আন্তর্জাতিক
জার্মানিতে বাড়ছে করপোরেট দেউলিয়াত্ব
কয়েক বছর ধরে নিম্ন প্রবৃদ্ধি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সুদহার নিয়ে নাকাল ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ জার্মানি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতিরক্ষা ব্যয়। অর্থনৈতিক টানাপড়েনের এ প্রভাব পড়েছে করপোরেট খাতেও, বছরওয়ারি বেড়ে চলছে দেউলিয়াত্বের হার। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ডেস্ট্যাটিসের তথ্যের বরাতে রয়টার্সে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, জার্মানিতে ২০২৩ সালে বছরওয়ারি করপোরেট দেউলিয়াত্ব বেড়েছে ২২ দশমিক ১ শতাংশ। ওই বছরের জুন থেকে দেউলিয়াত্ব বৃদ্ধির হার টানা ডাবল ডিজিটে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর দেশটিতে প্রায় ১৭ হাজার ৮১৪টি কোম্পানি দেউলিয়াত্বের জন্য আবেদন করে। ফেডারেল পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যানুযায়ী, করপোরেট দেউলিয়াত্বের আবেদনকারী এসব কোম্পানির কাছে ঋণদাতাদের দাবির পরিমাণ ছিল প্রায় ২ হাজার ৬৬০ কোটি ইউরো।
করপোরেট দেউলিয়াত্বের এ সংখ্যা ২০১৯ সালের প্রাক-মহামারী বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি ছিল। অবশ্য ২০০৯ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময়ের চেয়ে এ সংখ্যা কম। ওই সময় ৩২ হাজার ৬৮৭টি কোম্পানি দেউলিয়াত্বে উপনীত হয়।
গত বছর আর্থিক অসচ্ছল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল সুপরিচিত কিছু সংস্থাও। বিশেষ করে ফ্যাশন খাতের খুচরা বিক্রিতে এর প্রভাব পড়েছে বেশি। এ সময় দেউলিয়া ঘোষিত হয় পিক অ্যান্ড ক্লপেনবার্গ, গেরি ওয়েবার, রেনো, সালামান্ডার ও গোয়ের্টজের মতো ব্র্যান্ড।৷
পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যানুসারে, ১৯৭৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বছরে গড়ে ১ হাজার ৬৬৩ দশমিক ৪২টি কোম্পানি দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছে। সেখানে গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এ আবেদন হয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৫১৩ ও ১ হাজার ৫৫০টি। অর্থাৎ দেশটিতে প্রতি মাসে করপোরেট দেউলিয়াত্বের আবেদন এখন বার্ষিক গড়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। তবে সবচেয়ে বেশি দেউলিয়াত্বের আবেদন এসেছিল ২০০৪ সালের মার্চে। ওই মাসে ৩ হাজার ৭৫৫টি কোম্পানি আবেদন করেছিল। রেকর্ড সর্বনিম্ন ছিল ১৯৭৯ সালের নভেম্বরে ৪১৬টি।
চলতি বছরে পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে জার্মানির ডিআইএইচকে চেম্বার্স অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমার্স। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে আরো বেশি কোম্পানি একই পথ অনুসরণ করতে পারে। এক জরিপে দেখা গেছে, এক-চতুর্থাংশ কোম্পানি ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণের সঙ্গে লড়াই করছে।
ডিআইএইচকের মাঝারি আকারের ব্যবসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মার্ক এভারস বলেন, ‘আগামী মাসগুলোয় করপোরেট অসচ্ছলতা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ এরই মধ্যে সে নজির দেখাও যাচ্ছে। জানুয়ারিতে দেউলিয়াত্বের সংখ্যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।
অবশ্য জার্মানির করপোরেট দেউলিয়াত্বের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অনেক আগে থেকেই পূর্বাভাস ছিল। আন্তর্জাতিক বীমা প্রতিষ্ঠান অ্যালায়েন্স ট্রেডের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে জার্মানিতে দেউলিয়াত্বের পূর্বাভাস প্রাক-কভিড স্তরের ওপরে রয়েছে।
২০২৩ সালের অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জোহান জিওরমস বলেছিলেন, ‘আমরা পরিষেবা খাতে কিছুটা পুনরুদ্ধার দেখছি। তবে আগামী ছয় মাসে জার্মানির শিল্প খাতে মন্দার আশঙ্কা করছি, যা গ্রীষ্মের পরে সামান্য পুনরুদ্ধার হতে পারে। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিকভাবে মন্থর বছর হবে ২০২৩ সাল। ২০২৪ সালেও পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হবে না।’
জার্মানির অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিতি পারিবারিক সংস্থাগুলোও দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে ব্লুমবার্গের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, আনুমানিক ৩০ লাখ পারিবারিক ব্যবসার মালিকরা নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের ব্যর্থতায় ভুগছেন। এ চ্যালেঞ্জিং অবস্থার কারণে অনেকে কোম্পানি বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
জার্মানির সাংবিধানিক আদালত ২০২৩ সালে ক্ষমতাসীন জোটকে অত্যধিক অফ-বাজেট তহবিল বন্ধ করার নির্দেশ দেয়ার পরে পরিস্থিতি আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। এতে ব্যবসায়িক তহবিলের জন্য বার্লিনকে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি মন্দায় আক্রান্ত হয়ে জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের অবস্থান থেকে ছিটকে পড়ে। দুর্বল অর্থনীতি হয়েও সেই স্থান দখল করে জার্মানি। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিটির আকার গত বছর দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। ক্রমাগত মূল্যস্ফীতি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও দুর্বল বৈদেশিক চাহিদা দেশটির অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই