Connect with us

ধর্ম ও জীবন

সদকাতুল ফিতর বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিধান

Published

on

ইপিএস

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিন সকালে সিয়াম পালনকারীরা যেভাবে নিজে খায় তেমনি দরিদ্রদের খাওয়ানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ইসলামে যে অর্থ দিয়ে সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই দানকে শরিয়তের পরিভাষায় সদকাতুল ফিতর বলে।

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতর রোজাকে বেহুদা ও অশ্লীল কথাবার্তা ও আচরণ থেকে পবিত্র করার উদ্দেশ্যে এবং মিসকিনদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা (ঈদুল ফিতরের) নামাজের পরে পরিশোধ করে তা অন্যান্য সাধারণ দান-খয়রাতের অনুরূপ হিসাবে গণ্য। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৬০৯)

বস্তুত এক মাস রোজা রাখতে গিয়ে আমাদের ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় যেসব ছোট ভুলত্রুটি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবেই সদকাতুল ফিতর।

সদকাতুল ফিতর কার ওপর ওয়াজিব
প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী, যার হাতে ঈদের দিন সুবহে সাদিকের সময় জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু ব্যতীত অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তার ওপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।

সদকাতুল ফিতর কে আদায় করবে
সদকাতুল ফিতর নিজের পক্ষ থেকে এবং তার অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব। নিজের স্ত্রী ও প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে স্বামী ও বাবার জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়, তারা নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হলে নিজেরাই তাদেরটা আদায় করবে। তবে স্বামী ও বাবা যদি তাদের পক্ষ থেকে আদায় করে দেয়, তাহলে সদকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যাবে।

সদকাতুল ফিতর কাকে দেবে
জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত যেকোনো গরিব মুসলমানকে সদকাতুল ফিতর দেবে। যদি আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হয়, তাহলে অন্যদের তুলনায় তাদের দেওয়াই উত্তম। তাই ভাই-বোন, চাচা-ভাতিজা, মামা, খালা, ফুফু এদেরকে দেওয়া যাবে। তবে নিজ পিতামাতার দাদা-দাদি, নানা-নানি প্রমুখ ব্যক্তি, তেমনি নিজের ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি এবং তাদের অধীনস্তকে সদকাতুল ফিতর দেওয়া যাবে না।

সদকাতুল ফিতর কখন আদায় করবেন
ঈদের আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়া উত্তম। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে নবী (সা.) লোকদের ঈদের নামাজের উদ্দেশে বের হওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪২১)

তাই সদকাতুল ফিতর রমজানের শেষ দিকে আদায় করা উচিত। কারণ এতে গরিব মানুষের ঈদের প্রয়োজন পূরণে সহায়ক হবে। (আল-বাহরুর রায়েক : ২/২৫৫)

ঈদের আগে আদায় করতে না পারলে
সদকাতুল ফিতর আদায় করা আবশ্যক। যথাসময়ে কেউ যদি কোনো কারণে আদায় করতে না পারে, তাহলে ঈদের পরে হলেও যথাসম্ভব দ্রুত আদায় করে দিতে হবে। আর ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় এ ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে।

জাকাত ফরজ না হলে ফিতরা আদায় করতে হয় না?
আমাদের অনেকের ধারণা, যদি কারো ওপর জাকাত ফরজ না হয় তাহলে তার ওপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয় না। অথচ এমন ধারণা ঠিক নয়। কোনো লোকের ওপর জাকাত ফরজ না হলেও সদকাতুল ফিতর আবশ্যক হয়। কারণ জাকাত ও সদকাতুল ফিতরের নিসাবের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। জাকাত শুধু তিন প্রকারের সম্পদের ওপর ফরজ হয়। জাকাত শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা এবং ব্যবসায় পণ্যের ওপরই ফরজ হয়।

আর সদকাতুল ফিতর প্রয়োজন অতিরিক্ত সব ধরনের সম্পদের ওপর ওয়াজিব হয়। বসবাসের অতিরিক্ত ঘরবাড়ি, প্রয়োজন অতিরিক্ত গাড়ি, ঘরের অপ্রয়োজনীয় আসবাব ইত্যাদি সদকাতুল ফিতরের নিসাবের আওতায় আসে। তাই এমন ধারণা ঠিক নয় যে জাকাত ফরজ না হলে সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয় না।

রোজা না রাখলে ফিতরা আদায় করতে হয়?
শরিয়ত কর্তৃক কোনো ওজরের কারণে কেউ যদি রোজা রাখতে না পারে, তাহলে তার সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয় না, এমনটা অনেকেই ধারণা করেন। এই ধারণাও সম্পূর্ণ ভুল। কারণ সদকাতুল ফিতর স্বতন্ত্র একটি ইবাদত। ওজরের কারণে রোজা রাখতে না পারলে সে যদি নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হয়, তাহলে তাকেও সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে।

প্রবাসীদের সদকাতুল ফিতর
আমাদের দেশের যেসব ভাই প্রবাসে থাকেন তাঁরা যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন, তাহলে তাঁরা কোন দেশে সদকাতুল ফিতর আদায় করবেন! এর জবাব হচ্ছে, তিনি যেকোনো দেশে চাইলে আদায় করতে পারবেন। নিজ দেশে তাঁর প্রতিনিধি যদি তাঁর পক্ষ থেকে আদায় করে তাহলে আদায় হয়ে যাবে।

এ ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সামনে আসে তা হচ্ছে, এমন ব্যক্তি কোন দেশের দ্রব্যমূল্য হিসাবে সদকাতুল ফিতর আদায় করবেন? তিনি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশ হিসেবে, না তার স্বদেশ হিসাবে?

এর জবাব হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে বিধান হচ্ছে সদকাতুল ফিতর যিনি আদায় করবেন যে দেশে অবস্থান করছেন সেই দেশের খাদ্যদ্রব্যের মূল্য হিসেবেই আদায় করবেন। কেউ যদি সৌদিপ্রবাসী হন তাহলে সৌদি আরবের খাদ্য মূল্য অনুযায়ী তাঁকে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। তাই সৌদি আরবে বসবাসকারী কোনো ভাই যদি বাংলাদেশে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে চান, তাহলে সৌদি আরবের হিসাব অনুযায়ী আদায় করতে হবে, বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী নয়। আমাদের সমাজে অনেকেই এ ক্ষেত্রে ভুল করে থাকেন।

তেমনি বিদেশে অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি যদি তাঁর অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে ফিতরা দেশে আদায় করতে চান তাহলেও বিদেশের হিসাব অনুযায়ী আদায় করতে হবে, দেশের হিসাবে নয়। কারণ নাবালেগ সন্তানের সদকাতুল ফিতর আদায় করা পিতার ওপর আবশ্যক। আর শরিয়তে ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে যার ওপর আবশ্যক সে যে স্থানে অবস্থান করছে সেখানকার দ্রব্যমূল্য ধরে আদায় করতে হবে, যাদের পক্ষ থেকে আদায় করা হচ্ছে তাদের অবস্থান ধর্তব্য নয়।

তবে দেশে অবস্থানরত নিজ স্ত্রী ও প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে যদি সদকাতুল ফিতর আদায় করতে চায়, তাহলে দেশের হিসাবে আদায় করবে। কারণ স্ত্রী ও বালেগ সন্তানের সদকাতুল ফিতর তাদের নিজের ওপর আবশ্যক হয়, স্বামী বা বাবার ওপর নয়। তাই তাদের ফিতরা স্বামী বা বাবা আদায় করলে মূলত আদায়কারী তারা নিজেরাই। এ জন্য তাদের অবস্থানস্থলের দ্রব্যমূল্য হিসাবে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে।

বিদেশের অবস্থানরত কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে বাবা যদি দেশে নিজ সম্পদ দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করেন, তাহলে বিদেশের হিসাব অনুযায়ী আদায় করতে হবে। (রদ্দুল মুহতার : ২/৩৫৫)

কাফি

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্ম ও জীবন

জুমার আগে যে চার আমল করবেন

Published

on

ইপিএস

জুমার দিন বা শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের মর্যাদা ও তাৎপর্য অনেক বেশি। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।

কোরআন মজিদে সুরা জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচাকেনা বন্ধ রাখবে। এই তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা বোঝো। নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়াছে। এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)

জুমার আগে যে চার আমল করবেন

শুক্রবারে বিশেষ কিছু আমল ও সুন্নত রয়েছে। বিভিন্ন হাদিসে সেগুলো বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিক কয়েকটি হলো- গোসল করা, উত্তম পোশাক গায়ে দেওয়া, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সমস্ত সগিরা গুনাহর জন্য কাফ্ফারা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

কোরবানির জন্য কেমন পশু কিনবেন?

Published

on

ইপিএস

কোরবানির সম্পর্কে হযরত মিখজাফ ইবনে সালিম রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে আরাফার ময়দানে দাঁড়িয়ে সমবেত লোকদেরকে সম্বোধন করে একথা বলতে শুনেছি, ‘হে লোক সকল! তোমরা জেনে রাখ, প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর প্রত্যেক বছরই কোরবানি করা কর্তব্য। আর যার সামর্থ্য নেই তাদের ওপর কোরবানি কর্তব্য নয়। কারণ আল্লাহ কারও ওপর এমন কোনো কাজের দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না, যা তার সাধ্যের বাইরে।’ (তিরমিজি)

কোরবানি করার জন্য শরিয়তে কয়েক ধরনের পশু নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দিয়ে কোরবানির করা জায়েজ। অন্য কোন পশু দিয়ে কোরবানি করার বিধান নেই।

আর বয়সের ক্ষেত্রে ছাগল, ভেড়া, দুম্বা অন্তত এক বছর । গরু, মহিষ অন্তত দুই বছর ও উট অন্তত ৫ বছর হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে ছয় মাসেরটি দেখতে এক বছরের মতো লাগে, তাহলে সেটি দিয়ে কোরবানি হবে।

কোরবানির পশু কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে-

এমন দুর্বল পশু কেনা যাবে না যার হাড়ের মজ্জা শুকিয়ে গেছে বা কোরবানির স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারবে না। এরকম পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। আর মোটা-তাজা পশু দিয়ে কোরবানি করা মুস্তাহাব।

কোন পশুর একটি পা যদি এমন ভাবে নষ্ট হয়ে যায় যে, চলার সময় সেটি দিয়ে কোন সাহায্য নিতে পারে না তবে ওই পশু দিয়ে কোরবানি হবে না।

এছাড়া আরো যেসব পশু দিয়ে কোরবানি হবে না-

>শিং গোড়া থেকে ভেঙে গেলে সেই ক্ষত যদি মগজ পর্যন্ত পৌছায়।

>দাঁত মোটেও না উঠলে বা যদি অর্ধেক দাড় পড়ে যায়।

>দৃষ্টি শক্তি তিন ভাগের এক ভাগ কমে বা নষ্ট হয়ে গেলে।

>লেজের অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ কাটা গেলে।

>কান একেবারে না উঠলে(অবশ্য খুব ছোট কান থাকলেও হবে)।

>তবে শিং মোটেও না উঠলে সেই পশু দিয়ে কোরবানি হবে।

গাভীন বলে জানা গেলে সেটা দিয়ে কোরবানি হবে। তবে পেটে বাচ্চা জীবিত পাওয়া গেলে সেটিকেও আল্লাহর নামে জবেহ করতে হবে।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

অসুস্থ প্রাণী জবাই করে খাওয়া যাবে?

Published

on

ইপিএস

ইসলামি বিধানতে হালাল প্রাণীর গোশত খাওয়া বৈধ। কোন কোন প্রাণী বা কী ধরনের প্রাণী খাওয়া জায়েজ ইসলাম এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। হালাল-হারাম সম্পর্কিত কোরআন ও হাদিসের আলোকে প্রণীত মূলনীতি অনুসারে যেসব পশু পাখির গোশত খাওয়া হালাল তা হলো- উট, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হরিণ, খরগোশ, গরু (বন্য গরুসহ), বন্য গাধা, হাঁস, মুরগী, তিতির, হুদহুদ, রাজহাঁস, বক, সারস, উটপাখি, ময়ুর, চড়ই, কোয়েল, ঘুঘু, কবুতর, পানকৌড়ী এবং মাছ (চিংড়িসহ), ইত্যাদি।

এর বাইরে যেসব পশু-পাখির মাংস খাওয়া হারাম তা হলো- শুকর, হায়না, নেকড়ে কুকুর, বিড়াল, বানর, চিতা, সিংহ, বাঘ, জারবয়া, ভাল্লুক, সাপ, কাঠ বিড়ালী, কচ্ছপ, বেজী, শিয়াল, গৃহপালিত গাধা, হাতি। (রাদ্দুল মুহ্তার, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৩০৬)।

যে সকল পশু-পাখির গোশত খাওয়া বৈধ, ওগুলোও যেন-তেনভাবে মেরে খাওয়া যাবে না। বরং এমনভাবে জবাই করে খেতে হবে, যেন নাপাক রক্ত পশুর শরীর থেকে বের হয়ে যায় এবং জন্তুরও কষ্ট কম হয়। তাই ইসলামের বিধান হচ্ছে, জবাই করার সময় মূল চারটা রগের কমপক্ষে তিনটা কাটতে হবে। এতে নাপাক রক্ত বেশি বের হবে এবং সহজে পশুর জান বের হয়ে যাবে।

সুস্থ সবল প্রাণী সহজেই জবাই করে খাওয়া যায়, তবে অনেক সময় দেখা যায় কিছু কিছু প্রাণী অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তা জবাই করে খাওয়া।

অসুস্থ প্রাণী জবাই করে খাওয়া নিয়ে আমাদের সমাজে একটা কথা প্রসিদ্ধ আছে যে, যখন কোনো পশু খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন এমন পশু জবাই করা ও খাওয়া ঠিক নয়। বিশেষত যখন এমন মনে হয় যে, পশুটি হয়তো বেশিদিন বাঁচবে না।

শরীয়তে এমন পশু খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না? এবিষয়ে ফেকাহবিদ আলেমদের মতামত হলো—

প্রাণীর অসুস্থতা দুই ধরনের হতে পারে।

এক. এমন অসুস্থতা, যার কারণে পশুর গোশত খেলে মানব শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়া এবং ক্ষতি হওয়ার সমূহ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে এমন প্রাণীর গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়। এবং কোনো বিক্রেতা রোগের বিষয়টির সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য ঘোষণা ছাড়া এধরনের প্রাণী বা এর গোশত বিক্রি করতে পারবে না। এটি শরীয়তে নিষিদ্ধ ‘আলগারার’ ও ‘আলখিদা’-এর শামিল হবে।

দুই. কোনো প্রাণীর এমন সাধারণ অসুস্থতা, যা তার গোশতে তেমন প্রভাব ফেলে না এবং তা মানব শরীরের জন্য তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি করে বলেও প্রমাণিত নয়। সে ধরনের অসুস্থ প্রাণীর গোশত খেতে কোনো অসুবিধা নেই। এবং সে প্রাণী বা এর গোশত বিক্রি করতেও বাধা নেই।

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

একসঙ্গে অনেককে সালাম দিলে উত্তর দেবেন কে?

Published

on

ইপিএস

সালাম দেওয়া সুন্নত। আর উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। মুসলমানরা একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সালাম দিয়ে থাকেন। কারণ সালাম ইসলামের অভিবাদন, শান্তির প্রতীক এবং গুরুত্বপূর্ণ সংস্কৃতির অংশ। সালামের মাধ্যমে নিরাপত্তা ও শান্তির বার্তা ছড়ানো হয়। সালাম দেওয়া-নেওয়া জান্নাতি মানুষের অভ্যাস।

সালামের প্রচলনকে ইসলামের শ্রেষ্ঠ কাজ বলে অভিহিত করেছেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘হে লোক সকল! তোমরা সালাম প্রচার করো, (ক্ষুধার্তকে) খাবার দান করো, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ এবং লোকে যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা নামাজ পড়ো। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস, ২৪৮৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৩৩৪-৩২৫১; দারেমি, হাদিস, ১৪৬০)

সালাম এবং মুসাফাহার মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। এ সম্পর্কে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা একে অপরের সঙ্গে মুসাফাহা করো, এতে তোমাদের অন্তরে বিদ্যমান প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে। একে অন্যকে হাদিয়া প্রদান করো, এতে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে এবং শত্রুতা ও ঘৃণা দূরীভূত হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ৫২১২)

অনেক সময় দেখা যায় কোনো সভা-মঞ্চ বা আলোচনার মজলিশে অনেক মানুষ উপস্থিত থাকেন, সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে আলোচকেরা সালাম দিয়ে থাকেন। যেহেতু সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব।

তাই স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে- সভা-মঞ্চ বা আলোচনার মজলিশে উপস্থিত অনেককে একসঙ্গে সালাম দিলে উত্তর কে দেবেন? নাকি সবার পক্ষ থেকে একজন ব্যক্তিই উত্তর দিয়ে দিলে আদায় হয়ে যাবে?

এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে আলেমরা বলেন, কোথাও একাধিক ব্যক্তি থাকলে এবং সবাইকে উদ্দেশ্য করে সালাম দিলে সবার জন্য উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নয়। উপস্থিত মানুষদের পক্ষ থেকে কেউ একজন সালামের উত্তর দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে।

তবে যেহেতু উপস্থিত ব্যক্তিদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে সালাম দেওয়া হয়েছে তাই সবার জন্য উত্তর দেওয়া উত্তম। সবাই উত্তর দেওয়া সম্ভব হলে এবং উত্তর দেওয়ার মতো পরিস্থিতি থাকলে সবারই উচিত সালামের উত্তর দেওয়া।

তবে এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এবং লক্ষণীয় হলো- অনেক মানুষ আছে, কেউ না কেউ তো সালামের উত্তর দেবেন- এমন ভাবনা থেকে যদি কেউ সালামের উত্তর না দেয়, তাহলে সবাই গুনাহগার হবে।

আর যদি কখনো শুধু কোনো একজন ব্যক্তির নিয়ে বা কোনো এক ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে সালাম দেওয়া হয়, তাহলে তাকেই উত্তর দিতে হবে।

(ফতোয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত, ১২/১০৮, ফতোয়ায়ে কাজিখান, হিন্দিয়া, ৩/৩২৭, রদ্দুল মুহতার, ২/৪১৩)

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ ১৫ আমল

Published

on

ইপিএস

সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমাবার। এটি মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। সৃষ্টিজগতের শুরু থেকেই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। জুমাবার শুরু হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত অনেক আদব রয়েছে। যেসব আদব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করা বাঞ্ছনীয়। এখানে আমরা জেনে নেব জুমার দিন জুমা পড়তে মসজিদে ঢুকার পর থেকে যেসব আদব গুরুত্বের সঙ্গে রক্ষা করা উচিত।

১. আগেভাগে মসজিদে গিয়ে ইমামের কাছাকাছি বসা। (আবু দাউদ: ১১০৮)

২. সময় থাকলে দু’রাকাত নফল (তাহিয়্যাতুল মাসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ) পড়া। (সহিহ বুখারি: ১১৬৭)

৩. কাবলাল জুমা (৪ রাকাত সুন্নত) পড়া। (আল মুজামুল আওসাত: ১৬১৭)

৪. বয়ান শুরু হলে কাবলাল জুমা বয়ানের পরে পড়া। (মুসনাদে আহমদ: ২০৭২১, জুমার আদব)

৫. ইমামের দিকে মুখ করে বসা। (তিরমিজি: ৫০৯, ইবনে মাজাহ: ১১৩৬)

৬. চুপচাপ থাকা (নিচু কণ্ঠে জিকির-আজকার করা)। (সুনানে নাসায়ি: ১৪০১)

৭. মনোযোগসহ খুতবা শোনা ও খুতবার সময় চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব। (বুখারি: ৯৩৪, মুসলিম: ৮৫৭, আবু দাউদ: ১১১৩, আহমদ: ১/২৩০)

৮. বসে থাকা মুসল্লিদের ঠেলে বা সরিয়ে কিংবা মুসল্লিদের ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া। (বুখারি: ৯১০, ৮৮৩; আবু দাউদ: ৩৪৩)

৯. এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনোকিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। (আবু দাউদ: ১৩৩২)

১০. কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা। (বুখারি: ৯১১, মুসলিমঃ ২১৭৭, ২১৭৮)

১১. কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। (নাসায়ি: ৭১৪, বুখারি: ৯৩৪)

১২. ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা। (আবু দাউদ: ১১১০, ইবনে মাজাহ: ১১৩৪)

১৩. কাতারবদ্ধ হওয়ার সময় সামনের কাতার পুরা করা। (মুসলিম: ৪৩০; রদ্দুল মুহতার : ১/৬৩৬)

১৪. ইমামের পেছনে মনোযোগসহ দুরাকাত জুমার নামাজ পড়া। (সুরা জুমা: ৯-১০)

১৫. জুমার নামাজের পর মসজিদে চার রাকাআত সুন্নাত সালাত আদায় করা। (বুখাররি: ১৮২, মুসলিম: ৮৮১, আবু দাউদ: ১১৩০)

জুমার দিন জুমার নামাজের জন্য মসজিদে প্রবেশ করার পর উল্লেখিত নেক আমলগুলোর প্রতি মুসল্লিদের যত্নবান হওয়া উচিত। কেননা জুমার দিনের প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব ও মর্যাদা অনেক বেশি।

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন
ইপিএস
জাতীয়5 mins ago

সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ হজযাত্রী

ইপিএস
জাতীয়24 mins ago

এভারেস্ট জয় করলেন আরেক বাংলাদেশি

ইপিএস
অর্থনীতি31 mins ago

দেশেই রাসায়নিক কারখানা তৈরি করতে চান ব্যবসায়ীরা

ইপিএস
জাতীয়32 mins ago

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ইপিএস
আন্তর্জাতিক46 mins ago

মঙ্গলে ইতিহাস গড়ার যাত্রায় ভারত

ইপিএস
ব্যাংক51 mins ago

তথ্য প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র আছেন: ডিজি খুরশিদ

ইপিএস
রাজধানী1 hour ago

রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ রোববার

ইপিএস
জাতীয়1 hour ago

পাটকলগুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে সরকার: নানক

ইপিএস
অর্থনীতি14 hours ago

স্বর্ণের দাম বাড়লো, ভরি ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা

ইপিএস
পুঁজিবাজার15 hours ago

প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস কমেছে নয় ব্যাংকের

ইপিএস
পুঁজিবাজার15 hours ago

প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস বেড়েছে ২৪ ব্যাংকের

ইপিএস
জাতীয়15 hours ago

শিগগিরই মাগুরায় রেলপথ চালু হবে: রেলমন্ত্রী

ইপিএস
জাতীয়15 hours ago

দেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জলবায়ু স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্প

ইপিএস
আন্তর্জাতিক16 hours ago

১২ সেকেন্ডের মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা চুরি

ইপিএস
খেলাধুলা16 hours ago

বিশ্বকাপ জার্সি উন্মোচন নিয়ে যা বললেন জালাল ইউনুস

ইপিএস
জাতীয়16 hours ago

যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে: আইজিপি

ইপিএস
শিল্প-বাণিজ্য16 hours ago

স্মার্ট অর্থনীতি-রপ্তানি বাড়াতে ইএসজির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে

ইপিএস
জাতীয়17 hours ago

প্রথমবার বিশ্বব্যাংক ভূমি সম্মেলনে অংশ নিলো বাংলাদেশ

ইপিএস
জাতীয়17 hours ago

মোটরযানে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করলেই ব্যবস্থা

ইপিএস
জাতীয়17 hours ago

তিন জেলায় বজ্রপাতে ৭ জনের প্রাণহানি

ইপিএস
আইন-আদালত17 hours ago

ন্যায়বিচার পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার: প্রধান বিচারপতি

ইপিএস
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার18 hours ago

ইবিতে গুণীজনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

ইপিএস
জাতীয়18 hours ago

নির্বাচন সংক্রান্ত সেবা মিলবে ৯৯৯-এ

ইপিএস
অর্থনীতি18 hours ago

ইলেক্ট্রিক্যাল পণ্যের বাজারে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য

ইপিএস
আবহাওয়া18 hours ago

তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে সুখবর দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর

Advertisement

ফেসবুকে অর্থসংবাদ

২০১৮ সাল থেকে ২০২৩

অর্থসংবাদ আর্কাইভ

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১