অর্থনীতি
টাকার অংক না বাড়িয়ে ‘ঋণের কিস্তি’ বাড়াতে পারবে ব্যাংক
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশেও বাড়ছে সুদহার। এতে করে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকার পরিমাণও বাড়ছে। ফলে অনেক গ্রাহক সময়মত ঋণের কিস্তি পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় ঋণের কিস্তির টাকার অংক না বাড়িয়ে ব্যাংকগুলো বাড়তি সুদ আদায়ের জন্য কিস্তির সংখ্যা বাড়াতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৮ এপ্রিল এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পাঠিয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টা বলছেন, নতুন সুদহারের কারণে মেয়াদি শিল্প ঋণ ও ব্যক্তি পর্যায়ের গৃহঋণের কিস্তির টাকার অংক বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়ছে না। এতে করে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে গ্রাহকদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক কিস্তির টাকার পরিমাণ না বাড়িয়ে কিস্তির সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলছে, গত বছরের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাংকগুলো যে সুদহারে কিস্তির পরিমাণ নির্ধারণ করেছিল, সেটি অপরিবর্তিত রাখতে হবে। নতুন সুদহারের কারণে কোনো গ্রাহকের কিস্তির পরিমাণ বেড়ে গেলে অতিরিক্ত অর্থ স্থানান্তর করতে হবে সুদ বিহীন আলাদা ব্লকড হিসাবে। শিল্প ও গৃহঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন সুদহারের কারণে অতিরিক্ত যে অর্থ আলাদা হিসাবে যোগ হবে, তা আগের সমপরিমাণ কিস্তিতে পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য বাড়তি যে সময় লাগবে, সেই সময়ের মধ্যে বাড়তি সুদ পরিশোধ করা যাবে কিস্তিতে। এ ক্ষেত্রে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঋণ স্থিতি বিবেচনায় নিতে হবে।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, কোনো ব্যক্তির গৃহঋণের ক্ষেত্রে গত বছরের ১ জুলাইয়ের আগে সুদাসলে মাসিক কিস্তির পরিমাণ ছিল ১০ হাজার টাকা। ওই সময় ১০ শতাংশ সুদহারে এ কিস্তি আদায় করা হতো। এখন সুদহার বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশ। তাতে ওই ঋণগ্রহীতার কিস্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। নতুন সুদহারের কারণে কিস্তি বাবদ বাড়তি যে ৫০০ টাকা বেড়েছে, সেটি প্রতি মাসের কিস্তির মাধ্যমে আদায় করা যাবে না। বাড়তি এই ৫০০ টাকা আলাদা একটি ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করে গ্রাহকের ঋণের মেয়াদ পূর্তির পর তা আদায়ের উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকগুলো তাদের নিয়মিত গ্রাহকদেরই এই সুবিধা দিতে পারবে। প্রচলিত ব্যাংকিং ধারার পাশাপাশি ইসলামি শরিয়াহ ব্যাংকের গ্রাহকেরাও একই ধরনের সুবিধা পাবেন। কিন্তু আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে অশ্রেণিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া যাবে না। আবার রূপান্তরিত মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। পাশাপাশি ঋণ খেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বা কোনো কোম্পানিকে এই সুবিধা দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার গঠিত প্রণোদনা বা বিশেষ তহবিলের আওতায় প্রদত্ত ঋণের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা কার্যকর হবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের তৃতীয় মাস মার্চে ঋণের সুদহার হবে ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ আর ভোক্তা ঋণের সুদহার পড়বে ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ। যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ আর জানুয়ারিতে ছিল ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ভোক্তা ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ ছিল। এভাবে ধারাবাহিক ঋণের সুদহার বাড়ছে। এতে গ্রাহকের কিস্তির অঙ্কও বেড়ে যাচ্ছে। তাই ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধের সুবিধার্থে ঋণের কিস্তির টাকার পরিমাণ না বাড়িয়ে কিস্তির সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৭৮৪ ডলার
চলতি অর্থবছর শেষ হতে বাকি আর অল্প কিছুদিন। শেষ সময়ে এসে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৫.৮২ হবে। আর দেশের মানুষের মাথাপিছু মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলারে। যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৭৪৯ মার্কিন ডলার।
সোমবার (২০ মে) জিডিপির সাময়িকী তথ্য প্রকাশ করে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
বিবিএস বলছে, চলতি অর্থবছর শেষ হতে আর কিছুদিন বাকি। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৫.৮২ শতাংশ দাঁড়াবে। যা আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৫.৭৮ শতাংশ।
বর্তমানে টাকা হিসেবে মাথাপিছু আয় ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৮২ শতাংশ: বিবিএস
চলতি অর্থবছর শেষ হতে আর অল্প কিছুদিন বাকি আছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশে দাঁড়াবে, যা আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
সোমবার (২০ মে) জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বিবিএস বলছে, এ বছর বাংলাদেশের জিডিপির আকার বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে তা ছিল ৪৪ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা।
সাময়িক হিসাবে বলা হচ্ছে, এ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসছে শিল্পখাতে। শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে। আগের অর্থবছরে তা ছিল ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির হিসাবে সবচেয়ে খারাপ কৃষি খাতে ৩ দশমিক ২১ শতাংশ, আগের অর্থবছরে তা ছিল ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে শিল্প ও কৃষিতে কমলেও আগের বছরের তুলনায় এবার সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে ধারণা দিয়েছে সরকারি এ সংস্থা। তারা বলছে, সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে, আগের অর্থবছরে তা ছিল ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংকের হিসাবে এ প্রবৃদ্ধি আরও কম হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
যদিও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বলছে, প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হবে। রপ্তানির ওপর নির্ভর করে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে এডিবির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা বাজেট সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ
৩০ দশমিক ৫ কোটি ইউরো বাজেট সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা তিন হাজার ৮৬৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ফরাসি সরকারের অর্থায়নকারী এজেন্স ফ্রান্স ডি ডেভেলপমেন্টের (এএফডি) সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে।
সোমবার (২০ মে) নগরীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং এএফডি’র ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কর্টেজ ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। মোট ৩০ দশমিক ৫ কোটি ইউরো চুক্তি সই হয়। এর মধ্যে পাঁচ মিলিয়ন ইউরো অনুদান সহায়তা।
ইআরডি জানায়, পলিসি লোন ইন সাপোর্ট অব জিওবি ক্লাইমেট চেঞ্জ এজেন্ডা’ প্রকল্পের আওতায় এই চুক্তি সই হয়েছে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য, ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান, দ্য মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপাইরিটি এবং ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্টিবিউশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা। জলবায়ুর নেতিবাচক অভিঘাতের বিরুদ্ধে কার্যকর ও শক্তিশালী ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জলবায়ু-সহিষ্ণু ও স্বল্প কার্বন নিঃসরণভিত্তিক অগ্রযাত্রাকে সমর্থন করা।
২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে এএফডি কার্যক্রম শুরু করে। এএফডি হলো একটি দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সংস্থা, যা ফরাসি সরকারের পক্ষে উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকে। এফডি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং স্বাস্থ্য ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহায়তা দেয়।
বর্তমানে এএফডি ১১টি চলমান প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। ১১টি প্রকল্পে অর্থায়নের পরিমাণ এক দশমিক ১৪ বিলিয়ন ইউরো। এ পর্যন্ত এএফডি বাংলাদেশে দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ইউরো ঋণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন,শুধু নগরকেন্দ্রিক উন্নয়নে আবদ্ধ না থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এসএমই মেলা উদ্যোক্তাদের ব্যবসা বিকাশে সহায়তা করছে। নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে।
সোমবার (২০ মে) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট অর্থায়ন: প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের মূলধারার জন্য সম্ভাব্য সমাধান’ জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা জানান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুলেখা রানী বসু। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী।
ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন ঋণ দেবে, তাকে তো কিছুর ওপর ঋণ দিতে হবে। সেটা যে অংকের ঋণই হোক। ২০২৪ এসে শুনতে হয় আমি ব্যবসার হিসাব রাখতে পারছি না। কত টাকা বিক্রি করছি, কত টাকার কিনছি তার হিসাব রাখতে পারছি না। যে জন্য ব্যাংকে যেতে পারছি না। কাচা খাতা বা এখন মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে হিসাব রাখা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে উদ্যোক্তারা অনলাইন ও ইউটিউব থেকে ব্যবসার অভিজ্ঞতা নিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর বাজেটে একশ কোটি টাকা রাখা হয় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য। সেটা ব্যবহার হয় না। কারণ নানা ধরনের শর্তের জন্য। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বারংবার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। উদ্যোক্তারা যদি আরেকটু তৎপর হন তাহলে তাদের ব্যবসার অর্থায়নের যথেষ্ট সুযোগ আছে। আমরা স্মার্ট ফাইন্যান্সিং করছি। এজন্য উদ্যোক্তাদের মাথায় রাখতে হবে। পাঁচ বছর পর ব্যবসা কোথায় নেবেন, সে বিষয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে। সরকারের দেওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে।
ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫৬ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল ধারায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে পূর্ব পাকিস্তান ক্ষুদ্রশিল্প করপোরেশন (ইপসিক) প্রতিষ্ঠা করেন। যার বর্তমান নাম বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। জাতির পিতার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন (এসএমই ফাউন্ডেশন) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপান্তরকারী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার শিল্পনীতি-২০১৬ ও এসএমই নীতিমালা-২০১৯ প্রণয়ন করেছে। এসডিজি-২০৩০, রূপকল্প-২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন নীতিমালা ও কৌশলপত্রে এসএমই খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দশ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৬ হাজার কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)। রাজস্ব আদায়ের যে সংশোধিত লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে ২৬ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা কম আদায় করতে পেরেছে এনবিআর। যা মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই আদায় ৪৬ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা কম। প্রতিবছরের মতো এবারও অর্থবছরের শুরু থেকেই লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে পড়েছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া ঋণের শর্ত হিসেবে এবার বাড়তি রাজস্ব আদায়ের শর্তও পূরণ করতে হবে সংস্থাটিকে। আইএমএফের শর্ত মতে, রাজস্ব খাতে সংস্কারের পাশাপাশি প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০.৫ শতাংশ হারে বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত সব মিলিয়ে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৩২১ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় হয়েছে। এই সময় সংস্থাটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল তিন লাখ ১৩ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা।
গত ১০ মাসে মাসওয়ারি হিসাবে গড়ে ২৮ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। চলতি অর্থবছরে সব মিলিয়ে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল এনবিআরকে। পরে অবশ্য লক্ষ্য অর্জনে কোনো সম্ভাবনা না থাকায় এই লক্ষ্য কমিয়ে চার লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আমদানি, ভ্যাট ও আয়কর—এই তিন খাতের মধ্যে কোনোটিই গত ১০ মাসে লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি।
এর মধ্যে আমদানি পর্যায়ে ৮২ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা, ভ্যাটে এক লাখ ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা ও আয়করে ৯৩ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা আদায় করতে পেরেছে এনবিআর। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ থেকে অনেক পিছিয়ে থাকলেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪.৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। এর মধ্যে আয়কর আদায়ে সর্বোচ্চ ১৯.৩৩ শতাংশ, ভ্যাটে ১৩.৭৯ শতাংশ ও আমদানি পর্যায়ে ১১.৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে না পারলে সরকারের বিভিন্ন খাতে খরচ কমাতে হয়। খরচ কমানোর অংশ হিসেবে বরাদ্দ কমানো হয় উন্নয়ন প্রকল্পে। কারণ, বেতন-ভাতা, ঋণের কিস্তি পরিশোধ, ভর্তুকি—এসব খাতে সরকারের খরচ কমানোর সুযোগ নেই।
অথচ চলতি অর্থবছর এনবিআরকে তিন লাখ ৯৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। অর্থ বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হলেও এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অসম্ভব রাজস্ব আদায়ের নানা কৌশল আইএমএফের কাছে তুলে ধরেছিল এনবিআর।
অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অতিরিক্ত ২৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আদায় করতে হতো। এর মধ্যে আয়কর খাতে ৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে তিন হাজার ৯৫০ কোটি টাকা ও ১১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা কাস্টমস খাতে।
কাফি