অর্থনীতি
কোটি টাকার হিসাবে ব্যাংকের ৪২.৩৯ শতাংশ আমানত
দেশের ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা রয়েছে, এমন হিসাবের (অ্যাকাউন্ট) সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। বিশেষ করে আর্থিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতি চাপের মধ্যেও বড় অঙ্কের জমার হিসাব সংখ্যা বাড়ছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী— ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি রয়েছে; এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাবের সংখ্যা এক লাখ ১৭ হাজার ছুঁইছুঁই।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পিষ্ট। সাধারণ মানুষ এখন সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে ব্যাংকে টাকা জমানোর চেয়ে অনেকে আগের জমানো অর্থ ভেঙে খাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতেও একটি শ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। এরা হচ্ছে বিত্তশালী বা বড় প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (১৩ মার্চ) সবশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৭টি। এসব হিসাবে জমা আছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে— এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি। কোটি টাকার উপরের এসব হিসাবে জমা আছে ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৪২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কোটি টাকার হিসাবধারীদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।
এদিকে গত বছরের (২০২৩) তৃতীয় প্রান্তিকে জুলাই-সেপ্টেম্বরে এক কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৬টি। ওই প্রান্তিকে এসব ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৭ লাখ ২৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩ মাসের ব্যবধানে (অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে) কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৩২২টি। একই সময়ে এসব হিসাবের বিপরীতে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১৫ হাজার ৯১২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২ হাজার ৫১৬টি। যেখানে জমা ছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। পাঁচ কোটি ১ টাকা থেকে ১০ কোটির ১২ হাজার ৬৫২টি হিসাবে জমার পরিমাণ ৮৯ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা। এছাড়া ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা রয়েছে চার হাজার ৮২টি, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটির মধ্যে ২ হাজার ২টি, ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটির মধ্যে এক হাজার ৩৪৫টি, ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৯১২টি আমানতকারীর হিসাব। আর ৩০ কোটি থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৫১২টি এবং ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৪৮০টি, ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৭৩৮টি। তাছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা এক হাজার ৮১২টি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এ আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে তা দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯৭৬টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই হিসাবের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। সবশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সেই হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন দেশ থেকে ২৮২ কোটি টাকার ইউরিয়া সার কিনবে সরকার
রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে চলতি অর্থবছরের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও সৌদি আরব এ তিন দেশ থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ২৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
বুধবার (০৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক এ সংক্রান্ত পৃথক তিনটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে ৭ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাঙ্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক সারে টনের দাম পড়বে ২৮৪.১৭ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩২৮.৬৭ মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ১২তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৩ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ২৮২.৫০ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩৩০.৮৩ মার্কিন ডলার।
সচিব বলেন, টেবিলে আজকে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে সেটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি হলো, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরব এর সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১৪তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ১৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ২৮৮.৩৩ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩৪৭.৫০ মার্কিন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক হাজার ৩৫০ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার
সিঙ্গাপুর ও কাতার থেকে তিন কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট খরচ হবে ১ হাজার ৩৫০ কোটি ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৭৪০ টাকা। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের গানভর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এবং কাতারের কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনা হবে।
বুধবার (৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধনী ২০২১)’ এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের গানভর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১০.৪৬২২ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ৪৫২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৭০ টাকা ব্যয় হবে। প্রতি এমএমবিটিইউর আগের ক্রয় মূল্য ছিল ১০.৮৬৩৭ মার্কিন ডলার।
অপর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরও এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১০.৪৬২২ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ৪৫২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৭০ টাকা ব্যয় হবে।
এ ছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অপর এক প্রস্তাবে কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১০.৩০ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মোট ব্যয় হবে ৪৪৫ কোটি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০ টাকা।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। তার আগে ৩ এপ্রিল অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিঙ্গাপুর ও সুইজারল্যান্ড থেকে তিন কার্গো এলএনজি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডলারের অফিসিয়াল দাম ১১০ থেকে ১১৭ টাকায় উন্নীত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ দাম ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, চাপে পড়বে সাধারণ মানুষ।
বুধবার (৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এখন থেকে ক্রলিং পেগ নামের নতুন পদ্ধতিতে ডলার কেনাবেচা হবে। এ পদ্ধতিতে ডলারের রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। কিন্তু গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দাম ছিল ১১০ টাকা। যা ছিল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাফেদা নির্ধারিত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যাবে, দাম বাড়বে পণ্যের। চাপ বাড়বে সাধারণ মানুষের ওপর। মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে। নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আমদানিতে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশ আমদানিনির্ভর। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের অর্থনীতি চাপে আছে। এখন হঠাৎ করেই ডলার দাম খুব বেশি হলে এর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে। বিশেষ করে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পণ্যের আমদানি খরচ বেড়ে যাবে অনেক। এতে পণ্যের দামও বাড়াতে বাধ্য হবেন আমদানিকারকরা।
তিনি বলেন, হঠাৎ করেই ডলারের বেশি দাম বাড়ার এমন সিদ্ধান্তে চাপে পড়বেন সাধারণ মানুষ। মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে, মানুষ কষ্ট পাবেন। তবুও আমাদের অর্থনীতিকে একটা জায়গাতে আনতে হবে। এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে দাম বাড়লে হয়তো কষ্ট কিছুটা কম হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিৎ হবে সবদিক বিবেচনায় নেওয়া।
এ নিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ডলারের রেট ১১৭ টাকা নির্ধারণ ক্রলিং পেগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা গেলে ভালো। তবে এতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার সম্ভাবনা অবশ্যই রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ২০ টাকা
দেশব্যাপী তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে খামারে প্রতিদিন গড়ে ২০ কোটি টাকার মুরগি মারা গেছে। আবার ঈদের পর থেকে ডিমের প্রতি চাহিদা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। একই সময়ে বাজারে সরবরাহ কমেছে। এদিকে বাজারে মুরগিরও চড়া দাম বিদ্যমান। সবমিলিয়ে দেশের ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। গত পাঁচ দিনের ব্যবধানের প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে অন্তত ২০ টাকা।
মঙ্গলবার ডিমের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ও পাড়ামহল্লার দোকানে প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। গত সপ্তাহের শেষেও এই ডিম বিক্রি হয়েছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। অর্থাৎ, এক সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমের দাম ২০ টাকা বেড়েছে। তবে সাদা ডিম ডজনপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে ডিমের সরবরাহ এখনো কম।
বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, মূলত উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। বাজারে ডিমের সরবরাহ কম থাকলে বাজার এমনিতেই বাড়তি থাকে। খামারিরা উৎপাদনে ফিরতে পারলে ডিমের দাম আবার কমে আসবে।
রোজার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় ডিমের চাহিদা কম থাকে। এরপর লম্বা সময় ধরে তাপপ্রবাহ চলার কারণে প্রচুর মুরগি মারা যায়। খামারিরা বলছেন, ডিমের উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাইকারি বাজারে তাঁরা ডিমের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। তাঁদের মতে, এখন খামারি পর্যায়ে একটি ডিমের দাম পড়ছে সাড়ে ৯ টাকার মতো, যা খুচরা বাজারে একজন ক্রেতাকে ১২ টাকার মতো দামে কিনতে হচ্ছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ১৫ মার্চ যে ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল, তাতে একটি ডিমের খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা ৪৯ পয়সা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজারদর অনুযায়ী, প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১১ টাকা ৭৫ পয়সা। বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) গত বছরের তথ্যানুযায়ী, দেশে সাধারণত প্রতিদিন চার কোটি ডিম উৎপাদিত হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, উৎপাদনের পরিমাণ আরেকটু বেশি।
এদিকে বাজারে সোনালি মুরগির দাম বেশ কিছুটা বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ৫০ টাকার মতো বেড়ে ৪০০ টাকায় উঠেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঢাকায় ইউএস ট্রেড শো শুরু ৯ মে
বাংলাদেশ ও আমেরিকার পণ্য ও সেবা প্রদর্শন এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকায় তিন দিনব্যাপী ২৯তম ইউএস ট্রেড শো শুরু হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে অংশ নেবে দেশটির ৪৪টি প্রতিষ্ঠান। ঢাকায় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) ও ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
এবারের ইউএস ট্রেড শো উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জন ফে ও অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ জানান, ৪৪টির বেশি প্রতিষ্ঠানের তৈরি শতাধিক মার্কিন পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করা হবে ট্রেড শোতে। ৯–১১ মে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য এ প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। এতে জনপ্রতি প্রবেশ ফ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। শিক্ষার্থীদের প্রবেশে কোনো টাকা লাগবে না।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জন ফে বলেন, এই ট্রেড শো বাংলাদেশে মার্কিন কোম্পানিগুলোর উচ্চ মানের পণ্য প্রদর্শনের একটি সুযোগ হবে। পাশাপাশি এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও জোরদার করতে সাহায্য করবে।
জন ফে আরও বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। দিন দিন এ বিনিয়োগের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান ভালো সুযোগের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের কথা ভাবছে। এর ফলে এই ট্রেড শো নতুন বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
এমআই