জাতীয়
খাগড়াছড়িতে ৩ পাহাড়ি নিহত, সেনা-পুলিশসহ আহত অনেকে

খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিন পাহাড়ি নিহত হয়েছেন। এছাড়া সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ ১৩ জন সেনা সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) তিন পুলিশ সদস্য এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে। এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপ্রধান তথ্য অফিসার/পরিচালক) ফয়সল হাসান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ মর্মে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি শিগগির তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
সবাইকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এরই মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

জাতীয়
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনগত কোনো বাধা নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঝিনাইদহ জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্ক মিলনায়তনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছিল। ওই সময় প্রশাসনে দায়িত্বপালনকালে যারা বড় ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তারা রাষ্ট্রের জন্য আগামীতেও চাকরি করবেন।
তিনি বলেন, তবে যারা আওয়ামী লীগের নির্দেশে অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সরকার তাদের অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নিবেন।
এর আগে সকাল ১০টায় ঢাকাস্থ ঝিনাইদহ সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে জেলার স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল।
ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল মাখন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ, ঢাকাস্থ ঝিনাইদহ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী হাসান পলাশ, সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ বেগম পলি, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নেওয়াজ খান সুমন, ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা।
জাতীয়
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটক করায় বাংলাদেশের নিন্দা

ফিলিস্তিনিদের সহায়তার জন্য স্পেন থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার (জিএসএফ) ত্রাণবাহী নৌযানগুলোকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক করেছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আটকে দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসাবে ইসরায়েলের ব্যবহারের নির্লজ্জ প্রকাশ। বাংলাদেশ সব আটক মানবিক সহায়তা কর্মীর অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া বিবৃতিতে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবৈধ দখল বন্ধ, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান, গাজায় গণহত্যা বন্ধ এবং মানবিক অবরোধ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
বিবৃতিতে বলা হয়, মানবিক সহায়তা বহনকারী এই ফ্লোটিলা বিশ্ববাসীর ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতির প্রতীক। ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় তাদের অবাধ প্রবেশাধিকার দিতে হবে।
এই ভয়াবহ দুর্দশা এবং অব্যাহত দুর্ভোগের মুহূর্তে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ অটল সংহতি প্রকাশ করছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
অবরুদ্ধ গাজার মানুষের কাছে খাদ্য, ওষুধসহ জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিতে যাত্রা শুরু করেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। মানবিক সহায়তা বহনকারী এই প্রতীকী অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের শান্তিকামী মানুষ ও মানবাধিকার কর্মীরা। সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ শত শত কর্মীকে আটকের মাধ্যমে গাজা অভিমুখে যাওয়া ত্রাণবাহী ফ্লোটিলার যাত্রা নস্যাৎ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। বহরের জাহাজগুলো আটকে দেওয়া হয়েছে এবং ৪৪৩ কর্মীকে আটক করেছে তারা। গন্তব্যে না পৌঁছালেও ফ্লোটিলা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে, নাড়া দিয়েছে বিশ্ববিবেককেও।
মানবিক এই উদ্যোগ আটকে দেওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রান্স, গ্রিস, ইতালি, জার্মানি, তিউনিসিয়া ও তুরস্কে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। পাকিস্তান, বলিভিয়া ও মালয়েশিয়া থেকেও ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের সমালোচনা উঠেছে। ইতালিতে কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
২০০৭ সালে হামাস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মাত্রায় ইসরায়েল অঞ্চলটির ওপর অবরোধ চালিয়ে আসছে। তখন থেকে ফিলিস্তিনিরা কার্যত গাজার ভেতরেই বন্দি হয়ে আছেন। এর মধ্যে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে হামাসকে দমনের অজুহাতে গাজায় ইসরায়েল যে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে।
জাতীয়
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিকের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং বলেন, আহমদ রফিকের জীবন ও কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে তাকে স্মরণ করবে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে ফেসবুক পেজে এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা লিখেন, আহমদ রফিক ছিলেন আমাদের ভাষা আন্দোলনের এক অগ্রগণ্য সাক্ষী ও সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন অনন্যসাধারণ কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রবীন্দ্রতত্ত্ব চর্চার দিশারি। শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।
রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে তার অবদান দুই বাংলায় সমানভাবে শ্রদ্ধার আসন পেয়েছে। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছে, যা তার বিদগ্ধতার স্বীকৃতি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার জগতে আহমদ রফিকের প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি। দৃষ্টিশক্তি ও শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি শেষ দিন পর্যন্ত জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, শুভানুধ্যায়ী ও সাহিত্য–সংস্কৃতিমনা জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মারা যান আহমদ রফিক।
জাতীয়
বাংলাদেশে সব ধর্মই সম্মানের সঙ্গে পালন করা সম্ভব: প্রেস সচিব

বাংলাদেশে সব ধর্মই মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে পালন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, দেশের ৩৩ হাজারেরও বেশি মণ্ডপ ও মন্দিরে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যেই পূজা উদযাপন হয়েছে। ঐক্যের মাধ্যমে ভিন্নতায়ও অসাধারণ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে তার ভেরিফাইড একাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আরেকটি চমৎকার দুর্গাপূজা উপহার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সর্বত্র সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ! অন্তর্বর্তী সরকার ১৪ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছে, আর এ নিয়ে দ্বিতীয় বছর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পেরেছি এই সর্ববৃহৎ হিন্দু ধর্মীয় উৎসব।
তিনি লেখেন, যখন প্রধান উপদেষ্টা নিউইয়র্ক থেকে গভীর আগ্রহ নিয়ে উৎসব পর্যবেক্ষণ করেছেন, আমি সৌভাগ্যবান যে আজ সকালে ঢাকায় পূজা উদযাপনে অংশ নিতে পেরেছি। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গিয়ে যে উচ্ছ্বাস, রঙ ও মিলনমেলার আবহে আমি ভেসে গেছি—তা সত্যিই অবিস্মরণীয়।
তিনি আরও লেখেন, হ্যাঁ, এখানে-সেখানে কিছু প্ররোচনার ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু সার্বিকভাবে আমরা দেশের ৩৩ হাজারেরও বেশি মণ্ডপ ও মন্দিরে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যেই পূজা উদযাপন করেছি। এটি আবারও প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশে সব ধর্মই মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে পালন করা সম্ভব। আর এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—ঐক্যের মাধ্যমে ভিন্নতায়ও আমরা কত অসাধারণ সাফল্য অর্জন করতে পারি।
জাতীয়
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন

ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহহি রাজিউন)। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিনি মারা যান। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
আহমদ রফিকের স্বাস্থ্যের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী। তিনি চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আহমদ রফিকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। ইসমাইল সাদী বলেন, ‘আহমদ রফিক আজ রাত ১০টা ১২ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
ভাষা আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিষয়ে গবেষণা করেছেন আহমদ রফিক। তাঁর কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি দুই বাংলায় অগ্রগণ্য। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন আহমদ রফিক।
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনি রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। আহমদ রফিকের স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান।