জাতীয়
শহীদ মিনারেই রাত কাটাবেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ দাবিতে রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করবেন তারা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে এদিন সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। দাবি আদায়ে আগামীকাল সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে দেশের সব এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, রাতে শহীদ মিনারে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। আগামীকাল থেকে কর্মবিরতি চলবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা রাতে একটা বৈঠকে বসব। সেখানে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হলে বা সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুনির্দিষ্ট ঘোষণা এলে তখন বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে আটক ৬ শিক্ষককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। রাত সোয়া ৭টার দিকে তাদের জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।

জাতীয়
নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর তথ্য ফের যাচাই করবে ইসি

নতুন রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এজন্য দলগুলোর সঠিকতা যাচাইয়ে আবারও মাঠ পর্যায়ের তথ্য যাচাই করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাজমুল কবীরের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে ইসি জানায়, কমিশন মাঠ পর্যায়ের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেন। মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য/মতামতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপূর্ণতা, যথাযথ মন্তব্যে ঘাটতি থাকায় যাচাই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১০টি দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করার নির্দেশনা দেন।
কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১০টি দলের মাঠ পর্যায়ের তথ্য পুনঃতদন্ত করা হবে। আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করার জন্য ১০ অঞ্চলে একজন উপসচিব, একজন অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (সংশ্লিষ্ট অঞ্চল) এবং একজন অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে (সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আওতাধীন) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জাতীয়
ইউরোপ ভ্রমণে নতুন পদ্ধতির আওতায় বাংলাদেশিরাও

রবিবার থেকে ইউরোপ ভ্রমণের ক্ষেত্রে নতুন এন্ট্রি ও এক্সিট পদ্ধতির আওতায় বাংলাদেশিরাও পড়বেন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) অফিস এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আপডেট, যাদের মধ্যে আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুরাও রয়েছেন, যারা ২৯টি ইউরোপীয় দেশে স্বল্প সময়ের জন্য ভ্রমণ করছেন। ১২ অক্টোবর থেকে প্রবেশ/প্রস্থান ব্যবস্থা ধীরে ধীরে রেকর্ড করবে। এ রেকর্ডে থাকবে ভ্রমণ নথি, ভ্রমণের তারিখ ও বায়োমেট্রিক তথ্য।
সূত্র জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশে এন্ট্রি ও এক্সিট পদ্ধতি। রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে এ পদ্ধতি কার্যকর শুরু হয়েছে। ফলে নন-ইইউ ভ্রমণকারী ও ব্রিটিশ পর্যটকরা যেভাবে ইইউ অঞ্চলে এন্ট্রি ও এক্সিট করতো, তা বদলে যাবে।
এন্ট্রি এবং এক্সিট সিস্টেম (ইইএস) অনুযায়ী, নন-ইইউ ভ্রমণকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন- আঙুলের ছাপ ও মুখের ছবি প্রথমবার ইইউভুক্ত (শেনজেন অঞ্চল) ২৯টি দেশে প্রবেশ করার সময় নিবন্ধন করতে হবে। ওই অঞ্চলে সব ইউরোপীয় দেশ অন্তর্ভুক্ত, শুধু আয়ারল্যান্ড ও সাইপ্রাস বাদ। এছাড়াও আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও লিশটেনস্টাইন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে ২৯টি ইউরোপীয় দেশে এবং শুধু নন-ইইউ ভ্রমণকারীদের জন্য। এ সিস্টেম পুরো ইউরোপে কার্যকর হবে ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে। এ সময়ে কিছু সীমান্ত চৌকিতে নতুন ব্যবস্থা এবং প্রচলিত পাসপোর্ট স্ট্যাম্পিংয়ের যৌথ ব্যবহার হতে পারে।
নতুন এ ইলেকট্রনিক সিস্টেমের মাধ্যমে ইউ’র সীমান্তে হাতে হাতে পাসপোর্ট স্টাম্প করার প্রয়োজনীয়তা বাতিল হয়ে যাবে। এর পরিবর্তে ডিজিটাল রেকর্ড তৈরি হবে, যা বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে যাত্রীদের পরিচয় এবং তাদের ট্র্যাভেল ডকুমেন্টের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
ইইউ চায় এর বাহিরের সীমান্তের ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা, অবৈধ অভিবাসন রোধ করা, পরিচয় জালিয়াতি প্রতিহত করা এবং যারা অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বেশি অবস্থান করছে তাদের শনাক্ত করা।
শেনজেন অঞ্চলে প্রথমবার প্রবেশ করা যেকোনো যাত্রীকে তাদের পাসপোর্ট স্ক্যান করতে হবে, আঙুলের ছাপ নিবন্ধন করতে হবে এবং মুখের স্ক্যান দিতে হবে।
এক্সিটের সময় যাত্রীর তথ্য ইইএস (ইইএস) ডাটাবেসের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় তারা নির্ধারিত অবস্থানের সময়সীমা মেনে চলেছে এবং এক্সিট রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তী ভ্রমণে শুধুমাত্র মুখের বায়োমেট্রিক যাচাই করলেই হবে।
১২ বছরের নিচের শিশুদের ইইএস-এ নিবন্ধন করতে হবে, তবে তাদের কেবল ছবি তোলা হবে। ইইএস ব্যবহারের জন্য কোনো অর্থ প্রদান করতে হয় না।
জাতীয়
নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি৷
উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় মূলত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্নকরণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করার বিষয় আলোচনা হয়েছে৷
উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাতে কোনো আইন বহির্ভূত কাজ না করে সে বিষয়েও নির্দেশনা প্রদান করার আলোচনা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা।
তিনি বালেন, গত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত থাকা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা।
আপনারা জানেন, এ প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ সারা দেশে (জেলা, মহানগর ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান) ১৩০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে একটি ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং আরেকটি (২য়) ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। নির্বাচনের জন্য পুলিশের চূড়ান্ত (৪র্থ পর্যায়ের) প্রশিক্ষণ গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে শুরু হয়েছে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে সব ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য ‘প্রাক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন হারে আনুমানিক ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। তন্মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জনকে অস্ত্রসহ ও ৪ লাখ ৫০ হাজার জনকে নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। এর জন্য ৩১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে ৬০% নির্বাচনি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল যেটা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন শান্ত ও ভালো রয়েছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফ্যাসিস্টের লোকজন শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছিল। কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীও এতে ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতার কারণে তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। সবার সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বাহকদের নয়, মাদকের গডফাদারদের আটক করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জাতীয়
রোমের পথে প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর বার্ষিক ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে যোগ দিতে ইতালির রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি রওনা দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তা নিশ্চিত করেছেন।
সফরসূচি অনুযায়ী, অধ্যাপক ইউনূস ফোরামের মূল অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। পাশাপাশি, তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য নিরসন ও টেকসই উন্নয়নসহ বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম মূলত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বব্যাপী নীতিনির্ধারক, গবেষক ও উদ্যোক্তারা একত্রিত হয়ে খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে মতবিনিময় করেন।
এবারের ইভেন্ট ১০ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে রোমে এফএওর সদর দপ্তরে।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্রিয় কূটনৈতিক ভূমিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আগামী ১৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
জাতীয়
যুবসমাজকে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ব গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সাহসী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে বিশ্বের তরুণ প্রজন্মকে নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, তরুণদের মধ্যেই সমাজে অর্থবহ পরিবর্তন আনার শক্তি নিহিত রয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সুইডেন ও নরওয়ের তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস বলেন, অনেকে বলে তরুণরাই ভবিষ্যৎ, কিন্তু আমি বলি তরুণরাই বর্তমান। পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে, আর আজকের তরুণরা আগের প্রজন্মের মতো নয়। প্রযুক্তি ও পরিবেশ আপনাদের এক অনন্য মানবিক শক্তিতে পরিণত করেছে। আপনাদের শুধু নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে- আমি কেমন বিশ্ব গড়তে চাই? তারপর সেই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হোন, কারণ আপনাদের হাতে সেই পরিবর্তনের উপকরণ রয়েছে।
সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইক্স এবং নরওয়ের হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সুইডেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরুণ নেতারা- অ্যালিস ল্যান্ডারহল্ম (মডারেট ইউথ পার্টি), অ্যারিয়ান তওয়ানা (সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক ইউথ পার্টি), অ্যান্টন হোমলুন্ড (লিবারেল ইউথ পার্টি), ডেক্সটার ক্রোকস্টেড (সুইডেন ডেমোক্র্যাটস ইউথ), হান্না লিন্ডকভিস্ট (গ্রিন ইউথ পার্টি) এবং ম্যাক্স পেলিন (ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউথ পার্টি)। নরওয়ে থেকে অংশ নেন ওডা রোহমে সিভার্টসেন (ইয়াং কনজারভেটিভস), লার্স মিকায়েল বারস্টাড লভোল্ড (প্রগ্রেস পার্টি ইউথ) এবং সিভার ক্লেভে কোলস্টাড (রেড ইউথ)।
তাদের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, নর্ডিক রিপ্রেজেন্টেশন অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর ক্যারোলিন অ্যাবার্গ, স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস বিশেষজ্ঞ কীর্তিজয় পাহাড়ি এবং যোগাযোগ বিশ্লেষক এমিলি আন্দ্রেসেন।
সাক্ষাতে তরুণ রাজনীতিকেরা নিজেদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও ভাবনা তুলে ধরেন এবং জুলাই অভ্যুত্থান, তরুণদের ভূমিকা, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে তার মতামত প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান।
ড. ইউনূস বলেন, জুলাই ছিল ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত, বিশেষ করে কারণ অসংখ্য তরুণী তখন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। আপনারা এমন এক সময় বাংলাদেশে এসেছেন যখন দেশটি গভীর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করি, আপনারা আমাদের তরুণদের সঙ্গে সময় কাটাবেন, তাদের স্বপ্ন ও আশা সম্পর্কে জানবেন।
তিনি আরও বলেন, জুলাইয়ের বিপ্লবীরা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দাবি তুলেছিল, বিশেষত সংবিধান সংস্কার, যেটিকে তারা স্বৈরশাসনের মূল কারণ হিসেবে দেখেছিল। আমরা একাধিক সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের জন্য ‘কনসেনসাস কমিশন’ গঠন করা হয়। মাসের পর মাস ৩০টিরও বেশি দল বিতর্কে অংশ নেয়। অবশেষে সবাই একমত হয় এবং আমরা এই মাসেই ‘জুলাই চার্টার’ স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এটি আমাদের জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে। এমন প্রক্রিয়া অন্য কোনো দেশে হয়েছে বলে আমি জানি না।
প্রধান উপদেষ্টা সফররত তরুণ নেতাদের বাংলাদেশ ঘুরে দেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই দেশের প্রতিটি রাস্তাই একটি গল্প বলে। দেয়ালের লেখাগুলো, দেয়ালচিত্রগুলো, আপনি যেগুলোর পাশ দিয়ে হাঁটছেন- সেগুলোই তরুণদের প্রতিরোধ আর স্বপ্নের জীবন্ত জাদুঘর।
আলোচনায় অধ্যাপক ইউনুসের ‘থ্রি জিরোস’ ধারণা ও ‘সোশ্যাল বিজনেস’ বা সামাজিক ব্যবসার ধারণাও উঠে আসে। ‘থ্রি জিরোস’ ধারণায় তিনি এমন এক নতুন সভ্যতার কথা বলেন যেখানে থাকবে শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদকেন্দ্রীকরণ (যেন দারিদ্র্য দূর হয়) এবং শূন্য বেকারত্ব (উদ্যোক্তা মনোভাব জাগিয়ে তুলে)।