অর্থনীতি
আপাতত ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়বে না বাংলাদেশ ব্যাংক
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়বে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বরং আগে ছাড়া টাকার কিছু অংশ পর্যায়ক্রমে তুলে নেবে। এর অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে বেশকিছু টাকা তুলে নিয়েছে। টাকা ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে ঋণের জোগানও বন্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব উৎস বা ছাপানো টাকায় যেসব তহবিল গঠন করা হয়েছে, সেগুলোয় নতুন করে অর্থের জোগান বন্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব টাকায় আপাতত আর নতুন তহবিল গঠন করা হবে না।
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির নিয়ন্ত্রণ করতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এর প্রভাবে ইতোমধ্যে বাজারে টাকার প্রবাহ কমে গেছে। এতে সরকারি ও বেসরকারি দুই খাতেই ঋণপ্রবাহ কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় তারল্যের জোগানও ব্যয়বহুল করা হয়েছে। ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করছে কম। এর মাধ্যমে বাজারে টাকার প্রবাহে লাগাম পড়েছে। ফলে মানুষের চাহিদা কমবে। এতে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম পড়বে।
তবে অনেকেই মনে করেন, এককভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ, ইউরোপ-আমেরিকার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বাংলাদেশের মিল নেই। এদেশে মূল্যস্ফীতি যতটুকু না টাকার প্রবাহ বাড়ার কারণে বৃদ্ধি পায়, এর চেয়ে বেশি বাড়ে ত্রুটিযুক্ত বাজারব্যবস্থার কারণে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে সবচেয়ে বেশি টাকার জোগান আসে সরকারকে ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে যে ঋণ দেয়, এর প্রায় পুরোটাকেই বলা হয় ছাপানো টাকা। এসব টাকা বাজারে এলে মুদ্রার সরবরাহ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে চাহিদা বাড়ে। ফলে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে দেওয়া নতুন ঋণ বন্ধ করা হয়েছে। এর বিপরীতে আগের দেওয়া ঋণ সরকার পরিশোধ করছে। গত অর্থবছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছিল প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিট কোনো ঋণ নেয়নি। তবে আগের ঋণ বাবদ প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের স্থিতি কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে টাকার জোগান দিয়ে বিভিন্ন তহবিল গঠন করেছে। এসব তহবিল থেকে ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বাজারে ছাপানো টাকা প্রবেশ করে। এতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান তহবিলগুলোয় নতুন করে আর কোনো অর্থের জোগান দেবে না। ওইসব তহবিল আগের সীমার মধ্যে থেকে লেনদেন হবে। একই সঙ্গে চাহিদা থাকার পরও নতুন করে কোনো তহবিল গঠন করবে না।
সূত্র জানায়, বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার ১৯টি তহবিল রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তবে এগুলোর ঋণ এখনো বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে করোনার সময় গঠন করা হয়েছে ১৪টি তহবিল। বাকি তহবিলগুলো বিভিন্ন সময়ে করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় শিল্প ও সেবা খাতের উদ্যোক্তাদের চলতি মূলধন জোগান দিতে দুই দফায় ৮০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে চলতি মূলধন দিতে দুই দফায় ৬০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় দিয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
রপ্তানি খাতে কম সুদে ঋণ দিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। যার পুরোটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রায়। প্রিশিপমেন্ট খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকার তহবিল। পেশাজীবীদের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা এবং কৃষি খাতে পুনঃঅর্থায়ন করতে দুই দফায় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। স্বল্প-আয়ের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ৩ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম ও গ্রামীণ কর্মসংস্থানে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার তহবিল রয়েছে। এসএমই খাতের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম রয়েছে।
ক্ষুদ্রঋণ খাতে চলতি মূলধন দিতে দুটি তহবিলে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, গ্রিন অর্থায়ন তহবিল ৩ হাজার কোটি, পরিবেশবান্ধব শিল্পঋণ দিতে ৪০০ কোটি, ডিজিটাল খাতে ঋণ দিতে ৫০০ কোটি, ক্ষুদ্রশিল্পে মেয়াদি ঋণ দিতে ৩ হাজার কোটি; গম-ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতে ১ হাজার কোটি; কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমে ২৫ হাজার কোটি; জাহাজ নির্মাণ খাতে ২ হাজার কোটি, আমদানির বিকল্প পণ্য উৎপাদনে ৫ হাজার কোটি এবং সিনেমা হল নির্মাণে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল রয়েছে। এসব ঋণের সুদহার কম বলে উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহ রয়েছে।
এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে টাকার জোগান দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। ফলে বাজারে টাকার প্রবাহ কমেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে টাকার প্রবাহ কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল প্রায় ৯ শতাংশ। গত অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে। এতে টাকার প্রবাহ কমেছে।
টাকার প্রবাহ কমার কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের সক্ষমতা কমেছে। ফলে ঋণপ্রবাহও কমেছে। গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছিল ১০ শতাংশের বেশি। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৫ শতাংশ। সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ গত অর্থবছরের ওই সময়ে বেড়েছিল প্রায় ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কমেছে ৯ শতাংশ। ঋণপ্রবাহ কমায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি কমেছে। এতে উৎপাদন কমছে, কমবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির হার কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময়ই টাকা ছাপানোর কাজটি করে। সেগুলো ভল্টে জমা রাখা হয়। ভল্টে থাকা টাকাকে মৃত বা মূল্যহীন বলা হয়। বাজারে এলে তা জীবন পায় বা মূল্যবান হয়। চাহিদা অনুযায়ী এগুলোকে বাজারে ছাড়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় ছাপানো টাকা বাজারে আসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব সম্পদ বা আমানতকারীদের অর্থের মাধ্যমে। এতে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে খুব বেশি ভূমিকা রাখে না। তবে সরকারকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থে বিশেষ তহবিল বা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে ঋণ দিলে সেগুলো হয় ছাপানো টাকা। এসব অর্থ বাজারে এসে মুদ্রা সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়ে মূল্যস্ফীতি ঘটায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জিডিপির আকার বাড়ার সঙ্গে টাকার প্রবাহও বাড়িয়ে থাকে। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে টাকার জোগান দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যা নিরসনে বিআইএ’র সভা
দেশের নন-লাইফ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর সমস্যা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেস রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ৪২ জন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএ’র নন-লাইফ টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপদেষ্টা পি কে রায়।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) ও প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেন আখতার সভায় বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈদয় বদরুল আলম, সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, মো. ইমাম শাহীন।
সভায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করেন এবং এসব সমস্যা নিরসনের জন্য নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট, প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী কমিটির সদস্যরা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুডিসের রেটিংয়ে সঠিক চিত্র উঠে আসেনি দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ঋণমান নির্ণয়কারী মার্কিন এজেন্সি মুডিস রেটিংয়ে বাংলাদেশের আর্থ-রাজনৈতিক অবস্থার সঠিক চিত্র উঠে আসেনি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানোর মাত্র দুদিনের মাথায় ছটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণমান কমানোর পর বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এমন দাবি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি একটি বড় রূপান্তরের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফল পেতে আরও সময় লাগবে। দেশি-বিদেশি অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
এর আগে, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে মুডিস।
একই সময়ে মুডিস ছটি ব্যাংকের এলটি ডিপোজিট বা দীর্ঘমেয়াদি আমানতের রেটিং পূর্বাভাস পরিবর্তন করে স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করেছে।
এমআই