অন্যান্য
জমি ক্রয়সহ নতুন কোনো ব্যবসা করতে পারবে না খেলাপিরা

আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমাতে ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এসব খেলাপিদের বিভিন্নি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। তারা নতুন করে জমি বাড়ি গাড়ি কিনতে পারবেন না, এমনকি নতুন ব্যবসাও খুলতে পারবেন না।
বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ডেপুটি গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সার্বিক ৮ শতাংশের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ১১ দফা রোডম্যাপ করা হয়েছে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করবে। এই খেলাপিদের সমাজে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে। আগামীতে খেলাপিরা জমি কিনতে গেলে রেজিস্ট্রশন করতে পারবে না। নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানি চালু কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠি দেবে যেন তাদের কোনো সহযোগিতা না করে। গাড়ি-বাড়ি কিনতে পারবেন না। এমন অবস্থায় পড়তে কোনো ব্যবসায়ী চাইবে না। তাই তারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করবে।
বেনামে ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, বেনামে ঋণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই কত আছে এর সঠিক তথ্য নেই। পত্র-পত্রিকায় বেনামে ঋণের তথ্য আসছে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে যেহেতু লিখা হচ্ছে কিছু না কিছু আছে, এটি চিহ্নিত করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং আইন বজায় রেখে ও গত তিন বছরের শ্রেণিকৃত ঋণের তথ্য পর্যালোচনা করে ১১ দফার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পরলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলধন খেলাপি ঋণসহ চারটি সূচকের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হবে। সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। গত ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে যারা দুর্বল তারা আগে থেকে প্রস্তুতি নেবে কার সঙ্গে একীভূত হবে। যদি কেউ এ ধরনের প্রস্তুতি না নেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত করে দেবে বলে জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে শীর্ষ খেলাপির তালিকায় এমন অনেক গ্রাহক আছে, ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, পুরো তথ্যটা নেই তবে ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ ২ লাখ কোটি টাকার উপরে আছে। একজন পরিচালক ব্যবসায়ী হিসাবে ঋণ নিতেই পারেন যদি তিনি অন্য কোনো যোগাযোগের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি না করে।
অপর প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর জানান, ঋণের ২ শতাংশ দিয়ে বিশেষ সুবিধার আওতায় খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন ৭৯০ কোটি টাকার ডাউনপেমেন্ট আদায় হয়। ওই সময় তারল্য সমস্যা ছিল। যদি এ সুবিধা দেওয়া না হতো তাহলে এই টাকাও পেত না ব্যাংকগুলো।
>> রোডম্যাপে যা আছে
ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে নতুন রোড ম্যাপ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি খেলাপি ঋণ কমানো আরেকটি কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করা।
>> খেলাপি ঋণ কমাতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে
তফসিলি ব্যাংকের কোনো ঋণ দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত থাকলে তা অবলোপন (রাইট অব) করা যাবে। তবে সেসব ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। বর্তমানে ৩ বছর মন্দ বা ক্ষতিজনিত মানে শ্রেণিকৃত থাকলে ঋণ অবলোপন করার সুযোগ রয়েছে। এর ফলে খেলাপির পরিমাণ ৪৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবলোপন করা ঋণ আদায়ের জন্য দেশের প্রত্যেকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করা হবে।
মন্দ ঋণ এবং রাইট অব করা সম্পদ বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়ন করা হবে। এই আইনটি খসড়া করা হয়েছে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই আইনের ফলে ব্যাংকগুলো তাদের ব্যালেন্স শিট পরিষ্কার করতে পারবে এবং প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকের আয় খাতে দেখাতে পারবে।
মন্দ, অবলোপন, পুনর্গঠন করা ঋণ বা স্টিজ অ্যাসেটের বিপরীতে আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় না করে আয়খাতে দেখানো যাবে না। স্টিজ অ্যাসেট আদায় বা নিয়মিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যালেন্স শিটে দেখাতে পারবে না। কারণ এই অ্যাসেট ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণে পরিণত হতে পারে।
মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ঋণ পরিশোধের জন্য দেওয়া বিভিন্ন বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না।
মেয়াদি ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সংজ্ঞা, এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট গাইডলাইন ও পরিপত্র সংশোধন অথবা হালনাগাদ করার মাধ্যমে আর্থিক খাত সংস্কারের শর্ত পূরণ হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বর্তমানে অর্থ ঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যেখানে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান লিগ্যাল টিম বা আইন বিভাগকে শক্তিশালী করা হলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
ব্যাংকের অনাদায়ী অর্থ দ্রুত আদায়ের লক্ষ্যে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ( এডিআর) পদ্ধতিতে আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া।
ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের লাগাম টানতে ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইনে সংজ্ঞায়িত ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য যেসব কর্মকর্তা কাজ করবে তাদের বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিজস্ব মূল্যায়নের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করবে।
>> কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ৬টি পদক্ষেপ
যোগ্য পরিচালক নির্বাচিত হলে ব্যাংকের কপোরেট সুশাসন নিশ্চিত হবে। যা ব্যাংকের সামগ্রিক ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করবে। তাই ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নিয়োগে বর্তমান ফিট অ্যান্ড প্রোপার টেস্ট প্রক্রিয়া এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা সংশোধন ও হালনাগাদ করা। ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, সম্মানী নির্ধারণ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে যা আগামীতে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তাদের নিয়োগে কর্ম মূল্যায়নে পারফরমেন্স ইনডিকেটর যুক্ত করা।
কর্পোরেট সুশাসনের মান উন্নত এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে একক গ্রাহক ঋণসীমা (সিঙ্গেল ব্রোয়ার এক্সপোজার লিমিট) কোনোক্রমেই অতিক্রম না করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দূর করতে, পরিচালনা পর্ষদ শক্তিশালী করতে এবং প্রশাসনিক ব্যয় কমাতে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে। তবে শর্ত থাকবে একীভূত করার পরবর্তী তিন বছর কোনো কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
ব্যাংকগুলোতে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মৌলিক প্রশিক্ষণ এবং ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা পাস বাধ্যতামূলক করা হবে।
ব্যাংকিং সেক্টরে দক্ষ কর্মকর্তার অভাব পূরণ হবে এবং সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।

অন্যান্য
লেনদেনের শীর্ষে বিএসসি

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বুধবার (২০ আগস্ট) কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ২৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার। আর ২৭ কোটি ২৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন নিয়ে শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বেক্সিমকো ফার্মা।
লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিটি ব্যাংক, টেকনো ড্রাগস, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিকন ফার্মা, সোনালী পেপার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মালেক স্পিনিং মিলস পিএলসি।
এসএম
অন্যান্য
আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট এমএফ ওয়ান: স্কিম ওয়ানের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৪০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৪টির দর কমেছে। আজ সবচেয়ে বেশি দর কমেছে আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট এমএফ ওয়ান: স্কিম ওয়ানের।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির দর আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়সা বা ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে। যার ফলে আজ ডিএসইর দর পতনের শীর্ষ তালিকায় প্রথম স্থানে স্থান নিয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
দর পতনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের দর কমেছে আগের দিনের তুলনায় ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ দর কমে যাওয়ায় পতনের শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে জায়গা নিয়েছে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।
এছাড়া, আজ ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ, রহিম টেক্সটাইল, প্রিমিয়ার লিজিং, ফার্মা এইডস, ফার্স্ট ফাইন্যান্স এবং ব্যাংক এশিয়া পিএলসি।
এসএম
অন্যান্য
দেশের রিজার্ভ কমলো

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। রিজার্ভ কমে এখন ৩০৮০৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বা ৩০ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০৮০৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২৫৮০৬ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ছিল ৩০৮৩৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৫৮২৭ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে রিজার্ভ সামান্য কমেছে।
এর আগে ১০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৩০২৪৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৫২৩২ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার।
গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার। গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০০০৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪৯৮৮ দশমিক ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। দেশের মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
অন্যান্য
গ্রাহকের ক্যাশলেস সেবা আরো সমৃদ্ধ করতে বিকাশ-ট্রাস্ট ব্যাংকের চুক্তি

গ্রাহকের ডিজিটাল লেনদেনে আরো স্বাচ্ছন্দ্য ও সক্ষমতা বাড়াতে যৌথভাবে ট্রাস্ট ব্যাংক ও বিকাশ আরো নতুন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় দ্রততম সময়ের মধ্যে বিকাশ অ্যাপ থেকে ট্রাস্ট ব্যাংকে ডিপিএস খোলা, আরো সমৃদ্ধ ব্যাংক টু বিকাশ বা বিকাশ টু ব্যাংক ফান্ড ট্রান্সফার, বিকাশ অ্যাপ থেকেই ট্রাস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হয়ে সরাসরি ১০ লাখ মার্চেন্ট পয়েন্টে পেমেন্ট করে কেনাকাটার সুযোগ, এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটরদের ২৪/৭ স্বয়ংক্রিয় ক্যাশ ব্যবস্থাপনা সহ নানান সেবা চালু হতে যাচ্ছে।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে এই চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন ট্রাস্ট্র ব্যাংকের জেনারেল সার্ভিস এন্ড সিকিউরিটি ডিভিশন হেড ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মামুন অর রশীদ (অব.) এবং বিকাশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ।
এসময় উপস্থিতি ছিলেন ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান জামান চৌধুরী এবং বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীরসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান জামান চৌধুরী বলেন, ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে আসছে ট্রাস্ট ব্যাংক। বিকাশের সাথে ট্রাস্ট্র ব্যাংকের সম্পর্ক আস্থা ও সহযোগিতার। এই দুটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে পার্টনারশিপের মাধ্যমে যৌথ সেবা দিয়ে আসছে, ভবিষ্যতে যা আরো বেশি গ্রাহক-কেন্দ্রিক, বিস্তৃত ও নিরবচ্ছিন্ন হবে।
অনুষ্ঠানে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বিকাশের উপর আস্থা রাখার জন্য ট্রাস্ট ব্যাংককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, লাস্ট মাইল সল্যুসন্স প্রোভাইডার হিসেবে ব্যাংকের সেবা আরো বেশি মানুষের কাছে পৌছে দিতে যৌথ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক সেবায় প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছে বিকাশ। ট্রাস্ট ব্যাংকের সাথে এই চুক্তি সাধারণের কাছে আর্থিক সেবাকে আরো সহজ করবে। ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের ইকোসিস্টেম শক্তিশালী করতেও ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠান দু’টি এরইমধ্যে ট্রাস্ট কাম সেটেলেমেন্ট অ্যাকাউন্ট, অ্যাড মানি, ট্রান্সফার মানি এবং রেমিটেন্স সেটেলমেন্ট ব্যাংক সেবাগুলো যৌথভাবে দিয়ে আসছে। নতুন এই চুক্তির ফলে ৮ কোটিরও বেশি গ্রাহকের জন্য বিকাশ অ্যাপ থেকেই ট্রাস্টে ব্যাংকে সাপ্তাহিক ও মাসিক ডিপিএস খোলার সুযোগ তৈরি হলো। পাশাপাশি, ট্রাস্ট ব্যাংক ও বিকাশ ফান্ড ট্রান্সফার সেবায় বিভিন্ন সমন্বিত সেবা যুক্ত হবে যা সামগ্রিকভাবে গ্রাহকের লেনদেনকে করবে আরো সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। এছাড়া, ট্রাস্ট ব্যাংকের ২৪ ঘন্টা ক্যাশ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেলেন সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা বিকাশের তিন লাখ ৫০ হাজারের বেশি এজেন্ট।
অন্যান্য
হাসিনার বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য আজ, হবে সরাসরি সম্প্রচার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আজ (রোববার) সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করবে প্রসিকিউশন। একইসঙ্গে শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণও হবে। আজকের বিচারকাজ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবে গণমাধ্যম। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ করার শর্তে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ১০ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে এই মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। পাশাপাশি আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়। অপর দুই আসামি হলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে ১০ জুলাই বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর মাধ্যমে জুলাই গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
সেদিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। অপর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ গঠনের আগে ট্রাইব্যুনাল তাকে কথা বলার সুযোগ দেন। এসময় চৌধুরী মামুন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন। তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালীন আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই। এরপর ট্রাইব্যুনাল ৫টি অপরাধে অভিযোগ গঠন করে তিন আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
মামলার আগের কার্যক্রম
গত ১ জুলাই এ মামলায় অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। সেদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ জুন পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৭ দিনের মধ্যে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলবে বলে জানানো হয়।
গত ১ জুন জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেদিন আদালতে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুল ইসলাম। যা সব গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়।