আন্তর্জাতিক
প্রধানমন্ত্রী পদে অনন্য নজির শেখ হাসিনার, তালিকায় আছেন যারা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করবেন তিনি।
আর এর মাধ্যমে এদিন তিনি টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেবেন। এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন শেখ হাসিনা। নিজের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ইতোমধ্যেই চার মেয়াদে ২০ বছর সরকারপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
চলতি সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলেছে, সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একসময় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অগ্রসারির এই সৈনিক বিরোধীদের সঙ্গে যুগপৎভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছিলেন।
তবে এখন তার বিরুদ্ধে বাক স্বাধীনতা হরণ এবং বিরোধীদের দমনপীড়নের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে থাকেন। আর এর মধ্য দিয়েই ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো – সামগ্রিকভাবে পঞ্চমবারের মতো – সরকার গঠন করতে চলেছেন।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জনক শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন— ১৯৭৫ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে পরিবারের প্রায় সব সদস্যসহ নিহত হন তিনি। সে সময় ইউরোপে অবস্থানের কারণে সৌভাগ্যবশত সেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
১৯৪৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করা শেখ হাসিনা তার পিতা-মাতার ৫ সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড়। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। শিক্ষার্থী থাকার সময়ই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন শেখ হাসিনা।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের যে অংশটি শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারি ছিলেন, সেটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল তার। ১৯৮১ সালের আগ পর্যন্ত মূলত এটিই ছিল শেখ হাসিনার প্রধান রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা।
আর ১৯৭৫ সালের সেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছর দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটানো শেখ হাসিনা দেশে ফেরেন ১৯৮১ সালে; সেই বছরই তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রথম ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯১ সাল, ১৯৯৬ সাল, ২০০১ সাল, ২০০৮ সাল, ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৯৬ সালের ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে প্রথমবার বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সেবার জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে দলটি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার ২১ বছর পর সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন শেখ হাসিনা।
এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা নিজের রাজনৈতিক জীবনে সেসময়ই দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। আর এরপর থেকে এ পর্যন্ত যে তিনটি নির্বাচন হয়েছে, তার প্রতিটিতেই জয়ী হয়েছেন শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ।
রয়টার্স বলছে, ১৭ কোটি লোকের দরিদ্র দেশ বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং দেশের রপ্তানি-নির্ভর পোশাক শিল্পকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা যখন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন, তখন বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল পাঁচের কাছাকাছি, ১০ বছরের মধ্যে সেই প্রবৃদ্ধি পৌঁছায় প্রায় ৮-এ। অল্প সময়ের মধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দশের ঘরে নেওয়ার প্রচেষ্টা থাকলেও করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার কারণে সেটি বাধাগ্রস্ত হয়।
অবশ্য শেখ হাসিনা ছাড়াও বিশ্বের আরও অনেক নেতাই তাদের নিজ নিজ দেশে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন আছেন। একইসঙ্গে তারা নিশ্চিত করে চলেছেন মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। গত বছরের মাঝামাঝিতে বিশ্বব্যাপী দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতাসীন নেতাদের নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক স্বাধীন, নির্দলীয় ও আন্তর্জাতিক নীতি বিষয়ক থিংক ট্যাংক লোই ইনস্টিটিউট।
সেখানে আরও অনেক নেতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় দীর্ঘসময় ধরে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হুন সেন। গত বছরের মাঝামাঝিতে পদত্যাগ করা ৭০ বছর বয়সী হুন সেন কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন ৩৮ বছর। গত বছরের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভূমিধস জয়লাভ করে হুন সেনের রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)। পরে নিজের বড় ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করেন ১৯৮৫ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এই নেতা।
অবশ্য অসাধারণভাবে ৩৮ বছর ধরে ক্ষমতার শীর্ষে থাকার পরেও হুন সেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতাসীন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি নন। প্রকৃতপক্ষে সারা বিশ্ব থেকে দেখলে দীর্ঘমেয়াদী শাসকদের তালিকায় তিনি স্থান পেয়েছেন শীর্ষ পাঁচে।
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ রয়েছেন সবার ওপরে। তিনি ১৯৬৭ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে পার্থক্যের কারণে এই ধরনের তুলনা মাঝে মাঝে কিছুটা গভীর তাৎপর্যময় বলে মনে হতে পারে। তবে অন্য অনেক দেশের মতো ব্রুনাইতে এই ভূমিকাগুলো একে-অপরের সাথে জড়িত।
ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ বর্তমানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা, অর্থ ও অর্থনীতি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১২ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছেন। গত বছর তার শাসন বেশ দৃঢ়ভাবেই তৃতীয় মেয়াদে প্রসারিত হয়। আর তার বন্ধু ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার শাসন ক্ষমতায় -কখনও প্রেসিডেন্ট এবং কখনও প্রধানমন্ত্রী – আছেন ২০০০ সাল থেকে।
মূলত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতায় আছেন ভ্লাদিমির পুতিন। আর চলতি বছরের মার্চে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তিনি আরও ছয় বছরের মেয়াদের জন্য জয়ী হবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
৭১ বছর বয়সী পুতিনের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। রাষ্ট্রযন্ত্র ও রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের নিরঙ্কুশ সমর্থন এবং প্রায় প্রধান কোনও বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষবিহনী নির্বাচনে তার জয়ী হওয়াটা এক রকম নিশ্চিতই।
লোই ইনস্টিটিউট বলছে, বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় দীর্ঘতম শাসক হলেন তেওডোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা এমবাসোগো। তিনি নিরক্ষীয় গিনির প্রেসিডেন্ট। সামরিক বাহিনীর সাবেক জেনারেল ওবিয়াং ১৯৭৯ সালে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন এবং পরে জাল ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন।
তার মতো আফ্রিকান কিছু দেশের শাসকরাও ক্ষমতায় আছেন দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে ১৯৮২ সাল থেকে ক্যামেরুনের ক্ষমতায় রয়েছেন পল বিয়া, ১৯৮৬ সাল থেকে উগান্ডার ক্ষমতায় আছেন ইওওয়েরি মুসেভেনি এবং ডেনিস সাসু এনগুয়েসো আফ্রিকার কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ১৯৯৭ সাল থেকে। আর তার আগে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একই দায়েত্বে ছিলেন তিনি।
ইরিত্রিয়ার ইসাইয়াস আফওয়ারকি ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে দেশটি শাসন করে চলেছেন। আর রুয়ান্ডার পল কাগামে ১৯৯৪ সাল দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
সেই একই বছর আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোও পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আর এখনও তিনি তার সেই দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রহমান ১৯৯২ সাল থেকে ৩২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার পর তার পুত্রের ক্ষমতা গ্রহণের পথও তৈরি করে রেখেছেন তিনি।
এই তালিকায় আরও আছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি। ১৯৮৯ সাল থেকে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন তিনি। যদিও সেই অর্থে তাকে রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান হিসাবে তালিকাভুক্ত করা যায় না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই