অর্থনীতি
১০০ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ কতটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্য বলছে, দেশটির বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে গত ডিসেম্বরেই। অর্থাৎ ডলার প্রতি মূল্য ১১০ টাকা করে হিসেব করলে বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেয়ার ঋণের পরিমাণ প্রায় এগারো লাখ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার ২০শে মার্চে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি ঋণের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঋণের পরিমাণ একশো বিলিয়ন ডলার ছাড়ালেও তা জিডিপির তুলনায় বেশি নয়, বরং আরও ঋণ নেয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন জিডিপির তুলনায় একশো বিলিয়ন ডলার ঋণ বেশি না হলেও রাজস্ব আয়, রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স না বাড়াতে পারলে এবং একই সাথে বিদেশি ঋণের প্রবাহ কমিয়ে না আনতে পারলে এ ঋণই বিশাল চাপ তৈরি করতে পারে আগামী কয়েক বছরে।
বিশেষ করে ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে এবং এর মধ্যেই চলতি বছর থেকেই বড় বড় কিছু প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করাও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি ও রেমিট্যান্সও কাঙ্ক্ষিত আকারে বাড়ানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের সরবরাহ না বাড়ানো গেলে বিদেশি ঋণকে ঘিরে সংকট জোরালো হওয়ার আশংকা তৈরি হতে পারে বলছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যখন মেগা প্রকল্পগুলোর মূল অর্থ পরিশোধ শুরু হবে তখন পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিয়েই উদ্বিগ্ন অনেকে।
ঋণের মূল অর্থ দিতে হবে কখন
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কিছু মেগা প্রকল্পের মূল অর্থ পরিশোধ শুরু হবে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে এবং সেই বছরে ৫৩১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার কথা রয়েছে। এরপর ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৫১৯ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৮-২৯ সালে ৫০৭ মিলিয়ন ডলার শোধ করার আশা করছে সরকার। অন্যদিকে, ২০২২-২৩ বছর থেকেই যে বৈদেশিক ঋণ শোধ করা শুরু হয়েছে সেগুলো মূলত ঋণের সুদ।
সরকারি হিসেব মতে আগামী জুলাই থেকে শুরু হওয়া অর্থবছরে বিদেশি ঋণ হিসাবে চার দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার শোধের পরিকল্পনা আছে সরকারের। এরপর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সুদসহ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ দাঁড়াবে অন্তত সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে মূলত ভারত, চীন এবং রাশিয়ার কাছ থেকেই ঋণ নিয়েছে বেশি। এসব প্রকল্প সময়মত শেষ না করতে পারলে ঋণ আরও বাড়তে পারে। তবে সব মিলিয়ে একটি দেশের বিদেশি ঋণ হচ্ছে, ওই দেশটি বিভিন্ন দেশ, বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে ঋণ নেয় সেটি।
বাংলাদেশ সাধারণত বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকে।
‘এটি সংকট নয়, তবে অস্বস্তির’
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলছেন, জিডিপির অনুপাতে বিদেশি ঋণ এখনও কম- এটি সত্যি, কিন্তু এ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার কোন অবকাশ নেই। “মনে রাখতে হবে ঋণের ব্যবহার কেমন হচ্ছে এবং সেখান থেকে ডলারের অংকে উৎপাদনশীলতা আসছে কি-না -এটি নিশ্চিত করতে না পারলে সংকট তৈরি হবে সামনে,” বলছিলেন তিনি।
অর্থনীতিবিদদের হিসেবে জিডিপির অনুপাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ এখন ২৩ থেকে ২৫ শতাংশের মতো। আবার বিদেশি ঋণ হিসেবে যে অর্থ বাংলাদেশ নিয়েছে তার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ঋণ আছে। মি. হোসেন বলছেন, সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক ঋণ বেশী বেড়েছে। এগুলোর মেয়াদ কম কিন্তু খরচ বেশি। যেমন রূপপুর পরিমাণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে এবং পদ্মা সেতুতে রেল লাইন সংযোগ প্রকল্পের জন্য চীন বাণিজ্যিক চুক্তিতে শর্তযুক্ত ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ।
“এখন ধরুন, রূপপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ আসলো এবং সেটি অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখলো। দেশের রপ্তানিও বাড়লো। তাহলে সমস্যা হবে না। কিন্তু যদি প্রকল্প পেছাতে থাকে এবং সময়মত রিটার্ন না আসে – তাহলেই ঋণটা চাপ হয়ে উঠবে,” বলছিলেন মি. হোসেন।
আবার ডলার প্রবাহ না থাকলে সেটাও বহি:বাণিজ্যিক ভারসাম্যে যেমন চাপ তৈরি করবে, তেমনি বাজেটেও চাপ তৈরি করবে। সেক্ষেত্রে রাজস্ব আদায় না বাড়লেও ঋণ পরিশোধ কিন্তু সরকারকে করতেই হবে। সে কারণে পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলছেন, বিদেশি ঋণ জিডিপির তুলনায় যেমনই হোক দেখতে হবে সেটি রপ্তানির বিবেচনায় কেমন।
“এভাবে দেখলে বিষয়টি হবে অস্বস্তির, কারণ সত্যিকার অর্থে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি এখন কম। অথচ ঋণটা দ্রুত বাড়ছে,” বলছিলেন তিনি। তবে তা সত্ত্বেও একশো বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ হয়ে গেছে বলে এতে ঠিক ‘সংকট’ বলতে চান না তিনি। বরং তার ভাষ্য হলো- ‘এটি অস্বস্তির’।
উত্তরণের উপায় কী
আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, বিদেশি ঋণ নিয়ে এ অস্বস্তি মোকাবেলা করতে হলে এখনই ঋণ প্রবাহ কমিয়ে আনতে হবে, বিশেষ করে বাণিজ্যিক শর্তে ঋণ নেয়া অর্থাৎ সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট কমাতে হবে। “রাজস্ব আয়, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। তবে বাস্তবতা হলো রপ্তানি নির্ভরশীল হয়ে আছে একটি পণ্যের ওপর, যা অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয়।
আবার রেমিট্যান্স প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে না। অর্থ পাচারের কারণে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। তবে আমরা যদি দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারতাম তাহলে এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অনেক বাড়তো,” বলছিলেন তিনি। জাহিদ হোসেনও বলছেন যে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স না বাড়াতে পারলে বিদেশি ঋণ ভবিষ্যতে সংকটের জন্ম দিতে পারে।
“রাজস্ব আয় না বাড়ালে সরকারের ব্যয় কমানো একটি বিকল্প হতে পারে। এছাড়া নতুন ঋণ দিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ অর্থাৎ রিফাইনান্সিংও অন্য একটি বিকল্প হতে পারে। তবে যেসব ব্যয় এখনই দরকার নেই, সেগুলো থেকে সরকার বিরত থাকলে ঋণের চাপ কমবে,” বলছিলেন মি. হোসেন।
এই দুইজন অর্থনীতিবিদই মনে করেন, বিদেশি ঋণের বিপরীতে টাকায় অর্থাৎ স্থানীয় মুদ্রায় রিটার্ন আসার কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ার কারণেও বিদেশি ঋণের ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য যে বিদেশি ঋণ অপেক্ষমাণ আছে সেগুলোর অতিরিক্ত সুদের ব্যয় এড়াতে দ্রুত ব্যবহার দরকার বলেও মনে করেন তারা। তবে, এত সতর্কতা ও উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও আগামী দুটি অর্থ বছরে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এর বিপরীতে রাজস্ব আদায়ে যে লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরে নির্ধারণ করা হয়েছিলো সেটি কতটা অর্জিত হয় তা নিয়েও অর্থনীতিবিদদের মনে সংশয় আছে।
চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলো সরকার। এ সময়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায় করার কথা। আর বাকি অর্থ অন্য উৎস থেকে সংগ্রহ করার কথা রয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই

অর্থনীতি
আয়কর রিটার্ন ছাড়া ২৪টি সেবা বন্ধ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে নতুন একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। একই সাথে ব্যাংক ঋণ, আমানত ও সঞ্চয়পত্রসহ ২৪টি সেবায় আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারের এ নির্দেশনা মেনে ঋণ, আমানত ও সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সব তফসিলি ব্যাংককে জানানো হয়েছে, এখন থেকে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের আগে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে গ্রাহকদেরকে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কেউ যদি ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত রাখেন বা ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে রিটার্ন বাধ্যতামূলক। শুধু এই তিনটি নয়, মোট ২৪টি ব্যাংক সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এর আগে, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করেছে। গেজেট অনুযায়ী, এসব আর্থিক লেনদেন ও কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে, তা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ সেবা দিতে বাধ্য থাকবে না।
গেজেটে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যদি ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের মেয়াদি আমানত খুলতে চান বা তা চালু রাখতে চান, তাহলে তাকে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। একইভাবে ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে।
এছাড়া বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কেনা, কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স বা পেশাজীবী লাইসেন্স নবায়ন, জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমেও রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র, ট্রলার ও নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট, এমনকি স্কুলে শিশুর ভর্তি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স গ্রহণের মতো ক্ষেত্রেও রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজন হবে।
আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার এই উদ্যোগের মাধ্যমে করজালের আওতা বাড়ানো, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বৈত কর পরিহার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে দেশীয় আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
নতুন এই নিয়মের ফলে অধিক সংখ্যক নাগরিক আয়কর রিটার্ন দাখিলে আগ্রহী হবেন এবং দেশে কর সচেতনতা বাড়বে বলে আশা করছে সরকার।
কাফি
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ১৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি

কারিগরি, বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উন্নত করতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বাংলাদেশ সরকার ১৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এডিবির এ অর্থ কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যয় হবে।
রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং নিজ নিজ পক্ষে ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং সম্প্রতি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ কর্মসূচি পাঁচটি মূল প্রযুক্তি খাতকে লক্ষ্য করে কাজ করবে। এই খাতগুলো হলো– যান্ত্রিক, ইলেকট্রনিক্স ও বৈদ্যুতিক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, নাগরিক (সিভিল) এবং খাদ্য ও কৃষি।
জিয়ং আরও বলেন, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টির অগ্রাধিকারমূলক এজেন্ডাকে জোরালোভাবে সমর্থন করবে। এটি দারিদ্র্য ও সামাজিক বঞ্চনার মতো বিষয়গুলো মোকাবিলায় সহায়ক হবে এবং সরকারের সমন্বিত টিভিইটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন প্ল্যানের সঙ্গে সংগতি রেখে বৈশ্বিক বাজারে মানসম্মত কর্মসংস্থান ও প্রতিযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধি করবে।
এডিবি জানায়, বাংলাদেশজুড়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) শিক্ষকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে একটি নতুন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হলো ঢাকার বাইরের সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলের শিক্ষকদের কাছে উন্নত প্রশিক্ষণ পৌঁছে দেওয়া। এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষকদের শিক্ষাগত ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। বিশেষ করে উদীয়মান প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়া হবে। এর ফলে শিক্ষক উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও প্রতিবেদনের ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।
সংস্থাটি জানায়, কর্মসূচিটি শেষ হওয়ার পর কমপক্ষে ১০ হাজার নতুন ও বিদ্যমান টিভিইটি শিক্ষক তাদের দক্ষতা বাড়াতে পারবেন, যা ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ কর্মসূচি বাংলাদেশে টিভিইটির টেকসই মান ও প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করতে দেশব্যাপী একটি ধারাবাহিক পেশাদার উন্নয়ন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।
কাফি
অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের দাম কমলো

ভোক্তাপর্যায়ে এলপিজির নতুন বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৯১ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি অটোগ্যাসের দাম ৪ টাকা ১৮ পয়সা কমে ৫৮ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার (৩ আগস্ট) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২ জুলাই ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১ টাকা ৮৪ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬২ টাকা ৪৬ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অর্থনীতি
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করলো সরকার

আয়কর রিটার্ন জমা অনলাইনে বাধ্যতামূলক করলো সরকার। রবিবার (৩ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা বিশেষ আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে প্রবাসী বাংলাদেশি, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ ব্যক্তি, সনদপত্র দাখিল সাপেক্ষে শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি ও মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি এই নিয়মের বাইরে থাকবেন। এই চার শ্রেণির করদাতা চাইলে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
এনবিআর জানায়, অনলাইন রিটার্ন দাখিলের সময় কোনো সমস্যা হলে কল সেন্টার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা পাওয়া যাবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, ই-রিটার্ন সিস্টেমে কারিগরি সমস্যার কারণে যদি কোনো সাধারণ করদাতা রিটার্ন জমা দিতে না পারেন, তাহলে তাকে আগামী ৩১ অক্টোবর ২০২৫-এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে যুক্তিসঙ্গত কারণ জানিয়ে আবেদন করতে হবে। অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদন সাপেক্ষে তারা কাগজে (পেপার রিটার্ন) রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
আয়কর আইন ২০২৪ এর ধারা ৩২৮ এর উপ ধারা (চ) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ আদেশ দ্বারা ৪ আগস্ট থেকে কিছু ক্ষেত্র ব্যতীত সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার অনলাইনে (www.ctaxnbf.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলো।
গত বছর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের সব সরকারি কর্মকর্তা, সব তফসিলি ব্যাংক ও কিছু বড় কোম্পানির কর্মকর্তাদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এ বছরের মাঝামাঝি সবার জন্য অনলাইন রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছিল এনবিআর।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে ১ কোটি ৪৫ লাখ টিআইএনধারীর মধ্যে মাত্র ৪৫ লাখ রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য নির্ধারণ আজ

আগস্ট মাসের জন্য ভোক্তাপর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য ঘোষণা দেওয়া হবে আজ। রবিবার (৩ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মূল্য ঘোষণা করবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এর আগে গত ২ জুলাই ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১ টাকা ৮৪ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬২ টাকা ৪৬ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ৪ দফা কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, আর বেড়েছে ৭ দফা। এ দফা ছিল অপরিবর্তিত। গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর বাড়ানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম কমেছিল এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে। তবে দাম অপরিবর্তিত ছিল ডিসেম্বরে।