অর্থনীতি
সুদহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: ড. ফরাসউদ্দিন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, টাকার মূল্যমান কমে আসাটা চিন্তার কারণ। দেশে ক্রয়ক্ষমতা, বিনিময় হার ও সুদহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। মূল্যস্ফীতি হলে যাদের ক্রয়ক্ষমতা কম, তারা বেশি ভোগেন। গরিব মানুষের বেশি কষ্ট হয়। বিনা প্রশ্নে ব্যাংকে ছয় মাস টাকা জমা রাখার সুযোগ দেয়া যেতে পারে। তাহলে লুকানো টাকা অন্তত ব্যাংকের মাধ্যমে ফিরে আসবে। মূল্যস্ফীতি যা হবে, বাজেটে তাই উল্লেখ করতে হবে। তথ্য-উপাত্তের বিশ্বাসযোগ্যতা খুব দরকার। সঠিক তথ্য-উপাত্ত থাকা উচিত।
‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং’ বিষয়ে তৃতীয় এ, কে, এন, আহমেদ মেমোরিয়াল লেকচার অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক এই গভর্নর বলেন, কমার্শিয়াল ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা পায় কই। তফসিলি ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা আসে কোথায় থেকে। তারা কী মানিলন্ডারিং করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনছে কেন?
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, শুল্ক কমিয়ে দেয়ার পরও ক্রেতা সুবিধা পায় না। বিক্রেতার সুবিধা আরো বাড়ে। এটা অদ্ভুত এক দেশ। মধ্যসত্ত্বভোগীদের পেটে এসব টাকা চলে যায়।
এবারের বোরোর ফলন ভালো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা ভালো লক্ষণ। তবে, সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযানে ঝামেলা আছে। চাষি থেকে না কিনে পেছনের দরজা দিয়ে কেনা হয়। এগুলো মজুত করা হয়। সংকট তৈরি করা হয়। এটা ঠেকাতে সমবায়ভিত্তিক ফসল চাষ ও গুদামজাত করা যেতে পারে।
১৯৭২-৭৪ সালে গগনচুম্বী মূল্যস্ফীতি ছিল, বঙ্গবন্ধু সেটা নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন, টিসিবির মাধ্যমে। ১৯৯৮ সালে বন্যার ফলে খাদ্যসংকট দেখা দেয়। তখন শেখ হাসিনার সরকার বিনামূল্যে ৯ মাস খাদ্য বিতরণ করে সেটা নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।
লেকচার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম-এর গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
বক্তব্যে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, রফতানি, আমদানি ও রেমিট্যান্স; মানে কারেন্ট অ্যাকাউন্টের যেসব লেনদেন, এগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক টাচ করে না। কমার্শিয়াল ব্যাংক টাচ করে, সরাসরি। যা ব্যালান্স এমাউন্ট তাদের কাছে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের কোনো টাকা দেশে আসে না। এর সবই পরিচালনা করা হয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে। তাদের মাধ্যমে রপ্তানি আয় আসে। যেহেতু, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এখন আমাদের সারপ্লাস। ২০২০-২১ অর্থবছরে কারেন্ট অ্যাকাউন্টের ডিপোজিট ছিল জিডিপির প্রায় চার শতাংশ। গত বছর আমরা বিভিন্নভাবে কমিয়ে জিডিপির এক শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছিলাম। সেটা এই বছরে জানুয়ারি পর্যন্ত চার বিলিয়ন ডলার সারপ্লাস, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট। এসব টাকা কমার্শিয়াল ব্যাংকে জমা আছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি রোধে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। এতে বাজার থেকে টাকা উঠে এসেছে। একই সময়ে সরকারের অনেক প্রকিউরমেন্ট আছে, যেগুলো কমার্শিয়াল ব্যাংক সাপোর্ট করতে পারছিল না। সেগুলো সাপোর্ট করার জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার দিচ্ছি। ডলার বিক্রি হওয়ায় বাজার থেকে আরো টাকা উঠে এসেছে। এতে বাজারে সিরিয়াস লোকাল কারেন্সির ক্রাইসিস শুরু হয়। তখন কমার্শিয়াল ব্যাংককে আমরা বলেছি, আমাদের কাছ থেকে টাকা নাও। যখন তোমার টাকা হবে আমাদের দিয়ে দিও। তখন সোয়াপ শুরু হয়। এটা অনেকটা উইন উইন সিচুয়েশন। আমার রিজার্ভ বাড়ছে। এটা অন্যভাবে নেয়ার সুযোগ নেই।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম-এর মহাপরিচালক ড. মো: আখতারুজ্জামান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) মো. শিহাব উদ্দিন খান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অর্থনীতিবিদ, বিভিন্ন ব্যাংকের ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রধান, বিআইবিএমমের অনুষদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এ, কে, এন, আহমেদ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড হিসেবে ৮ জন মাস্টার্স ইন ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (এমবিএম) শিক্ষার্থীকে ভালো ফলাফলের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং একটি সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রয়াত এ কে এন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয় গভর্নর । তিনি ১৯৭৪ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৭৬ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশে ডিজিটাল লেনদেনে জড়িত ৪৫ শতাংশ মানুষ
আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিটি দেশ প্রযুক্তি সেবায় এগিয়ে চলছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতে প্রযুক্তির ছোঁয়া উল্লেখযোগ্য নয়। গ্রাম্য পর্যায়ে ডিজিটাল লেনদেন ইদানীংকালে জাল বুনলেও দেশের প্রাপ্তবয়স্ক (১৫ বছরের বেশি) জনগোষ্ঠীর মাত্র ৪৫ শতাংশ ডিজিটাল লেনদেনের সঙ্গে জড়িত। ফলে দেখা যায়, ডিজিটাল লেনদেনে বিশ্বের ১৫৭টি দেশের বাংলাদেশের অবস্থান ১০২তম।
সম্প্রতি ডিজিটাল অগ্রগতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের করা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের ১৫ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর ৪৫ শতাংশ ডিজিটাল লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে, দেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ রয়েছে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ১৬ হাজার। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে প্রায় ১২ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৫ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ ডিজিটাল লেনদেন করেন।
বিশ্বব্যাংকের ডিজিটাল লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে থাকা ১০টি দেশের ৯৯ থেকে শতভাগ মানুষই এ ধরনের লেনদেনে যুক্ত। এই তালিকায় শীর্ষে আছে ডেনমার্ক। দেশটির সব মানুষ ডিজিটাল লেনদেনের আওতায় রয়েছে। তালিকায় অন্য ৯টি দেশ হলো অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, অস্ট্রিয়া, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, আইসল্যান্ড, জার্মানি ও এস্তোনিয়া।
বাংলাদেশের ডিজিটাল লেনদেনের বড় অংশই হয় মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়সহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোবাইল ফোনে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। জানুয়ারিতে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা। পর্যায়ক্রমে তা বাড়লেও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও তালিকার হিসেবে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অর্থনীতি সমিতির নতুন সভাপতি খলীকুজ্জমান, সম্পাদক আইনুল
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির নতুন সভাপতি হচ্ছেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। আর সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. আইনুল ইসলাম।
ঢাকার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত অর্থনীতি সমিতির দুই দিনব্যাপী ২২তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের শেষ দিনে শনিবার সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহক কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। এতে ৩ হাজার ৮৮৩ ভোটারের মধ্যে ৮৮৭ জন ভোট দিয়েছেন।
অর্থনীতি সমিতির কার্যনির্বাহক কমিটি ২৯ সদস্যের। তবে বিদায়ী সভাপতি সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন পর্ষদে সদস্য হিসেবে থাকেন। সেই হিসাবে বর্তমান সভাপতি আবুল বারকাত নতুন পর্ষদে থাকবেন। বাকি ২৮ পদে নির্বাচন হয়েছে।
নির্বাচনে কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ও মো. আইনুল ইসলামের প্যানেলের ২৮ জনের জন্যের মধ্যে ২৭ জনই জয়ী হয়েছেন। তার বাইরে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তবে মো. মুজাফফর আহমেদ ও সৈয়দ মাহবুব-ই-জামিল প্যানেলের কেউ জয়ী হতে পারেননি।
জানা যায়, নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি পেয়েছেন ৬৮০ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মুজাফফর আহমেদ পেয়েছেন ১৬২ ভোট। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে মো. আইনুল ইসলাম ৬২০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর বিপরীতে সৈয়দ মাহবুব-ই-জামিল পেয়েছেন ১৬৭ ভোট।
নির্বাচনে সহসভাপতি পদে জামাল উদ্দিন আহমেদ, এ জেড এম সালেহ্, মো. লিয়াকত হোসেন মোড়ল, সৈয়দা নাজমা পারভীন ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান সরদার বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে বদরুল মুনির, যুগ্ম সম্পাদক পদে শেখ আলী আহমেদ টুটুল ও মোহাম্মদ আকবর কবীর, সহ-সম্পাদক পদে নেছার আহমেদ, মনছুর এম ওয়াই চৌধুরী, মো. জাহাঙ্গীর আলম, পার্থ সারথী ঘোষ ও সৈয়দ এসরারুল হক সোপেন বিজয়ী হয়েছেন।
এ ছাড়া সদস্য পদে হান্নানা বেগম, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন খান, মো. জহিরুল ইসলাম সিকদার, শাহানারা বেগম, নাজমুল ইসলাম, শাহেদ আহমেদ, মোহাম্মদ সাদেকুন্নবী চৌধুরী, মো. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, মো. মোজাম্মেল হক, মো. মোরশেদ হোসেন, মো. আখতারুজ্জামান খান ও খোরশেদুল আলম কাদেরী বিজয়ী হয়েছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সেবার মাধ্যমে করদাতাকে পুরস্কৃত করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
রাজস্ব আহরণের জন্য করদাতাকে সেবার মাধ্যমে পুরস্কৃত করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
তিনি বলেন, রাজস্ব বৃদ্ধি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার ডিজিটালাইজেশনে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে। রাজস্ব আহরণের পরিকল্পনা স্মার্ট হতে হবে, তাহলেই সেটি অর্জন সম্ভব হবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ২০২৪ এর অগ্রাধিকারসমূহ বাস্তবায়নের প্রথম বাজেট এটা। এ বাজেটে রাজস্ব আদায়ে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
রেবিবার (১৯ মে) ঢাকায় লেকশোর হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আয়োজিত ‘ডিজিটালাইজেশন অব দ্য ট্যাক্সজেশন সিস্টেম ইন বাংলাদেশ: দ্য নেক্সট ফ্রন্টিয়ার ফর হায়ার রিসোর্স মবিলাইজেশন’ ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী নাবিল আহমেদ ও অতিথি হিসেবে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বক্তব্য রাখেন। কিনোট প্রেজেন্টার ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দেশের উন্নয়নে খাতভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ এবং দেশীয় সম্পদের পূর্ণ ব্যবহারে গুরুত্ব দেন। রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও রূপান্তরকারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অভিঘাত মোকাবিলা করে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকের আলোচনায় ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ার কথা উঠে এসেছে। যদি বড় ব্যবসায়ীরা ক্যাশে ট্রানজেকশন করতে চায়, তবে আমরা কীভাবে ক্যাশলেস ইকোনোমিতে পরিণত হবো।
অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, রাজস্ব বোর্ড কর দাতাদের করভার কমিয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে করের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আলোচনায় বক্তারা রাজস্ব আয় বাড়াতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার ডিজিটালাইজেশন ও কর প্রদান সহজ করার ওপর জোর দেন।
ডায়ালগে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি মি. এনরিকো লরেঞ্জো বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি ল সৈয়দ খালেদ আহসান, বিজিএমই’র পরিচালক শামস মাহমুদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেনসহ প্যানেলিস্ট ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে গুনতে হবে বাড়তি টাকা
মোবাইল ব্যবহারে খরচের বোঝা চাপছে গ্রাহকের কাঁধে। আসছে বাজেটে হ্যান্ডসেট উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়াতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে প্রতিটি হ্যান্ডসেটে দাম বাড়তে পারে এক হাজার টাকা। সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ করার প্রস্তাবে টকটাইম ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ১০০ টাকায় বাড়তি গুনতে হবে প্রায় ৬ টাকা।
ফেসবুক ব্রাউজিং থেকে পড়াশোনা, কেনাকাটা, দাফতরিক কার্জকম- সব ক্ষেত্রেই বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, ১৯ কোটি ২২ লাখ সিমকার্ডধারীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১২ কোটির বেশি গ্রাহক।
বর্তমানে মোবাইলে কথা বলায় ১০০ টাকার রিচার্জে ৩৩ টাকার বেশি কর দেন গ্রাহকরা। একই পরিমাণ কর দিতে হয় ইন্টারনেটেও। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আসছে বাজেটে উভয় ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এতে অতিরিক্ত ৫ দশমিক ৭৫ টাকা কর বাড়বে। ফলে ১০০ টাকার মোবাইল সেবায় সর্বমোট কর দিতে হবে ৩৯ টাকা, যা হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সবোর্চ্চ।
গ্রাহকরা বলছেন, এভাবে ভ্যাট বাড়াতে থাকলে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা একটু কষ্ট হয়ে যায়। তাই সরকারের কাছে আবেদন, যাতে ভ্যাট না বাড়ায়।
মোবাইল অপারেটররা বলছে, সম্পূরক শুল্ক পাঁচ শতাংশ বাড়িয়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব মিলবে। করের পরিবর্তে ডাটা ব্যবহার বাড়িয়ে এই রাজস্ব আদায় সম্ভব। দেশে একজন গ্রাহক মাসে গড়ে সাড়ে ৬ জিবি ডাটা ব্যবহার করেন; ভারতে যার পরিমাণ সাড়ে ১৭ জিবি।
স্বস্তির খবর নেই মোবাইল ফোনেও। বর্তমানে হ্যান্ডসেট উৎপাদনে তিন থেকে সাড়ে সাত শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট দিতে হয় ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে। বিক্রয় পর্যায়ে রয়েছে ৫ শতাংশ ভ্যাট। আসছে বাজেটে এখাতে ভ্যাট বাড়তে পারে আরও ৫ শতাংশ। এতে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব পাবে সরকার। তবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ফোন বিক্রি বন্ধ হলে এখাত থেকে বছরে রাজস্ব মিলবে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা।
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি রেজোয়ানুল হক বলেন, ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছি।
যদিও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলছেন, মোবাইল সেবায় এবং হ্যান্ডসেট সংযোজনে কর ভার কমাতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছেন।
পলক বলেন, ইন্টারনেটের দাম এবং ভ্যাট কমানোর ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছি।
বর্তমানে ব্রডব্যান্ড সেবায় পাঁচ শতাংশ করে তিন স্তরে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের বোঝা বহন করতে হচ্ছে এক কোটি ৩৪ লাখ গ্রাহককে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ৯৮৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা। এ দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ। রোববার (১৯ মে) যা ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা।
আজ রবিবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১০৯ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ৮০৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৮০ হাজার ৮৬৬ টাকায় বিক্রি করা হবে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটেv প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
কাফি