টেলিকম ও প্রযুক্তি
যেভাবে হবেন পেশাদার কনটেন্ট ক্রিয়েটর

প্রতিটি মানুষেরই কিছু সহজাত প্রতিভা থাকে। ভাইরাল হতে চাইলে আপনার সেই প্রতিভা তুলে ধরতে পারেন আকর্ষণীয় ও মানসম্মত ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে। অন্তর্জালে স্বল্পদৈর্ঘ্যের কনটেন্ট আজ সবচেয়ে জনপ্রিয়, তাই দীর্ঘ স্ক্রিপ্ট লেখারও প্রয়োজন নেই। শুধু চাই ভালো মানের ক্যামেরার সামনে সাবলীল উপস্থাপনা। মানসম্মত ফুটেজ ধারণ এবং সেটা আকর্ষণীয় ভিডিওতে রূপ দেয়া খুব কঠিন কিছু নয়, প্রয়োজন শুধু সঠিক ডিভাইস ও সফটওয়্যার।
স্ট্যাবিলাইজেশন সমৃদ্ধ ক্যামেরা
বেশিরভাগ কনটেন্ট নির্মাতা ক্যারিয়ারের শুরুতে স্মার্টফোনেই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিও কনটেন্ট তৈরির জন্য ইলেকট্রনিক ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন এবং অন্তত ফুল এইচডি রেজল্যুশনে ভিডিও করতে পারে এমন একটি স্মার্টফোনই যথেষ্ট। স্ট্যাবিলাইজেশন ফিচারটি ভিডিওতে কাঁপাকাঁপি রোধ করবে। সঙ্গে যদি থাকে ফোর-কে রেজল্যুশনে ভিডিও ধারণের অপশন আর অপটিক্যাল স্ট্যাবিলাইজেশন, তাহলে তো কথাই নেই। বাজারে স্ট্যাবিলাইজেশনসমৃদ্ধ স্মার্টফোন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে।
ট্রাইপড বা ফোনস্ট্যান্ড
এক হাতে ফোন ধরে ভিডিও করা খুবই কঠিন কাজ। বাজারে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ট্রাইপড কিংবা ফোনস্ট্যান্ড পাওয়া যায়।
স্মার্টফোনটি স্ট্যান্ডে বসিয়ে নিলে পাওয়া যাবে মসৃণ ফুটেজ। তাছাড়া ক্যামেরার সামনে আরো সাবলীল পারফরম্যান্সও করা যায়। চলমান বিষয়বস্তুর ভিডিও করতে চাইলে বাজেট আরো কিছুটা বাড়িয়ে স্মার্টফোন গিম্বল কেনা যেতে পারে।
লাইটিং
ছবি ও ভিডিও আকর্ষণীয় করতে চাইলে আলোর দিকে খেয়াল রাখা সবচেয়ে জরুরি। শুধু ঘরের বাতির ওপর ভরসা না করে রিং লাইট কিংবা সফট লাইট বক্স কেনা শ্রেয়। বাজারে এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে মানসম্মত লাইট পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা সেলফি ক্যামেরা ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করেন তাদের জন্য রিং লাইট অত্যন্ত জরুরি।
মাইক্রোফোন
ভিডিও তৈরির সময় ছবির পাশাপাশি শব্দও হতে হবে মানসম্মত। আশপাশের কোলাহল অথবা অবাঞ্ছিত শব্দ থাকলে দর্শকের মনোযোগ নষ্ট হয়। বাজারে ৮০০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাইক্রোফোন পাওয়া যায়। সম্ভব হলে নয়েজ রিডাকশন ফিচারসহ তারবিহীন মাইক্রোফোন কেনা উচিত। সে ক্ষেত্রে বাজেট হতে হবে অন্তত তিন হাজার টাকা।
ভিডিওর ফরম্যাট
অনেকেই স্মুথ ভিডিওর আশায় ৬০ এফপিএস গতিতে ভিডিও রেকর্ড করেন। কনটেন্ট তৈরির জন্য ভিডিওর রেজল্যুশন হতে হবে ১০৮০পি অথবা ফোর-কে, গতি হবে ৩০ এফপিএস। মনে রাখতে হবে, সিনেমা আজও ২৪-২৫ এফপিএস গতিতে শুট করা হয়। শুধু এফপিএস বেশি হওয়ার কারণে অনেক ভিডিও মানসম্মত হয় না।
ভিডিও সম্পাদনা
ফুটেজ ধারণ করার পর অডিও ও ট্রানজিশন যোগ করে নিতে হয়। এর জন্য আছে হাজারো ভিডিও সম্পাদনার সফটওয়্যার। পিসি বা স্মার্টফোন—দুটি ডিভাইসেই ভিডিও সম্পাদনা সম্ভব। অনেকে এখন ট্যাবেও ভিডিও সম্পাদনা করছেন। এ কাজে আইপ্যাড সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে স্যামসাং-এর ট্যাব অ্যান্ড্রয়েডের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।
অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো
ভিডিও সম্পাদনার সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যার অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো। এর মাধ্যমে সহজেই মনমতো ইন্টারফেস বা টাইমলাইন সাজিয়ে নেওয়া যায়। ফুটেজ কাটাছেঁড়ার পাশাপাশি ইফেক্ট ও ট্রানজিশনের মাধ্যমে ভিডিও আকর্ষণীয় করা যায় সহজেই। প্রিমিয়ার প্রোর সঙ্গে আফটার ইফেক্টস ব্যবহার করে চমৎকার ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসের কাজও সম্ভব।
দা ভিঞ্চি রিসলভ
প্রিমিয়ার প্রোর বদলে অনেক পেশাদার ভিডিও নির্মাতা বেছে নিচ্ছেন দা ভিঞ্চি রিসলভ। তার প্রধান কারণ এতে ভিডিওর প্রতি ফ্রেম ধরে ধরে আলাদা কালার গ্রেডিং করা যায়। যারা বৈধভাবে বিনা মূল্যে ভিডিও সম্পাদনার সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান তারা এটি ব্যবহার করতে পারেন। দা ভিঞ্চি রিসলভ ব্যবহার করে প্রিমিয়ার প্রোর বাকি কাজও সহজেই করা যায়।
ক্যাপকাট
স্মার্টফোনে ভিডিও সম্পাদনার অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ ক্যাপকাট। এর মাধ্যমে ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড মুছে ফেলা খুব সহজ। রয়ালটি ফ্রি মিউজিকও সরাসরি অ্যাপ থেকেই ভিডিওতে যুক্ত করা যায়। এ ছাড়া অটোক্যাপশনসহ প্রয়োজনীয় অনেক ফিচারও আছে এতে। তবে ফ্রি নয়, সব ফিচার পেতে প্রিমিয়াম সংস্করণ ব্যবহার করতে হবে।
ইনশট
যারা একেবারেই ভিডিও সম্পাদনায় নতুন তাদের জন্যই ইনশট। স্মার্টফোনে ভিডিও সম্পাদনার সব অ্যাপের মধ্যে ইনশটের ইন্টারফেস সবচেয়ে সহজবোধ্য। এর মাধ্যমে প্রি-কাস্টমাইজড কালার ইফেক্ট ব্যবহার করে দ্রুত আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করা যায়। ভিডিও কাটা বা জোড়া দেওয়ার ফিচার তো আছেই। গানও চট করে যোগ করা যাবে। তবে অ্যাডভান্সড ফিচার খুব একটা নেই।
কিনেমাস্টার
স্মার্টফোনে ভিডিও সম্পাদনার বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যার কিনেমাস্টার। ভিডিও সম্পাদনার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবই আছে এতে। বিশেষ করে ক্রোমা কি, ম্যাজিক রিমুভার, সুপার রেজল্যুশন, প্লেব্যাক স্পিড বাড়ানো-কমানো, বা স্লো মোশনের মতো বিভিন্ন বাড়তি ফিচার আছে।
আইমুভি
যাদের আইফোন আছে তাদের জন্য সেরা সফটওয়্যার এটি। অ্যাপলের নিজস্ব অ্যাপটি পাওয়া যাবে বিনা মূল্যে। অটো-এডিট করার টেমপ্লেটের জন্য বিখ্যাত এটি। প্রো-রেস বা অ্যাপল-র ফুটেজ কালার গ্রেডিং করার জন্য বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত আইমুভি।
রয়ালটি ফ্রি সাউন্ড
ভিডিও সম্পাদনায় বড় ভুল কপিরাইটযুক্ত গান ব্যবহার। এতে কপিরাইট ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফরম থেকে ভিডিওটি সরিয়ে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। কপিরাইটের ঝামেলা এড়াতে ইউটিউব অডিও লাইব্রেরি থেকে আবহসংগীত ব্যাবহার করতে হবে।
কোন ভিডিও কোথায় প্রকাশ করবেন
ভিডিও কনটেন্ট যদি এক থেকে তিন মিনিটের কম সময়ের হয়, তাহলে টিকটক, ফেসবুক রিলস ও ইউটিউব শর্টস আকারে প্রকাশ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ভিডিওটি হবে ৯ঃ১৬ অনুপাতের, যাতে ফোন লম্বালম্বি রেখেই দেখা যায়। যারা লম্বা দৈর্ঘ্যের ভিডিও নিয়ে কাজ করতে চান তাদের অবশ্যই ১৬ঃ৯ অনুপাতের ভিডিও তৈরি করতে হবে, ইউটিউব ও ফেসবুক দুটিই বর্তমানে লম্বা ভিডিও প্রকাশের জন্য আদর্শ। একই ভিডিও একাধিক প্ল্যাটফরমে প্রকাশ করা যাবে, এতে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।

টেলিকম ও প্রযুক্তি
১৬ বিলিয়ন আইডি-পাসওয়ার্ড হ্যাকারের দখলে

আইডি-পাসওয়ার্ড হ্যাক হওয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়, তবে একসঙ্গে ১৬ মিলিয়ন আইডি-পাসওয়ার্ড ফাঁস হওয়া বেশ চিন্তার কারণ। ফোর্বসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যাপল, ফেসবুক, গুগল, গিটহাব, টেলিগ্রাম এবং বিভিন্ন সরকারি পরিষেবার আইডি-পাসওয়ার্ড চলে গেছে ডার্ক ওয়েবে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন এই তথ্য। এর মধ্যে শুধু লগ ইন তথ্য নেই, রয়েছে গোপনীয় পাসওয়ার্ডও। ফলে হ্যাকারদের হাতে চলে যেতে পারে ব্যবহারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, এমনকি সরকারি নথি।
সাইবারনিউজের গবেষক ভিলিয়াস পেতকাউস্কাসে নেতৃত্বে শুরু হওয়া তদন্তে দেখা গেছে যে ১৮৪ মিলিয়ন রেকর্ড সম্বলিত একটি রহস্যময় ডাটাবেস ওয়েব সার্ভারে অসুরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হচ্ছে এটি সম্ভবত হিমশৈলের চূড়া মাত্র।
আউটলেট অনুসারে গবেষকরা ৩০টি ডেটাসেট আবিষ্কার করেছেন যার প্রতিটিতে ৩.৫ বিলিয়ন পর্যন্ত রেকর্ড রয়েছে। এই তথ্যের মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া, ভিপিএনের লগইন তথ্য, কর্পোরেট ও ডেভেলপার প্ল্যাটফর্ম, ২০২৫ সালের শুরু থেকে পাওয়া ডেটাসেটেও তাই রয়েছে। এটি যে শুধু তথ্য ফাঁস তা নয়, বরং এই ঘটনা একটি ব্যাপক এক্সপ্লয়টেশনের ব্লুপ্রিন্ট। এটি একেবারে নতুন ব্যবহারযোগ্য তথ্য যা ব্যাপকভাবে ব্যবহার হতে চলেছে, এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে এই মাত্রার পরিচয়পত্র ফাঁস শিপিং প্রচারণা এবং অ্যাকাউন্ট টেক ওভার, ব্যবসায়িক ই-মেইল কম্প্রোমাইজের মত ঘটনায় কাজে লাগানো হতে পারে।
গবেষকরা মনে করছেন এটি সাধারণ কোনো পাসওয়ার্ড ফাঁস হওয়া নয়। এটি বড় কোনো গোষ্ঠীর নীলনকশা হতে পারে।গবেষক ভিলিয়াস পেতকাউস্কাস জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের শুরু থেকে তারা এই তথ্য ফাঁসের ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছেন। তাদের দাবি, ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন ডাটাসেটে মিলেছে এই ১৬ বিলিয়নের বেশি রেকর্ড, যেগুলোর প্রতিটিতেই রয়েছে কয়েক কোটি থেকে শুরু করে সাড়ে তিন বিলিয়ন পর্যন্ত ইউজার ডেটা।
গবেষকদের মতে, এই লিক মূলত ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার দিয়ে সংঘটিত হয়েছে। এমন এক ধরনের ম্যালওয়্যার যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই ব্রাউজারে সংরক্ষিত ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড কপি করে সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়। তথ্যগুলো এমনভাবে সংগঠিত যে, প্রতিটি এন্ট্রিতে একটি ইউআরএল, ইউজারনেম এবং সংশ্লিষ্ট পাসওয়ার্ড রয়েছে। এর মানে, কে কোথায় লগইন করেছেন, সেটিরও নির্ভুল তালিকা আছে।
সূত্র: ফোর্বস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্থান টাইমস।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
যেসব ফোনে আর চলবে না ইউটিউব

জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ব্যবহার করেন সব বয়সী মানুষ। শিশুদের জন্য রয়েছে ইউটিউব কিডস। এছাড়া বিজ্ঞাপন ছাড়া ভিডিও দেখার জন্য ইউটিউব সাবস্ক্রিপশন করার সুযোগ আছে। খুব অল্প টাকায় এই সাবস্ক্রিপশন কেনা যায় মাসিক কিংবা বাৎসরিক।
তবে ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ দিলো প্ল্যাটফর্মটি। অনেক ফোনেই আর চলবে না অ্যাপটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ফোনেরই সফটওয়্যার আপডেট হয়। একইভাবে অ্যাপগুলোও নিজেদের আপডেট করে। নতুন নতুন ফিচার যুক্ত হয় ব্যবহারকারীদের স্বার্থেই।
তবে একটা সমস্যা হচ্ছে দীর্ঘদিনের পুরোনো মডেলগুলোতে একটা সময়ের আর নতুন আপডেটেড অ্যাপ সাপোর্ট করে না। ফলে পুরোনো ফোনগুলোতে অ্যাপগুলোর আপডেটের ভার্সন ব্যবহার করা যায় না। সেই নিয়মেই এবার বহু ফোনে খুলবে না ইউটিউব।
আইফোনের ক্ষেত্রে আইওএস-১৬ বা তার পরবর্তী অপারেটিং সিস্টেমেই সাপোর্ট করবে ইউটিউব। তার আগের ফোনগুলোতে চলবে এই অ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে আইফোন ৬এস, আইফোন ৬এস প্লাস, আইফোন ৭, আইফোন ৭এস, আইফোন এসই (প্রথম জেনারেশন), আইপড টাচ ৭ম জেনারেশন।
তবে অ্যাপ সাপোর্ট না করলেও এই ফোনগুলোতেও দেখতে পাবেন ইউটিউব। ভাবছেন তো কীভাবে? তার জন্য চলে যান গুগলে। খুলুন m.youtube.com.। অর্থাৎ গুগলে ব্রাউজ করে ইউটিউব চালাতে পারবেন।
কাফি
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বৈরী আবহাওয়ায় টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত, ৫ হাজারের বেশি সাইট ডাউন

নিম্নচাপজনিত ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের টেলিযোগাযোগ সেবায়।
শুক্রবার (৩০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
তিনি লেখেন, নেটওয়ার্ক পুনরুদ্ধারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎসহ টেলিযোগাযোগ সেবাকর্মীরা।
দুর্যোগের প্রভাবে পাঁচ হাজারের বেশি টেলিকম সাইট (টাওয়ার) অকেজো হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বরিশাল, সিলেট, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা উত্তর, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রামের উত্তরাঞ্চলে এর প্রভাব বেশি।
মোট ৮ হাজার ২৬২টি (৪৪%) টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৬৪ শতাংশ টাওয়ারে পুনঃসংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখনো ৫ হাজার ৯৬০টি (৩৫%) টাওয়ার অকেজো অবস্থায় রয়েছে।
সেবা সচল রাখতে ইতোমধ্যে ৬২৪টি টাওয়ারে পোর্টেবল জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। আরও ৫০৪টি টাওয়ারে পোর্টেবল জেনারেটর স্থাপনের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে স্থল গভীর নিম্নচাপ ধীরে ধীরে দুর্বল হলেও এর প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে।
কাফি
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বিশ্বে ৮৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ভিডিও গেমস খেলেন

বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে মানুষের বিনোদনের ধরন। আগে যেখানে খেলার মানে ছিল মাঠে গিয়ে বল ছোঁয়া বা ক্রিকেট ব্যাট ধরার অভ্যাস, এখন তার জায়গা দখল করেছে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে খেলা ভিডিও গেম। এই গেমিং ট্রেন্ড এখন আর কেবল তরুণদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—সব বয়সের মানুষ এতে যুক্ত হচ্ছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ৮৩.৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এখন কোনো না কোনোভাবে ভিডিও গেম খেলার সঙ্গে যুক্ত। এই হার বোঝায়, আজকের দিনে ইন্টারনেট ব্যবহার মানেই গেমিং জগতের সঙ্গে কমবেশি সম্পর্ক থাকা।
বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষে গ্লোবাল গেমারের সংখ্যা পৌঁছবে প্রায় ৩৩২ কোটিতে। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, স্মার্টফোনের বিস্তার, সাশ্রয়ী ডেটা এবং মোবাইল গেম অ্যাপগুলোর জনপ্রিয়তা এই বৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বের গেমারদের মধ্যে এশিয়া সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এ অঞ্চলে গেমারদের সংখ্যা প্রায় ১৪৮ কোটি। যা বৈশ্বিক গেমিং জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ। চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশগুলোতে মোবাইল গেমিং-এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা এই বৃদ্ধির কারণ।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইউরোপ, যেখানে গেমারদের সংখ্যা প্রায় ৪৫ কোটি। এরপর রয়েছে লাতিন আমেরিকা, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইন গেমিং, ই-স্পোর্টস এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আজকের গেমিং জগৎ শুধুই ভিডিও গেম খেলা নয়। বরং এটি এখন একটি বহুমুখী ইকোসিস্টেম। এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে-
ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্ট: কোটি কোটি ডলার পুরস্কার নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আয়োজন হয়। লাইভ স্ট্রিমিং: Twitch, YouTube Gaming-এর মতো প্ল্যাটফর্মে লাখো গেমার নিয়মিত গেম খেলে ও তা লাইভ দেখিয়ে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। গেম ডেভেলপমেন্ট: লক্ষ লক্ষ ডেভেলপার এখন নতুন গেম তৈরির সঙ্গে জড়িত, যা একটি বিশাল কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও ক্লাউড গেমিং: ভবিষ্যতের গেমিং অভিজ্ঞতাকে নিয়ে যাচ্ছে এক নতুন উচ্চতায়।
গবেষণা বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির বাজার মূল্য ৩৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আগে যেখানে গেমিং ছিল কনসোল ও কম্পিউটার নির্ভর, এখন তার সবচেয়ে বড় অংশ হয়ে উঠেছে মোবাইল গেমিং। Subway Surfers, PUBG Mobile, Free Fire, Candy Crush—এইসব গেমের মাধ্যমে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সবাই গেমিংয়ে অংশ নিচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছে ছাত্র, চাকরিজীবী, গৃহিণী এমনকি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও।
তবে এই গেমিং প্রবণতা নিয়ে অনেকের উদ্বেগও রয়েছে। অতিরিক্ত গেম খেলার ফলে আসক্তি, চোখের সমস্যা, মানসিক চাপ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। তাই অভিভাবক ও তরুণদের সচেতনভাবে গেম খেলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
জাতীয়
জুলাই থেকে ইন্টারনেটের দাম কমবে ২০ শতাংশ

চলতি বছরের জুলাই থেকে আইএসপি (ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী) এবং আইআইজি (আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে) স্তরে ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ কমবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তাইয়্যেব।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সমাজ দিবস উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার(১৫ মে) আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ তাইয়্যেব এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ১ জুলাই থেকে আইএসপি এবং আইআইজি স্তরে ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ কমানো হবে। পরবর্তীতে ভোক্তা পর্যায়েও দাম কমানো হবে।
তাইয়্যেব মোবাইল অপারেটরদের এই উদ্যোগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার আহ্বান জানান। ‘আমাদের লক্ষ্য নাগরিকদের সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া।’
সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. জহুরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ-উল-বারী উপস্থিত ছিলেন।