আন্তর্জাতিক
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ অর্থনীতির দেশ যেগুলো

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাপকাঠিতে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি। বিশ্বের বৃহত্তম এই অর্থনীতি এমনকি দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীনের চেয়েও দেড় গুণেরও বড়। ফোর্বস ইন্ডিয়া ডটকমের সদ্য প্রকাশিত ‘বিশ্বের শীর্ষ ১০ অর্থনীতি ২০২৪’ শীর্ষক তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরে রয়েছে যথাক্রমে জার্মানি, জাপান ও ভারত।
যুক্তরাষ্ট্র যুগ যুগ ধরে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে তার স্থান পাকাপাকি করে রেখেছে। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সেই ১৯৬০ সাল থেকেই বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির মুকুট পরে আছে। গত ৬৪ বছরে শীর্ষ ১০–২০ অর্থনীতির তালিকায় বিভিন্ন দেশের উত্থান–পতন ঘটলেও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে কোনো হেরফের ঘটেনি।
ফোর্বসের তথ্য মতে, বর্তমানে দেশটির জিডিপির ২৭ হাজার ৯৭৪ বিলিয়ন বা ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীনের জিডিপির আকার হলো ১৮ হাজার ৫৬৬ বিলিয়ন বা ১৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
বিশ্বের অন্য বৃহৎ অর্থনীতিগুলো অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে রয়েছে। যেমন ফোর্বসের তালিকায় তৃতীয় স্থান পাওয়া জার্মানির জিডিপির আবার ৪ হাজার ৭৩০ বিলিয়ন বা ৪ লাখ ৭৩ হাজার কোটি ডলার। তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে জাপান ও ভারত। এর মধ্যে জাপানের জিডিপি ৪ হাজার ২৯১ বিলিয়ন ও ভারতের জিডিপি ৪ হাজার ১১২ বিলিয়ন ডলার।
ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম স্থানে থাকা দেশগুলোর জিডিপির আকার এ রকম: যুক্তরাজ্য ৩ হাজার ৫৯২ বিলিয়ন, ফ্রান্স ৩ হাজার ১৮২ বিলিয়ন, ইতালি ২ হাজার ২৮০ বিলিয়ন, ব্রাজিল ২ হাজার ২৭২ বিলিয়ন ও কানাডা ২ হাজার ২৪২ বিলিয়ন ডলার।
১১তম থেকে ২০ স্থানে রয়েছে মেক্সিকো (১,৯৯২ বিলিয়ন ডলার), রাশিয়া (১,৯২৪ বিলিয়ন ডলার), দক্ষিণ কোরিয়া (১,৭৮৪ বিলিয়ন ডলার), অস্ট্রেলিয়া (১,৬৯৬ বিলিয়ন ডলার), স্পেন (১,৬৮৫ বিলিয়ন ডলার), ইন্দোনেশিয়া (১,৫৪১ বিলিয়ন ডলার), তুরস্ক (১,৩৪০ বিলিয়ন ডলার), নেদারল্যান্ডস (১,১৬৭ বিলিয়ন ডলার, সৌদি আরব (১,১১২ বিলিয়ন ডলার) ও সুইজারল্যান্ড (৯৭৭.৯৫ বিলিয়ন ডলার)।
এবার বিশ্বের শীর্ষ ১০ অর্থনীতির দেশগুলোয় জনগণের মাথাপিছু জিডিপিও দেখে নেওয়া যাক। যুক্তরাষ্ট্র ৮৩ হাজার ৬০ ডলার, চীন ১৩ হাজার ১৬০ ডলার, জার্মানি ৫৬ হাজার ৪০ ডলার, জাপান ৩৪ হাজার ৫৫০ ডলার, ভারত ২ হাজার ৮৫০ ডলার, যুক্তরাজ্য ৫২ হাজার ৪৩০ ডলার, ফ্রান্স ৪৮ হাজার ২২০ ডলার, ইতালি ৩৮ হাজার ৯৩০ ডলার, ব্রাজিল ১১ হাজার ৩০ ডলার, কানাডা ৫৫ হাজার ৫৩০ ডলার।
কাফি

আন্তর্জাতিক
১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের জন্য পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পাশাপাশি আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা ও অভিবাসন প্রক্রিয়ায় কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে: আফগানিস্তান, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। অন্যদিকে সীমিত প্রবেশাধিকার থাকবে- বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জন্য।
ট্রাম্প বলেন, আমার কর্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা করা। আমরা এমন কোনো দেশ থেকে অভিবাসন মেনে নিতে পারি না, যেখান থেকে আগতদের যথাযথভাবে যাচাই করা সম্ভব নয়।
এই নির্বাহী আদেশ ৯ জুন ২০২৫, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১২টা ১ মিনিট (ওয়াশিংটন ডিসি সময়) থেকে কার্যকর হবে। তবে এর আগে ইস্যু করা ভিসাগুলো বাতিল হবে না।
ট্রাম্প এ পদক্ষেপের ব্যাখ্যায় বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের বোল্ডারে এক ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে হওয়া হামলা যুক্তরাষ্ট্রে অনিয়ন্ত্রিত বিদেশি প্রবেশের ঝুঁকির বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে। আমরা ইউরোপের মতো পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রে হতে দিতে পারি না।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, হার্ভার্ডের ‘বিদেশি সংযোগ ও উগ্র চিন্তাধারার ইতিহাস’ রয়েছে এবং তাই প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়ন বা বিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নিতে চাওয়া বিদেশিদের প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।
নির্বাহী আদেশে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীদের ভিসা পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে বিদেশিদের জন্য হার্ভার্ডে ভর্তি বন্ধ ঘোষণা করেছিল প্রশাসন, যদিও তা গত মাসে বোস্টনের এক ফেডারেল আদালতে স্থগিত হয়। তবে নতুন আদেশে ট্রাম্প প্রশাসন আইনগত ভিন্ন ধারার ভিত্তিতে একই পদক্ষেপ নিচ্ছে।
হোয়াইট হাউজ সূত্রে জানা যায়, হার্ভার্ডকে দেওয়া সরকারি অনুদান ও কর ছাড় সুবিধাও এরই মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা, পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘চিন্তাভাবনার ধারা’ নিয়ন্ত্রণে আনতে চাপে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আন্তর্জাতিক
রিলস বানাতে গিয়ে যমুনা নদীতে ডুবে ৬ কিশোরীর মৃত্যু

ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রার সিকান্দরা থানা এলাকায় যমুনা নদীতে গোসল করতে নেমে ছয় কিশোরীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীরা কাছাকাছি কৃষিজমিতে কাজ শেষে যমুনার পাড়ে বিশ্রাম নিতে যায়। প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠান্ডা করতে তারা নদীতে নামে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুরুতে তারা নদীর তীরে খেলছিল ও মোবাইল ফোনে রিলস ভিডিও করছিল। ধীরে ধীরে গভীর পানিতে চলে গেলে স্রোতের টানে তারা তলিয়ে যায়।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় চারজন ডুবে যায় এবং বাকি দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই কিশোরীও মারা যায়। এর ফলে সেখানে পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে।
মারা যাওয়া সবাই একটি স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, ছয়জনই পানিতে ডুবে মারা গেছে। জেলা প্রশাসন শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং

সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণের পর আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার উদারপন্থি নেতা লি জায়ে মিয়ং। যদিও তিন বছর আগে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়োলের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দিবাগত রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এতে দেশটির রক্ষণশীল প্রতিদ্বন্দ্বী কিম মুন-সু-কে ব্যাপক ব্যবধানে পরাজিত করেছেন বামপন্থী প্রার্থী লি জায়ে মিয়ং। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সব ভোট গণনার পর দেখা যায়, বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী লি ৪৯ দশমিক ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির প্রার্থী কিম মুন সু পান ৪১ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন প্রেসিডেন্ট লি’র সামনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোরিয়ার শুল্কনীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। অপরদিকে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির মুখে দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন থাকলেও, ওয়াশিংটন কিছু সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এর আগে, লি জে-মিয়ং অতীতে দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র জোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তবে নির্বাচনী প্রচারে এবার কিছুটা নমনীয় অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। একইসাথে তিনি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের পক্ষে, যা ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্কের জটিলতা বৃদ্ধি করতে পারে বলে ধারণা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের।
অপরদিকে, নির্বাচনে জয়ের পর দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিয়ং। কঠিন এই পরিস্থিতিতে দেশটির ক্ষমতায় বসে আদর্শগত যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তি ও ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করবেন, এমনটাই আশা দেশটির সাধারণ নাগরিকদের।
আন্তর্জাতিক
অবশেষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান অবশেষে পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছেন। শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শাংরিলা ডায়লগে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই স্বীকারোক্তি দেন।
জেনারেল চৌহান বলেন, “বিমানের সংখ্যা নয়, বরং কী ভুল হয়েছে এবং কেন হয়েছে- সেটা বোঝা আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।” যদিও তিনি পাকিস্তানের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেন, তবে কতগুলো বিমান হারিয়েছে ভারত, তা তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেননি।
তিনি জানান, “ভুলগুলো চিহ্নিত করে আমরা দ্রুত সেগুলোর সংশোধন করেছি এবং মাত্র দুই দিনের মধ্যে আবার আকাশে সব যুদ্ধবিমান নিয়ে হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছি।”
ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয়টি স্বীকার করা হলো। উল্লেখ্য, সংঘাতের মধ্যেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে সেই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই হয়নি এবং ভারত সরকারও এতদিন বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর থেকেই পাক-ভারত এই সংঘাত শুরু হয়। ভারত একে ‘পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে দাবি করলেও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে। সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে উভয় দেশ বিমান, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি সীমান্তে গুলিবিনিময়ে জড়িয়ে পড়ে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য যে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু যুদ্ধ এড়াতে ভূমিকা রেখেছে- এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানান জেনারেল চৌহান। তিনি বলেন, “পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিলাম- এমন দাবি বাস্তবতার থেকে অনেক দূরে।”
চৌহান আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগের পথ সবসময় খোলা ছিল এবং উত্তেজনা প্রশমনে বিকল্প অনেক পথ রয়েছে। তিনি পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা প্রসঙ্গে বলেন, “চীনসহ বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে পাকিস্তান যেসব অস্ত্র পেয়েছিল, সেগুলো কার্যকর হয়নি।” তবে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থার মতে, চীন সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে বিমান প্রতিরক্ষা ও স্যাটেলাইট সহায়তা দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা পাকিস্তানের সুরক্ষিত ঘাঁটির ৩০০ কিলোমিটার ভেতরে মিটার-নির্ভুলতায় হামলা চালাতে পেরেছি।” তিনি জানান, বর্তমানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে তা পাকিস্তানের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, “আমরা আমাদের স্পষ্ট লাল দাগ টেনে দিয়েছি।”
এর আগে বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এক সাক্ষাৎকারে জানান, পাকিস্তান চীনা প্রযুক্তিনির্ভর যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তিনি রাফায়েল বিমানের কার্যকারিতা এবং চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো জবাবদিহিতা নেই। তার এই বক্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশে আসতে চায় শুভেন্দুসহ বিজেপির টিম

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা’ পরিদর্শন করতে বাংলাদেশ সফর করবে বলে জানা গেছে। এমনটাই জানিয়েছেন, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেই টিমে কতজন প্রতিনিধি থাকবে সে তথ্য এখনও জানা যায়নি।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপদূতাবাসও বিজেপি টিমের বাংলাদেশ সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুভেন্দুসহ বিজেপির একটি টিম বাংলাদেশে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের ভিসা নিয়ে সমস্যা হবে না বলেও জানানো হয়। তবে কতজন যাবে, বিজেপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
গত শুক্রবার (৩০ মে) বিজেপির একটি টিম বাংলাদেশ মিশনে এসেছিলেন স্মারকলিপি জমা দিতে। এরপর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু বলেন, সম্প্রতি যশোরে হামলার শিকার হওয়া সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি দেখতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল শিগগির বাংলাদেশে যাবে।
এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারকে। তাকে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। সড়কপথে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা যশোরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু।
এরই মধ্যে কলকাতার বাংলাদেশ মিশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন জানিয়েছে, যদি কোনো প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ যেতে চায়, তবে তাদের দ্রুত ভিসার ব্যবস্থা করা হবে।
মূলত গত সপ্তাহে যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহরমশিয়াহাটি গ্রামে মতুয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এতে অন্তত ১৮টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়া পৌর শাখা কৃষক দলের সভাপতি এস এম তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনার পর এসব ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় বিএনপির ওই নেতার মৃত্যুর বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতে আগুন দেয় উত্তেজিত জনতা।
শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির পরিষদীয় দলের একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার কলকাতার বাংলাদেশ মিশনে স্মারকলিপি জমা দেন। শুভেন্দু জানান, বাংলাদেশ মিশন তাদের জানিয়েছে, ওই ঘটনায় ৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৬ হাজার টাকা, ৩০ কেজি করে চাল ও ২ বান্ডিল করে টিন সাহায্য দিয়েছে।
শুভেন্দু জানিয়েছেন, তারাও সাহায্য করতে চান। কিন্তু সরাসরি করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকার যদি অনুমতি দেয়, তাহলে সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়, রামকৃষ্ণ মিশন, গৌড়ীয় মঠ এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাধ্যমে সেখানে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিজেপির একটি টিম।