সারাদেশ
আমতলী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষের নজিরবিহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা

আমতলী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. বায়েজিদ হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপ, চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্যের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তার নজিরবিহীন অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি চরম অস্তিত্বের সংকটে পড়ছে। ছাত্র ও শিক্ষকদের গ্রুপিং, পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শিক্ষক, স্টাফদেরকে দমন-পীড়নসহ নানান অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সুন্দরবন অধ্যুষিত দক্ষিণ বাংলার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় আমতলীতে মরহুম পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল লতীফ (রাহি.) ১৯২৩ সালে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।২০২১ সালে করোনাকালীন সময়ে আমতলী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পছন্দের প্রতিনিধি নিয়ে নিয়োগ, বোর্ড ম্যানেজ করে অধ্যক্ষ নিয়োগের পথ সুগম করেন। অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েই তিনি মাদরাসার নামে সঞ্চিত সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন করে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। একটি নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ট অডিট হলে তার আর্থিক লেনদেনের অস্বচ্ছতা প্রকাশ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। নিয়োগের কিছুসময় পরেই তিনি মাদরাসার জন্য সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ এবং জমি থেকে আয়ের টাকায় নিজের জন্য কোয়ার্টার নির্মাণ করেন। নির্মাণ ব্যয়ে আর্থিক অস্বচ্ছতার অনেকগুলো অভিযোগ রয়েছে। মাদরাসা গভর্নিং বডির নির্দেশনা অনুসারে কোয়ার্টার নির্মাণের পরে অধ্যক্ষের নিয়মিত মাদরাসায় অবস্থান করার কথা থাকলেও তিনি সপ্তাহের ২ থেকে ৩ দিন নড়াইলে নিজের বাড়িতে অবস্থান করেন। ফলে মাদরাসা অধিকাংশ সময় অভিভাবক শূন্য হয়ে থাকে।
জানা গেছে, মুহা. বায়েজিদ হোসেন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে আমতলী মাদরাসার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী লিল্লাহ বোর্ডিং আানুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেন। বর্তমানে আমতলী মাদরাসায় অসহায়, দরিদ্র শিক্ষার্থীর ফ্রি খাবারের কোন ব্যবস্থা নেই। এই অধ্যক্ষ, তার স্ত্রী, তার কন্যা এবং তার শ্যালিকার পুত্র নিয়মিতভাবে লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের জন্য বরাদ্দের খাবার খাচ্ছেন। সরকারীভাবে বেতনের সঙ্গে বাসা ভাড়া পেলেও তিনি মাদরাসার অর্থে অধ্যক্ষের জন্য নির্মিত ভিলার কোন ভাড়া পরিশোধ করেন না। বিদ্যুৎ বিল, এমনকি ইন্টারনেট বিলও তিনি পরিশোধ করেন না। তার কন্যা চলতি বছর অন্য মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা অংশগ্রহন করলেও নিয়মিত আমতলী মাদরাসায় ক্লাস করেছেন এবং নানান সুবিধা গ্রহন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাদরাসার শতবর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মাদরাসার ফান্ড থেকে টাকা তছরুপের অভিযোগ এসেছে। মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন এবং সভাপতির অনুমোদন ছাড়াহ অধ্যক্ষের নিজস্ব পকেট কমিটির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক শরণখোলা শাখায় একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলেন। অ্যাকাউন্টের নাম শতবর্ষ উদযাপন কমিটি। অ্যাকাউন্টে নম্বার: ২০৫০৩৭৪০২০১৬৯৮৯১৬। উক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মাদরাসার শতবর্ষ উৎসব পালনের জন্য চাঁদা আদায় করেন। অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েই সন্ন্যাসী বাজার শাখা অগ্রণী ব্যাংকে আমতলী মাদরাসার একটি ব্যাংক একাউন্ট (হিসাব নং ২২০০) থেকে গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই লেনদেন করেন। বিধি অনুসারে অধ্যক্ষ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। কিন্তু সুচতুর অধ্যক্ষ মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা বোরহান উদ্দীনকে নিয়ে উক্ত ব্যাংক থেকে যখন তখন টাকা তুলে খরচ করছেন।
এ ব্যাপারটি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও এডিসি জেনারেল অবগত হয়ে অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বেপরোয়া অধ্যক্ষ উক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থোত্তলন করে নিজের মর্জি মতো খরচ করে চলছেন। মাদরাসার মুহাদ্দিস নিয়োগের জন্য একজন প্রার্থীর কাছ থেকে নিয়োগ বোর্ডের খরচের নামে টাকা নিয়েছেন অধ্যক্ষ বায়েজিদ হোসেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ নিয়োগ বোর্ডের অর্থ ভিন্ন খাত থেকে এসেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ল্যাসপেন্সার মাওলানা মুহা: বায়েজিদ হোসেনের বিরুদ্ধে নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, নাশকতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে পুলিশের সঙ্গে মারামারিসহ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের দায়ে অনেকবার জেল খেটেছেন বলে নড়াইলের স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইলে ওলামালীগের সক্রিয় নেতা মুহা: বায়েজিদ হোসেন বিগত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সময়ে স্থানীয় এমপি এডভোকেট আমিরুল আলম মিলনের ডান হাত হিসেবে চলতেন। মিলনের পরে তিনি এএইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের নির্বাচনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি নড়াইলের বিনাভোটের এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং তার পিতা গোলাম মর্তুজার লোক হিসেবে সব জায়গায় পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায় করে নিতেন। মাশরাফির বাবাকে দিয়ে বিভিন্ন যায়গায় ফোন দিয়ে তদ্বিরও করতেন। তিনি মাদরাসা ক্যাম্পাসে সরকার দলীয় লোক ছাড়া কাউকে সহ্য করতেন না। আমতলী মাদরাসায় বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করে দেন। উপরন্তু আমতলী মাদরাসাকে আওয়ামীকরণের অংশ হিসেবে বিগত গভর্নিং বডিতে মাদরাসা পাশ্ববর্তী দুই আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন খান জাকির এবং মাস্টার সাঈদুর রহমানকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে সম্পৃক্ত করেন। ঐতিহ্যময় আমতলী মাদরাসায় এমন আওয়ামীকরণ এর আগে কখনও হয়নি।
সূত্র মতে, আমতলী মাদরাসার অধ্যক্ষ পুরো মাদরাসাকে কুক্ষীগত করার জন্য তিনি মাদরাসার হিফজখানা, লিল্লাহ বোডিং, এতিমখানা সহ মাদরাসা ক্যাম্পাসে অবিস্থত বেসরকারিভাবে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহন করেন। কোথাও নিজের পছ্ন্দমতো লোকদের বসান। এসব প্রতিষ্ঠানকে তিনি শতভাগ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেন। শতবছর ধরে চলে আসা আমতলী লিল্লাহ বোর্ডিং বন্ধ করে দেন। কিন্ত লিল্লাহ বোডিংয়ের জন্য বাজারের দোকান ভাড়া, ছ’মিল, চাষযোগ্য বিলান জমির ফসল এবং মানুষের দান-খয়রাত ও যাকাতের টাকার আয়-ব্যায়ের কোন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা কোথায় যায় অধ্যক্ষ এবং তার পোষ্য লোকজন ছাড়া আর কেউ জানে না।
সম্প্রতি আমতলী তাহফিজুল কুরআন মাদরাসা তথা হিফজখানার নজিরবিহীন স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন সোচ্চার হলে প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত আল্লামা আব্দুল লতীফ (রাহি.) ট্রাস্টের উদ্যোগে একটি সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সাধারণ সভায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে হিফজখানার জন্য একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। নবনির্বাচিত কমিটি গত ২৮ এপ্রিল সকালে হিফজখানা পরিদর্শনে গেলে অধ্যক্ষ পুরো ভবনটিতে তালা লাগিয়ে দেয়। এ সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহন করছিলো।
সূত্র জানায়, স্থানীয় জনতার চাপের মুখে অধ্যক্ষ মুহা বায়েজিদ হোসেন তালা খুলে দিলেও আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা তার গুন্ডা বাহিনী মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয়দের উপর হামলা চালায়। ঘটনার এক পর্যায়ে আলীয়া শাখার তৃতীয় পিরিয়ড চলাকালে অধ্যক্ষের নির্দেশে ডাবল ঘন্টা পিটিয়ে নিরীহ ছাত্রদেরকে মাঠে জড়ো করা হয়। অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ মাদরাসার শিক্ষক মো. জাকারিয়া হোসাইন, মো. রিয়াজ, সেলিম মোড়ল ক্লাসরুম থেকে ছাত্রদেরকে এনে নানান ধরণের উস্কানী দিতে থাকে। এতে যুক্ত হয় অধ্যক্ষের লাঠিয়াল বাহিনীর অন্যতম হোতা ফাজিল শ্রেণীর ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান দোহা, দাখির পরীক্ষার্থী মো. জাকারিয়া হোসাইন, অধ্যক্ষের শালিকাপুত্র দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. গালিবসহ কয়েকজন। তারা উত্তেজক স্লোগান দিয়ে মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের সদস্যদের ওপর মব লিংঞ্চিং তথা উচ্ছৃঙ্খল ছাত্ররা যেন হামলা করে তার জন্য উস্কানী দিতে থাকে। অধ্যক্ষের নির্দেশে ছাত্ররা হিফজখানা ভবনে হামলার জন্য ধাওয়া করলে এসময় কিছু বিবেকবান শিক্ষক, স্থানীয় জনগন এবং পুলিশের হস্তক্ষেপের কারণে বড় ধরণের সহিংসতা এবং রক্তপাত এড়ানো সম্ভব হয়।
এ ঘটনায় মাদরাসার শুভাকাঙ্খী ও স্থানীয়রা হতবাক হয়ে পড়ে। শান্তিপ্রিয় প্রত্যন্ত গ্রামবাসী এরকম সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসের আগে কখনো দেখেনি। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদরাসার দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অবিলম্বে মুহা. বায়েজিদ হোসেনের অপসারন চায়।
দুর্নীতি অনিয়মের কথা অস্বীকার করে মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘‘সঠিক নিয়মের মাধ্যমে আমি মাদরাসা পরিচালনা করছি’’।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও ঘুষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগ প্রক্রিয়া মেনেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক একাউন্ট ১৯৯৬ সাল থেকে যেভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল সেভাবে চালানো হচ্ছে’’।
কাফি

সারাদেশ
কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া মারা গেছেন

বিনা পারিশ্রমিকে ৩ হাজারের বেশি কবর খনন করা সেই মনু মিয়া মারা গেছেন। কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে দীর্ঘদিন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মনু মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়সিদ্দি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম।
কবর খুঁড়ে তিনি পার করে দিয়েছেন তার ৬৭ বছরের জীবনের সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বখশিস না নিয়ে এ পর্যন্ত খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর।
দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানী জমি বিক্রি করে বেশ কয়েক বছর আগে কিনেছেন একটি ঘোড়া। এই ঘোড়ার পিঠে তিনি তুলে নেন তার যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র। সেই ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া ছুটে চলতেন গ্রাম থেকে গ্রামে। তবে সে ঘোড়াটিও মারা যায় এ বছর ১৬ মে।
সারাদেশ
পশুর নদীতে ডুবে গেলো কার্গো জাহাজ

বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের পশুর নদীর চরে ডুবে গেছে ফ্লাইঅ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) বোঝাই কার্গো জাহাজ। শুক্রবার (২৭ জুন) ভোর ৬টার দিকে মোংলা নদী ও পশু নদীর ত্রিমোহনা সংলগ্ন চরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ এমভি মিজান-০১ এর ড্রাইভার শওকত শেখ জানান, তাদের জাহাজটি পশুর চ্যানেলে নোঙর করা অবস্থায় ছিল। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে এমভি কে আলম গুলশান-০২ নামক লাইটার কার্গো জাহাজ অ্যাংকর করে থাকা এমভি মিজান-০১ কার্গো জাহাজের ওপর উঠিয়ে দেয়। এ সময় লাইটার কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ওই কার্গো জাহাজটি ডুবে যায়। এতে ৯১৪ মেট্টিক টন ফ্লাইঅ্যাশ ছিল। ভারতের কলকাতার ভেন্ডেল এলাকা থেকে এ ফ্লাইঅ্যাশ বোঝাই করেছিল মিজান-১। ঢাকার নারায়ণগঞ্জের বসুন্ধরার ঘাটে যাওয়ার পথিমধ্যে যাত্রাবিরতিকালে মোংলা বন্দরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ড্রাইভার শওকত আরও বলেন, লাইটার জাহাজের ধাক্কায় তাদের কার্গো জাহাজের পাশ ও তলা ফেটে নদীতে ডুবে গেছে। ওই জাহাজে থাকা ১০জন স্টাফই সাঁতরিয়ে কুলে উঠে এখন নিরাপদ রয়েছেন।
এদিকে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের চরে এ নৌযান দুর্ঘটনা ঘটলেও বন্দর চ্যানেল পুরোপুরি নিরাপদ রয়েছ বলে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ মোঃ মাকরুজ্জামান বলেন, কার্গো জাহাজ এমভি মিজান-১ অপর একটি লাইটার জাহাজ এমভি কে আলম গুলশান-০২ এর ধাক্কায় পশুর নদীর চরে ডুবে গেছে। তবে বন্দর চ্যানেল সুরক্ষিত রয়েছে। বন্দর চ্যানেল দিয়ে সব ধরনের নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ধর্ম ও জীবন
সৌদি আরবে কক্সবাজারের ওয়াহিদুর রহমানের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন

কক্সবাজারের কৃতী সন্তান আ.ফ.ম.ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী সৌদি আরবের মক্কা উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন।
তিনি কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলাধীন গর্জনীয়া পূর্ব বোমাংখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল ছিলেন, গর্জনীয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হেড মাওলানা। তার দাদা মাওলানা ওবায়দুল হক চট্টগ্রামের বিখ্যাত দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন।
অ.ফ.ম ওয়াহীদুর রহমান বর্তমানে পবিত্র হারামাইন শরীফাইন সৌদি আরবের অনুবাদ প্রকল্পে বাংলা বিভাগে অনুবাদক, ভাষ্যকার ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কর্মরত।
তিনি সৌদি আরবের মক্কা উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৫ সালে পিএইচডি অর্জন করেন। তার গবেষণা অভিসন্দর্ভের শিরোনাম ছিল- ‘ইমাম আল-বায়হাকী আস-সুনান আল-কুবরায় যা বর্ণনা করেছেন তার মাধ্যমে আল্লাহর দিকে ডাকার আইনশাস্ত্র’।
তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের প্রখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা থেকে হাদিস বিভাগে কামিল ও ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা-ই- আলিয়া, ঢাকা থেকে কামিল তাফসির বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।
এর আগে কক্সবাজারের টেকনাফের রঙ্গিখালী দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের উম্মুল মাদারিস খ্যাত চুনতী হাকিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে যথাক্রমে আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় সম্মানের সাথে উত্তীর্ণ হন।
তিনি ১৯৯৯-২০০৪ ইংরেজি সাল পর্যন্ত ঢাকা মোহাম্মদপুরে অবস্থিত গাউছিয়া ইসলামীয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আ.ফ.ম.ওয়াহীদুর রহমান মাক্কী সৌদি সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ পৃথিবীর ২০টি ভাষায় খুতবাতুল আরাফার তথা হজের খুতবাহ সম্প্রচার প্রকল্পে বাংলা ভাষ্যকার হিসেবে ২০২০, ২০২১ ও ২০২৩ সালে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া ও তিনি মক্কায় ইসলামিক সেন্টার এর একজন দায়ী হিসেবে বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে দাওয়াতী কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
কাফি
সারাদেশ
পাবনায় ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে সাড়ে ১২ লাখ টাকা লুট

পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়ায় ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় জানালার গ্রিল কেটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। এসময় দুটি কম্পিউটার ভাঙচুর ও হার্ডডিস্ক লুট করা হয়। প্রমাণ ধ্বংস করতে এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
বুধবার (১৮ জুন) দিনগত রাতে উপজেলার টেবুনিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে ব্যাংক খোলার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
স্থানীয়, পুলিশ ও ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার স্বাভাবিক কার্যক্রম শেষে ব্যাংক বন্ধ করে চলে যান শাখা সংশ্লিষ্টরা। পরদিন ব্যাংকের অফিস সহকারী (মেসেঞ্জার) রাসেল এসে ব্যাংক খুলে দেখেন জানালার গ্রিল কাটা এবং পুরো ব্যাংক তছনছ অবস্থায় রয়েছে। পরে সংশ্লিষ্টদের খবর দিলে দেখা যায়, ভল্টে থাকা টাকা, কম্পিউটার ও হার্ডডিস্ক লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এবিষয়ে ব্যাংকের অফিস সহকারী রাসেল প্রামাণিক বলেন, রাতের কোনো একটি সময় এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। সকালে অফিসে ঢুকে দেখি জানালার গ্রিল কাটা, কম্পিউটার ভাঙা ও চেয়ার ছড়ানো। এরপর আমি স্যারদের জানাই।
এজেন্ট শাখার ইনচার্জ নাঈম হাসান বলেন, খবর পেয়ে অফিসে এসে দেখি ভল্ট ভাঙা ও তাতে থাকা ১২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা নেই। অফিসের দুটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক এবং সিসিটিভি সিস্টেমও ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় চেয়ারে ঘটনায় জড়িতদের পায়ের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভল্ট ভেঙে টাকা ও কম্পিউটার চুরি হয়েছে বলে দাবি শাখা সংশ্লিষ্টদের। তবে ভল্ট ভাঙা হয়েছে বলে মনে হয়নি। ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের দ্বন্দ্বেও এমনটি হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
সারাদেশ
২৪ ঘণ্টায় সিলেটে আরও ৪ জনের করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে নতুন করে আরও চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে নতুন করে সিলেটে ছয়জন করোনা আক্রান্ত হলেন। বুধবার (১৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে চারজনের কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছয়জন। তাদের মধ্যে শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে তিনজন, নর্থইস্ট হাসপাতালে একজন, রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ও সীমান্তিকে একজন।
এদিকে নতুন করে সিলেটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু হওয়ায় প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই মধ্যে তিনটি আরটি-পিসিআর ল্যাব প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসায় শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। এর বাইরে করোনার পরীক্ষার কিটসহ সব সরঞ্জামাদি সরবরাহ ও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আনিসুর রহমান জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি সংস্থা সীমান্তিকে তিনটি আরটি-পিসিআর ল্যাব প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমানে নমুনা পরীক্ষার চাহিদা কম থাকায় শুধুমাত্র ওসমানী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চলবে পরীক্ষা। রোগী বাড়লে বাকি দুটি ল্যাবও ব্যবহার করা হবে।